আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণ কর্মসূচি থেকে বাংলাদেশ সরে দাঁড়াবে কি না, তা নিয়ে বিভিন্ন মহলে আলোচনা চলছে। ইতিমধ্যে ঋণের চতুর্থ কিস্তির অর্থ ছাড় পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। আগামী মাসে চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির অর্থ একসঙ্গে পাওয়ার কথা আছে। কিন্তু আইএমএফের সঙ্গে শর্ত পালন নিয়ে দর-কষাকষি চলছে, তবে এখনো সমঝোতা হয়নি।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের সূত্রগুলো বলছে, আইএমএফের বিভিন্ন শর্ত নিয়ে দর-কষাকষি চললেও মূলত একটি শর্ত পরিপালনের ওপর চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির অর্থ ছাড় নির্ভর করছে। সেটি হলো বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময়হার পুরোপুরি উন্মুক্ত করে দেওয়া। কিন্তু বাংলাদেশে এখনো অনেকটা বেঁধে দেওয়া মুদ্রা বিনিময়হার কার্যকর আছে।
এ ছাড়া কৃষি, জ্বালানিসহ বিভিন্ন খাতে ভর্তুকি কমানো, রাজস্ব খাতে সংস্কার, এসব শর্তও আছে। অবশ্য এসব শর্ত ধাপে ধাপে পূরণ করছে বাংলাদেশ। সর্বশেষ গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় ভার্চ্যুয়াল উপায়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুরের নেতৃত্বে আইএমএফের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক হয়। দেড় ঘণ্টাব্যাপী ওই বৈঠকে কোনো সমঝোতা হয়নি; আরও আলোচনা চলবে।
মোট ৭ কিস্তিতে ৪৭০ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ পাওয়ার কথা বাংলাদেশের। ইতিমধ্যে ৩ কিস্তিতে আইএমএফ থেকে ২৩১ কোটি ডলার পাওয়া গেছে, বাকি আছে ২৩৯ কোটি ডলার।
উন্মুক্ত বিনিময়হার কতটা সম্ভব২০২২ সাল থেকে বাংলাদেশে ডলারের দাম বেড়েছে। দীর্ঘদিন ধরে ডলারের দাম কৃত্রিমভাবে ধরে রাখায় ইউক্রেন যুদ্ধসহ বৈশ্বিক পরিস্থিতির কারণে হঠাৎ করে ডলারের দাম বাড়তে থাকে। আড়াই বছরে মার্কিন এই মুদ্রার দাম এই সময়ে ৮৫ টাকা থেকে বেড়ে ১২০ টাকায় উঠেছে।
গত ডিসেম্বর মাসে ডলারের নির্দিষ্ট দাম ধরে আড়াই শতাংশ পর্যন্ত উঠানামার একটি সীমা বেঁধে দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তখন বলা হয়, ১২৩ টাকা পর্যন্ত ডলার লেনদেন করা যাবে। এখন ১২২ থেকে ১২৩ টাকা দরে ডলার বেচাকেনা করছে ব্যাংকগুলো। কিন্তু আইএমএফ এখন বলছে, বিদেশি মুদ্রার বিনিময়হার পুরোপুরি বাজারের ওপর ছেড়ে দিতে হবে। বাজারই নির্ধারণ করবে ডলারসহ বিদেশি মুদ্রার দাম কত হবে। বাংলাদেশ তাতে রাজি নয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তাদের মতে, বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে মুদ্রা বিনিময়হার পুরোপুরি বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়া কঠিন। পুরোপুরি বাজারনির্ভর বিনিময়হার ব্যবস্থা চালু হলে যেকোনো সময় অর্থনীতিতে বড় আঘাত আসতে পারে।
এখন কি উপযুক্ত সময়সাধারণত অর্থনীতি বিশেষ করে লেনদেন ভারসাম্য ভালো থাকে, তখন বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময়হার উন্মুক্ত করার উপযুক্ত সময় বলে মনে করেন বিশ্লেষকেরা। কয়েক মাস ধরে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে। গত মার্চে রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স এসেছে। আবার রপ্তানি আয়ে চলতি অর্থবছরের ৯ মাসে (জুলাই-মার্চ) ১০ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এ ছাড়া বাজেট–সহায়তা ও প্রকল্প–সহায়তাও ছাড় হচ্ছে। এসব কারণে ডলারের জোগান বেড়েছে।
