পঞ্চগড় সীমান্ত দিয়ে বিএসএফের ঠেলে পাঠানো ২১ জনকে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর
Published: 24th, May 2025 GMT
পঞ্চগড় সীমান্ত দিয়ে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) ঠেলে পাঠানো নারী ও শিশুসহ ২১ জনকে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আজ শনিবার বিকেলে পঞ্চগড় সদর উপজেলার হাড়িভাসা ইউনিয়নের ডোলোপুকুর আশ্রয়ণ প্রকল্পের কমিউনিটি সেন্টার চত্বরে তাঁদের পরিবারের সদস্যদের কাছে তুলে দেওয়া হয়।
এ সময় পঞ্চগড় সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাকির হোসেন, সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল্লাহ হিল জামান, হাড়িভাসা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইয়েদ নূর-ই-আলমসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুনবিএসএফের ঠেলে পাঠানো ২১ জনকে রাখা হয়েছে কমিউনিটি সেন্টারে২৩ মে ২০২৫এর আগে গত বৃহস্পতিবার ভোরে বিজিবির জয়ধরভাঙ্গা বিওপির আওতাধীন সীমান্তের ৭৫৭ নম্বর মেইন পিলারে ১০ নম্বর সাব পিলার–সংলগ্ন সদর উপজেলার হাড়িভাসা ইউনিয়নের বড়বাড়ী এলাকা দিয়ে ওই ২১ জনকে ঠেলে পাঠায় বিএসএফ। এ সময় সীমান্ত এলাকা থেকে বিজিবি তাঁদের আটক করে বিকেলে পঞ্চগড় সদর থানায় হস্তান্তর করে।
পরে ওই দিন রাতে আটক ব্যক্তিদের পঞ্চগড় সদরের ইউএনও তত্বাবধায়নে সদর উপজেলার হাড়িভাসা ইউনিয়নের ডোলোপুকুর আশ্রয়ণ প্রকল্পের কমিউনিটি সেন্টারে নেওয়া হয়। সেই সঙ্গে তাঁদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়।
আটক ব্যক্তিদের মধ্যে ২২ বছর বয়সী একজন তরুণ, ৩ মাস থেকে ১৭ বছর বয়সী ১৪ জন শিশু-কিশোর এবং ১৯ বছর থেকে ৫৫ বছর বয়সী ছয়জন নারী আছেন। তাঁদের বাড়ি খুলনা ও নড়াইল জেলায়। তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে ভারতে ছিলেন এবং প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তিরা সেখানে বিভিন্ন কাজ করতেন। গত বুধবার বিকেলে তাঁদের ভারতের গুজরাট থেকে ভারতীয় পুলিশ আটক করে বিমান ও বাসযোগে সীমান্ত এলাকায় নিয়ে এসে ৯৩ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের টিয়াপাড়া ক্যাম্পে হস্তান্তর করে। পরে টিয়াপাড়া বিএসএফ ক্যাম্পের সদস্যরা তাঁদের বাংলাদেশে ঠেলে দেন (পুশ ইন করেন)। যদিও ঘটনার পর বিজিবি-বিএসএফের পতাকা বৈঠকে বিএসএফ পুশ ইনের বিষয়টি অস্বীকার করে।
স্ত্রী–সন্তানদের নিতে খুলনা থেকে আসা এক ব্যক্তি (৪০) বলেন, ‘আমার স্ত্রী ও তিন মেয়েকে নিয়ে আমিও ভারতের গুজরাটে ছিলাম। সেখানে একটি সার কারখানায় কাজ করতাম। বেশ কিছু দিন আগে আমি সেখানে পুলিশের হাতে আটক হই। পরে সাতক্ষীরা সীমান্ত দিয়ে আমাকে বাংলাদেশে পাঠানো হয়। পরে শুনি, আমার স্ত্রী সন্তানেরা পঞ্চগড় সীমান্তে আটক হয়েছে। এ জন্য তাঁদের নিতে এসেছি।’
