ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় লিচু খাওয়ার সময় বিচি গলায় আটকে আবু বক্কর (৩)  নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। শনিবার (২৪ মে) সকালে নবীনগর উপজেলা ভৈরবনগর এলাকায় তার মৃত্যু হয়। 

আবু বক্কর নবীনগর উপজেলার বিদ্যাকুট ইউনিয়নের হাওলাদার বাড়ির তারেক জিয়ার ছেলে। নানার বাড়িতে তার মৃত্যু হয়।

নিহত শিশুর নানি শিল্পী বেগম জানান, তার মেয়ে ঝুমা আক্তার ও তার ছেলে বেড়াতে আসে। আবু বক্কর উঠানে খেলছিল। সকালে বাজার থেকে তার নানা লিচু এনে আবু বক্করকে খেতে দেয়। লিচু খাওয়ার সময় বিচিটি গলায় আটকে যায়। তাকে সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। 

আরো পড়ুন:

খাবার কিনে দেওয়ার কথা বলে ধর্ষণচেষ্টা, গ্রেপ্তার ১

শিশুকে ‘ইমোশনালি হেলদি’ করার জন্য বাবা-মায়ের করণীয়

এদিকে, সদর উপজেলা সুলতানপুর ইউনিয়নের রাধিকা এলাকার বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে লব মিয়ার ছেলে লিটন মিয়া (৩০) মারা গেছে। 

শনিবার (২৪ মে) সকালে পাশের বাড়িতে বিদ্যুতিক কাজ করার সময় লিটন বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়। পরে তাকে সদর হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তবরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মেডিকেল অফিসার ডা.

মো. শাকিল এই দুই মৃত্যুর সত্যতা নিশ্চিত করেন।

ঢাকা/মনিরুজ্জামান/বকুল

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন হত

এছাড়াও পড়ুন:

