ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মাস্টার দা সূর্যসেন হল। মানহীন ও অস্বাস্থ্যকর খাবার, অপরিচ্ছন্ন ওয়াশরুম, নিরাপত্তা ব্যবস্থায় ঘাটতিসহ বিভিন্ন মৌলিক সমস্যা নিয়ে দিনাতিপাত করছেন শিক্ষার্থীরা। তাদের অভিযোগ প্রশাসন যেন এসব সমস্যা দেখেও দেখে না। হলের বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতারাও এসব ব্যাপারে যেন ঘুমিয়ে আছেন।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, হলটির সবচেয়ে বড় সমস্যা ক্যান্টিন নিয়ে। জিয়া হল থেকে বিতাড়িত হয়ে এই হলে এসেও যেন শিক্ষা হয়নি ক্যান্টিন মালিক শাহাবুদ্দিনের। গত বছর নভেম্বর মাসে সূর্যসেন হলের ক্যান্টিন পরিচালনার দায়িত্ব পাওয়ার পর খাবার কিছুটা মানসম্মত ছিল। এক মাস না যেতেই শিক্ষার্থীদের খাবারের মানে নামে ধস। শুরুর দিকের খাবারের চেয়ে এখনকার খাবারে আকাশ-পাতাল তফাৎ।

শুরুতে যে খাবার ৪৫ টাকা নেওয়া হত, তা এখন ক্ষেত্রবিশেষে ৫০ টাকা থেকে ৫৫ টাকা। এ নিয়ে শিক্ষার্থীরা ক্যান্টিনের মালিকের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা করলে যুক্তিতে না পেরে খাবারের দাম কিছু সময়ের জন্য কমে যায়। কিছুক্ষণ পরেই তা আবার আগের দামেই ফেরত চলে যায়।

আরো পড়ুন:

মানুষ যতটুকু চেষ্টা করবে ততটুকুই সে অর্জন করবে: ইবি উপাচার্য

সেশনজট নিরসনের দাবিতে চবির শিক্ষার্থীদের আমরণ অনশন

ক্যান্টিনে প্রতিদিন একই ধরনের ১০-১২ রকমের আইটেমের খাবার রাখা হয়, তাতে টেস্টিং সল্টের ছড়াছড়ি। শিক্ষার্থীরা বারবার বলার পরও টেস্টিং সল্ট দেওয়া বন্ধ হয় না। ক্যান্টিন মালিকের বাড়ি চাঁদপুর হওয়ায় তার এলাকায় প্রচলিত খাবারই শুধু পরিবেশন করা হয় বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের।

কিছুদিন আগে এক ছাত্রনেতার জন্য সংরক্ষিত গরুর মাংস নিয়েও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনা দেখা যায়। মাঝে মধ্যেই খাবারে পাওয়া পোকা, কাঁচা ও পঁচা মাংস নিয়েও ঝড় ওঠে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।

শুক্রবার (২৩ মে) সরেজমিনে দেখা যায়, টেবিলে রাখা কাঁচা লবণ আলগা রয়েছে। আগের দিনের ঝোলমাখানো লবণের সঙ্গেই দেওয়া হয়েছে নতুন লবণ। মেঝেতে পড়ে রয়েছে পানি। এমনকি খাবারের টেবিলও নোংরা। ক্যান্টিনবয়দের নিজেদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা আর পরিচালকের ডেস্কের কলিং বেল যেন এ বিরক্তিকর পরিবেশে যোগ করেছে অন্য মাত্রা। হাত ধোয়ায় ব্যবহৃত বেসিনেও নেই পর্যাপ্ত সাবানের ব্যবস্থা। ক্যান্টিনের চেয়েও খারাপ অবস্থা সূর্যসেন হলের ক্যাফেটেরিয়ায়।

