মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার সব বৈধ এজেন্সির জন্য উন্মুক্ত করার দাবি
Published: 5th, May 2025 GMT
মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠাতে নতুন করে আর কোনো সিন্ডিকেট বা চক্র চান না রিক্রুটিং এজেন্সি মালিকদের সংগঠন বায়রার সদস্যরা। তাঁরা বলছেন, এ শ্রমবাজার কোনো বিশেষ ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর জন্য নয়; বরং সব বৈধ এজেন্সির জন্য মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার উন্মুক্ত করতে হবে। সিন্ডিকেট ঠেকাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন তাঁরা।
আজ সোমবার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে ওই স্মারকলিপি দেওয়া হয়। এরপর প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সামনের সড়কে মানববন্ধন করেন বায়রার সদস্যরা। এ সময় সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে কম খরচে কর্মী পাঠানো নিশ্চিত করার দাবি তোলেন তাঁরা। এর জন্য কর্মী পাঠাতে মালয়েশিয়ার সঙ্গে ইতিমধ্যে সই করা সমঝোতা স্মারক সংশোধনেরও দাবি তোলা হয়।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, সিন্ডিকেটের মূল হোতা বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মালয়েশিয়ার নাগরিক আমিন নূর, পলাতক রুহুল আমিন ওরফে স্বপন ও তাঁদের আওয়ামী সহযোগীরা বর্তমানে প্রভাবশালী কিছু রাজনৈতিক নেতাকে নিয়ে সিন্ডিকেট তৈরিতে তৎপর। সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে তারা এ তৎপরতা চালাচ্ছে। এ সরকারের সময়ে কোনোভাবেই আওয়ামী লীগের তৈরি সিন্ডিকেট পুনর্গঠিত হতে পারে না।
এতে আরও বলা হয়, মালয়েশিয়ায় কর্মী নিয়োগের বিতর্কিত অনলাইন সফটওয়্যার বাতিল করার জন্য মালয়েশিয়া সরকারের কাছে দাবি জানাতে হবে। সিন্ডিকেটের মূল হোতাদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।
স্মারকলিপিতে স্বাক্ষর করেছেন বায়রার সাবেক জ্যেষ্ঠ ভাইস প্রেসিডেন্ট রিয়াজুল ইসলাম, ভাইস প্রেসিডেন্ট নোমান চৌধুরী, বিএনপির ঢাকা জেলা সভাপতি ও বায়রার সদস্য খন্দকার আবু আশফাক, সাবেক যুগ্ম মহাসচিব মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম ও আকবর হোসেন, সাবেক সহসভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন, নির্বাহী কমিটির সাবেক সদস্য মোস্তফা মাহমুদ।
স্মারকলিপিতে তাঁরা অভিযোগ করেছেন, সিন্ডিকেটকে গতবার কর্মীপ্রতি ১ লাখ ৫২ হাজার টাকা করে দিতে হয়েছে। গতবার ৫ কোটি টাকা করে চাঁদা নিয়ে এজেন্সিকে সিন্ডিকেটের সদস্য করা হয়েছে। এবার ১৪ কোটি টাকা করে আদায় করা হচ্ছে।
