এবারের চ্যাম্পিয়নস লিগে সবচেয়ে ধাবাহিক ক্লাব পিএসজি। স্প্যানিশ কোচ লুইস এনরিকের অধীনে ফরাসি জায়ান্টরা এক কথায় অপ্রতিরোধ্য ইউরোপিয়ান প্রতিযোগিতায়। বুধবার (৭ মে) দিবাগত রাতে চ্যাম্পিয়নস লিগ সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগে আর্সেনালের মুখোমুখি হওয়ার আগেও এগিয়ে পিএসজি। প্যারিসের জায়ান্টদের জন্য আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর সংবাদ হচ্ছে উসমান দেম্বেলের ফিট হয়ে ওঠা।

প্রথম লেগে এমিরেটস স্টেডিয়াম থেকে ১-০ ব্যবধানে জয় নিয়ে ফেরে পিএসজি। সেই ম্যাচের বাবধান গড়ে দেওয়া গোলটি আসে দেম্বেলের পা থেকে। তবে তিনি ম্যাচ চলাকালীন সময়ে মাংসপেশির চোটে পড়েছিলেন। তবে বুধবার রাতে ঘরের মাঠ পার্ক দে প্রিন্সে দ্বিতীয় লেগে শুরু থেকেই খেল্বেন তিনি।

দেম্বেলের ফেরা পিএসজির জন্য বেশ স্বস্তির। ম্যাচ পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে পিএসজি বস এনরিকে জানান, “সে গত দুই দিন ধরে দলের সঙ্গে অনুশীলন করেছে, তাই আগামীকালের জন্য সে প্রস্তুত।” 

আরো পড়ুন:

‘অস্ত্রাগারে’র দেয়াল ভেঙে ফাইনালের পথে পিএসজি

মার্তিনেজদের কাঁদিয়ে সেমিফাইনালে পিএসজি

তবে বর্তমান পিএসজি কোন একেক পারফরম্যান্সের দিকে তাকিয়ে থাকে না। এই ব্যাপারটাই তাদেরকে আলাদা করেছে আগের মৌসুমগুলোর তুলনায়। একটা সময় পিএসজির জার্সিতে মেসি, নেইমার, এমবাপে, রামোসদের মতো খেলোয়াড়রা খেলেছিলেন। তবে তারা চ্যাম্পিয়নস লিগের শিরোপা জেতেনি। এমনকি তাদের সব সময় সমন্বয়হীন মনে হতো। চলমান মৌসুমে ব্যক্তিগত নৈপুণ্যের চেয়ে দলীয় সংহতি ও কৌশলগত পরিপক্বতার ওপর নির্ভর করছে পিএসজি। অতীতে ইউরোপীয় প্রতিযোগিতায় এই অভাবটাই ছিল।” 

এনরিকে তারকানির্ভর এই দলটিকে ঢেলে সাজানোর দায়িত্ব পাওয়ার পর স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন যে, তিনি এমন একটি ইউনিট গড়ে তুলতে চান যারা সর্বোচ্চ পর্যায়ে প্রতিযোগিতা করতে সক্ষম।

গত মৌসুমে বরুসিয়া ডর্টমুন্ডের কাছে সেমিফাইনালে হারের প্রসঙ্গে বলছিলেন এনরিকে, “এই মৌসুমে আমরা দল হিসেবে অনেকটাই এগিয়েছি। আপনাকে যেকোনো পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে এবং শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ ধরে রাখতে হবে। আগামী কয়েক বছরের লক্ষ্য হলো এই প্রক্রিয়াটিকে আরও উন্নত করা।

এমিরেটসে পিএসজির সংগঠিত খেলা, প্রেসিং এবং বলের নিয়ন্ত্রণ আর্সেনালের আক্রমণাত্মক ছন্দকে নষ্ট করে দেয়। রক্ষণভাগের খেলোয়াড় আশরাফ হাকিমি বলেন, দলের নতুন আত্মপরিচয়ই তাদের এই সাফল্যের মূল চাবিকাঠি, “চাবিকাঠি হলো, বল নেওয়া, তাছাড়া বলের দখল ছাড়াও আমাদের ব্যক্তিত্ব দেখানো এবং হাই-প্রেসিং করা। আর্সেনালকে বুঝিয়ে দিতে হবে পার্ক দে প্রিন্স আমাদের বাড়ি।”

পিএসজি একমাত্রবার চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে উঠেছিল ২০২০ সালে। সেবার তারা হান্সি ফ্লিকের বায়ার্ন মিউনিখের কাছে হেরে যায়। অন্যদিকে আর্সেনালের একমাত্র ফাইনাল ছিল ২০০৬ সালে। তারা বার্সেলোনার কাছে শিরোপা হারায়, সেটিও প্যারিসেই।

