রমনায় বোমা হামলা: আসামিদের ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের ওপর রায় ঘোষণা চলছে
Published: 8th, May 2025 GMT
দুই যুগ আগে পয়লা বৈশাখের অনুষ্ঠানে রমনা বটমূলে বোমা হামলার ঘটনায় হত্যা মামলায় আসামিদের ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন) ও আপিলের ওপর রায় ঘোষণা শুরু করেছেন হাইকোর্ট।
বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি নাসরিন আক্তারের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা ২৫ মিনিটে রায় ঘোষণা শুরু করেন।
শুরুতে আদালত বলেন, আজ ঘটনা ও সাক্ষী পর্যালোচনা করা হবে। বাকিটা (রায়) পরবর্তী তারিখে হবে। এ সময় আসামিপক্ষের আইনজীবী এস এম শাহজাহান বলেন, ‘তাহলে রায়ের আদেশ অংশ (সিদ্ধান্ত) আজ হচ্ছে না?’ তখন আদালত বলেন, ‘আজ আদেশ অংশ হচ্ছে না।’ এরপর রায় ঘোষণা শুরু হয়।
এর আগে আসামিদের ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন) ও আপিলের ওপর শুনানি শেষে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ (সিএভি) রাখেন। এরপর গত ৩০ এপ্রিল বিষয়টি আদেশের জন্য আদালতের কার্যতালিকায় ওঠে। সেদিন আদালত রায়ের জন্য আজ বৃহস্পতিবার (৮ মে) দিন ধার্য করেন। এ অনুসারে মামলাটি রায়ের জন্য আজ আদালতের কার্যতালিকায় ১৬৩ নম্বর ক্রমিকে ওঠে।
২০০১ সালের ১৪ এপ্রিল রমনা বটমূলে পয়লা বৈশাখের অনুষ্ঠানে বোমা হামলা হয়। এতে ঘটনাস্থলেই ৯ জন নিহত হন। পরে হাসপাতালে মারা যান একজন। এ ঘটনায় করা মামলা রমনায় বোমা হামলা মামলা হিসেবে পরিচিত পায়।
ওই মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ের পর ২০১৪ সালে আসামিদের ডেথ রেফারেন্স অনুমোদনের জন্য হাইকোর্টে আসে। অন্যদিকে কারাগারে থাকা দণ্ডিত আসামিরা জেল আপিল ও নিয়মিত আপিল করেন। ডেথ রেফারেন্স ও আপিল শুনানির জন্য গত বছরের ৮ ডিসেম্বর হাইকোর্টের ওই বেঞ্চের কার্যতালিকায় ওঠে। পেপারবুক উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে শুনানি শুরু হয়।
আদালতে আসামিপক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহজাহান ও সরওয়ার আহমেদ। দুই আসামির পক্ষে আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির শুনানি করেন। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুলতানা আক্তার ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো.
রাজধানীর রমনা বটমূলে বোমা হামলার ঘটনায় দায়ের করা হত্যা মামলায় ২০১৪ সালের ২৩ জুন ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ রুহুল আমিন রায় দেন। এই রায়ে মুফতি হান্নানসহ আটজনের মৃত্যুদণ্ড এবং ছয়জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। মুফতি হান্নান ছাড়া মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত ব্যক্তিরা হলেন আকবর হোসেন, আরিফ হাসান, সাবেক উপমন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টুর ভাই মো. তাজউদ্দিন, হাফেজ জাহাঙ্গীর আলম বদর, আবু বকর ওরফে হাফেজ সেলিম হাওলাদার, আবদুল হাই ও শফিকুর রহমান। তবে সিলেটে গ্রেনেড হামলার মামলায় মুফতি হান্নানের মৃত্যুদণ্ড ইতিমধ্যে কার্যকর হয়েছে। বিচারিক আদালতের রায়ে যাবজ্জীবন দণ্ডিত ব্যক্তিরা হলেন শাহাদাতউল্লাহ জুয়েল, সাব্বির, শেখ ফরিদ, আবদুর রউফ, ইয়াহিয়া ও আবু তাহের।
