দেশের শ্রম আইন আন্তর্জাতিক শ্রম মানদণ্ডের সঙ্গে আরো সামঞ্জস্যপূর্ণ করা হচ্ছে ব‌লে জা‌নি‌য়ে‌ছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব এএইচএম সফিকুজ্জামান।

রবিবার (২৫ মে) সচিবালয়ে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সভা কক্ষে ‘অ্যাডভান্সিং ডিসেন্ট ওয়ার্কস ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্রকল্পের প্রথম পিএসি কমিটির সভায় তি‌নি এ কথা ব‌লেন।

সভাপতির বক্তব্যে সচিব এএইচএম সফিকুজ্জামান বলেন, “আইএলওর সহায়তায় শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, শ্রম অধিদপ্তর, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর  ও শ্রম আদালতের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে বিভিন্ন সভা, সেমিনার, ওয়ার্কশপ এবং প্রশিক্ষণ আয়োজন কাজ করা হচ্ছে। ট্রেড ইউনিয়ন নিবন্ধন প্রক্রিয়া সহজীকরণ, জাতীয় মজুরি কাঠামো শক্তিশালীকরণ এবং পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা নীতিমালা বাস্তবায়নে জোর দেওয়া হয়েছে।” 

আরো পড়ুন:

বৃষ্টি মাথায় কাকরাইলে তিন কারাখানার শ্রমিকদের অবস্থান

‘মুল্লুক চলো’ আন্দোলনের সেই ভয়াবহ রাতে যা ঘটেছিল

তিনি বলেন, “সরকার, শ্রমিক ও মালিক পক্ষের ত্রিপক্ষীয় সংলাপের মাধ্যমে সামাজিক ন্যায়বিচার ও অর্থনৈতিক অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করতে এই প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। তৈরি পোশাক শিল্প (আরএমজি) ও অন্যান্য খাতে নারী ও যুব শ্রমিকদের অংশগ্রহণ বাড়ানোই এ উদ্যোগের মূল লক্ষ্য। ট্যানারি, গার্হস্থ্য পোশাক উৎপাদন ও অপ্রাতিষ্ঠানিক সেলাই শিল্পে শিশুশ্রমের মূল কারণ চিহ্নিত করে তা রোধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”

“শিশুশ্রম পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা জোরদার, সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি ও বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ঝুঁকিপূর্ণ শিশুদের সহায়তা করা হবে। এছাড়া, পোশাক শিল্পসহ বিভিন্ন খাতে কর্মরত শ্রমিকদের পেশাগত দুর্ঘটনা, রোগ বা মৃত্যু ক্ষেত্রে আঘাতজনিত ক্ষতিপূরণ প্রদানের ব্যবস্থা কার্যকর করা হয়েছে। বিশেষত নারী শ্রমিক ও তাদের পরিবারকে এই সুবিধার আওতায় আনা হচ্ছে,” যুক্ত করেন সচিব।

আইএলওর কান্ট্রি ডিরেক্টর বলেন, “বাংলাদেশে শ্রম অধিকার ও শোভন কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করতে আমরা সরকার ও অংশীদারদের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করছি। আরএমজি খাতের সাফল্য অন্য শিল্পেও পর্যায়ক্রমে সম্প্রসারিত হবে বলে আশা করছি।”

সভায় আইএলও কান্ট্রি ডিরেক্টর, শ্রম মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন, নেদারল্যান্ডস, সুইডেন, কানাডা ও ডেনমার্ক দূতাবাসের প্রতিনিধি এবং শ্রম অধিদপ্তর ও কারখানা পরিদর্শন অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

বরিশাল বোর্ডের ১৬ বিদ্যালয়ে শতভাগ ফেল

বরিশাল মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডে মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষায় ১৭টি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা শতভাগ পাস করেছে। এছাড়া ১৬টি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা শতভাগ ফেল করেছে। গত বছর ২২২টি বিদ্যালয়ে শতভাগ পাস করেছিল।

বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বরিশাল মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম‌্যান অধ্যাপক মে. ইউনুস আলী সি‌দ্দিকী।

এ সময় উপ‌স্থিত ছিলেন শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক জিএম শহীদুল ইসলাম।

আরো পড়ুন:

বরিশাল বোর্ডে পাসের হার ৫৬.৩৮ শতাংশ

নারায়ণগঞ্জে অপহরণের ৭ দিনেরও স্কুলছাত্রী উদ্ধার হয়নি   

বোর্ড চেয়ারম্যান অধ্যাপক মে. ইউনুস আলী সি‌দ্দিকী জানান, বোর্ডের আওতাধীন ১ হাজার ৫০২টি বিদ্যালয়ের মধ্যে ১৭টি বিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থীরা শতভাগ পাস করেছে। এর মধ্যে রয়েছে পিরোজপুর জেলায় সর্বোচ্চ সাতটি, বরিশাল জেলায় ছয়টি, পটুয়াখালীতে তিনটি ও ভোলায় একটি বিদ্যালয়।