এবার কম খরচে কর্মী পাঠানোর একটি বিকল্প উপায়ও তুলে ধরা হয়েছে স্মারকলিপিতে। এতে বলা হয়, সরকারিভাবে জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি) আগ্রহী কর্মীদের ডেটাবেজ তৈরি করতে পারে। সেই ডেটাবেজ থেকে রিক্রুটিং এজেন্সি কর্মী সংগ্রহ করবে। সরকার–নির্ধারিত খরচ ব্যাংকের মাধ্যমে জমা দেবে কর্মী। পুরো নিয়োগপ্রক্রিয়া তত্ত্বাবধান করবে বিএমইটি।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, মালয়েশিয়া ১৪টি দেশ থেকে কর্মী নিলেও কোনো দেশের জন্য নির্দিষ্ট এজেন্সিকে বাছাই করে দেওয়া হয় না। ওই সব দেশ থেকে সব এজেন্সি কর্মী পাঠাতে পারে। গত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও সুপরিকল্পিতভাবে দুই দেশের মধ্যে স্বাক্ষর হওয়া সমঝোতা স্মারকে বাংলাদেশের রিক্রুটিং এজেন্সি মালয়েশিয়া সরকারকে বাছাই করার দায়িত্ব দেওয়ার মধ্য দিয়ে সিন্ডিকেটের বীজ বপন করা হয়।
আরও পড়ুন২০০ কোটি ডলার আত্মসাৎ করেছে মালয়েশিয়া চক্র২৮ ডিসেম্বর ২০২৪এর আগে একই দাবিতে ৪৫৩টি রিক্রুটিং এজেন্সি মালিকদের স্বাক্ষরসহ গত ২১ এপ্রিল প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে স্মারকলিপি জমা দেন বায়রার সদস্যরা।
আরও পড়ুনমালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠাতে সিন্ডিকেট চান না বায়রার সদস্যরা, মন্ত্রণালয়ে স্মারকলিপি জমা২১ এপ্রিল ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স ম রকল প ত সরক র র র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
আব্দুল কাদের শিবিরের সাথী ছিলেন, দাবি ঢাবি শিবিরের সাবেক সভাপতির
বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আব্দুল কাদের ছাত্রশিবিরের সাথী ছিলেন বলে দাবি করা হয়েছে।
সোমবার (৪ আগস্ট) নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক পোস্টে এ দাবি করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শাখা ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি ও আপ বাংলাদেশের মুখ্য সংগঠক রাফে সালমান রিফাত।
ছাত্রশক্তি কীভাবে গঠিত হয়েছিল, শিবির তাদের কীভাবে অর্থনৈতিক ও লজিস্টিক সহযোগিতা করেছিল, ২০১৮ সালের দুটি আন্দোলনে শিবিরের ভূমিকা, জুলাই অভ্যুত্থানের শিবিরের ভূমিকা ইত্যাদি বিষয় নিয়েও ওই পোস্টে বর্ণনা দিয়েছেন তিনি।
আরো পড়ুন:
ঐতিহাসিক জুলাইয়ের কারণে আমরা একটি ঐতিহ্যের উত্তরাধিকারী: ঢাবি উপাচার্য
বিসিএসে সার্কুলারে নেই আরবি বিভাগ, প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন
তবে রিফাতের পোস্টের কিছুক্ষণ পরই নিজের ফেসবুক প্রোফাইলে একটি পোস্ট দেন আব্দুল কাদের। তাদের ফেসবুক পোস্টটি দুটি হুবহু তুলে ধরা হলো।
রাফে সালমান রিফাত লিখেছেন, “২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তি গঠিত হয়। আমি তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিবিরের সভাপতি, সাদিক কায়েম সেক্রেটারি। ছাত্রশক্তি আত্মপ্রকাশের কয়েকদিন আগে আখতার আমাকে ফোন দিয়ে দেখা করতে চায়। জিজ্ঞেস করি, কী বিষয়? বলে, ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ ছাড়া আর কারোর রাজনীতি নাই, নতুন একটা সংগঠন নিয়ে কাজ করতে চায় তারা।”