বর্তমানে বিশ্ববাজারে ডলারের পড়তি দাম বিরাজ করছে। আন্তর্জাতিক বাজারে তেলসহ বিভিন্ন পণ্যের দাম কমছে। ৩ বছর আগে আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ১০০ ডলারের বেশি ছিল। এরপর ধারাবাহিকভাবে কমেছে। সর্বশেষ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পাল্টা শুল্কের আরোপের এ বছর তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ৬০ ডলারে নেমে আসে। তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলএনজি) দামও কমেছে।
এ বিষয়ে বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, এখন বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময়হার বাজারের ওপর ছেড়ে না দিলে আর কখন করা হবে? কারণ, এখন লেনদেনের ভারসাম্য ভালো আছে। আন্তর্জাতিক বাজারে ডলারে দাম কমেছে, অন্যান্য পণ্যের দামও পড়তি। আমদানি চাহিদাও কম, তাই চাপ আসার শঙ্কা কম।
আইএমএফের সঙ্গে দর-কষাকষিঋণের চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির অর্থ ছাড়ের বিষয়ে অর্থনৈতিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে গত এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে আইএমএফের মিশন শেষ হয়। তখন শর্তের বিষয়ে কোনো সমঝোতা হয়নি। পরে গত মাসে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংকের বসন্তকালীন সভায় অংশ নিতে গিয়ে বাংলাদেশের অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুরসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আইএমএফের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আবার বৈঠক করেন।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, ওই বৈঠকে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য নিয়ে সমঝোতা হয়। আগে আইএমএফ লক্ষ্য দিয়েছিল, চলতি অর্থবছরের ৫ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা আদায় করতে হবে। এখন ৪ লাখ ৫৫ হাজার কোটি টাকা আদায়ের নতুন লক্ষ্য দেওয়া হয়েছে, এতে বাংলাদেশ রাজি হয়।
অন্যদিকে বিনিময়হার উন্মুক্ত করার বিষয়টি অমীমাংসিত থেকে যায় ওই বৈঠকে। আইএমএফের চাওয়া হলো, বিনিময়হার পুরোপুরি বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়া। যদি অর্থনীতিতে সমস্যা হয়, তাহলে এখন যে তিন টাকা ওঠানামার সীমা আছে, তা সাত থেকে আট টাকা করা যেতে পারে। কিন্তু বাংলাদেশ চায়, বিনিময়হার বাজারের ওপর ছেড়ে দিলে রিজার্ভসহ বিভিন্ন খাতে যে চাপ সৃষ্টি হবে, তা মোকাবিলায় ১০০ কোটি ডলারের স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ড বা স্থিতিশীলতা রক্ষা তহবিল চায়। এভাবে বিষয়টি এখন ঝুলে আছে।
অতীত অভিজ্ঞতা কেমনজানা গেছে, স্বাধীনতার পর থেকে এখন পর্যন্ত ১৩ বার আইএমএফের কাছ থেকে ছোট-বড় ঋণ নিয়েছে বাংলাদেশ। ২০১২ সালে সর্বশেষ নেওয়া বর্ধিত ঋণ–সহায়তার (ইসিএফ) ১০০ কোটি ডলার পেয়েছিল বাংলাদেশ। সব কিস্তি পেয়েছে বাংলাদেশ। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, এর আগে কোনো ঋণ কর্মসূচিই পুরোপুরি শেষ করা সম্ভব হয়নি। সর্বশেষ ২০০৩ সালে দারিদ্র্য বিমোচন ও প্রবৃদ্ধি সহায়তা (পিআরজিএফ) কর্মসূচিতে ৪৯ কোটি ডলার পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কাঙ্ক্ষিত সংস্কার না হওয়ায় তিন কিস্তি পাওয়ার পর বাকি তিন কিস্তি স্থগিত করেছিল আইএমএফ।
এ ছাড়া ১৯৯১ সালে আরেকটি ঋণ কর্মসূচির শর্ত হিসেবে অর্থনৈতিক সংস্কারে তৎকালীন অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমানের সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় মাঝপথে স্থগিত হয়। পরের ১০ বছর আইএমএফের সঙ্গে কোনো ঋণ কর্মসূচিতে যায়নি বাংলাদেশ। ১৯৭৩ সালে আইএমএফের কাছে প্রথম প্রায় চার কোটি ডলার ঋণ নেয় বাংলাদেশ।
