সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের ঘাগড়ামারী এলাকায় অভিযান চালিয়ে হরিণের মাথা, পা ও মাংস জব্দ করেছে বনরক্ষীরা। 

বুধবার (১৫ জানুয়ারি) বিকেলে এই অভিযান পরিচালিত হয়। এ সময় কাউকে আটক করতে স্বক্ষম না হলেও শিকারি চক্রের তিন সদস্যকে শনাক্তের কথা জানিয়েছে বন বিভাগের কর্মকর্তা।

সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের ঢাংমারী স্টেশনের কর্মকর্তা সুরঞ্জিত জানান, সুন্দরবনে হরিণ শিকারি চক্রের প্রবেশের খবর পেয়ে বনরক্ষীরা অভিযান চালায়। বনকর্মীদের দেখে শিকারিরা ধারালো অস্ত্র উঁচিয়ে হুমকি দেয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বনরক্ষীরা ফাঁকা গুলি ছুড়লে শিকারিরা ৩০ কেজি হরিণের মাংস, হরিণের দুটি মাথা ও সাতটি পা ফেলে পালিয়ে যায়।

আরো পড়ুন:

সুন্দরবনে কাকড়া আহরণে দুই মাসের নিষেধাজ্ঞা

সুন্দরবন রক্ষার প্রচারণায় ওয়াইল্ডলাইফ ফটোগ্রাফার তাসফিয়া

তিনি আরো জানান, অভিযানের সময় পালিয়ে যাওয়া চারজন শিকারির মধ্যে তিনজনের পরিচয় শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে বন আইনে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। উদ্ধারকৃত মাংস বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) বাগেরহাট আদালতে পাঠানো হবে।

ঢাকা/শহিদুল/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ন দরবন

এছাড়াও পড়ুন:

সমুদ্র থেকে ভেসে আসা প্লাস্টিকে দূষিত সুন্দরবন

বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ সুন্দরবন এখন সমুদ্র থেকে ভেসে আসা প্লাস্টিক বর্জ্যে বিপর্যস্ত। বঙ্গোপসাগরের ঢেউয়ে ভেসে আসা বোতল, পলিথিন, প্যাকেট ও প্লাস্টিক সামগ্রী জমে থাকছে বনের বিভিন্ন খাল, চর ও তীরবর্তী এলাকায়। ফলে শুধু বনাঞ্চলের সৌন্দর্যই নষ্ট হচ্ছে না, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে প্রাণী ও পুরো বনের বাস্তুতন্ত্র।

এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় সুন্দরবনকে প্লাস্টিকমুক্ত রাখতে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে বন বিভাগ। ইতোমধ্যে তারা পূর্ব সুন্দরবনের ডিমের চর ও কচিখালী এলাকায় শুরু করেছে বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রম।

আরো পড়ুন:

সুন্দরবনে দস্যুদের আস্তানা থেকে ৪ জেলে উদ্ধার

সুন্দরবনে কুমিরের আক্রমণে জেলে নিহত

সুন্দরবন পূর্ব বনবিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা (ডিএফও) রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, “বনের বিভিন্ন স্থানে পরিদর্শনে গিয়ে দেখি, সমুদ্র তীরবর্তী এলাকাগুলোতে বিপুল পরিমাণ প্লাস্টিক বর্জ্য জমে আছে। এগুলো পরিবেশ এবং বনের প্রাণীদের জন্য ভয়াবহ হুমকি।”

তিনি বলেন, “ডিমের চর ও কচিখালীর সমুদ্র তীরবর্তী এলাকায় বনকর্মীরা চলতি মাসের শুরুতে প্লাস্টিক অপসারণ করেছেন। প্রতি মাসের প্রথম তিন দিনের যেকোনো একদিন বন বিভাগের কর্মীরা বনের অন্য এলাকাগুলোতেও প্লাস্টিক বর্জ্য অপসারণের কাজ করবেন। এসব সংগ্রহ করা বর্জ্য খুলনায় নিয়ে রিসাইকেল করার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এতে একদিকে বন পরিচ্ছন্ন থাকবে, অন্যদিকে পরিবেশও কিছুটা সুরক্ষিত থাকবে।”

বঙ্গোপসাগরে চলাচলকারী জাহাজ, ট্রলার ও পর্যটকবাহী নৌযান থেকে ফেলা বর্জ্যই মূলত সমুদ্রপথে ভেসে সুন্দরবনে ঢুকছে। জোয়ারের পানিতে এসব বর্জ্য মাইলের পর মাইল ছড়িয়ে পড়ে।

সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় কাজ করা সংগঠন সেভ দ্য সুন্দরবন ফাউন্ডেশন-এর চেয়ারম্যান ড. শেখ ফরিদুল ইসলাম বলেন, “সমুদ্রগামী জাহাজগুলো থেকে বিপুল পরিমাণে বর্জ্য ফেলার কারণে তা সমুদ্রের পানিতে ভেসে সুন্দরবনসহ উপকূলীয় এলাকায় প্রবেশ করছে। এই বর্জ্য মানবদেহের জন্য যেমন ক্ষতিকর, তেমনি এটি সুন্দরবনের প্রাণ-প্রকৃতিকেও মারাত্মকভাবে বিপর্যস্ত করছে। মাছের শরীরে এই বর্জ্য প্রবেশ করে তা মানবদেহে পৌঁছে বড় ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করছে।”

তিনি মনে করেন, “সমুদ্রগামী জাহাজগুলোর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিষয়ে কঠোর মনিটরিং প্রয়োজন। পাশাপাশি পর্যটকবাহী নৌযানগুলোতে একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করা জরুরি।”

বন বিভাগ জানিয়েছে, সুন্দরবনকে প্লাস্টিকমুক্ত রাখার এই উদ্যোগে স্থানীয় জনগণ, পরিবেশবাদী সংগঠন ও পর্যটকদের সহযোগিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সচেতনতা বৃদ্ধি ও নিয়মিত মনিটরিংয়ের মাধ্যমে এই বিশাল জীববৈচিত্র্যমণ্ডিত বনকে দূষণমুক্ত রাখার চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।

ঢাকা/শহিদুল/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সমুদ্র থেকে ভেসে আসা প্লাস্টিকে দূষিত সুন্দরবন
  • সুন্দরবনে হরিণ শিকারের ৫০ ফাঁদ ও কাঠ জব্দ