’৭১ সালের পর প্রথম ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে ‘নিরাপত্তা মহড়ার’ নির্দে
Published: 6th, May 2025 GMT
নিরাপত্তা মহড়া আয়োজনে বেশ কয়েকটি রাজ্যকে নির্দেশ দিয়েছে ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। আগামীকাল বুধবার এ মহড়া অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। পাকিস্তানের সঙ্গে উত্তেজনার মধ্যেই এ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সরকারি সূত্রের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি।
এতে বলা হয়েছে, শেষবার এমন মহড়া হয় ১৯৭১ সালে। সেকারণে এ নির্দেশনা বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। এবার সম্ভাব্য শত্রু মোকাবিলায় বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ নেয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
নির্দেশনাগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো– বিমান হামলার সতর্কতামূলক সাইরেন বাজানো, শত্রুর আক্রমণ থেকে নিজেদের রক্ষার জন্য বেসামরিক নাগরিক, বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণ প্রদান, রাতে ‘ব্ল্যাক আউট’ কর্মসূচি, গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার সুরক্ষায় ব্যবস্থা নেওয়া, নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার মহড়া আয়োজন প্রভৃতি।
আরো পড়ুন:
মোদিকে মমতা: দাঙ্গায় নয়, সীমান্ত সুরক্ষায় নজর দিন
বাংলাদেশ-পাকিস্তান সীমান্তে বিএসএফের ‘ফিল্ড হেডকোয়ার্টার’ করবে ভারত
গত ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পেহেলগামে জঙ্গি হামলায় ২৬ জন বেসামরিক নিহত হওয়ার পর থেকে ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা বাড়ছেই।
এনডিটিভি জানায়, পাঞ্জাবের ফিরোজাবাদে মঙ্গলবার রাতে ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় আধ-ঘণ্টার ব্ল্যাকআউট মহড়া হয়েছে। সেনা কর্তৃপক্ষ স্থানীয় বিদ্যুৎ বিভাগকে নির্ধারিত সময়ে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রাখার অনুরোধ করেছিল।
এই মহড়ার উদ্দেশ্য যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে ব্ল্যাকআউট কৌশল প্রয়োগের প্রস্তুতি।
কাশ্মীরে জঙ্গি হামলার পর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং পাকিস্তান ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কড়া বার্তা দিয়েছেন। মোদি বলেছেন, “যারা এই ষড়যন্ত্র করেছে বা হামলা চালিয়েছে তারা কল্পনাতীত শাস্তি পাবে।’
কাশ্মীরে হামলার বদলা নিতে সশস্ত্র বাহিনীকে পালটা আক্রমণের পূর্ণ স্বাধীনতাও দিয়েছেন তিনি। আর এবার ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় দেশজুড়ে বিভিন্ন রাজ্যে ৭ মে মহড়া পরিচালনার নির্দেশ দিল।
এদিকে, গতকাল সোমবার পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মুহাম্মদ আসিফ সতর্ক করে বলেছেন, পাকিস্তানে হামলা চালালে ভারতকে দাঁতভাঙা জবাব দেওয়া হবে।
এমন পরিস্থিতিতে ভারত ও পাকিস্তানকে ‘সর্বোচ্চ সংযম’ প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।
সোমবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দপ্তরে ভারত-পাকিস্তানের সাম্প্রতিক উত্তেজনা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে জাতিসংঘের মহাসচিব বলেন, “গত কয়েক বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ উত্তেজনার মধ্যে রয়েছে এবং বর্তমানে দুই দেশই রীতিমতো ফুটন্ত অবস্থায় আছে। যদি সত্যিই যুদ্ধ বেঁধে যায়, তাহলে ওই অঞ্চলের পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে।”
“যেহেতু উভয় দেশই একটি জটিল পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে, তাই বর্তমানে উভয়েরই উচিত হবে শান্ত থাকা। একমাত্র তাহলেই খাদের কিনারা থেকে সরে আসা সম্ভব। আমি ভারত ও পাকিস্তান উভয়কে সর্বোচ্চ সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানাচ্ছি।”
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
সংলাপ থেকে ওয়াকআউট করে আবার যোগ দিল গণফোরাম-সিপিবি
বৈষম্যের অভিযোগ তুলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের চলমান সংলাপ থেকে ওয়াকআউট করেছেন গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক ড. মিজানুর রহমান, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স এবং ১২ দলীয় জোটের সমন্বয়ক শাহাদাত হোসেন সেলিম। পরে আয়োজকদের আশ্বাসে তারা সংলাপে ফিরেছেন।
বুধবার (১৮ জুন) বিকেল পৌনে ৪টার দিকে জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আয়োজিত এ সংলাপে জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহেরের বক্তব্য শেষ হওয়ার পর বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দীন আহমদ কথা বলতে শুরু করেন। ঠিক সে সময়ই ড. মিজানুর রহমান সংলাপস্থল ত্যাগ করেন। তার পেছন পেছন বেরিয়ে আসেন রুহিন হোসেন প্রিন্স ও শাহাদাত হোসেন সেলিম।
সংলাপস্থল ত্যাগের কারণ সম্পর্কে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, “জামায়াতে ইসলামীর তিনজন নেতা বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ পেয়েছেন, অথচ আমাদের একজনকে কথা বলতেও বাধা দেওয়া হয়েছে। আমরা এ বৈষম্যের প্রতিবাদ জানিয়েছি।”
তিনি জানান, আয়োজকরা তাদের অভিযোগ গুরুত্বসহকারে গ্রহণ করেছেন এবং বিষয়টি নোট করেছেন বলেই তারা সংলাপে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
১২ দলীয় জোটের মুখপাত্র শাহাদাত হোসেন সেলিম বলেন, “আমরা যখন বক্তব্য দিতে চেয়েছি, তখন আমাদের থামিয়ে দেওয়া হয়েছে। অথচ, জামায়াত নেতারা অপ্রাসঙ্গিক কথা বলছিলেন। আমি বিষয়টি তুলে ধরলে একজন নেতা প্রশ্ন করেন, আপনি কতজনকে প্রতিনিধিত্ব করেন?”
তিনি বলেন, “এ ধরনের আচরণ সভার পরিপন্থী এবং সংলাপের মূল উদ্দেশ্যকে ক্ষুণ্ন করে।”
সংলাপে ঘটে যাওয়া এই অপ্রীতিকর ঘটনার পর পরিস্থিতি সামাল দিতে এগিয়ে আসেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার। তারা ওয়াকআউট করা নেতাদের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাদের সম্মেলন কক্ষে ফিরিয়ে আনেন।
ওয়াকআউটের কিছুক্ষণ পর তিন নেতা আবারও সংলাপ কক্ষে প্রবেশ করেন এবং বৈঠকে অংশ নেন। আয়োজকদের পক্ষ থেকে আশ্বস্ত করা হয়, ভবিষ্যতে সব অংশগ্রহণকারী দলের নেতাদের সমান সুযোগ নিশ্চিত করা হবে।
ঢাকা/হাসান/রফিক