গোখাদ্যের দাম বাড়ায় বিপদে খামারি

গোখাদ্যের লাগামহীন দাম বাড়াতে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে গরু পালনকারী খামারিরা বিপদে পড়েছেন। আসছে ঈদুল আজহার জন্য প্রস্তুত গরু বিক্রি করে লোকসানের আশঙ্কা করছেন অনেকে। 
গরুর জন্য প্রস্তুত খাবারে ব্যবহৃত কাঁচামালের দাম বাড়ার কারণে খাবারের উচ্চমূল্যের কথা জানিয়েছেন খাদ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের মালিকরা।
কিছুদিন পরে কোরবানির ঈদ। এরই মধ্যে দফায় দফায় বেড়েছে গোখাদ্যের দাম। এতে বেকায়দায় পড়েছেন খামারিরা। উপজেলার অনেক খামারেই দানাদার খাবারের পরিবর্তে ঘাস জাতীয় খাবার দেওয়া হচ্ছে গবাদি পশুকে। অপরদিকে হঠাৎ গোখাদ্যের দাম বাড়ার ফলে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন দুগ্ধ উৎপাদনকারী খামারিরাও। দীর্ঘদিন ধরে দুধের দাম না বাড়লেও বেড়েছে খাদ্যের দাম। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রস্তুত গোখাদ্যের দাম কেজিপ্রতি ৫৫ থেকে ৬৫ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। এর দাম এক মাসের ব্যবধানে কেজিপ্রতি ৭-৮ টাকা বেড়েছে। গোখাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত ঘাস বড় গোলাই (আঁটি) ৯৫ থেকে ১০০ টাকা এবং ছোট গোলাই ৫০ থেকে ৫৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। অথচ দুই মাস আগে একই পরিমাণ ঘাস ৬৫ থেকে ৭০ এবং ছোট গোলাই ৩৫ টাকা দরে বিক্রি হতো।
গোয়ালন্দ পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বিজয়বাবুর পাড়া মহল্লার খামারি আব্দুল বারেক মোল্লা জানান, বিগত কয়েক বছর ধরে দুধের দাম ৫০-৬০ টাকা লিটার চলছে। দুধের দাম বাড়েনি। অথচ গোখাদ্যের দাম প্রতিনিয়ত বেড়ে চলছে। দুই সপ্তাহ আগেও এক বস্তা (৩৭ কেজি) ভুসির দাম ছিল এক হাজার ৫০০ টাকা, তা এখন এক হাজার ৮০০ টাকা দিয়ে কিনতে হচ্ছে। অর্থাৎ কেজিপ্রতি আট টাকার বেশি বেড়েছে। তিনি আরও জানান, তাঁর মোট ৯টি গাভি রয়েছে। এর মধ্যে চারটি গাভি দুধ দেয়। এ পরিস্থিতিতে তিনি প্রতিনিয়ত লোকসানের মুখে পড়ছেন। এভাবে চলতে থাকলে খামার টিকিয়ে রাখা সম্ভব হবে না।
একই এলাকার খামারি তাজেল মোল্লা জানান, তৈরি গোখাদ্যের দাম বেশি হওয়ায় তিনি তা গরুকে খাওয়াতে পারেন না। ভুসিরও অনেক দাম। এছাড়া খড় তো পাওয়াই যাচ্ছে না। তিনি আরও জানান, তাঁর কোনো আবাদি জমি নেই। ছয়টি গাভির ছোট একটি খামার তাঁর। খামার থেকে যা আয় হয়, তা দিয়ে চলে সংসার। গোখাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন তিনি। গরুগুলোকে আগের মতো খাবার দিতে পারছেন না। গরুকে ঠিকমতো খাবার দিতে গেলে সংসারে টানাপোড়েন শুরু হয়ে যায়। গোখাদ্যের দাম বাড়ায় তাদের মতো অনেক খামারি খামারের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন। 
উপজেলার দেবগ্রাম ইউনিয়নের দক্ষিণ চরপাঁচুরিয়া গ্রামের কৃষক হাবিব শেখ জানান, তিনি দীর্ঘদিন ধরে গরু পালন করেন। তাঁর খামারে ১৪টি ষাঁড় গরু রয়েছে। সবক’টিই এবারের কোরবানির ঈদে বিক্রির আশা করছেন। গোখাদ্যের দাম অতিরিক্ত বেড়ে যাওয়ায় গরু পালনে খরচ বেড়ে গেছে, সেই তুলনায় দাম পাবেন কিনা জানেন না। কাঙ্ক্ষিত দাম না পেলে আগামীতে হয়তো গরুর খামার টিকিয়ে রাখা সম্ভব হবে না।
উপজেলার তেনাপচা গ্রামে প্রতিষ্ঠিত অ্যামপ্রোল অ্যাগ্রো কমপ্লেক্সের স্বত্বাধিকারী এসএম জসিম উদ্দিন বলেন, তিনি তাঁর খামারের গরুর জন্য নানান ধরনের পুষ্টির সংমিশ্রণে নিজেই গোখাদ্য তৈরি করে থাকেন। এরজন্য তাঁকে বাজার থেকে বিভিন্ন ধরনের কাঁচামাল কিনতে হয়। গোখাদ্যের দাম বাড়ার জন্য কোনো সিন্ডিকেট নেই। কাঁচামালের দাম বেড়ে গেলে এমনিতেই গোখাদ্যের দাম বেড়ে যায়। 
গোয়ালন্দ ফিড মিলস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শেখ মো. নজরুল ইসলাম জানান, কোরবানির ঈদ আসছে। প্রতিটি খামারিই তাদের গরুর খাবার বাড়িয়েছেন। এ কারণে স্বাভাবিকের চেয়ে গোখাদ্যের চাহিদাও বেড়েছে। এছাড়া গোখাদ্যসংশ্লিষ্ট অন্যান্য পণ্যের দামও বেড়েছে। এসব কারণে গোখাদ্যের দাম কিছুটা বেড়েছে।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা শাহাদাৎ হোসেন জানান, গোখাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় প্রাণিসম্পদ বিভাগের পক্ষ থেকে খামারিদের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের গোখাদ্যের পরিবর্তে কাঁচা ঘাস ও অন্যান্য খাবার খাওয়ানোর পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