জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রথম বার্ষিকী উদযাপন-২০২৫ উপলক্ষে খেলাফত মজলিসের পক্ষ থেকে সারাদেশে ৩৬ দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে খেলাফত মজলিস। আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনে কর্মসূচি ঘোষণা করেন দলের মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের। 

খেলাফত মজলিসের মহাসচিব জানান, ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানে খেলাফত মজলিসের নেতাকর্মীদের উপস্থিতিও ছিল ভালোভাবে। তিনি বলেন, ‘বিগত ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র জনতার এক অভূতপূর্ব অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে জাতির ঘাড়ে চেপে বসা ফ্যাসিবাদী হাসিনা সরকারের পতন ঘটে। লাখো ছাত্র-জনতার সঙ্গে একটি জনপ্রতিনিধিত্বশীল সংগঠন হিসেবে খেলাফত মজলিস ও এর সহযোগী সংগঠন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রমজলিস, ইসলামী যুব মজলিস, শ্রমিক মজলিসও শুরু থেকেই এ আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে। আন্দোলনে প্রায় ২ হাজার আন্দোলনকারী শহীদ হয়েছেন। আহত হয়েছেন প্রায় ৩০ হাজার মানুষ। শহীদ ও আহতদের তালিকায় রয়েছে স্কুল, কলেজ, মাদরাসার ছাত্র, ছাত্রী, শিক্ষক, নারী, শিশু, শ্রমিক, রাজনৈতিক নেতাকর্মীসহ অসংখ্য সাধারণ মানুষ। আমরা সকল শহীদদের মাগফিরাত ও আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করি।’

ড.

আহমদ আবদুল কাদের বলেন, ‘প্রকৃতপক্ষে ১ জুলাই থেকে শুরু হওয়া এ আন্দোলন ৩৬ দিনের মাথায় ৫ আগস্ট তথা ৩৬ জুলাই স্বৈরাচারী হাসিনা ও তার দোসরদের পলায়নের মাধ্যমে সফলতায় পৌঁছে। এ দিনটি বাংলাদেশের ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। ফ্যাসিবাদ বিরোধী এ অভ্যুত্থানের ঐক্যের চেতনাকে অটুট রাখতে এ আন্দোলন। আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ত্যাগ ও কোরবানীকে স্মরণীয় রাখতে যথাযোগ্য মর্যাদায় জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রথম বার্ষিকী উদযাপন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ইতোমধ্যেই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ৫ আগস্ট সরকারি ছুটি ঘোষণা করেছে। খেলাফত মজলিসের পক্ষ থেকে যথাযথ গুরুত্ব সহকারে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রথম বার্ষিকী উদযাপন করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।’

খেলাফত মজলিস ঘোষিত কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে:

(১) মসজিদ-মাদ্রাসাসহ সকল প্রতিষ্ঠান ও দলীয় কার্যালয়ে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের মাগফিরাত কামনা করে দোয়া মাহফিল আয়োজন করা।

(২) শহীদদের কবর জিয়ারত, শহীদ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাৎ, আহতদের খোঁজখবর নেওয়া ও সম্ভাব্য সহযোগিতা করা।

(৩), ফ্যাসিবাদী খুনিদের দ্রুত বিচার নিশ্চিত ও কাঙ্ক্ষিত সংস্কার পূর্বক দ্রুত জুলাই সনদ ঘোষণা ও একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবি জানিয়ে সারাদেশে গণজমায়েত, আলোচনা সভা, গণসংযোগ ও মতবিনিময় ও মিছিলের আয়োজন করা।

(৪) শিশু-কিশোর-ছাত্র সমাবেশ করা। ২৪ এর জুলাই অভ্যুত্থান নিয়ে কুইজ, চিত্রাঙ্কণ প্রতিযোগিতা, দেয়ালিকা প্রকাশ, আন্দোলনের ভিডিও প্রদর্শনী, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা।

(৫) ১৬ জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রথম শহীদ আবু সাঈদের শাহাদাৎ দিবসে দেশব্যাপী বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠান।

(৬) বৃক্ষ রোপণ কর্মসূচি, পরিচ্ছন্নতা অভিযান, ব্লাড গ্রুপিং ও রক্তদান কর্মসূচি পালন করা।

