ফরিদপুরের বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ মাসুদ হোসেন মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। শনিবার রাত সোয়া ১২টার দিকে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে মারা যান তিনি। তার বয়স হয়েছিল ৭০ বছর। রোববার বাদ আসর ফরিদপুর শহরের সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ মাঠে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় জানাজা শেষে স্থানীয় আলীপুর কবরাস্থানে মরহুমের দাফন সম্পন্ন হয়।

মাসুদ হোসেনের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, তিনি দীর্ঘদিন হৃদরোগ, ডায়বেটিকস, চোখের সমস্যাসহ নানা রোগে ভুগছিলেন। শনিবার রাতে রাজধানীর বসুন্ধরা এলাকায় মেয়ের বাসায় অসুস্থ হয়ে পড়লে দ্রুত তাকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক রাত সোয়া ১২টার দিকে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ মাসুদ হোসেনের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন হা-মীম গ্রুপের ব্যাবস্থাপনা পরিচালক এ.

কে. আজাদসহ বিশিষ্টজনেরা। এছাড়াও  সৈয়দ মাসুদ হোসেনের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন সমকালের উপদেষ্টা সম্পাদক আবু সাঈদ খান, জাতীয়তাবাদী কেন্দ্রীয় মহিলা দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নায়াব ইউসুফ, ফরিদপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সৈয়দ মোদাররেস আলী ইছাসহ অন্যরা।

রোববার বাদ আসর ফরিদপুর শহরের সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ মাঠে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় জানাজা শেষে স্থানীয় আলীপুর কবরাস্থানে মরহুমের দাফন সম্পন্ন হয়। ফরিদপুর সদরের সহকারী কমিশনার (ভুমি) মো. শফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে জেলা পুলিশের একটি টিম রাস্ট্রীয় মর্যাদায় বীর মুক্তিযোদ্ধাকে র্গাড অব অনার প্রদান করে। জানাজায় ইমাম ছিলেন মওলানা হেলালউদ্দীন।

জানাজার আগে সৈয়দ মাসুদ হোসেনের জীবন ও কর্মের স্মৃতিচারণ করে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন হা-মীম গ্রুপের ব্যাবস্থাপনা পরিচালক এ. কে. আজাদ, ফরিদপুর মুসলিম মিশনের সম্পাদক প্রফেসর এম এ সামাদ, জামায়াতের মজলিশে শূরার সদস্য প্রফেসর আবদুত তাওয়াব, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক জুলফিকার হোসেন জুয়েল, সদস্য সচিব এ কে কিবরিয়া স্বপন প্রমুখ।

সৈয়দ মাসুদ হোসেন ফরিদপুর শহরের পূর্ব খাবাসপুর এলাকার বাসিন্দা। তিনি ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় চকবাজার বণিক সমিতির সাবেক সভাপতি। এছাড়াও তিনি ফরিদপুর সাহিত্য ও সংস্কৃতি উন্নয়ন সংস্থা, অন্ধ কল্যাণ সমিতি, ডায়াবেটিক সমিতিসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সেবামূলক সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

পুলিশের উপস্থিতিতে অপহরণের অভিযোগ, দুইদিনেও উদ্ধার হয়নি পল্লী চিকিৎসক

গাইবান্ধার সাদুল্লাপুরে পুলিশের উপস্থিতিতে তরিকুল ইসলাম (৩৫) নামে এক পল্লী চিকিৎসককে অপহরণের অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে উপজেলার ভাতগ্রাম ইউনিয়নের হাতি চামটার ব্রিজ এলাকা থেকে তাকে অপহরণ করেন দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। 

ভিডিওতে দেখা যায়, মাথায় হেলমেট এবং পুলিশের পোশাক পরিহিত এক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে রয়েছেন। তার সামনেই কয়েকজন ব্যক্তি তরিকুল ইসলামকে টেনে-হিঁচড়ে একটি অটোভ্যানে তুলছেন। এ সময় আশপাশের কয়েকজন তাকিয়ে দেখেন। তরিকুল তাদের সাহায্য চাইলেও সবাই দাঁড়িয়ে ছিলেন। এ সময় দুর্বৃত্তদের একজনকে বলতে শোনা যায়, 'এ এখানে প্রশাসনের লোক আছে।' 

অপহরণের শিকার তরিকুল ইসলাম ভাতগ্রাম ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর কুটিপাড়া গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে। ভাতগ্রাম বাজারে পল্লি চিকিৎসক হিসেবে তার চেম্বার ও ওষুধের দোকান রয়েছে। তিনি স্থানীয় একটি মসজিদে ইমামের দায়িত্ব পালন করতেন।

এদিকে অপহরণের দুইদিন পার হলেও পুলিশ তাকে উদ্ধার করতে না পারায় উদ্বেগ জানিয়েছেন স্বজনরা। তবে অপহরণকারীরা এ পর্যন্ত ৪ থেকে ৫ বার ফোন দিয়ে অপহৃত তরিকুলের ছোটভাই হিরুর কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করেছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। 

এ ঘটনায় গত শনিবার রাতে পল্লী চিকিৎসকের ছোটভাই হিরু মিয়া সাদুল্লাপুর থানায় ৮ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও সাত-আটজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন। 

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, তরিকুল ইসলামের ঔষধের দোকানে সুমন নামে এক ব্যক্তি ৬ মাস কাজ করেছেন। পরে তাকে কাজ থেকে বাদ দেওয়া হলে বিভিন্ন অজুহাতে তিনি  টাকা দাবি করে আসছিলেন দোকান মালিক তরিকুলের কাছে। এ নিয়ে কয়েকবার স্থানীয়ভাবে শালিসি বৈঠকও হয়। গত শুক্রবার বিকেলে তরিকুল বাড়ি থেকে মোটরসাইকেলে ভাতগ্রাম বাজারে তার দোকানে যাচ্ছিলেন। পথে সুমনসহ স্থানীয় কয়েকজন দুর্বৃত্ত তার পথরোধ করে মারধর করেন এবং জোরপূর্বক তাকে অটোরিকশা ভ্যানে তুলে নিয়ে যায়।

পল্লি চিকিৎসকের ছোটভাই হিরু মিয়া বলেন, অভিযোগ দেওয়ার দুইদিন হয়ে গেল, এখনো আমার ভাইকে উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। অথচ সেখানে সাদুল্লাপুর থানার একজন এএসআই উপস্থিত ছিলেন। অপহরণকারীরা সবার পরিচিত। দিনে দুপুরে এ ধরনের ঘটনা ঘটানোর কারণে ভাইকে নিয়ে খুব দুঃশ্চিন্তায় আছি আমরা। তার দুই মেয়ে শুধু কাঁদছে। 

তিনি আরও বলেন, সবশেষ রোববার দুপুরে অপহৃত তরিকুলের কাছে থাকা মোবাইল ফোন থেকে দুর্বৃত্তরা ফোন করে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করেছেন। প্রশাসনের কাছে তার বড়ভাইকে দ্রুত উদ্ধার করে পরিবারের কাছে ফেরত দেওয়ার অনুরোধ করেন তিনি। 

রোববার রাত ৯টায় সাদুল্লাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাজউদ্দিন খন্দকার সমকালকে বলেন, ‘অপহরণের সময় পুলিশের পোশাক পরিহিত এক ব্যক্তির উপস্থিতির কথা শুনেছি। কিন্তু স্পষ্ট নয়। অপহরণের শিকার তরিকুল ইসলামকে উদ্ধারে পুলিশের অভিযান চলামান রয়েছে।’ 
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