হলের আরবি বিভাগের শিক্ষার্থী মামুনুর রশিদ বলেন, “ক্যাফেটেরিয়ার খাবার চরম নোংরা পরিবেশে রান্না করা হয়। খাবারের স্বাদ, গন্ধ খুবই নিম্নমানের। মাঝে মাঝেই পঁচা খাবার পাওয়া যায়। একেবারেই নিম্নমানের চাউল দিয়ে রান্না করা হয় ভাত।”

হলের ২০২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থী মাহিদুল আলম ফাহিম বলেন, “আমাদের হলে অন্য হল থেকে বাতিল করা এক ক্যান্টিন মালিককে নিয়ে আসা হয়েছে। তিনি শিক্ষার্থীদেরকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি রাখতে পারেননি। আমার মনে হয়, এই ক্যান্টিন মালিককে এই হলে আর পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া উচিত নয়।”

নিয়মিত হলের ওয়াশরুমগুলো পরিষ্কার করা হয় না বলেও অভিযোগ রয়েছে শিক্ষার্থীদের। কমোডগুলোতে দীর্ঘদিনের দাগ, শৌচাগারে দুর্গন্ধ, দুপুরের পর থেকে গোসলখানা কর্দমাক্ত হয়ে যায়। দায়সারা ব্লিচিং পাউডার ছিটানো এবং দিনে একবার নয়, অন্তত দুইবার ওয়াশরুম পরিষ্কার করা উচিত বলে মনে করেন তারা।

আওয়ামী ফ্যাসিস্ট আমলে হলের ৩৪৩, ৩৪৪ ও ৩৪৫ নং রুম অবৈধভাবে দখল করে থাকতেন নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ঢাবি ছাত্রলীগ সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন। এ রুমগুলো সংলগ্ন হলের দক্ষিণ দিকের লিফটের কাছে ওয়াশরুমের চারটি টয়লেটের একটি দখল করেছিলেন তিনি। সর্বদা তালা মেরে রেখে শুধু শয়ন ও তার অনুসারী ঢাবি ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আলী নেওয়াজ তুষার ব্যবহার করতেন। হলের এটাই একমাত্র ওয়াশরুম, যেখানে দুটি কমোড স্থাপন করা হয়েছে। অন্যান্য ওয়াশরুমগুলোতে একটি মাত্র কমোড রয়েছে।

অনেকের অভিযোগ হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক জাকির হোসেন ভূঁইয়া শয়নের জন্যই একটি অতিরিক্ত কমোড স্থাপন করেন এবং শয়নকে তার দায়িত্ব দেন। এমনকি ওই সময়ে ওয়াশরুমগুলো সংস্কারে বড় ধরনের আর্থিক লুটপাটের অভিযোগ ওঠে প্রাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে। 

অভিযোগ উঠেছে, ফ্লোরে বিভিন্ন জায়গায় থাকা ডাস্টবিনে ময়লা পরিপূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত তা অপসারণ করা হয় না। ফলে পরিপূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত বর্জ্য থেকে ছড়ানো দুর্গন্ধ স্বাস্থ্যঝুঁকিতে ফেলছে শিক্ষার্থীদের। এই ডাস্টবিনগুলো মাঝেমধ্যেই ফেলে দেয় কুকুর। ফলে আরো বেশি দুর্গন্ধ ছড়ায়। নিয়মিতভাবে ফ্লোরের বারান্দাগুলোতেও ঝাড়ু দেওয়া হয় না। এছাড়া হলের ভেতরে এবং রুমের সামনে কুকুর পৌঁছানো নিয়েও উদ্বিগ্ন শিক্ষার্থীরা। হল কর্মচারীদের দায়িত্বে অবহেলার কারণেই এটা হয় বলে জানিয়েছেন তারা।