তিনি বলেন, “তার মাস দুয়েক আগেই ক্যাম্পাসে ক্রিয়াশীল বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের ঢাবি কমিটি কার্যত বিলুপ্ত হয়। আসিফের নেতৃত্বে কমিটির সবাই একযোগে পদত্যাগ করে লেজুড়বৃত্তির অভিযোগ এনে। তারপর পেইজের নাম বদলানো সহ আরও কিছু বিষয় নিয়ে নিজেদের মধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় কাঁদা ছোড়াছুড়িও করে কেউ কেউ। যাইহোক, আমাদের সাথে দেখা করতে আসে আখতার, নাহিদ, মাহফুজ, আসিফ আর আহনাফ সাঈদ। হাতিরপুলের এক রেস্টুরেন্টে সন্ধ্যার পর শুরু হয় আলাপ-আলোচনা। আমাদের তরফে ছিলাম আমি আর সাদিক। তখনও সম্ভবত ছাত্রশক্তির নাম ফাইনাল হয়নি।”
তিনি আরো বলেন, “প্রায় ৩ ঘণ্টা সবকিছু নিয়ে বিস্তর আলোচনা হয়। প্রথমে আখতার খুব সংক্ষিপ্ত একটা ব্রিফিং দেয়। বুঝলাম যে, দলনেতা আখতার। এরপর আমি প্রশ্ন করা শুরু করি। খুটিয়ে খুটিয়ে প্রশ্ন করেছি নানা বিষয়ে। ফিলোসফি, স্ট্র্যাটেজি, ফিউচার প্ল্যান, গোল, ন্যারেটিভ, সাপোর্ট বেইজ ইত্যাদি প্রায় সবকিছু নিয়ে। থট প্রভোকিং সব আলাপ। আমার সামনেই বসা ছিল আখতার। ইন্টারেস্টিং ব্যাপার হলো, আখতার একটা প্রশ্নেরও উত্তর দিলো না। প্রায় সবগুলো প্রশ্নেরই উত্তর দিয়েছে মাহফুজ। মাঝেমধ্যে দুই একটা বিষয় অ্যাড করেছে নাহিদ। বাকি দুইজন তথা আসিফ এবং আহনাফ ছিল শুধুই নিরব শ্রোতা।”
বিফাত বলেন, “বুঝলাম, নতুন এই রাজনৈতিক উদ্যোগের প্রায় পুরোটাই মাহফুজের ব্রেইন চাইল্ড। মাহফুজ এখানে মূল আইডিওলোগ। এই উদ্যোগের থট প্রসেস ডেভেলপ করছে সে। বাকিরা এখনও চিন্তাগতভাবে অনেক পেছনে। বিশেষত আখতার ওখানে পিওর সামনের ফেইস মাত্র। যেহেতু, ডাকসুর কারণে তার একটা পরিচিতি এবং গ্রহণযোগ্যতা তৈরী হয়েছিল। তাই তাকে সামনে রেখেই সেন্ট্রিস্ট রাজনীতির নতুন পথচলা শুরু আরকি। আমাদের কাছ থেকে তারা দোয়া, সমর্থন এবং সার্বিক সহযোগিতা চাইলো। ক্যাম্পাস একটিভিজমের তখনকার যে চিরাচরিত নিয়ম, সেটির অংশ হিসেবেই সম্ভবত।”
“উল্লেখ্য, ছাত্রশিবির সাংগঠনিকভাবে রেজিমেন্টেড একটা ফোর্স। যেকোনো কর্মসূচীতে মুহুর্তের মধ্যে একটা সংগঠিত শক্তিকে অত্যন্ত শৃঙ্খলার সাথে মোবিলাইজ করার ক্যাপাসিটি তৎকালে সবচেয়ে বেশি ছিল শিবিরের। ফলে ক্যাম্পাসে স্বৈরাচারী ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে বা যেকোনো ক্রিয়েটিভ কর্মসূচী বাস্তবায়নে মাঠের কর্মী বাহিনি হিসেবে শিবিরের ম্যানপাওয়ার সাপোর্ট এবং আর্থিক ও লজিস্টিক সহযোগিতা গ্রহণ একটা ওপেন সিক্রেট বিষয় ছিল সবার মধ্যে। আর্থিক ও লজিস্টিক সহযোগিতা শুধু শিবির একাই করতো তা না, আরও অনেক ব্যক্তি বা গোষ্ঠী ছিল যারা পেছনে থেকে সহযোগিতা করতো নিয়মিত,” যুক্ত করেন রিফাত।