(৭) পোস্টার, লিফলেট, ব্যানার, ফেস্টুন প্রকাশ ও দেয়াল লিখন করা।

(৮) ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট হাসিনার পতন দিবসে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে গণ সমাবেশ/ আলোচনা সভা/ র‍্যালির আয়োজন করা ।

খেলাফত মজলিসের মহাসচিব বলেন, ‘জুলাই মাসের মধ্যেই, বড়জোর ৫ আগস্টের মধ্যে দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য হবে। এরপরই জুলাই সনদ ঘোষিত হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।’

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: জ ল ই গণঅভ য ত থ ন জ ল ই গণঅভ য ত থ ন র প রথম ছ ত র জনত র ৫ আগস ট

এছাড়াও পড়ুন:

জুলাই সনদের দ্রুত আইনি ভিত্তি দিতে হ‌বে: মাওলানা ইমতিয়াজ

জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দ্রুত দি‌তে সরকা‌রের প্রতি আহ্বান জা‌নি‌য়ে‌ছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মুহাম্মাদ ইমতিয়াজ আলম।

তি‌নি ব‌লে‌ছেন, “আইনী ভি‌ত্তি না থাক‌লে অচিরেই কতিপয় স্বার্থান্বেষী মহল এই অভ্যুত্থানকে ষড়যন্ত্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করবে।”

বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা ব‌লেন।

জুলাই সন‌দের ভি‌ত্তি নি‌য়ে শঙ্কা প্রকাশ করে ইমতিয়াজ আলম ব‌লেন, “দেশের পরিস্থিতি এবং কতিপয় নামধারী বুদ্ধিজীবীর কথাবার্তা দিনদিন অবনতি হচ্ছে। জুলাই সনদের আইনি কোনো ভিত্তি না থাকায়, জুলাই অভ্যুত্থানকে মুছে দেওয়ার ষড়যন্ত্র চলছে। তাই, দ্রুত জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি প্রদান কর‌তে হ‌বে।”

বিভিন্ন সময় বিভিন্ন চেতনার ব্যবসা করে দেশকে গোল্লায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে মন্তব্য ক‌রে তিনি বলেন, “জুলাই বিপ্লব নিয়ে কোনো ধরনের চেতনা ব্যবসা এদেশের মানুষ মেনে নেবে না।” অন্তর্বর্তীকালীন সরকার থাকা অবস্থায় রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনায় জুলাইয়ের সঠিক ইতিহাস লেখার আহ্বান জানান তিনি। 

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের এই নেতা বলেন, “জুলাইয়ে শহীদ এবং আহতরা হলো এই আন্দোলনের মূল মাস্টারমাইন্ড। তাদেরকে দেখেই সাধারণ জনতা আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েন। জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি না থাকলে সহস্রাধিক শহীদ এবং লক্ষাধিক আহতদের কোনো একসময় দেশদ্রোহী, বিশ্বাসঘাতক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করলেও কিছু করার থাকবে না। আহতদের পরিপূর্ণ চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতেও অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অনেকটাই ব্যর্থ হয়েছে।” আহতদের পরিপূর্ণ পুনর্বাসন জরুরি বলে মনে করেন তিনি। 

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জুলাই সনদের দ্রুত আইনি ভিত্তি দিতে হ‌বে: মাওলানা ইমতিয়াজ
  • ফেনীতে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাস দোকানে, নিহত ৩
  • গণঅভ্যুত্থানে হত্যায় বিএনপি নেতাকর্মীদের আসামি করার প্রতিবাদে বিক
  • চেন্নাইয়ে থার্মাল পাওয়ার প্ল্যান্টে  দুর্ঘটনায় ৯ শ্রমিক নিহত
  • পাকিস্তানে নিরাপত্তা বাহিনীর সদর দপ্তরের কাছে বিস্ফোরণ, নিহত ১০
  • গ্রামীণ ব্যাংক ও রাষ্ট্র চালানো এক জিনিস না: ফরহাদ মজহার
  • জুলাই গণঅভ্যুত্থান সাংস্কৃতিক ভিন্নতাকে শক্তিতে রূপান্তর করেছে: সংস্কৃতি উপদেষ্টা