পঞ্চগড় সদরের ইউএনও জাকির হোসেন বলেন, পরে সদর থানার ওসির মাধ্যমে ওই ২১ জনের পরিবারের লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। পুলিশ স্বজনদের আনা কাগজপত্র যাচাই ও পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর তাঁদের হস্তান্তর করে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সদর উপজ ল ২১ জনক ব এসএফ র পর ব
এছাড়াও পড়ুন:
জঙ্গি সন্দেহে কলকাতায় গ্রেপ্তার বাংলাদেশি যুবক
জঙ্গি সন্দেহে কলকাতা পুলিশের বিশেষ টাস্ক ফোর্সের (এসটিএফ) হাতে গ্রেপ্তার হয়েছে এক বাংলাদেশি নাগরিক। মুফতি আবদুল্লাহ আল মাসুদ নামে ওই বাংলাদেশি নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয় পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার গয়েশপুর পুলিশ ফাঁড়ি এলাকা থেকে। এরপর তাকে ফাঁড়িতে নিয়ে এসে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ চলে। বৃহস্পতিবার এই ঘটনাটি ঘটেছে।
ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও ভারত থেকে নিজের দেশে ফিরে যাননি মাসুদ। তিনি অবৈধভাবে পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার কাটাগঞ্জ এলাকায় বসবাস করতেন। সম্প্রতি তার বেশ কিছু কর্মকান্ডে সন্দেহ প্রকাশ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এর পরই মাসুদকে ইসলামী উগ্রপন্থী বলে দাবি করে পুলিশে অভিযোগ করা হয়। যেহেতু তার ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে, তাই পুলিশ তাকে একজন অবৈধ অভিবাসী হিসেবে বিবেচনা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ভারতীয় আইনের সংশ্লিষ্ট ধারায় তার বিরুদ্ধে মামলাও দায়ের করা হয়েছে।
বিষয়টি সামনে আসার পরই যথেষ্ট উত্তেজনা ছড়িয়েছে। যদিও এ ব্যাপারে কলকাতা পুলিশের পক্ষে কিছুই জানানো হয়নি।
অন্যদিকে, গত ২৪ ঘন্টায় ভারত বাংলাদেশের দিনাজপুর সীমান্ত ও ভোমরা ঘোজাডাঙা সীমান্তে এলাকায় অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছেন আরো ১১ জন বাংলাদেশি নাগরিক।
পুলিশ ও বিএসএফের যৌথ অভিযানে পশ্চিমবঙ্গের উত্তর দিনাজপুর জেলার ইসলামপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় এক বাংলাদেশি নাগরিককে। আটককৃতে ওই ব্যক্তির নাম পঞ্চানন পাল। তিনি বাংলাদেশের ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গা থানার বাসিন্দা। ভারতে তিনি পরিচয় বদল করে রূপায়ণ পাল নামে বসবাস করছিলেন বলে অভিযোগ। তার কাছ থেকে বাংলাদেশি পাসপোর্ট ছাড়াও ভারতের আধার কার্ড, ভোটার কার্ড ও এমনকি ভারতীয় পাসপোর্ট পর্যন্ত উদ্ধার হয়েছে।
একইদিনে ভারত থেকে অবৈধ পথে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের সময়ে ঘোজাডাঙ্গা ভোমরা সীমান্তের কাছে সরুপনগর এলাকার তারালি সীমান্ত থেকে বিএসএফের ১৪৩নম্বর ব্যাটালিয়নের হাতে আটক হয়েছেন আরো বাংলাদেশি নাগরিক।
সীমান্তরক্ষী বাহিনী জানিয়েছে আটকের পর তাদের স্বরূপনগর থানার হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। আটককৃতদের মধ্যে রয়েছে তিন শিশু, তিনজন পুরুষ ও চারজন নারী। এর সবাই বাংলাদেশের সাতক্ষীরা এবং খুলনার বাগেরহাটের বাসিন্দা।
সুচরিতা/শাহেদ