ভারত ‘কাপুরুষোচিত’ হামলা চালিয়েছে: পাক প্রধানমন্ত্রী
Published: 7th, May 2025 GMT
পাকিস্তানে হামলা চালানোর ঘটনায় ভারতকে ‘বিশ্বাসঘাতক’ আখ্যায়িত করেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। তিনি বলেন, তারা পাকিস্তানের ভেতরে পাঁচটি জায়গায় ‘কাপুরুষোচিত’ হামলা চালিয়েছে। এই ঘৃণ্য আগ্রাসনমূলক পদক্ষেপ শাস্তি ছাড়া পার পাবে না। বুধবার এক বিবৃতিতে এ কথা বলেন তিনি খবর বিবিসি।
শাহবাজ শরিফ বলেছেন, কোনো উসকানি ছাড়া ভারতের এই হামলার সুনির্দিষ্ট জবাব দেওয়ার পূর্ণ অধিকার পাকিস্তানের আছে এবং উপযুক্ত জবাব দেওয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, পুরো দেশবাসী সশস্ত্র বাহিনীর পেছনে ঐক্যবদ্ধ আছে। আমাদের মনোবল ও সংকল্প অটুট রয়েছে। পাকিস্তানের সাহসী কর্মকর্তা ও সেনাদের জন্য আমাদের দোয়া ও শুভ কামনা রয়েছে।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের শক্তি ও সংকল্পের জন্য যে হুমকি মোকাবিলা ও সেটাকে পরাজিত করার জন্য পাকিস্তানের জনগণ ও এর বাহিনীগুলো সম্পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছে। শত্রুপক্ষকে কখনো তার কুৎসিত উদ্দেশ্য সফল করতে দেওয়া হবে না।
কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর হামলার পর চলমান উত্তেজনার মধ্যে পাকিস্তানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ভারত।
পাকিস্তানের আন্তবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী জানান, এ হামলায় পাকিস্তানে অন্তত দুই শিশুসহ আটজন নিহত ও ২৫ জন আহত হয়েছেন।
তিনি বলেন, বুধবার প্রথম প্রহরে পাকিস্তানের কোটলি, ভাওয়ালপুর, মুরিদকে, বাগ ও মুজাফ্ফরবাদে ‘কাপুরুষোচিত’ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ভারত। পাকিস্তান সেনাবাহিনী ইতোমধ্যে এর বদলা নিতে শুরু করেছে।
পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ সংবাদমাধ্যম এআরওয়াই নিউজকে জানিয়েছেন, ভারত বেসামরিকদের লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে। এ কাপুরুষরা (ভারতীয়রা) তাদের নিজেদের আকাশসীমা থেকে হামলা চালিয়েছে। তারা তাদের বাড়ি কখনো ছাড়েনি। তাদের বের হতে দিন। আমরা উপযুক্ত জবাব দেব।
কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর হামলার পর চলমান উত্তেজনার মধ্যে পাকিস্তানে ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ল ভারত।
এদিকে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ভারতের সশস্ত্র বাহিনী ‘অপারেশন সিন্দুর’ শুরু করেছে। এর আওতায় পাকিস্তান ও পাকিস্তাননিয়ন্ত্রিত জম্মু ও কাশ্মীরের নয়টি স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে। ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী বুধবার এক বিবৃতিতে এসব তথ্য জানিয়েছে।
বিবৃতিতে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী জানায়, ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামের অভিযানে পাকিস্তানের ৯টি জায়গায় হামলা চালানো হয়েছে। এই হামলায় সশস্ত্র গোষ্ঠীর অবকাঠামো লক্ষ্য করা হয়েছে। পাকিস্তানের সেনা সদস্যদের ওপর কোনো হামলা চালানো হয়নি।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: সশস ত র ব হ ন