রিফাত আরো বলেন, “সেই আঠারোর কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকেই এই ব্যাপারটা ছাত্র অধিকার পরিষদের অ্যাক্টিভিস্টদের মধ্যে স্বতঃসিদ্ধ ব্যাপার ছিল। জিনিসটা সমন্বয় করতো বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আন্দোলন সম্পাদক। যেমন: আঠারো সালের দুইটা আন্দোলনে পেছনের ব্রেইন হিসেবে শক্তিশালী ভূমিকা পালন করেছিলো শিবিরের তৎকালীন ছাত্র আন্দোলন সম্পাদক শামীম রেজায়ীসহ বেশ কয়েকজন। যাইহোক, আমি ওদেরকে সাহস দিলাম। সহযোগিতার আশ্বাস দিলাম। সামনে এগিয়ে যেতে বললাম। কয়েকদিন পর ওদের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠান। আখতারকে আহবায়ক, নাহিদকে সদস্য সচিব করে কেন্দ্রীয় বডি এবং আসিফকে আহবায়ক ও বাকেরকে সদস্য সচিব করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিটি প্রস্তুত করা হলো।”
তিনি বলেন, “বিধিবাম হলো আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানের পর। মাহফুজ আচানক আখতার, নাহিদের বিরুদ্ধে স্ট্যাটাস দিয়ে বসলো। আমি তখনও জানতাম না, ঝামেলা কী নিয়ে। পরে কিছু কিছু জিনিস জেনেছি বিভিন্নজনের কাছ থেকে। এরপরে ক্যাম্পাস এক্টিভিজমে বেশ কিছু চড়াই-উৎরাই গেছে। অক্টোবরেই ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের হামলা নিয়ে ক্যাম্পাসে পতাকা মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে বক্তা ঠিক করা নিয়ে ছোটখাটো ঝামেলা গেছে। মানব পতাকা তৈরীর কর্মসূচী ফ্লপের কাহিনি হয়েছে। পরের বছর মার্চে প্রোডাক্টিভ রমাদান অনুষ্ঠানে হামলা কেন্দ্রিক গণ-ইফতার কর্মসূচী, তারপর জুনে নতুন করে আবার কোটা আন্দোলন।”
তিনি আরো বলেন, “জুলাইয়ে সকল সংগঠনকে ছাপিয়ে নতুন ব্যানার তৈরী হয় ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’, যেখানে সামনের ফেইস হিসেবে ছাত্রশক্তি, শিবির (যদিও শিবির তখনো প্রকাশ্য কর্মকাণ্ডে ছিল না), ছাত্র ফেডারেশন, সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধি, ডিবেট সার্কিটের পোলাপান, সাধারণ অ্যাক্টিভিস্ট সবাই ছিল। সেখানে কোনো হায়ারার্কি ছিল না। মূখ্য সমন্বয়ক বলে কেউ ছিল না। কোনো একক নেতৃত্বই ছিল না। সবাই ছিল স্রেফ সমন্বয়ক। শিবিরের প্রতিনিধি হিসেবে একাধিক ব্যক্তি ছিল, কিন্তু সাদিক কায়েম বা ফরহাদের মতো নেতৃস্থানীয় কেউ ছিল না। এমনকি গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তির কেন্দ্রীয় আহবায়ক, ডাকসুর সাবেক সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেনকে পর্যন্তও সমন্বয়ক লিস্টে অন্তর্ভূক্ত করা হয়নি।”
সাবেক ঢাবি শিবির নেতা বলেন, “যদিও প্রথম সমন্বয়ক তালিকা ঘোষিত হয় ৮ জুলাই। পরে ১৭ জুলাই আখতারকে গ্রেফতার করা হয়। আমার ধারণা, আব্দুল কাদেরকেও তখন শিবির তার নিজের প্রতিনিধি হিসেবেই কাউন্ট করতো ইন্সটিটিউট ফ্যাকাল্টির সাথী এবং জনশক্তি হিসেবে। যদিও সে ক্যাম্পাসে ছাত্রশক্তির অ্যাক্টিভিটিতেই বেশি জড়িত ছিল।”