এই ম্যাচের বিজয়ী দল ৩১ মে মিউনিখে ইন্টার মিলানের বিপক্ষে ফাইনাল খেলবে।

ঢাকা/নাভিদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প এসজ চ য ম প য়নস ল গ আর স ন ল আর স ন ল র জন য ফ ইন ল প এসজ এনর ক

এছাড়াও পড়ুন:

শেয়ারবাজারে এক যুগে সর্বোচ্চ পতন

ব্যাপক দর পতন হয়েছে দেশের শেয়ারবাজারে। গতকাল বুধবার দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেন হওয়া ৩৯৩ শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ৩৮১টিই দর হারিয়েছে। এতে প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ১৪৯ পয়েন্ট বা ৩ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ হারিয়ে ৪৮০২ পয়েন্টে নেমেছে। হার বিবেচনায় 
গতকালের পতন ২০১৩ সালের ২৩ জুলাইয়ের পর সর্বোচ্চ। দ্বিতীয় শেয়ারবাজার সিএসইতেও দর পতন হয়েছে।

দর পতনের পেছনে ভারত-পাকিস্তানের যুদ্ধ পরিস্থিতির প্রভাব থাকতে পারে বলে মনে করছেন শেয়ারবাজার-সংশ্লিষ্ট কেউ কেউ। গতকাল পাকিস্তানের শেয়ারবাজারেও বড় দর পতন হয়েছে। ভারতের শেয়ারবাজারে শুরুর দিকে পতন হলেও শেষ পর্যন্ত সূচক সামান্য বেড়েছে। বিশ্বের অন্য কোনো শেয়ারবাজারে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েনি। নানা কারণে আস্থাহীনতায় ক্রমাগত দর পতনের ধারায় ঘুরপাক খাচ্ছে বাংলাদেশের বাজার। 

দেশের শেয়ারবাজারে খারাপ পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক ডাকা হয়েছে। আগামী রোববার এ বৈঠক হবে। গত মঙ্গলবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ (এফআইডি) এ সভা আহ্বান করে।

গতকাল দিনের লেনদেন পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, ঢাকার শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরুই হয় দর পতনে। প্রথম ১৫ মিনিটেই প্রায় সব শেয়ার দর হারায়। মাত্র ৫ মিনিটে প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ৫০ পয়েন্ট হারায়। এতে আতঙ্ক সৃষ্টি হয় সবার মধ্যে। এর ১৩ মিনিট পর আরও প্রায় ৪৪ পয়েন্টসহ ৯৪ পয়েন্ট হারায়। এরপর সামান্য ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা দেখা যায়। শেষ পর্যন্ত প্রায় সব শেয়ারের দর পতনে ডিএসইএক্স ১৪৯ পয়েন্ট হারিয়ে ৪৮০২ পয়েন্টে নামে। সূচকের অবস্থান ২০২০ সালের ২৫ আগস্টের পর সর্বনিম্ন।

ব্রোকারেজ হাউস প্রাইম ব্যাংক সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান জানান, গতকালের লেনদেনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ভারত-পাকিস্তান সংঘাতের বাইরে অন্য কোনো নেতিবাচক খবর ছিল না। তাই সবাই এটিকে দর পতনের কারণ বলে মনে করছেন। এর বাইরে অন্য কোনো ব্যাখ্যাও নেই।

রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বিনিয়োগ সংস্থা আইসিবির চেয়ারম্যান আবু আহমেদ বলেন, এর আগে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ব্যাপক প্রভাব বাংলাদেশের শেয়ারবাজারে পড়েছিল। তবে ভারত-পাকিস্তানের যুদ্ধাবস্থার প্রভাব ওই যুদ্ধের মতো নয়। তাঁর মতে, বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ব্যাপক হতাশা রয়েছে, যা বড় আকারে প্রতিফলিত হয়েছে।

অল্প বিক্রিতেই বড় পতন

গতকালের লেনদেনের শুরুর প্রথম ১৫ মিনিটে প্রায় ৯০ কোটি টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়েছিল। এর মধ্যে বিচ হ্যাচারি নামে একটি স্বল্প মূলধনি কোম্পানির শেয়ার লেনদেনের পরিমাণই ছিল প্রায় ১৫ কোটি টাকার। এ শেয়ারের দর পতনে সূচকে তেমন কোনো প্রভাবই ছিল না। সূচকে বড় প্রভাব ছিল ইসলামী ব্যাংক, ওয়ালটন, বিএটি 
বাংলাদেশ, ব্র্যাক ব্যাংক, বেক্সিমকো ফার্মা, গ্রামীণফোনসহ বৃহৎ বাজার মূলধনি কোম্পানির শেয়ারের দর পতন। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