এছাড়াও পড়ুন:
মেঘমুক্ত আকাশে উঁকি দিল কাঞ্চনজঙ্ঘা
টানা কয়েকদিন ধরে মেঘলা ছিল আকাশ। আজ মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) সকালটা ছিল একেবারেই ভিন্ন। ভোর থেকেই স্বচ্ছ নীল আকাশ। এর মধ্যেই পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া থেকে স্পষ্ট দেখা গেছে বিশ্বের তৃতীয় সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ কাঞ্চনজঙ্ঘা।
ভোরের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গে দিগন্ত জোড়া সাদা রূপালি চূড়া যেন নতুন দিনের সৌন্দর্যে যোগ করেছে অন্য রকম আবেশ। আকাশ পরিষ্কার থাকায় সকাল থেকেই মানুষ ভিড় করছেন তেঁতুলিয়ার ডাকবাংলো এলাকাসহ বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানে। অনেকে পরিবার-পরিজন নিয়ে কাঞ্চনজঙ্ঘার মনোমুগ্ধকর দৃশ্য উপভোগ করছেন, ক্যামেরা বন্দি করেছেন মুহূর্তটিকে।
কাঞ্চনজঙ্ঘা ঘিরে উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় প্রতি বছর পর্যটকের আগমন ঘটে। বিনা পাসপোর্টে ভারত-নেপালে না গিয়েই কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা যাওয়ায় পর্যটন অঞ্চল হিসেবে সমৃদ্ধ হয়েছে তেঁতুলিয়া। এই এলাকার পর্যটন স্পট ডাকবাংলোর পিকনিক কর্ণার ও মহানন্দা নদীর তীরে দাঁড়িয়ে দেখা যায় কাঞ্চনজঙ্ঘা।
কাঞ্চনজঙ্ঘা হিমালয়ের পূর্বাংশে নেপাল ও ভারতের সিকিম রাজ্যের সীমান্তে অবস্থিত। এর উচ্চতা ৮ হাজার ৫৮৬ মিটার (২৮ হাজার ১৬৯ ফুট), যা এভারেস্ট ও কে-টু’র পর বিশ্বের তৃতীয় সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ।
স্থানীয়রা জানান, প্রতি বছর অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়টি পর্যটকদের কাছে পঞ্চগড় ভ্রমণের উপযুক্ত সময় হিসেবে বিবেচিত হয়। ইতোমধ্যে দেশের নানা প্রান্ত থেকে পর্যটকরা বুকিং দিচ্ছেন হোটেল ও রিসোর্টগুলোতে।
স্থানীয় সাংবাদিক মোবারক হোসেন বলেন, “কাঞ্চনজঙ্ঘা পর্বতটি বাংলাদেশের একমাত্র পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় এলে পরিষ্কার দেখা যায়। প্রতি বছর অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত পর্বতটি পরিষ্কার দেখা যায়। ছবির মতো ভেসে ওঠা শ্বেতশুভ্র কাঞ্চনজঙ্ঘার অপরূপ দৃশ্য। ছাড়াও দেখা মেলে প্রতিবেশী দেশ ভারতের দার্জিলিংয়ের বিভিন্ন পাহাড়ি অঞ্চল।”
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের কর্মকর্তা জিতেন্দ্রনাথ রায় বলেন, “গত কয়েকদিন ধরে আকাশে মেঘ ছিল। আজ সকালে উত্তরাঞ্চলে ঠান্ডা হাওয়া প্রবাহিত হচ্ছে, বাতাসের আর্দ্রতা কমে যাওয়ায় আকাশ পরিষ্কার হয়েছে। এই অবস্থায় তেঁতুলিয়া থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা সম্ভব হয়েছে।”
তেঁতুলিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আফরোজ শাহীন খসরু বলেন, “তেঁতুলিয়া একটি পর্যটন এলাকা। এখানে খুব কাছ থেকে হিমালয়-কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা যায়। পর্যটকদের জন্য সব ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তারা যাতে স্বাচ্ছন্দ্যে ভ্রমণ করে আনন্দ উপভোগ করতে পারেন- এ জন্য আমরা সার্বক্ষণিক সচেষ্ট আছি।”
ঢাকা/নাঈম/মাসুদ