অন্যান্য হলগুলোতে আলাদা গেমসরুম থাকলেও তা নেই সূর্য সেন হলে। টিভি রুমে দুটি ক্যারাম বোর্ড এবং একটি দাবা বোর্ড রেখেই দায় সেরেছে প্রশাসন। যদিও আগে দুটি দাবা বোর্ড ছিল। ক্যারাম বোর্ডেও সরবরাহ করা হয় না মানসম্মত সরঞ্জামাদি। অন্যান্য হলগুলোর মত নেই টেবিল টেনিস খেলার সুযোগও।

হলের কম্পিউটার ল্যাবের অধিকাংশ কম্পিউটারই বিকল। এমনকি অফিসিয়াল টাইমে সব সময় এটি খোলাও পাওয়া যায় না। হলের বিভিন্ন ফ্লোরে দুই ভবনের ছাদের সংযোগস্থলে বৃষ্টি হলেই পানি পড়ে। সৃষ্টি হয় কর্দমাক্ত পরিবেশ। এছাড়া হলে চারটি ওয়াশিং মেশিন বসিয়েছে ‘ইওর ক্যাম্পাস’। মাঝেমধ্যেই দক্ষিণ দিকের লিফটের সঙ্গে বসানো ওয়াশিং মেশিন থেকে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে আশপাশে পানি ছড়িয়ে পড়ে। ফলে লিফটে উঠতে দুর্ভোগ পোহাতে হয় শিক্ষার্থীদের। ওয়াশিং মেশিনের যান্ত্রিক ত্রুটি এবং তার সংস্কার নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন শিক্ষার্থীরা।  

হলের শিক্ষার্থীদের কাছে আসা বিভিন্ন চিঠি নির্দিষ্ট রুমে না পাঠানোর অভিযোগ রয়েছে। শিক্ষার্থী মামুনুর রশিদ বলেন, “দেখা যাচ্ছে যে চিঠিতে কোন শিক্ষার্থীর চাকরিতে অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটার এসেছে। কিন্তু ওই চিঠি বেশ দেরিতে রুমে দিয়ে যাওয়া হয়। যার ফলে ভোগান্তিতে পড়ে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।”

সূর্যসেন হলে ওয়াইফাই সেবা পরিচালনা করছে ‘অরেঞ্জ কমিউনিকেশন লিমিটেড’। সেবা কার্যক্রমে প্রায়ই ব্যাঘাত ঘটায় তারা। পুরো হলেই মাঝেমধ্যে নেটওয়ার্ক সেবা বন্ধ হয়ে যায়। শিক্ষার্থীরা তাদের কল করে জানালে নানা অজুহাতে এড়িয়ে যায় তারা। শিক্ষার্থীদের দাবি, এ ব্যাপারে এখন পর্যন্ত কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি হল প্রশাসন কিংবা ওয়াইফাই কর্তৃপক্ষের।

জানা গেছে, ফ্যাসিবাদী আমলে শয়ন ও তার বিশ্বস্ত অনুসারী আরিফ মোটা অঙ্কের চুক্তির বিনিময়ে হলে অরেঞ্জ কমিউনিকেশন লিমিটেডকে ওয়াইফাই সেবা দেওয়ার সুযোগ দেন। ছাত্রলীগ আমলে অতিরিক্ত চাঁদা দেওয়ার কারণে কোম্পানিকে সেবা কার্যক্রম একেবারেই অস্বাভাবিক করতে হয়।

ঢাবি ছাত্রলীগ সভাপতি শয়নের রুমে ৮০ এমবিপিএস ফ্রি দিয়েছিল কোম্পানিটি। শয়ন যতদিন হলে থাকবেন, ততদিন ব্যবহার করতে পারবেন বলেই এই সুবিধা দিয়েছিল কোম্পানিটি। অন্যান্য বেশ কয়েকজন নেতাকেও একই সুবিধা দেওয়া হয়েছিল বলে জানা গেছে।

এতকিছুর পরেও বহাল তবিয়তে নিম্নমানের সেবা দিয়ে যাচ্ছে কোম্পানিটি। এমনকি বর্তমানে কোম্পানির কাছ থেকে মোটা অংকের চাঁদা নিয়ে তাদের সেবা দেওয়ার সুযোগ দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে হলের কয়েকজন ছাত্রনেতার বিরুদ্ধে।  

