‘ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স’ নিয়ে রায় পুনর্বিবেচনার আবেদনের শুনানি ১৫ জুলাই পর্যন্ত মুলতবি
Published: 1st, July 2025 GMT
রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের ‘ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স’ নিয়ে আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে করা আবেদনের (রিভিউ) ওপর শুনানি ১৫ জুলাই পর্যন্ত মুলতবি করেছেন আপিল বিভাগ।
রিভিউ আবেদনকারীপক্ষের আইনজীবীর সময়ের আরজির পরিপ্রেক্ষিতে আজ মঙ্গলবার আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের বেঞ্চ ওই সময় পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করেন।
এর আগে গত ১৮ মে শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগ ১ জুলাই শুনানির পরবর্তী দিন রেখেছিলেন। এর ধারাবাহিকতায় আজ বিষয়টি শুনানির জন্য কার্যতালিকার ৪ নম্বর ক্রমিকে ওঠে।
ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স সংশোধন করে ২০১৫ সালের ১১ জানুয়ারি আপিল বিভাগ রায় দেন। পরে ২০১৬ সালের ১০ নভেম্বর পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। রায়ে রাষ্ট্রের সাংবিধানিক পদধারীদের পদক্রম ওপরের দিকে রাখা ও অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা বলা হয়। পাশাপাশি জেলা জজদের পদক্রম আট ধাপ উন্নীত করে সচিবদের সমান করা হয়।
আপিল বিভাগের রায়ের পর্যবেক্ষণে প্রধান বিচারপতির পদক্রম এক ধাপ উন্নীত করে জাতীয় সংসদের স্পিকারের সমান এবং রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের (স্বাধীনতা পদক, একুশে পদক ও মহান স্বাধীনতাসংগ্রামে অংশগ্রহণের কারণে যেসব মুক্তিযোদ্ধা বীর উত্তম খেতাব পেয়েছেন) পদক্রমে যথাযথভাবে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত বলে উল্লেখ করা হয়।
পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর ওই রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) তৎকালীন চেয়ারম্যান ২০১৭ সালে পৃথক আবেদন করেন। রিভিউ আবেদনে রাষ্ট্রের ৯০ জন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল পক্ষভুক্ত হন।
আগের ধারাবাহিকতায় গত ১৮ মে রিভিউ আবেদনের ওপর শুনানি হয়। সেদিন আদালত শুনানির জন্য আজ দিন রেখেছিলেন।
আদালতে রিভিউ আবেদনকারী মন্ত্রিপরিষদ সচিবের পক্ষে রয়েছেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সালাহ উদ্দিন দোলন। তিনি অসুস্থ বলে তাঁর পক্ষে আইনজীবী আলী আকবর সময়ের আরজি জানান। এ সময় রিট আবেদনকারীর পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী নিহাদ কবির এবং ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেলদের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম উপস্থিত ছিলেন।
পরে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম প্রথম আলোকে বলেন, রিভিউ আবেদনকারীপক্ষের আইনজীবী সালাহ উদ্দিন দোলন অসুস্থ বলে তাঁর পক্ষে সময় চাওয়া হয়। আদালত দুই সপ্তাহ সময় মঞ্জুর করে শুনানির জন্য ১৫ জুলাই দিন রেখেছেন।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ রুলস অব বিজনেস অনুযায়ী, ১৯৮৬ সালে ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স তৈরি করে। রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের পর একই বছরের ১১ সেপ্টেম্বর তা জারি করা হয়। পরে বিভিন্ন সময়ে তা সংশোধন করা হয়।
সর্বশেষ সংশোধন করা হয় ২০০৩ সালের ডিসেম্বরে। সংশোধিত এই ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স তৈরির ক্ষেত্রে সাংবিধানিক পদ, সংবিধান কর্তৃক স্বীকৃত ও সংজ্ঞায়িত পদগুলো প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের নিচের ক্রমিকে রাখা হয়েছে—এমন উল্লেখ করে এর বৈধতা নিয়ে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের তৎকালীন মহাসচিব মো.
রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১০ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট আট দফা নির্দেশনাসহ ১৯৮৬ সালের ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স (সংশোধিত) অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে রায় দেন।
হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ ২০১১ সালে আপিল করে। এ আপিলের ওপর শুনানি শেষে ২০১৫ সালের ১১ জানুয়ারি আপিল বিভাগ রায় দেন। এ রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে ২০১৭ সালে করা আবেদনের ওপর গত ২৭ এপ্রিল শুনানি শুরু হয়।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: জ য ষ ঠ আইনজ ব আপ ল ব ভ গ র
এছাড়াও পড়ুন:
ভাইকে বাঁচাতে বান্ধবীকে ফাঁসানোর অভিযোগ
পাবনার ভাঙ্গুড়ায় ঘুমন্ত অবস্থায় বান্ধবীর ছবি তুলেছিলেন ভাই। বিষয়টি নিয়ে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানালে ভাইকে বাঁচাতে উল্টো বান্ধবীর নামে মিথ্যা চুরির মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে তানিয়া হক নামের এক নারীর বিরুদ্ধে।
এছাড়াও চুরির ঘটনার কোনো তদন্ত ছাড়াই মামলা নেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে থানা পুলিশের বিরুদ্ধে।
মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে পাবনা জেলা জজকোর্টের সামনে গণমাধ্যমকে এসব কথা বলেন ভুক্তভোগী নারী ইফফাত মোকাররমার আইনজীবী অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল মামুন রাসেল।
পাবনা সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আখতারুজ্জামানের আদালত ভুক্তভোগী নারী ইফফাত মোকাররমা সানিমুনকে জামিন দিয়েছেন।
অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল মামুন রাসেল বলেন, “আমার মক্কেল ইফফাত মোকাররমা দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষকতায় পেশায় নিয়োজিত। তিনি একজন সম্মানিত লোক। মামলার বাদীর সঙ্গে তার দীর্ঘদিন বন্ধুত্বের সম্পর্ক। সেই সম্পর্কের কারণে তার বান্ধবীর বাসায় গিয়েছিলেন এবং একসঙ্গে ঘোরাঘুরির পর যখন রাত্রীযাপন করছিলেন সেই সময়ে বাদীর ভাই ইফফাত মোকাররমার ছবি তুলেছিলেন। বিষয়টি টের পেয়ে তিনি তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ জানান এবং ছবিগুলো দেখানোর জন্য অনুরোধ করেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। পরেরদিন সকালে আইনী পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলে ইফফাত মোকাররমা ঢাকায় চলে যান এবং সেখানে জিডি করেন। কিন্তু এই ঘটনা ধামাচাপা দিতে উল্টো ইফফাত মোকাররমার বিরুদ্ধে মিথ্যা চুরির মামলা দায়ের করেন তার বান্ধবী।”
তিনি আরো বলেন, “বাদী তানিয়া হক উল্লেখ করেছেন ২৬ লাখ টাকার স্বর্ণালঙ্কার চুরি হয়েছে যা তিনি তার শরীরে পড়ে তার বান্ধবীর সঙ্গে ঘুড়ে বেড়িয়েছিলেন। কিন্তু ওইদিনের ঘোরাঘুরির ছবিতে তার শরীরে কোনো স্বর্ণালঙ্কার ছিল না। এছাড়াও ঘটনার দুইদিনের মাথায় যেভাবে মামলা গ্রহণ করা হয়েছে তাতে বোঝা যায় কোনো তদন্ত ছাড়াই থানা কোনো পক্ষ থেকে প্রভাবিত হয়ে মামলা গ্রহণ করেছেন।”
ভুক্তভোগী নারী ইফফাত মোকাররমা বলেন, “এই মামলার নূন্যতম প্রমাণ নেই। আমি যে একজন শিক্ষক হিসেবে আমার ছাত্রদের সামনে দাঁড়াবো সেই অবস্থাও তারা আমাকে রাখেনি। আমার সন্তানসহ পুরো পরিবার সামাজিকভাবে হেয় পতিপন্ন হচ্ছে। আমি চাই ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হোক।”
এ বিষয়ে মামলার বাদীর তানিয়া হকের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করে ফোন রিসিভ না করায় মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
তবে ভাঙ্গুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, “উনি (আইনজীবী) উনার মক্কেলের জন্য এসব কথা বলতেই পারেন। উনার মক্কেলকে সুবিধা দেওয়ার জন্য এসব অভিযোগ করেছেন। কিন্তু ঘটনার তদন্ত করে এবং আইনানুগভাবেই মামলা দায়ের হয়েছে, যা এখনও তদন্ত চলছে।”
ঢাকা/শাহীন/এস