দক্ষিণ আফ্রিকায় গুলিতে প্রাণ গেল বাংলাদেশির
Published: 7th, May 2025 GMT
দক্ষিণ আফ্রিকায় নিরাপত্তী কর্মী ও ডাকাতের গোলাগুলির মাঝে পড়ে রবিউল ইসলাম রনি (৪৯) নামে এক বাংলাদেশি ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। সোমবার বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যায় সাড়ে ৭টার দিকে দেশটির নর্থ ওয়েস্ট প্রদেশের ইথুছিয়ান থানা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত রবিউল ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার মনোহরপুর ইউনিয়নের বিষ্ণদিয়া গ্রামের মৃত গোলজার হোসেন মোল্যার ছেলে। পাঁচ ভাই ও এক বোনের মধ্যে তিনি সবার ছোট। স্ত্রী ও দুই কন্যা সন্তান নিয়ে তিনি দক্ষিণ আফ্রিকায় থাকতেন।
রবিউলের বড় ভাই আব্দুল করিম মোল্যা বলেন, ‘আমার ছোট ভাই ২২ বছর ধরে প্রবাসে থাকে। আমিও দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রবাস জীবন কাটিয়ে বর্তমানে গ্রামে বসবাস করছি। দেশটির ইথুছিয়ান শহরে আমাদের দুটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। সেখানে ৪০ থেকে ৪৫ জন কর্মচারী কাজ করে। রবিউল এসব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দেখাশোনা করে।’
আব্দুল করিম জানান, গত সোমবার দক্ষিণ আফ্রিকার স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ১১টার দিকে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কাজ শেষে বাসায় ফিরছিলেন রবিউল। পথে ডাকাত দল একটি ব্যাংকের টাকা বহনকারী গাড়িতে গুলি চালায়। এ সময় গাড়িতে থাকা নিরাপত্তা কর্মীরাও পাল্টা গুলি চালায়। দু’পক্ষের গোলাগুলির মাঝে আটকা পড়েন রবিউল। এক পর্যায়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে তিনি ঘটনাস্থলে প্রাণ হারান।
বুধবার রবিউলের গ্রামের বাড়ি গিয়ে দেখা যায়, আত্মীয়-প্রতিবেশীরা ভিড় করে আছেন। তাঁর স্বজনরা কাঁদছেন। রবিউলের ভাতিজা আল মামুন বলেন, ‘আগামী বৃহস্পতিবার রাতে মরদেহ ঢাকায় পৌঁছাবে। এর পর গ্রামে এনে দাফন করা হবে।’
শৈলকুপা থানার ওসি মাসুম খান জানান, ডাকাতদের গুলিতে প্রবাসে কেউ নিহত হয়েছেন, এমন কোনো খবর পুলিশের কাছে নেই।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ন হত ব ল দ শ ন হত ব যবস
এছাড়াও পড়ুন:
ট্রিপল মার্ডার: তিন জনের মৃত্যুদণ্ড, পাঁচ জনের যাবজ্জীবন
ইভটিজিংয়ের অভিযোগকে কেন্দ্র করে মুন্সীগঞ্জের উত্তর ইসলামপুর এলাকায় তিন জনকে হত্যার মামলায় তিন জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং পাঁচ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৮ মে) ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক মাসুদ করিম এ রায় দেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলো—রাকিবুল হাসান সৌরভ ওরফে সৌরভ প্রধান, শিহাব প্রধান এবং রনি বেপারী। মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি তাদের ১ লাখ টাকা করে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন—শাকিব প্রধান, শামীম প্রধান, অনিক বেপারী, রায়হান এবং জাহাংগীর ওরফে ছোট জাহাঙ্গীর। তাদেরকে ১ লাখ টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে এক বছর বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট ট্রাইব্যুনালের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর মো. বিল্লাল হোসেন এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
এক মেয়েকে ইভটিজিং করা নিয়ে ২০২১ সালের ২৪ মার্চ উত্তর ইসলামপুর এলাকায় আওলাদ হোসেন মিন্টুর বাড়ির সামনে অভি, ইমনসহ অন্যদের নিয়ে সালিশ হয়। সালিশে ইভটিজিংয়ের অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি। উভয় পক্ষের মধ্যে আপস করে দেয়া হয়। তবে, এর কিছু সময় পর অভির নেতৃত্বে কয়েকজন ইমন, শাকিব ও আলফাজের ওপর অতর্কিত হামলা করে। এ সময় ইমন বাঁশ দিয়ে অভিকে আঘাত করতে গেলে তা গিয়ে লাগে সৌরভকে। সৌরভের সাথে ইমন ও শাকিবের হাতাহাতি হয়। এ ঘটনায় সৌরভের বাবা জামাল হোসেন আওলাদ হোসেনের কাছে তাৎক্ষণিক বিচার দাবি করে। পরে রাত ১১টার দিকে আবার সালিশে বসে তারা। এ সময় জামাল হোসেনের লোকজন আওলাদ হোসেন, আফজাল হক, ইমন, শাকিবদের ওপর হামলা করে। অভি ও শিহাব ইমনকে, রনি আওলাদ হোসেনকে এবং শিহাব শাকিবকে ছুরিকাঘাত করে। তাদের চিৎকারে লোকজন এলে জামালদের লোকজন পালিয়ে যায়। আহত তিন জনকে উদ্ধার করে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক ইমনকে মৃত ঘোষণা করেন। উন্নত চিকিৎসার জন্য অপর দুই জনকে নেওয়ার পথে শাকিব মারা যান। চিকিৎসাধীন অবস্থায় আওলাদ হোসেন ২৫ মার্চ মারা যান।
এ ঘটনায় ২৬ মার্চ আওলাদ হোসেনের স্ত্রী খালেদা আক্তার মুন্সীগঞ্জ থানায় ১২ জনের নামে মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত করে মুন্সীগঞ্জ সিআইডির ইন্সপেক্টর আসলাম আলী অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
ওই বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু হয়। মামলার বিচার চলাকালে আদালত ২৮ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন।
ঢাকা/এম/রফিক