অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাদ্য তৈরি ও বিক্রির অভিযোগে যশোরে ‘কাচ্চি ভাই’, ‘জনি কাবাব’ ও ‘অনন্যা ঘোষ ডেয়ারি’ নামের তিনটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে অভিযান চালিয়ে মামলা করা হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেলে জেলা বিশুদ্ধ খাদ্য আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শান্তনু কুমার মণ্ডলের নেতৃত্বে একটি দল এসব প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালায়।

অভিযানে জনস্বাস্থ্য ঝুঁকির মুখে ফেলে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাদ্য প্রস্তুত, সরবরাহ ও খাদ্যপ্রক্রিয়ায় মান লঙ্ঘনের অভিযোগে সংশ্লিষ্ট তিনটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে থেকেই মামলা করেন স্যানেটারি পরিদর্শক ও নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শক মহিবুল ইসলাম।

অভিযানে অংশ নেন জেলা নিরাপদ খাদ্য কর্মকর্তা আবদুর রহমান ও জেলা স্যানেটারি পরিদর্শক নাজনীন নাহার।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, খাদ্য আদালতের ভ্রাম্যমাণ দলটি প্রথমেই যশোরের রেল সড়কে অবস্থিত কাচ্চি ভাই নামের প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালায়। বিভিন্ন অসংগতির কারণে প্রতিষ্ঠানের মালিক ভেকুটিয়া গ্রামের সোহেল সিরাজের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।

পরে দলটি যায় পার্শ্ববর্তী জনি কাবাবে। সেখানেও ছিল একই অবস্থা। বিশেষ করে রান্নাঘরে দেখেন অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ। অনিরাপদ অবস্থায় রান্নাঘরেই রয়েছে গ্যাসের সিলিন্ডার। প্রতিষ্ঠানের মালিক বেজপাড়ার জয়নুল হক জনির বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।

এরপর দলটি যায় শহরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সড়কের মিষ্টি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান অনন্যা ঘোষ ডেয়ারিতে। সেখানে গিয়ে আদালত দেখতে পান, দোকানের সামনে সুন্দরভাবে মিষ্টি সাজিয়ে রাখলেও ভেতরের গুদামে ময়লা–আবর্জনার স্তূপের পাশেই রাখা হয়েছে মিষ্টির গামলাসহ বিভিন্ন আসবাব। পরে তাঁরা যান ঘোপ নওয়াপাড়া সড়কে অনন্যা ঘোষ ডেয়ারির কারখানায়। সেখানে অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ, মিষ্টিতে মাছি, স্যাতসেতে পরিবেশ ছিল। পরে প্রতিষ্ঠানের মালিক মিহির ঘোষের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা নিরাপদ খাদ্য কর্মকর্তা আবদুর রহমান বলেন, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাদ্যদ্রব্য প্রস্তুত, সরবরাহ ও প্রক্রিয়াজাতকরণের অভিযোগে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের নিয়ন্ত্রণাধীন একটি আদালতের নেতৃত্বে তিনটি প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালানো হয়। জনস্বাস্থ্য ঝুঁকির মুখে ফেলায় নিরাপদ খাদ্য আইন-২০১৩ অনুযায়ী তিনটি প্রতিষ্ঠানের মালিকের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা করা হয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন র পদ খ দ য

এছাড়াও পড়ুন:

পাকিস্তানে হামলায় যেসব যুদ্ধাস্ত্র ব্যবহার করেছে ভারত

ভারত মঙ্গলবার রাতে পাকিস্তান ও পাকিস্তান নিয়ন্ত্রত কাশ্মীর জুড়ে সন্ত্রাসী অবকাঠামো লক্ষ্য করে সামরিক অভিযান চালিয়েছে। ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামে পরিচিত এই অভিযানে ভারতীয় বিমান, নৌ এবং স্থলভিত্তিক তিন বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছিল।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৯ সালে বালোকোট অভিযানের পর এটি ভারতের দ্বারা পরিচালিত সবচেয়ে বিস্তৃত আন্তঃসীমান্ত নির্ভুল হামলা।

পহেলগাম সন্ত্রাসী হামলার প্রতিশোধ নিতে পাকিস্তান এবং পাক অধিকৃত কাশ্মীরের নয়টি স্থানে ভারতীয় বাহিনী ২৪টি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে ৭০ জন সন্ত্রাসীকে হত্যা করার দাবি করেছে।  

আরো পড়ুন:

পাকিস্তানে ৭০ জনকে হত্যার দাবি ভারতের

ভারত সন্ত্রাসবাদকে নির্মূল করতে দৃঢ়ভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ: অমিত শাহ

‘অপারেশন সিঁদুর’-এ যেসব যুদ্ধাস্ত্র ব্যবহার করেছে ভারত

এনডিটিভ জানিয়েছে, ভারত এই অভিযানে উচ্চ-নির্ভুলতা, দূরপাল্লার স্ট্রাইক অস্ত্র ব্যবহার করেছে। এর মধ্যে ছিল ‘স্ক্যাল্প’ ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র, নির্ভুল বোমা ‘হামার’ এবং লোটারিং যুদ্ধাস্ত্র।

* স্ক্যাল্প (স্টর্ম শ্যাডো): স্ক্যাল্প ক্ষেপণাস্ত্রটি স্টর্ম শ্যাডো নামেও পরিচিত। এটি দূরপাল্লার, আকাশ থেকে নিক্ষেপযোগ্য ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র, যার পাল্লা ২৫০ কিলোমিটারেরও বেশি এবং গভীর-আক্রমণ ক্ষমতার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে।