ঋণ কর্মসূচি স্থগিত হলে যা হতে পারেআইএমএফের ঋণ কর্মসূচি স্থগিত হলে কী হতে পারে, এমন প্রশ্নের জবাবে বিশ্বব্যাংকের সাবেক অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন বলেন, বৈশ্বিক পরিমণ্ডলে একধরনের নেতিবাচক বার্তা যাবে। বিভিন্ন ঋণমানকারী প্রতিষ্ঠানের বিবেচনায় বাংলাদেশের মান কমে যেতে পারে। আবার বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছে বাংলাদেশ আস্থা হারাতে পারে। এ ছাড়া বিশ্বব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) কাছে যে ২০০ থেকে ২৫০ কোটি ডলারের বাজেট–সহায়তার আলোচনা চলছে, সেগুলো বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
ব্যাংকিং খাত, করব্যবস্থা, সরকারি ব্যয় ব্যবস্থাপনা, বিনিময়হার নীতিসহ যেসব অর্থনৈতিক সংস্কারের কথা দীর্ঘদিন ধরে বলা হচ্ছে, কিন্তু রাজনৈতিক প্রভাবশালীদের কারণে করা যায়নি। আইএমএফের কর্মসূচি অব্যাহত থাকলে ওই সব সংস্কার করা তুলনামূলক সহজ হবে। এ ছাড়া বহির্বিশ্বে একধরনের বার্তা যাবে, বাংলাদেশের পাশে আইএমএফ আছে। জাহিদ হোসেন মনে করেন, ঋণ কর্মসূচিতে থেকে প্রয়োজনীয় সংস্কার সম্পন্ন করা ভালো হবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব জ র র ওপর ছ ড় কর মকর ত দ র আইএমএফ র ক সমঝ ত
এছাড়াও পড়ুন:
ঘূর্ণিঝড় কালমেগির তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড ফিলিপাইন, নিহত ৬৬
ফিলিপাইনের মধ্যাঞ্চলে আঘাত হানা শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ‘কালমেগি’র তাণ্ডবে অন্তত ৬৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। ঘরবাড়ি ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন চার লাখের বেশি মানুষ।
স্থানীয় কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে বুধবার (৫ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
আরো পড়ুন:
জ্যামাইকায় আঘাত হানতে যাচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী ঝড়
ঘূর্ণিঝড় মন্থা, বন্দরে ২ নম্বর সতর্কতা
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কালমেগির প্রভাবে দেশটির মধ্যাঞ্চলীয় সেবু দ্বীপের সব শহর প্লাবিত হয়েছে। কর্দমাক্ত বন্যার পানির তোড়ে ভেসে গেছে গাড়ি, ট্রাক এমনকি বিশাল আকারের কনটেইনারও।
বুধবার স্থানীয় রেডিও চ্যানেল ডিজেডএমএম-কে এক সাক্ষাৎকারে সেবুর প্রতিরক্ষা অফিসের ডেপুটি অ্যাডমিনিস্ট্রেটর রাফায়েলিটো আলেজান্দ্রো জানান, কেবল সেবুতেই এখন পর্যন্ত ৪৯ জনের প্রাণহানির তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, টাইফুনের প্রভাবে প্রাণহানির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৬ জনে। আরো ২৬ জন এখনও নিখোঁজ রয়েছেন।
সরকারি মৃতের সংখ্যায় সেবুর দক্ষিণে মিন্দানাও দ্বীপে একটি সামরিক হেলিকপ্টার বিধ্বস্তের ঘটনায় সেটির ছয়জন ক্রু সদস্য রয়েছেন, যা ত্রাণ তৎপরতায় সহায়তা করার জন্য মোতায়েন করা হয়েছিল।
মঙ্গলবার আগুসান দেল সুরের কাছে সামরিক হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হয়। সাহায্যের জন্য পাঠানো চারটি হেলিকপ্টারের মধ্যে এটি একটি ছিল।
ফিলিপাইনের বিমান বাহিনী জানিয়েছে, হেলিকপ্টারের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়, যার ফলে তাৎক্ষণিকভাবে অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযান শুরু করা হয়। ছয়টি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে, যা পাইলট ও ক্রুদের বলে ধারণা করা হচ্ছে।
