যুদ্ধ কি ভারত–পাকিস্তান ক্রিকেট ম্যাচ আর হতে দেবে
Published: 7th, May 2025 GMT
কাশ্মীরে হামলা নিয়ে দুই প্রতিবেশীর উত্তেজনার শুরু; যেটা এখন পরিণত হয়েছে যুদ্ধে। কাল গভীর রাতে পাকিস্তানের ছয়টি স্থানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ভারত। পাল্টা হামলায় জবাবটা রাতেই দিয়েছে পাকিস্তান। এতে দুই দেশের ক্রিকেট ম্যাচ নিয়েও নতুন করে এক শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
স্রেফ রাজনৈতিকভাবে বৈরী সম্পর্কের কারণে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে বছরের পর বছর দ্বিপক্ষীয় সিরিজ দেখা যায় না। আইসিসি ও এসিসির ইভেন্ট ছাড়া মুখোমুখি হয় না দুই দল। সেখানে যুদ্ধ লাগায় পরিস্থিতি এখন আরও কঠিন। তাই এই প্রশ্ন ওঠাই স্বাভাবিক, ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে ক্রিকেট ম্যাচ আর দেখা যাবে তো?
আরও পড়ুনভারতের হামলা: পাকিস্তানে থাকা রিশাদ–নাহিদকে নিয়ে চিন্তায় বিসিবি২ ঘণ্টা আগেঅতীতে কিন্তু যুদ্ধ পরিস্থিতি কিংবা যুদ্ধ লাগলে ক্রিকেট মাঠে মুখোমুখি হয়নি দুই প্রতিবেশী। ১৯৬৫ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ এবং ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানের বিপক্ষে ভারতের জড়িয়ে পড়ার কারণে ১৯৬২ থেকে ১৯৭৭ সালের মধ্যে এ দুই দেশের মধ্যে কোনো ক্রিকেট ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়নি। আর বর্তমান পরিস্থিতির পটভূমিও দীর্ঘকাল ধরে নেতিবাচক।
নিরাপত্তাজনিত ব্যাপার ও বৈরী রাজনৈতিক সম্পর্কের কারণে ২০১৩ সালের পর আর দ্বিপক্ষীয় সিরিজে মুখোমুখি হয়নি ভারত-পাকিস্তান। আইসিসি আয়োজিত টুর্নামেন্ট এবং এসিসি আয়োজিত এশিয়া কাপেই শুধু মুখোমুখি হতে দেখা যায় তাঁদের। কিন্তু পরিস্থিতি যেখানে গড়িয়েছে, তাতে ভবিষ্যতে আইসিসি ও এসিসি টুর্নামেন্টেও এই দ্বৈরথ না দেখার শঙ্কা আছে।
চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে সর্বশেষ ভারতের মুখোমুখি হয়েছে পাকিস্তান.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: পর স থ ত
এছাড়াও পড়ুন:
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ–উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করার পর কর্মবিরতির ডাক
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সহ-উপাচার্যসহ অন্য শিক্ষকদের ‘লাঞ্ছিত’ করার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে কর্মবিরতির ডাক দেওয়া হয়েছে। শনিবার রাত পৌনে ১০টার দিকে সিনেট ভবনের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক আবদুল আলিম এ ঘোষণা দেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীও কর্মবিরতিতে থাকবেন বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাগ্রোনমি অ্যান্ড অ্যাগ্রিকালচারাল এক্সটেনশন বিভাগের অধ্যাপক আবদুল আলিম বলেন, ‘শিক্ষক লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছাত্রদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে এবং ক্যাম্পাসের সার্বিক নিরাপত্তার স্বার্থে আগামীকাল পূর্ণ দিবস কর্মবিরতি ঘোষণা করছি। দাবি না মানা হলে সোমবার থেকে কর্মবিরতি চলমান থাকবে। এই কর্মসূচি শিক্ষকসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সব কর্মকর্তা–কর্মচারীও পালন করবেন।’