কোনো ফৌজদারি মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ে কোনো আসামির মৃত্যুদণ্ড হলে তা কার্যকরে হাইকোর্টের অনুমোদন লাগে। এটি ডেথ রেফারেন্স মামলা হিসেবে পরিচিত। পাশাপাশি দণ্ডাদেশের রায়ের বিরুদ্ধে আসামিদের জেল আপিল, নিয়মিত আপিল ও বিবিধ আবেদন করার সুযোগ রয়েছে। ডেথ রেফারেন্স এবং এসব আপিল ও আবেদনের ওপর সাধারণত একসঙ্গে শুনানি হয়ে থাকে।
বোমা হামলার ওই ঘটনায় করা হত্যা মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ের পর আসামিদের মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের (ডেথ রেফারেন্স) জন্য রায়সহ নথিপত্র হাইকোর্টে আসে, যা ২০১৪ সালে ডেথ রেফারেন্স মামলা হিসেবে নথিভুক্ত হয়। এরপর শুনানির পূর্বপ্রস্তুতি হিসেবে পেপারবুক (মামলার বৃত্তান্ত) তৈরি করা হয়। অন্যদিকে কারাগারে থাকা আসামিরা পৃথক আপিল ও জেল আপিল করেন। হত্যা মামলায় পেপারবুক (মামলার বৃত্তান্ত) প্রস্তুতসহ আনুষঙ্গিক প্রক্রিয়ার পর ডেথ রেফারেন্স ও আসামিদের আপিল ২০১৬ সালে হাইকোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চে প্রথম শুনানির জন্য ওঠে।
শুনানিও শুরু হয়। পরে কার্যতালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়। এ নিয়ে আলোচিত এই মামলায় আট আসামির ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন) ও আপিল হাইকোর্টের তিনটি বেঞ্চের কার্যতালিকায় উঠলেও শুনানি শেষে মামলাটি নিষ্পত্তি হয়নি। এরপর আসামিদের ডেথ রেফারেন্স ও আপিল হাইকোর্টের ওই দ্বৈত বেঞ্চে শুনানির জন্য গত বছরের ৮ ডিসেম্বর কার্যতালিকায় ওঠে। এর ধারাবাহিকতায় শুনানি শেষে এই মামলায় আজ রায় দেওয়া শুরু হলো।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র ক র যত ল ক য় ন র জন য আইনজ ব আপ ল ও ও আপ ল র ওপর ঘটন য়
এছাড়াও পড়ুন:
হুমা কুরেশির ভাই খুন
বলিউড অভিনেত্রী হুমা কুরেশির চাচাত ভাইকে খুন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) রাতে দিল্লির নিজামুদ্দিন এলাকায় হত্যা করা হয় আসিফ কুরেশিকে। ইন্ডিয়া টুডে এ খবর প্রকাশ করেছে।
এ প্রতিবেদে জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাত প্রায় ১১টার দিকে নিজামুদ্দিনের জংপুরা ভোগল লেনে ঘটনাটি ঘটেছে। অভিযুক্ত দুইজনকে এরই মধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, আসিফের বাড়ির প্রধান গেটের সামনে একটি টু-হুইলার পার্কিং নিয়ে তার সঙ্গে দুই ব্যক্তির মধ্যে বিবাদ শুরু হয়। এরপর অভিযুক্তরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে তার ওপর আক্রমণ করে। গুরুতর আহত অবস্থায় আসিফকে দ্রুত নিকটবর্তী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
আরো পড়ুন:
বলিউডের নয়া ‘ক্রাশ’ অনীত
হৃতিকের ছেলেকে পাপারাজ্জিদের তাড়া, ভিডিও ভাইরাল
আসিফের স্ত্রী ও আত্মীয়দের অভিযোগ, তুচ্ছ একটি বিষয়কে কেন্দ্র করে অভিযুক্তরা তাকে নৃশংসভাবে আক্রমণ করে।
আসিফের স্ত্রী সাইনাজ কুরেশি বলেন, “আসিফ কাজ থেকে বাড়ি ফেরার পর দেখতে পান, প্রতিবেশীর টু-হুইলারটি আমাদের বাড়ির প্রধান গেটের সামনে রাখা রয়েছে। এরপর আসিফ তাদের গাড়িটি সেখান থেকে সরাতে বলেন। কিন্তু গাড়ি সরানোর পরিবর্তে প্রতিবেশীরা আসিফকে গালিগালাজ করতে শুরু করে। তারপর ধারালো অস্ত্র দিয়ে তার ওপর আক্রমণ চালায়।”
এ ঘটনায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে। দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ, এখন তদন্ত চলছে। তবে বিষয়টি নিয়ে হুমা কুরেশির কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
ঢাকা/শান্ত