স্থানীয়ভাবে টিনো নামে পরিচিত টাইফুনটি মঙ্গলবার ভোরে ফিলিপাইনের স্থলভাগে আঘাত হানার পর থেকে দুর্বল হয়ে পড়েছে, তবে ৮০ মাইল প্রতি ঘণ্টা (১৩০ কিমি/ঘন্টা) এরও বেশি বেগে বাতাস বইতে থাকে।
আজ বুধবার এটি ভিসায়াস দ্বীপপুঞ্জ অঞ্চল পেরিয়ে দক্ষিণ চীন সাগরের উপর দিয়ে চলে যাওয়ার পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
প্রাদেশিক গভর্নর পামেলা বারিকুয়াত্রো ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে বলেন, “সেবুর পরিস্থিতি সত্যিই নজিরবিহীন। আমরা ভেবেছিলাম প্রবল বাতাসই বিপদ ডেকে আনবে। কিন্তু... প্রকৃত ঝুঁকির কারণ হচ্ছে পানি। বন্যার পানিতে ভয়াবহ ক্ষতি হয়েছে।
তিনি বলেন, আমাদের কাছে আসা তথ্য অনুযায়ী, বেশিরভাগ মানুষই পানিতে ডুবে মারা গেছেন।
ত্রাণ প্রচেষ্টা সহজতর করার জন্য মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বারিকুয়াত্রো সেবুতে দুর্যোগ পরিস্থিতি ঘোষণা করেছেন। সেবুতে আবাসিক এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, অনেক ছোট ঘর স্রোত ভেসে গেছে এবং বন্যার পানিতে শহর জুড়ে কাদার ঘন স্তুর পড়েছে। উদ্ধারকারী দল ঘরের ভেতরে আটকা পড়া মানুষদের উদ্ধার করতে নৌকা ব্যবহার করেছে।
বুধবার জাতীয় দুর্যোগ সংস্থার এক প্রতিবেদন অনুসারে, এই দুর্যোগে ৪ লাখেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
ফিলিপাইনে প্রতিবছর গড়ে অন্তত ২০টি ঝড় ও টাইফুন আঘাত হানে। পরপর দুটি টাইফুনে এক ডজনেরও বেশি মানুষ নিহত এবং অবকাঠামো ও ফসলের ক্ষতি হওয়ার মাত্র এক মাস পর সর্বশেষ এই ঘটনাটি ঘটল।
সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে সুপার টাইফুন রাগাসা, যা স্থানীয়ভাবে নান্দো নামে পরিচিত, আঘাত হানে এবং তার পরেই আঘাত হানে টাইফুন বুয়ালোই, যা স্থানীয়ভাবে ওপং নামে পরিচিত।
; যা প্রায়ই এমন অঞ্চলে তাণ্ডব চালায় যেখানে লাখ লাখ মানুষ দারিদ্র্যের মাঝে বসবাস করে। দেশটির আবহাওয়া বিশেষজ্ঞ ভারিলা বলেন, টাইফুন কালমেগির মধ্য দিয়ে দেশটি ইতোমধ্যে সেই বার্ষিক গড় সংখ্যায় পৌঁছে গেছে এবং ডিসেম্বরের মধ্যে আরও তিন থেকে পাঁচটি ঝড় আসার আশঙ্কা রয়েছে।
ফিলিপাইন গত সেপ্টেম্বরে দুটি শক্তিশালী ঝড়ে আক্রান্ত হয়েছিল, যার একটি ছিল সুপার টাইফুন রাগাসা। ওই সময় ফিলিপাইনে তাণ্ডব চালিয়ে প্রতিবেশী তাইওয়ানেও আঘাতে রাগাসা। এতে তাইওয়ানে অন্তত ১৪ জন নিহত হন।
প্রতি বছর ফিলিপাইনে গড়ে ২০টি ঝড় ও টাইফুন আঘাত হানে।
পরপর দুটি টাইফুনে এক ডজনেরও বেশি মানুষ নিহত এবং অবকাঠামো ও ফসলের ক্ষতি হওয়ার মাত্র এক মাস পর সর্বশেষ এই ঘটনাটি ঘটল।
সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে সুপার টাইফুন রাগাসা, যা স্থানীয়ভাবে নান্দো নামে পরিচিত, আঘাত হানে এবং তার পরেই আসে টাইফুন বুয়ালোই, যা স্থানীয়ভাবে ওপং নামে পরিচিত।
আগের মাসগুলোতে, বর্ষা মৌসুমে ব্যাপক বন্যা দেখা দেয়, যা নিম্নমানের বন্যা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার বিরুদ্ধে ক্ষোভ ও বিক্ষোভের জন্ম দেয়, যার জন্য দুর্নীতিকে দায়ী করা হয়।
৩০ সেপ্টেম্বর, মধ্য ফিলিপাইনে ৬.৯ মাত্রার একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানার পর কয়েক ডজন মানুষ নিহত ও আহত হয়, যার ক্ষতির পরিমাণ সবচেয়ে বেশি ছিল সেবুতে।
টাইফুন কালমায়েগি ভিয়েতনামে যাওয়ার পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে, যেখানে ইতিমধ্যেই রেকর্ড বৃষ্টিপাত হচ্ছে।
ঢাকা/ফিরোজ