প্রসঙ্গত, শনিবার বেলা তিনটার দিকে সহ-উপাচার্য প্রশাসনিক ভবন থেকে বেরিয়ে এলে পোষ্য কোটা ফেরানোর প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা তাঁর গাড়ি আটকে দেন। পরে তিনি হেঁটে তাঁর বাসভবনের দিকে যেতে থাকেন। শিক্ষার্থীরা তাঁর বাসভবনের ফটকে তালা লাগিয়ে দিলে তিনি জুবেরী ভবনের দিকে যান। সেখানে শিক্ষার্থীরা পোষ্য কোটা বাতিলের দাবি তোলেন। তখন সেখানে প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমানও ছিলেন। একপর্যায়ে ধাক্কাধাক্কি থেকে ধস্তাধস্তি ও হাতাহাতি হয়।
বিকেল সাড়ে চারটার দিক থেকে জুবেরী ভবনে সহ-উপাচার্য মোহাম্মদ মাঈন উদ্দীনসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষক ও কর্মকর্তাকে আটকে রাখেন শিক্ষার্থীরা। রাত পৌনে ১১টা পর্যন্ত তাঁরা সেখানেই অবরুদ্ধ ছিলেন।
চলমান পরিস্থিতির বর্ণনা দিয়ে সংবাদ সম্মেলনে অধ্যাপক আবদুল আলিম জানান, আজ শনিবার আনুমানিক বেলা দুইটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য (প্রশাসন) মোহাম্মদ মাঈন উদ্দীন দাপ্তরিক কাজ শেষে দুপুরের খাবারের জন্য বাসায় যাওয়ার জন্য গাড়িতে ওঠেন। এমতাবস্থায় কয়েকজন ছাত্র তাঁকে গাড়ি থেকে জোরপূর্বক নামিয়ে গাড়ির চাবি নিয়ে নেন এবং অশালীন উক্তিসহ তাঁর গাড়ির ওপরে ভিক্ষা হিসেবে টাকা ছুড়ে দেন। এরপর হেঁটে তাঁর বাসায় ঢুকতে গেলে প্রধান ফটকে তালা লাগিয়ে দেন। নিরুপায় হয়ে তিনি জুবেরী ভবনে গেলে তাঁকে ঘিরে নানা ধরনের কটূক্তি করেন এবং তাঁকে নিয়ে ধস্তাধস্তি করতে থাকেন।
আবদুল আলিম বলেন, ‘প্রক্টরসহ তাঁর বডির সদস্যবৃন্দ মাঈন উদ্দীনকে প্রোটেকশন দেওয়ার চেষ্টা করলে প্রক্টরকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়। এ সময় প্রক্টরের পকেট থেকে ১০ হাজার টাকা ও তাঁর হাতঘড়ি ছিনিয়ে নেয়। সহ-উপাচার্য নিরুপায় হয়ে জুবেরী ভবনের দোতলায় একটি কক্ষে আশ্রয় নিতে গেলে তাঁর গলা চেপে ধরে ও তাঁকে ধাক্কা মেরে সিঁড়িতে ফেলে দেয়।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের জুবেরী ভবন একটি আবাসিক ও ক্লাব ভবন। এখানে অনেক পরিবার বাস করে।
অধ্যাপক আবদুল আলিম অভিযোগ করে বলেন, জুবেরী ভবনের অবস্থানরত কক্ষে বিদ্যুৎ–সংযোগ ও খাবার পানির ব্যবস্থা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সেখানে অশ্রাব্য ভাষায় গালাগালিসহ স্লোগান দেওয়া হচ্ছে। এর ফলে ওই ভবনে একটা ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। ফলে ভবনের পরিবারগুলো আতঙ্কিত ও নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে আবদুল আলিম জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রক্টর ও রাকসুর নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক এনামুল হক জুবেরী ভবনে অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাঁকে ভবন থেকে বের করে হাসপাতালে নিতে হয়। এ ঘটনাবলি আসন্ন রাকসু নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্রের অংশ বলে শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা মনে করছেন।