ফ্যাসিবাদের দোসরদের বিচার, ককটেল হামলাসহ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ঘটা সব ন্যক্কারজনক ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে শাখা ছাত্রদল।

রবিবার (৪ মে) দুপুর ১২টায় বুদ্ধিজীবী চত্বর সংলগ্ন রাবি শাখা ছাত্রদলের দলীয় টেন্টে এ কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।

শাখা ছাত্রদলের অভিযোগ, সম্প্রতি রেজিস্ট্রারের বাসভবনে ককটেল হামলা, আবাসিক হলে কোরআন পোড়ানোসহ একের পর এক ন্যাক্কারজনক ঘটনার মাধ্যমে রাবির আইনশৃঙ্খলার চরম অবনতি ঘটেছে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত ও ফ্যাসিস্ট হাসিনার নিষিদ্ধ ঘোষিত সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগের হামলাকারী চিহ্নিত, জুলাই-আগস্টে গণহত্যায় মদদদাতা শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানায় সংগঠনটি।

আরো পড়ুন:

রাবির ‘সি’ ইউনিটের ফল প্রকাশ

রাবির অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাচন স্থগিত, প্রতিবাদে মানববন্ধন

এ সময় শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক সর্দার জহিরুল ইসলাম বলেন, “ছাত্রদল সবসময় সত্য ও সংগ্রামের পক্ষে রয়েছে। রাবি ছাত্রদল সবসময় সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে ভাবে। জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে কার কেমন ভুমিকা ছিল, তা আমরা জানি। এখন সবাই আসছে ক্রেডিট নিতে। উপাচার্য স্যারকে বলবো, আসুন আমরা একসঙ্গে মিলেমিশে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ ঠিক রাখি।”

আহ্বায়ক সুলতান আহমদ রাহী বলেন, “দীর্ঘ ১৫ বছর নির্যাতনের শিকার হয়েও সাধারণ মানুষের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে বুকের রক্ত দিয়ে সংগ্রাম করেছি। আমাদের নেতাকর্মীদের রক্তের উপরে আজকের বাংলাদেশ টিকে রয়েছে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় টিকে রয়েছে। আমরা অপশক্তির বিরুদ্ধে আন্দোলন করে সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজীর রাজনীতি থেকে মুক্তি চেয়েছিলাম। অথচ গতদিন দেখলাম টাকার শক্তিকে কাজে লাগিয়ে বহিরাগতদের নিয়ে এসে রাবি উপাচার্যকে আটকে রেখে তাদের অযৌক্তিক দাবি আদায় করা হলো।”

তিনি আরো বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা আতঙ্কে থাকে, কখন না জানি সেই বর্বর হামলাকারীরা তাদের রগ কাটে, কখন তাদের পিটিয়ে হত্যা করে। আমাদের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের শরীরে এক বিন্দু পরিমাণ রক্ত থাকাকালে কোনো সাধারণ শিক্ষার্থীর নিরাপত্তা হুমকিতে পড়বে, তা কখনই হবে না।”

অবস্থান কর্মসূচি শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো প্রদক্ষিণ করে জোহা চত্বরে এসে শেষ হয়। অবস্থান কর্মসূচি ও বিক্ষোভ মিছিলে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল শাখার নেতৃবৃন্দ, রাজশাহী মহানগর শাখার নেতৃবৃন্দসহ, রাবি ছাত্রদলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দসহ প্রায় দুই শতাধিক কর্মী উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ছ ত রদল ছ ত রদল র

এছাড়াও পড়ুন:

সাহিত্য রাজনৈতিক বিভাজন ভেঙে দেয়: ফরহাদ মজহার 

সাহিত্য রাজনৈতিক বিভাজন ভেঙে দেয় বলে মন্তব্য করেছেন কবি ও দার্শনিক ফরহাদ মজহার। তিনি বলেন, সাহিত্য সবসময়ই রাজনৈতিক শক্তির বাইরে দাঁড়িয়ে থাকে। কারণ সাহিত্য বিভাজনকে ভেঙে দেয়, নতুন সম্বন্ধ তৈরি করে। ফলে সাহিত্য কখনো সরাসরি রাজনীতির হাতিয়ার হয়ে উঠলেও, তা রাজনীতিকে চ্যালেঞ্জ করেই টিকে থাকে। রাজনীতি বুঝলে সাহিত্যও বোঝা যাবে। সাহিত্য শুধু জাতীয়তাবাদী বয়ান নয় বরং সার্বজনীনতার আকাঙ্ক্ষাও।

শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৪টায় রাজধানীর সংস্কৃতি বিকাশ কেন্দ্রে মোহাম্মদ রোমেলের প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ ‘অধরা শহীদি মিছিল’–এর ওপর পাঠ, আবৃত্তি ও পর্যালোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

সাহিত্য ও চিন্তাশীলতার এই আয়োজনে উপস্থিত বাংলা একাডেমীর মহাপরিচালক মোহাম্মদ আজম, গবেষক কুদরত-ই-হুদা এবং কবি ও ‘বিবিধ’ পত্রিকার সম্পাদক ইকতিজা হাসান। সঞ্চালনায় ছিলেন লেখক ও চিন্তক উদয় হাসান। আয়োজক ছিল ‘বায়োস্কোপ আড্ডা’।

বই প্রসঙ্গে ফরহাদ মজহার বলেন, শহীদি মিছিল শুধু একটি বই নয়, এটি একটি রাজনৈতিক অভিব্যক্তি। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের স্মৃতি বহন করে এই নাম। বইয়েই কবিতাগুলো ২০১৩ সাল থেকে লেখা হয়েছে, যার ভেতরে আছে বাংলাদেশ রাষ্ট্র ও রাজনীতিকে নতুনভাবে দেখার আকাঙ্ক্ষা।

কবি সম্পর্কে তিনি বলেন, রোমেল এখনো বাইনারি থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত নন। তাঁর কবিতায় গ্রাম বনাম শহর, নাগরিকতা বনাম প্রকৃতি, আবেগ বনাম যুক্তির দ্বন্দ্ব প্রকট। তবে তিনি এই দ্বৈততার ভেতর থেকেও নতুন ভাষা নির্মাণের সম্ভাবনা তৈরি করছেন। 

আলোচনায় মোহাম্মদ আজম বলেন, রোমেল প্রচলিত কাব্যধারায় কবিতা লেখেননি। তাঁর কবিতায় বাংলার ভাব, কৃষি, নাগরিক সংকট, রাজনৈতিক ভাষ্য ও একান্ত ব্যক্তিগত অনুভব একত্রে ধরা পড়ে। এইসব উপাদানে ফরহাদ মজহারের ছায়া লক্ষ্য করা যায়।

তিনি আরও বলেন, রোমেলের কবিতা শরীরকে একটি কেন্দ্রীয় মেটাফোর হিসেবে ব্যবহার করেছে। প্রেম, আবেগ, ভালোবাসা সবই সেখানে শরীরের ভেতর দিয়ে প্রকাশিত।

সম্পর্কিত নিবন্ধ