* হ্যামার (হাইলি এজাইল মডুলার মিনিশন এক্সটেন্ডেড রেঞ্জ): হ্যামার স্মার্ট বোমাটি লস্কর এবং জইশ-ই-মোহাম্মদ (জেইএম) কর্তৃক প্রশিক্ষণ ও সরবরাহ কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত সুরক্ষিত বাঙ্কার এবং বহুতল ভবনের মতো সুরক্ষিত অবকাঠামো আক্রমণ করতে ব্যবহৃত হয়েছিল। হ্যামার হলো একটি নির্ভুল-নির্দেশিত, স্ট্যান্ডঅব যুদ্ধাস্ত্র যা উৎক্ষেপণের উচ্চতার উপর নির্ভর করে ৫০-৭০ কিলোমিটার পরিসরে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করতে সক্ষম।

* কামিকাজে ড্রোন: মূলত নজরদারি চালানোর কাজে ব্য়বহৃত হয়। যতক্ষণ পর্যন্ত না লক্ষ্য নির্ধারণ হচ্ছে, ততক্ষণ উড়ে বেড়ায় এই ড্রোন। এই ড্রোনকে কামিকাজে ড্রোন বা আত্মঘাতী ড্রোনও বলা হয়। স্বয়ংক্রিয়ভাবেও উড়তে পারে এই ড্রোন, আবার রিমোটের মাধ্যমেও নিয়ন্ত্রণ করা যায়। লক্ষ্যবস্তুকে চিহ্নিত করার পাশাপাশি, এই ড্রোনে বিস্ফোরক বা পেলোডও বসানো যায়। ড্রোনের মাধ্যমেই আঘাত হানা যায় লক্ষ্যে।

পাকিস্তানে যেসব লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে ভারত

ভারত তাদের ‘অপারেশন সিঁদুর’ অভিযানে পাকিস্তানের ৯টি স্থানে হামলা চালিয়েছে, যার মধ্যে চারটি পাকিস্তানের মূল ভূখণ্ডে এবং পাঁচটি পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীরে অবস্থিত।

ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, কোনো পাকিস্তানি সামরিক স্থাপনা লক্ষ্যবস্তু করা হয়নি। বরং নিষিদ্ধ সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর ঘাঁটি ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে হামলা চালানো হয়েছে।

* মারকাজ সুবহানআল্লাহ, বাহাওয়ালপুর: জৈশ-ই-মোহাম্মদের সদর দপ্তর হিসেবে পরিচিত। এখানে সিনিয়র সদস্যদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।

* মারকাজ তাইবা, মুরিদকে: লস্কর-ই-তৈয়বার শিক্ষা, রসদ ও পরিকল্পনার জন্য ব্যবহৃত ২০০ একর জমির একটি কম্পাউন্ড। এটি অভিযানে আঘাত করা সবচেয়ে সুরক্ষিত লক্ষ্যবস্তুগুলোর মধ্যে একটি ছিল।

* মারকাজ আব্বাস, কোটলি: এই ক্যাম্পটি জৈশ-ই-মোহাম্মদের সদস্যদের আত্মঘাতী বোমা হামলার প্রশিক্ষণ ও অস্ত্র বিতরণের কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। 

* সৈয়দনা বিলাল ও শাওয়াই নাল্লা ক্যাম্প, মুজাফ্ফরাবাদ: জৈশ-ই-মোহাম্মদ ও লস্কর-ই-তৈয়বার সদস্যদের অনুপ্রবেশ পয়েন্ট এবং স্লিপার সেলগুলোর প্রশিক্ষণ সুবিধা হিসেবে পরিচিত।

* মারকাজ আহলে হাদিস, বার্নালা: লস্কর-ই-তৈয়বার একটি সহায়তা কেন্দ্র এবং আঞ্চলিক সরবরাহ কেন্দ্র হিসেবে কাজ করে।

* সরজাল, তেহরা কালান: জৈশ-ই-মোহাম্মদে নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত সদস্যদের শিবির হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

* মেহমুনা জোয়া, শিয়ালকোট: হিজবুল মুজাহিদিনের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। কাশ্মীর উপত্যকায় এই গোষ্ঠীর উপস্থিতি হ্রাস পাওয়া সত্ত্বেও এখনও সক্রিয়।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পাকিস্তানের শেয়ারবাজারে রক্তপাত হলেও গতকাল দিনশেষে বাড়ল ভারতের সূচক
  • এবারের এপ্রিলে লোডশেডিং কেন কমল
  • বিদ্যুতে কিছু কমিয়ে, আমদানি বাড়িয়ে শিল্পে দেওয়া হবে বাড়তি গ্যাস
  • যুদ্ধের নেপথ্যে বাণিজ্যিক স্বার্থ রয়েছে: নচিকেতা
  • শি‌ল্পে ২৫ কোটি ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ বাড়া‌নো হ‌চ্ছে: জ্বালা‌নি উপ‌দেষ্টা
  • শি‌ল্পে ২৫ কোটি ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ বাড়া‌নো হ‌চ্ছে
  • তোপের মুখে পোস্ট সরালেন নচিকেতা
  • যুদ্ধ মানেই মুনাফার খেলা কেন বললেন নচিকেতা
  • পাকিস্তানে হামলায় যেসব যুদ্ধাস্ত্র ব্যবহার করেছে ভারত