প্রতিবেশী এক যুবকের সঙ্গে গত শুক্রবার পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় কলি আক্তারের (২২)। কিন্তু, হাতের মেহেদীর রং না শুকাতেই নববধূ গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন স্বজনেরা। মাদারীপুর সদর উপজেলার ঝাউদি ইউনিয়নের টুবিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

নিহতের স্বজনেরা জানান, প্রায় পাঁচ বছর আগে টুবিয়া গ্রামের কাতার প্রবাসী আসলাম মাতুব্বরের (৩১) সঙ্গে কলির বিয়ে হয়। তাদের সংসারে একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। পারিবারিক কলহের জেরে দেড় মাস আগে আসলামের সঙ্গে কলির বিচ্ছেদ হয়। এরপর সন্তানকে নিয়ে বাবার বাড়িতে চলে আসেন কলি। গত শুক্রবার পারিবারিকভাবে কলির সঙ্গে প্রতিবেশী মন্নান খার ছেলে আলী খার (৩০) বিয়ে হয়। এর জেরে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন আসলামের পরিবারের লোকজন। শনিবার (৩ মে) সকালে তারা কলিদের বাড়িতে এসে কলির কোল থেকে তার আড়াই বছরের ছেলেকে নিয়ে যান। এর জেরে ওই দিন সন্ধ্যায় গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন কলি।

আরো পড়ুন:

সাতক্ষীরায় কলেজছাত্রীর গায়ে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যা

ফরিদপুরে ঋণের চাপে কৃষকের আত্মহত্যা

কলির বাবা সালাম খা বলেন, ‘‘মেয়ের অশান্তির কারণে আসলামের সঙ্গে ডিভোর্স করাই। গত শুক্রবার কলির অন্যত্র বিয়ে দিই। এই খবরে আসলামের পরিবারের লোকজন আমার নাতিকে জোড় করে তুলে নিয়ে যায়। মেয়ে এই ঘটনা সইতে না পেরে আত্মহত্যা করেছে। এই ঘটনায় আসলাম ও তার পরিবারের সদস্যদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির পাশাপাশি কলির ছেলেকে আমাদের কাছে ফেরত দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।’’

মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো.

জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘‘মায়ের কাছ থেকে শিশুকে নেওয়ার পরপরই এই ঘটনা ঘটেছে। নিহতের স্বজনদের কাছ থেকে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

এদিকে, এ ঘটনার পরই পালিয়েছে আসলামের পরিবারের লোকজন। তাই তাদের পক্ষের কারো বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

ঢাকা/বেলাল/রাজীব

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র পর ব র র আসল ম র

এছাড়াও পড়ুন:

শেখ হাসিনাকে কোনো অবস্থাতেই ফেরত পাঠাবে না ভারত: রাজনৈতিক বিশ্লেষ

২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় ক্ষমতাচ্যুত পলাতক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। মামলার অপর আসামি সাবেক পুলিশ প্রধান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে দেওয়া হয়েছে পাঁচ বছরের সাজা।

গণ-অভ্যুত্থানের মুখে ২০২৪ সালের আগস্টে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা এবং এরপর থেকে তিনি ভারত সরকারের আশ্রয়েই রয়েছেন। ঢাকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ শেখ হাসিনার অনুপস্থিতি তার বিচার পরিচালনা করে। আজ সোমবার রায় ঘোষণার সময় আসামিদের মধ্যে কেবল সাবেক পুলিশ প্রধান আবদুল্লাহ আল-মামুন আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায় নিয়ে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরাকে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন ভারতের জিন্দাল গ্লোবাল বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিণ এশিয়ান স্টাডিজের বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শ্রীরাধা দত্ত। তিনি বলেন, “হাসিনার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের আদালতের এই রায় প্রত্যাশিত ছিল, কিন্তু সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাবে না ভারত।” 

আলজাজিরাকে দেওয়া মন্তব্যে দত্ত আরো বলেন, “কোনো অবস্থাতেই ভারত তাকে প্রত্যর্পণ করবে না। গত দেড় বছরে আমরা দেখেছি যে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্ক সবচেয়ে ভালো অবস্থায় নেই এবং অনেক সময়ই ভঙ্গুর হয়ে পড়েছে।”

দত্ত বলেন, “হাসিনার মৃত্যুদণ্ড প্রত্যাশিত ছিল।”

তিনি বলেন, “সবাই বাংলাদেশের পরিস্থিতি দেখেছেন। সবাই আশা করেছিলেন যে হাসিনার বিচার হবে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার পর্যবেক্ষকরা একমত যে, বাংলাদেশে ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম দেশের আইনি ব্যবস্থা অনুসরণ করেছে।”

দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক এই রাজনৈতিক বিশ্লেষকের মতে, “নিরস্ত্র শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে সংঘটিত অপরাধ সম্পর্কে কারো সন্দেহ নেই। স্পষ্ট প্রমাণ রয়েছে যে, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী সরাসরি গুলি করার নির্দেশ দিয়েছিলেন।”

দত্তের ভাষ্যমতে, “আওয়ামী লীগ এখন একটি পাল্টা ব্যাখ্যা তৈরির তৈরি করার চেষ্টা করবে। কিন্তু বাংলাদেশিরা মূলত বিশ্বাস করেন যে- হাসিনা মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছেন।”

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