সাবেক ঢাবি শিবির নেতা আরো বলেন, “ছাত্রশক্তি তার সেই সংক্ষিপ্ত নয় মাসের জার্নিতে ক্যাম্পাস কেন্দ্রিক নানাবিধ অ্যাক্টিভিটিতে শিবিরের সাথে কখনও প্রত্যক্ষ, কখনও প্রচ্ছন্ন সমন্বয় করে চলেছে। সেই সমন্বয় ও সম্পর্কে জোয়ার-ভাটা থাকলেও কখনও তা শত্রুতায় রূপ নেয় নাই। কাঁদা ছোড়াছুড়ি তো অনেক দূরের বিষয়। আজকে অবশ্য সবাই পলিটিক্স শিখে গেছে। এমন ভাব যেন তখন তারা শিবিরের কাউকে চিনতো না। নিজের সাবেক দায়িত্বশীল/নেতাকেও কামড় মারতে কারো তর সইছে না। ক্ষমতার অন্ধ মোহে নিজের এককালের সেইফগার্ডকেও নোংরা আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু বানিয়ে ফ্যাসিবাদকে অট্টহাস্য দেয়ার সুযোগ করে দিচ্ছে। সুন্দর।”
পাল্টা জবাবে আব্দুল কাদের ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, “আমি যখন সত্য প্রকাশ করলাম, ব্যক্তি-গোষ্ঠীর অপকর্ম, অপরাজনীতি তুলে ধরলাম; তখন আমার যুক্তিকে খণ্ডন না করে ওরা প্রচার করতে লাগলো, আমি ছাত্রলীগের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করি, আমি নাকি ছাত্রলীগ, আমি নাকি ডাকসুর জন্য এমন করি! সত্যকে মোকাবিলা করার সৎ সাহস যাদের নাই, তারাই অপ্রাসঙ্গিক বিষয় টেনে নিয়ে এসে ঘায়েল করার পায়তারায় লিপ্ত থাকে। গত ৫ বছরের জার্নিতে হাসিনা রেজিমও এইভাবে সত্যকে মোকাবিলা করতো না। তবে যে যা-ই বলেন, সত্য প্রকাশে এক চুলও পিছপা হবো না। সত্য আজ নয় কাল প্রতিষ্ঠা হবেই, সত্য প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে পিছপা হওয়া যাবে না। যে যা বলার বলুক।”
তিনি বলেন, “হাসিনার আমলে হলে থাকতে পারি নাই, বাহিরে দুর্দশায় জীবন অতিবাহিত করছি, হামলা-মামলার শিকার হইছি, জেল খাটছি, জেলে যাওয়ার কারণে একাডেমিক ইয়ার লস হইছে। এতোকিছুর পরেও একটা দিনের জন্যও লড়াই থেকে পিছু হটি নাই। সকালে মাইর খাইছি, বিকেলে আবার রাজপথে ফিরে আসছি। আর্থিক অনটনও আমার জন্য বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি। কারো কাছে একটাবারের জন্যও হাত পাতি নাই। এখন অনেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় চরিত্র হননের উদ্দেশ্যে নানান কথা ছড়ান। আমার আল্লাহ জানে, আমি আমার আর্থিক এবং উদ্দেশ্যের জায়গায় কতটুকু সৎ। যতদিন আমার ভেতরে সত্য থাকবে; ততদিন আমার বাহিরে ভয় নাই এবং ততোদিন-ই সত্য প্রতিষ্ঠার লড়াই চলবে...।”
এর আগে, রবিবার (৩ আগস্ট) আব্দুল কাদের এক ফেসবুক পোস্টে ঢাবি ছাত্র শিবিরের সাবেক সভাপতি সাদিক কায়েম ঢাবিতে ১৫ জুলাই শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারী ছাত্রলীগ নেতাদের মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার জন্য তদবির করেছেন এমন একটি স্ক্রিনশট পোস্ট করেন। সেখানে তিনি ছাত্রলীগের বেশ কয়েকজন হামলাকারী নেতাকে শিবির বলে দাবি করেন।
তবে পরবর্তীতে সাদিক কায়েম তার ফেসবুক প্রোফাইলে পাল্টা পোস্টে আব্দুল কাদেরের দাবি করা ছাত্রলীগ নেতারা কখনো শিবির করতেন না বা ৫ আগস্টের পরে শিবিরের কোন কর্মসূচিতে পাওয়া যায়নি বলে দাবি করেন। এনসিপি নেতাদের সঙ্গে হওয়া ব্যক্তিগত আলাপের স্ক্রিনশট আব্দুল কাদের অপব্যাখ্যা দিয়েছেন বলে নিন্দা জানান তিনি।
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী