নিরাপত্তা মহড়া আয়োজনে বেশ কয়েকটি রাজ্যকে নির্দেশ দিয়েছে ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। আগামীকাল বুধবার এ মহড়া অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। পাকিস্তানের সঙ্গে উত্তেজনার মধ্যেই এ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সরকারি সূত্রের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি। 

এতে বলা হয়েছে, শেষবার এমন মহড়া হয় ১৯৭১ সালে। সেকারণে এ নির্দেশনা বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। এবার সম্ভাব্য শত্রু মোকাবিলায় বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ নেয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। 

নির্দেশনাগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো– বিমান হামলার সতর্কতামূলক সাইরেন বাজানো, শত্রুর আক্রমণ থেকে নিজেদের রক্ষার জন্য বেসামরিক নাগরিক, বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণ প্রদান, রাতে ‘ব্ল্যাক আউট’ কর্মসূচি, গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার সুরক্ষায় ব্যবস্থা নেওয়া, নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার মহড়া আয়োজন প্রভৃতি।

আরো পড়ুন:

মোদিকে মমতা: দাঙ্গায় নয়, সীমান্ত সুরক্ষায় নজর দিন

বাংলাদেশ-পাকিস্তান সীমান্তে বিএসএফের ‘ফিল্ড হেডকোয়ার্টার’ করবে ভারত

গত ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পেহেলগামে জঙ্গি হামলায় ২৬ জন বেসামরিক নিহত হওয়ার পর থেকে ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা বাড়ছেই।

এনডিটিভি জানায়, পাঞ্জাবের ফিরোজাবাদে মঙ্গলবার রাতে ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় আধ-ঘণ্টার ব্ল্যাকআউট মহড়া হয়েছে। সেনা কর্তৃপক্ষ স্থানীয় বিদ্যুৎ বিভাগকে নির্ধারিত সময়ে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রাখার অনুরোধ করেছিল।

এই মহড়ার উদ্দেশ্য যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে ব্ল্যাকআউট কৌশল প্রয়োগের প্রস্তুতি।

কাশ্মীরে জঙ্গি হামলার পর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং পাকিস্তান ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কড়া বার্তা দিয়েছেন। মোদি বলেছেন, “যারা এই ষড়যন্ত্র করেছে বা হামলা চালিয়েছে তারা কল্পনাতীত শাস্তি পাবে।’

কাশ্মীরে হামলার বদলা নিতে সশস্ত্র বাহিনীকে পালটা আক্রমণের পূর্ণ স্বাধীনতাও দিয়েছেন তিনি। আর এবার ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় দেশজুড়ে বিভিন্ন রাজ্যে ৭ মে মহড়া পরিচালনার নির্দেশ দিল।

এদিকে, গতকাল সোমবার পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মুহাম্মদ আসিফ সতর্ক করে বলেছেন, পাকিস্তানে হামলা চালালে ভারতকে দাঁতভাঙা জবাব দেওয়া হবে।

এমন পরিস্থিতিতে ভারত ও পাকিস্তানকে ‘সর্বোচ্চ সংযম’ প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।

সোমবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দপ্তরে ভারত-পাকিস্তানের সাম্প্রতিক উত্তেজনা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে জাতিসংঘের মহাসচিব বলেন, “গত কয়েক বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ উত্তেজনার মধ্যে রয়েছে এবং বর্তমানে দুই দেশই রীতিমতো ফুটন্ত অবস্থায় আছে। যদি সত্যিই যুদ্ধ বেঁধে যায়, তাহলে ওই অঞ্চলের পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে।”

“যেহেতু উভয় দেশই একটি জটিল পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে, তাই বর্তমানে উভয়েরই উচিত হবে শান্ত থাকা। একমাত্র তাহলেই খাদের কিনারা থেকে সরে আসা সম্ভব। আমি ভারত ও পাকিস্তান উভয়কে সর্বোচ্চ সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানাচ্ছি।”

ঢাকা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পর স থ ত

এছাড়াও পড়ুন:

নানা আয়োজনে দিনভর উৎসবের আমেজ

লম্বা পায়ে মাঠজুড়ে হেঁটে বেড়াচ্ছে এক ব্যক্তি। মাথায় রঙিন পরচুলা। সাজসজ্জাও অদ্ভুত। বিশেষ কায়দায় বাঁশের এক জোড়া লম্বা লাঠির সাহায্যে ‘রণপা’ তৈরি করে হাঁটছিল ওই ব্যক্তি, যা গ্রামবাংলার ঐতিহ্যের একটি অংশ। সেই রণপা সাজের ব্যক্তির কাছে শিশু-কিশোরদের অনেকে আগ্রহ নিয়ে যাচ্ছিল, কেউ আবার কাছে যেতে ভয় পাচ্ছিল। এর মধ্যেই পাশে দাঁড়িয়ে ছবি কিংবা সেলফি তোলা ও হাত মিলিয়ে করমর্দনও করছিল কেউ কেউ।

এ ছাড়া মাঠজুড়েই ছিল শিশু-কিশোরদের খেলাধুলার নানা উপকরণ। মিনি ফুটবল খেলে গোল দেওয়া, লুডু খেলে পুরস্কার জেতা কিংবা বুদ্ধি খাটিয়ে ‘ফুট স্টেপ’ খেলা। এর বাইরে অনেক শিশু-কিশোর ছিল বাবুল্যান্ডে খেলাধুলায় কিংবা বায়োস্কোপ দেখায় মত্ত। অনেকে আবার টিয়া পাখির সাহায্যে নিজেদের ভবিষ্যৎও জেনে নিচ্ছিল।

রাজধানীর মেরুল বাড্ডায় দক্ষিণ বারিধারা সোসাইটি মাঠে প্রথম আলো আনন্দমেলায় গতকাল শুক্রবার সারা দিনের চিত্র ছিল এমনই। সকাল থেকেই সেখানে ছিল উৎসবের আমেজ। মেলা শুরু হয় সকাল আটটায়। দুপুর গড়িয়ে বিকেল হলে শিশু-কিশোর, অভিভাবকসহ এলাকাবাসীর আগমনে তা জমজমাট হয়ে ওঠে।

শুক্রবার সকাল আটটার কিছু আগে মাঠে গিয়ে দেখা যায়, অভিভাবক নিজ নিজ সন্তানদের নিয়ে মাঠে আসছেন। সবার হাতে হাতে আঁকাআঁকির রংপেনসিল, তুলি, খাতা, স্কেল ও অন্যান্য সরঞ্জাম। সাড়ে আটটায় শিশু-কিশোরদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে শুরু হয় ‘প্রথম আলো আনন্দমেলা’। প্রতিযোগিতায় তিন শতাধিক শিশু-কিশোর অংশ নেয়।

প্রতিযোগিতায় পাশাপাশি বসে আঁকে দুই ভাই মেহরাব তালহা ও মাহির তাহমিদ। পাশে দাঁড়িয়ে থাকা তাদের বাবা মনিরুজ্জামান প্রথম আলোকে জানান, বড় ছেলের স্কুল মাঠের পাশেই। স্কুলে ছেলেকে আনা–নেওয়ার সময় দেখেন মাঠে এই অনুষ্ঠান আছে। পরে দুই ছেলেকে বলে রেখেছিলেন যে তাদের এখানে অংশগ্রহণ করাবেন। ছোট ছেলে মাহিরের চিত্রাঙ্কনে বেশি ঝোঁক বলেও জানান তিনি। পরে মেহরাব জুনিয়র ক্যাটাগরিতে দশম স্থান অর্জন করে। সে স্মৃতিসৌধ এঁকেছিল।

প্রথম আলো আনন্দমেলায় ছিল বায়োস্কোপ প্রদর্শনী

সম্পর্কিত নিবন্ধ