তিনি আরো জানান, বোর্ডের আওতায় ৭৩২টি বিদ্যালয়ে পাসের হার ৫০ শতাংশের ওপরে। আর ৫০ শতাংশের নিচে পাস করেছে ৭৩৭টি বিদ্যালয়। এছাড়া বোর্ডের আওতায় ছয় জেলায় ১৬টি বিদ্যালয়ে কেউ পাস করেনি। এর মধ্যে রয়েছে পটুয়াখালীতে চারটি, ঝালকাঠিতে চটি, ভোলায় তিনটি, বরগুনায় দুইটি, পিরোজপুরে দুইটি, বরিশালে একটি বিদ্যালয়।

বিদ্যালয়গুলোর মধ্যে পটুয়াখালী জেলা সদরের মিয়াবাড়ি মডেল উচ্চ বিদ্যালয় থেকে একজন, মির্জাগঞ্জের কিসমতপুর বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে দুইজন, দশমিনার পূর্ব আলিপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে আটজন, দুমকির জালিশা সেকেন্ডারি গার্লস স্কুল থেকে একজন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিল।

ঝালকাঠি জেলার নলছিটির ভেরণবাড়িয়া সিএসইউ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে সাতজন, মাটিভাঙ্গা সেকেন্ডারি স্কুল থেকে ১৭ জন,  জুরাকাঠি সেকেন্ডারি গার্লস স্কুল থেকে ১১ জন ও দিলদুয়ার গার্লস সেকেন্ডারি স্কুল থেকে ১৩ জন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিল।

ভোলা জেলার তজুমদ্দিনের নিশ্চিন্তপুর সিকদার বাজার সেসডিপি মডেল উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২৯ জন, চরফ্যাশনের ফরিদাবাদ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২৪ জন ও শামিম মেমোরিয়াল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ছয়জন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিল।

বরগুনা জেলা সদরের পুরাকাটা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৭ জন, বেতাগীর কাজিরাবাদ মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ১৯ জন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিল।

পিরোজপুর জেলা সদরের জুজখোলা সম্মিলিত মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় থেকে পাঁচজন ও ভান্ডারিয়ার মধ্য চড়াইল মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে পাঁচজন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিল।  এছাড়া বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলা নাজমুল আলম সিদ্দিকী মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে নয়জন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিল।

২০২৫ সালের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট ও সমমান পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ লাখ ৩৯ হাজার ৩২ জন শিক্ষার্থী। জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছাত্রী ৭৩ হাজার ৬১৬ জন এবং ছাত্র ৬৫ হাজার ৪১৬ জন।

এ বছর গড় পাসের হার ৬৮ দশমিক ৪৫। গত বছর এ হার ছিল ৮৩ দশমিক ৪। অর্থাৎ গত বছরের তুলনায় এ বছর পাসের হার কমেছে ১৪ দশমিক ৯৫।

নয়টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড এবং মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে ৩৭ হাজার ৬৮ জন জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীর মধ্যে ৩৫ হাজার ২১৮ জন শিক্ষার্থীই বিজ্ঞান বিভাগের। এছাড়া, রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের ২২ হাজার ৩২৭ জনের মধ্যে ২১ হাজার ৪৯৭ জন, দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের ১৫ হাজার ৬২ জনের মধ্যে ১৪ হাজার ৮৩১ জন, যশোর শিক্ষা বোর্ডের ১৫ হাজার ৪১০ জনের মধ্যে ১৩ হাজার ৩৭৯ জন, সিলেট শিক্ষা বোর্ডের ৩ হাজার ৬১৪ জনের মধ্যে ৩ হাজার ৪১১ জন, চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের ১১ হাজার ৮৪৩ জনের মধ্যে ১০ হাজার ৪৫৮ জন, বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের ৩ হাজার ১১৪ জনের মধ্যে ২ হাজার ৯২০ জন, ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডের ৬ হাজার ৬৭৮ জনের মধ্যে ৬ হাজার ৪৪৩ জন, কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের ৯ হাজার ৯০২ জনের মধ্যে ৯ হাজার ৪৬৩ জন এবং মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের ৯ হাজার ৬৬ জনের মধ্যে ৪ হাজার ৬৯১ জন শিক্ষার্থীই বিজ্ঞান বিভাগের।

এ বছর গত ১০ এপ্রিল শুরু হওয়া এই পরীক্ষায় মোট ৩০ হাজার ৮৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে মোট ১৯ লাখ ৪ হাজার ৮৬ জন পরীক্ষার্থী অংশ নেয়।

এর আগে ২০২৪ সালে শতভাগ পাস করেছিল ২ হাজার ৯৬৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। সে হিসাবে শতভাগ পাশ করা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা কমেছে ১ হাজার ৯৮৪টি।

একইভাবে ২০২৪ সালে একজন শিক্ষার্থীও পাস করেনি এমন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ছিল ৫১টি। যা এবার ৮৩টি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩৪টিতে।

ঢাকা/পলাশ/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