হল কর্মচারী তসলিমকে বরাদ্দ দেওয়া দোকানটি শিক্ষার্থীরা বন্ধ করে দেওয়ার পর সম্প্রতি তা আবার অন্য ব্যক্তির কাছে নতুন করে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় হলের এক প্রভাবশালী ছাত্রনেতার হস্তক্ষেপের অভিযোগ এসেছে। তার নিজের আত্মীয়কে তিনি এই দোকান পাইয়ে দিয়ে নানা সুবিধা নিচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়েও হলের পত্রিকার রুমে রাখা হয় না সকল ধরনের পত্রিকা। অভ্যুত্থানের পর দুটি পত্রিকার সংযুক্ত করা হলেও মূলধারার কয়েকটি পত্রিকা এখনো সংযুক্ত করা হয়নি। 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে হলের এক শিক্ষার্থী বলেন, “পত্রিকার রুমে বাংলাদেশপন্থি দুই পত্রিকা দৈনিক মানবজমিন ও দৈনিক নয়াদিগন্ত রাখা হয় না। বাংলাদেশপন্থি বয়ান নির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা এই দুই পত্রিকা শিক্ষার্থীদের জন্য খুবই প্রয়োজন। হল প্রশাসন কি এই পত্রিকাগুলো না রেখে ফ্যাসিবাদী বয়ান সংরক্ষণে পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করতে চায়?”

অভিযোগ রয়েছে, হলের কর্মচারীদের মধ্যে রয়েছে গ্রুপিং। ফলে প্রশাসনিক কর্মকাণ্ডে সৃষ্টি হয়েছে দীর্ঘসূত্রিতা। আবার আবাসিক শিক্ষকদেরও চেনেন না অধিকাংশ শিক্ষার্থী। ফ্যাসিবাদী আমলে সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগের একচ্ছত্র আধিপত্যের ফলে হল নিয়ন্ত্রণে ছিল না প্রশাসনের। ফলে আবাসিক শিক্ষকদের কোনো প্রভাব শিক্ষার্থীদের ওপর ছিল না। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পরে হল সন্ত্রাসমুক্ত ও শিক্ষার্থীদের নিয়ন্ত্রণে এলেও আবাসিক শিক্ষকদের খুঁজে পান না শিক্ষার্থীরা। অধিকাংশ আবাসিক শিক্ষকই হলের সমস্যা খুঁজতে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন না। হলের ফ্ল্যাট দখল করাই যেন তাদের একমাত্র কাজ।

গত পহেলা বৈশাখে শিক্ষার্থীদের খাবার প্রদানের সময় টোকেনের পরিবর্তে হলটির আবাসিক শিক্ষার্থী ও এই প্রতিবেদকের ‘বিশ্ববিদ্যালয় পরিচয় পত্র’ গ্রহণ করে প্রশাসন। পরবর্তীতে পরিচয় পত্রটি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানানো হয়। সংশ্লিষ্ট আবাসিক শিক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগের পরও কোন সমাধান মেলেনি আজো।

হলের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, “ক্যান্টিন, ওয়াশরুম, অকেজো কম্পিউটার ল্যাবসহ সব সমস্যার সমাধান অতিদ্রুত করা উচিত। ওয়াইফাই সমস্যার ভুত দূর করাও এখন জরুরি হয়ে গেছে।”

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে সূর্যসেন হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক জাকির হোসেন ভূঁইয়া রাইজিংবিডি ডটকমকে বলেন, “ক্যান্টিনের ক্যাটারারকে তো ছাত্ররাই নিয়ে আসছে, আমরা আনিনি। প্রতিদিন ৮০০-১০০০ লোকের খাবার রান্না করলে তো মান ধরে রাখা কঠিন। দাম বাড়া-কমার ওপর আমাদের নিয়ন্ত্রণ আছে। আমাদের টিম আছে, ছাত্র প্রতিনিধি আছে, মাঝেমধ্যে আমিও দেখি।”

