অ্যাসপারগিলাস নামের একটি ছত্রাক ইউরোপ, এশিয়া ও আমেরিকার কিছু অংশে ছড়িয়ে পড়তে পারে, যা ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রার কারণে দুর্বল মানুষের ফুসফুসে গুরুতর সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে বলে সতর্ক করেছেন বিজ্ঞানীরা। নতুন এক গবেষণায় বলা হয়েছে, বিশ্ব একটি বিপর্যয়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, যেখানে ছত্রাকজনিত রোগজীবাণুর বিস্তার স্বাভাবিক হয়ে উঠতে পারে। এশিয়া থেকে শুরু করে ইউরোপ ও আমেরিকায় মারাত্মক ছত্রাকের সংক্রমণ ঘটতে পারে। এ সংক্রমণের ফলে লাখ লাখ মানুষ মৃত্যুর মুখে পড়তে পারে।
গবেষণার তথ্যমতে, অ্যাসপারগিলাস ছত্রাক উষ্ণ ও আর্দ্র জলবায়ুতে বৃদ্ধি পায়। উষ্ণ অঞ্চলে প্রবেশের কারণে লাখ লাখ মানুষকে সংক্রামিত করার আশঙ্কা রয়েছে। গবেষক দলের সদস্য বিজ্ঞানী নরম্যান ভ্যান রিজন সতর্ক করে জানান, বিশ্ব এমন একটি বিপর্যয়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, যেখানে ছত্রাকজনিত রোগজীবাণুর বিস্তার স্বাভাবিক হয়ে উঠতে পারে।
গবেষণায় বলা হয়েছে, অ্যাসপারগিলাস ছত্রাক উচ্চ তাপমাত্রায় দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে। এই ছত্রাক বেশ স্থিতিস্থাপক, ফলে এমন জায়গায় বেঁচে থাকতে ও বৃদ্ধি পেতে পারে, যেখানে অন্যান্য জীব পারে না। ইউক্রেনের চেরনোবিলের পারমাণবিক চুল্লির ভেতরেও এই ছত্রাক হতে পারে। ছত্রাকটির স্পোর শ্বাস–প্রশ্বাসের মাধ্যমে মানুষের শরীরে প্রবেশ করে অসুস্থতার ঝুঁকি বাড়ায়। যাঁদের হাঁপানি, সিস্টিক ফাইব্রোসিস বা দুর্বল রোগ প্রতিরোধক্ষমতা রয়েছে, তাঁরা ঝুঁকির মধ্যে আছেন।
যুক্তরাজ্যের এক্সেটার বিশ্ববিদ্যালয়ের এমআরসি সেন্টার ফর মেডিকেল মাইকোলজির সহ–পরিচালক অধ্যাপক এলেন বিগনেল বলেন, প্রাকৃতিক পরিবেশে যেভাবে বাঁচে অ্যাসপারগিলাস ফিউমিগাটাস, তা মানুষের ফুসফুসে উপনিবেশ স্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় ফিটনেস সুবিধা প্রদান করছে। গবেষণায় দেখা গেছে, জীবাশ্ম জ্বালানির অত্যধিক ব্যবহারের ফলে ২১০০ সালের মধ্যে অ্যাসপারগিলাস ফিউমিগাটাস অতিরিক্ত ৭৭ শতাংশ ভূখণ্ডজুড়ে ছড়িয়ে পড়তে পারে।
সূত্র: এনডিটিভি
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
‘মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়’ লেখা চিরকুটে আরও যা ছিল
চট্টগ্রামে মাথায় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করা র্যাব কর্মকর্তা পলাশ সাহার (৩৭) মরদেহের পাশেই পড়ে ছিল একটি চিরকুট। সেটির শুরুর লাইনেই নিজের মৃত্যুর দায় নেওয়ার কথা বলেছেন তিনি। সংক্ষিপ্ত চিরকুটটি মূলত পরিবারের সদস্যদের উদ্দেশেই লেখা। আজ বুধবার দিনভর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে সেটি ঘুরে বেড়িয়েছে। তরুণ র্যাব কর্মকর্তা কেন এমন সিদ্ধান্ত নিলেন, এ নিয়ে ছিল আলোচনা। মেধাবী এই পুলিশ কর্মকর্তার মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন ফেসবুক ব্যবহারকারীরা।
গোপালগঞ্জ জেলার বাসিন্দা পলাশ সাহা ৩৭তম বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে পুলিশে যোগ দিয়েছিলেন। র্যাবে তিনি সহকারী পুলিশ কমিশনার পদে কর্মরত ছিলেন। আজ বুধবার দুপুরে নগরের চান্দগাঁও ক্যাম্পে অভিযানের প্রস্তুতি চলছিল। এ জন্য নিজের কক্ষে যান তিনি। এ সময় সহকর্মীরা গুলির শব্দ শুনে ছুটে গিয়ে মাথায় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় দেখতে পান তাঁকে। নিজের মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে পলাশ আত্মহত্যা করেছেন বলে ধারণা করছে র্যাব কর্তৃপক্ষ। তাঁর রক্তাক্ত মরদেহের পাশেই পড়ে ছিল চিরকুটটি। কী লেখা ছিল সেই চিরকুটে? র্যাব কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পরিবারের সদস্যদের উদ্দেশেই শেষ কথাগুলো বলে গেছেন তিনি।
চিরকুটে নিজের স্ত্রী ও মাকে সম্বোধন করে কিছু কথা বলেছেন তিনি। তার আগে নিজের মৃত্যুর দায় নিজেই নিয়েছেন। ভাই ও বোনকে অনুরোধ করেন মাকে দেখে রাখার। চিরকুটের হস্তাক্ষর পলাশ সাহার বলে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত করেছে র্যাব।
নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার উত্তর জাহাঙ্গীর আলম প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনাস্থলে পলাশ সাহার পরিবারের সদস্যদের উদ্দেশে লেখা একটি চিরকুট পাওয়া গেছে। সকালে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মুঠোফোনে তিনি কথাও বলেছেন। এরপরই এমন ঘটনা ঘটল। প্রাথমিকভাবে ধারণ করা হচ্ছে, পারিবারিক কলহের জেরেই তিনি আত্মহত্যা করতে পারেন। নিহত র্যাব কর্মকর্তার লাশ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।