তিনি বলেন, “সেদিন কেয়ারটেকারকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছিল। পরে সে হাতে-পায়ে ধরায় ২ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। আর ওয়াশরুমের সমস্যাটা আসলে অনেক পুরাতন। আমাদের লোক আছে, তারা কাজ করে। আমার ছাত্ররা যখন আসে, আমরা কেয়ারটেকারকে বলি, লোক দেয়, কাজ করে।”
 

ঢাকা/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অন য ন য আম দ র র জন য পর ব শ হল র ক সমস য

এছাড়াও পড়ুন:

‘দুই বছর ধরে ঘুরছি, তবু এনআইডি ঠিক হলো না’

দুই বছর ধরে জাতীয় পরিচয়পত্রে (এনআইডি) মা–বাবার নাম সংশোধনের জন্য চট্টগ্রামের নির্বাচন কার্যালয়ে ঘুরছেন মো. সাইফুল ইসলাম। কিন্তু এত দিনের চেষ্টার পরও মেলেনি সমাধান।

নগরের উত্তর কাট্টলীতে বসবাসকারী সাইফুল পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। জীবিকার তাগিদে যখন যা পান, তা-ই করেন। কয়েক বছর ধরে বিদেশ যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। সে লক্ষ্যে পাসপোর্ট করতে গিয়ে দেখা যায়, তাঁর এনআইডিতে বাবা ও মায়ের নাম ভুল। এরপর পাসপোর্ট কার্যালয়ের পরামর্শে এনআইডি সংশোধনের জন্য প্রায় দুই বছর আগে চট্টগ্রাম জেলা নির্বাচন কার্যালয়ে আবেদন করেন তিনি।

গত মঙ্গলবার চট্টগ্রাম জেলা নির্বাচন কার্যালয় প্রাঙ্গণে কথা হয় সাইফুলের সঙ্গে। তাঁর সঙ্গে ছিলেন স্থানীয় এক ব্যক্তি। প্রথম আলোকে সাইফুল বলেন, ‘জাতীয় পরিচয়পত্র করার সময় বাবার ডাকনাম কবির আহম্মদ আর মায়ের নাম বুলুয়ারা বেগম দিয়েছিলাম। কিন্তু বাবার আসল নাম এস এম তৈয়বুর রহমান ও মায়ের নাম বুলু আক্তার। এ কারণে সংশোধনের আবেদন করেছি। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না।’

সাইফুল জানান, জাতীয়তা সনদ, প্রত্যয়নপত্র, মা-বাবার এনআইডির অনুলিপি, ভাইয়ের এনআইডি, এমনকি মা-বাবার নিকাহনামাও জমা দিয়েছেন। তবু ফল মেলেনি।

সাইফুল জানান, জাতীয়তা সনদ, প্রত্যয়নপত্র, মা–বাবার এনআইডির অনুলিপি, ভাইয়ের এনআইডি, এমনকি মা–বাবার নিকাহনামাও জমা দিয়েছেন। তবু ফল মেলেনি। তিনি বলেন, ‘দুই বছর ধরে ঘুরছি। কত কাগজ দিলাম, কত লোক ধরলাম। এখন পর্যন্ত কিছু হলো না। ১০-১৫ হাজার টাকা খরচ হয়ে গেছে।’

জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধনের জন্য চট্টগ্রাম নির্বাচন কার্যালয়ে অনেকেই ভিড় করেন প্রতিদিন

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘দুই বছর ধরে ঘুরছি, তবু এনআইডি ঠিক হলো না’
  • মুখ দিয়ে লিখে স্নাতকোত্তর পাস করেছেন বাহার
  • কুয়া
  • সিনেমার গানে প্রিয়মুখ