মুন্সিগঞ্জের ট্রিপল হত্যা মামলা: ৩ জনের মৃত্যুদণ্ড, ৫ জনের যাবজ্জীবন
Published: 8th, May 2025 GMT
চার বছর আগে মুন্সিগঞ্জে ট্রিপল মার্ডার হত্যা মামলায় তিনজনের মৃত্যুদণ্ড ও পাঁচজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এ মামলায় খালাস পেয়েছেন ১০ জন।
আজ বৃহস্পতিবার ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল ৩-এর বিচারক মাসুদ করিম এ রায় ঘোষণা করেন। প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বাদীপক্ষের আইনজীবী মো. আজিম উদ্দিন।
মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া তিন আসামি হলেন শিহাব প্রধান, রনি ব্যাপারী ও রাকিবুল হাসান। যাবজ্জীবন পাওয়া পাঁচজন হলেন সাকিব প্রধান, অনিক ব্যাপারী, শামীম প্রধান, রায়হান ও জাহাঙ্গীর হোসেন। মামলা থেকে খালাস পেয়েছেন ১০ আসামি। রায় ঘোষণার পর শাকিব, শামীম ও রনিকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অন্যরা পলাতক।
বাদীপক্ষের আইনজীবী আজিম উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ২০২১ সালের ২৪ মার্চ মুন্সিগঞ্জের উত্তর ইসলামপুরে বোনকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদে দুই ভাইসহ তিনজনকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। নিহত ব্যক্তিরা হলেন আওলাদ হোসেন মিন্টু প্রধান, তাঁর ভাই সাকিব ও তাঁদের স্বজন ইমন।
এ ঘটনায় ২০২১ সালের ২৬ মার্চ মুন্সিগঞ্জ সদর থানায় হত্যা মামলা করা হয়।
মামলাটি তদন্ত করে ২০২২ সালের ৮ জুন ১৮ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ।
বাদীপক্ষের আইনজীবী বলেন, ২০২৪ সালের ২৫ আগস্ট মুন্সিগঞ্জের ট্রিপল মার্ডার হত্যা মামলাটি বিচারের জন্য ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল ৩-এ পাঠানো হয়। ওই বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর ১৮ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। আজ এ মামলার রায় ঘোষণা হলো।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
শেখ হাসিনার মামলার বিচারপ্রক্রিয়ায় অস্বচ্ছতা দেখেননি রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী
জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে করা মামলার বিচারপ্রক্রিয়ায় কোনো অস্বচ্ছতা দেখেননি বলে মন্তব্য করেছেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন। তিনি বলেন, বিচারপ্রক্রিয়ায় কোনো অস্বচ্ছতা দেখেননি তিনি। কারণ, তাঁকে কেউ কোনো রকমের ইন্টারাপ্ট করেনি (বাধা দেয়নি)। এর বাইরে কোনো অস্বচ্ছতা আছে কি না, তা তাঁর জানা নেই।
শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে করা এ মামলার রায় আগামী সোমবার (১৭ নভেম্বর) নির্ধারণ করার পর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে আমির হোসেন এ কথা বলেন।
এ মামলায় শেখ হাসিনার পাশাপাশি সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান ও পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল–মামুন আসামি। এর মধ্যে সাবেক আইজিপি মামুন নিজের দোষ স্বীকার করে ‘অ্যাপ্রুভার’ (রাজসাক্ষী নামে পরিচিত) হয়েছেন।
আসামি শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান পলাতক। তাঁদের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন।
সাক্ষ্য গ্রহণসহ সবকিছু সমাপ্ত করে রায়ের দিন ধার্য করায় ট্রাইব্যুনালের বিচারপতি ও বিচারকদের ধন্যবাদ দেন আইনজীবী আমির হোসেন। তিনি বলেন, রাষ্ট্রপক্ষের উপস্থাপন করা সাক্ষীদের কাছ থেকে বিভিন্ন রকম গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আনতে সক্ষম হয়েছেন তিনি। সেই সঙ্গে রাষ্ট্রপক্ষের উপস্থাপন করা দালিলিক সাক্ষ্যে বিতর্ক (কন্ট্রোভার্সি) তৈরি করার চেষ্টা করেছেন এবং বিভিন্ন সময় দালিলিক সাক্ষীর ওপর বিতর্ক তৈরি হয়েছে বলে তিনি বিশ্বাস করেন। তিনি বিশ্বাস করেন, তাঁর মক্কেলদ্বয় (শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান) খালাস পাবেন।
রাষ্ট্রপক্ষ থেকে যেসব কাগজপত্র ও দলিলাদি পাওয়া গেছে, তার আলোকে এই মামলা পরিচালনা করেছেন জানিয়ে আমির হোসেন বলেন, সে জায়গায় রাষ্ট্রপক্ষ থেকে তাঁকে কোনো বাধা দেওয়া হয়নি। কাগজপত্র যা যা দরকার, যা যা রাষ্ট্রপক্ষের কাছে ছিল, আইন অনুযায়ী যেসব নথিপত্র তাঁর পাওয়া উচিত, সেসবই তাঁকে দেওয়া হয়েছে।
শুধু রাষ্ট্রপক্ষের নথিপত্র দিয়ে মামলা যথাযথভাবে পরিচালনা করতে পেরেছেন, এ–সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে আইনজীবী আমির বলেন, তাঁর সীমাবদ্ধতা থেকে তিনি চেষ্টা করেছেন, যথেষ্ট চেষ্টা করেছেন। তাঁর তরফ থেকে চেষ্টার কোনো ত্রুটি ছিল না এবং তাঁর চেষ্টায় কেউ কোনো বাধাও দেয়নি।
আমির হোসেন বলেন, আসামিরা উপস্থিত থাকলে যেসব সুবিধা পাওয়া যায়, যেসব ডকুমেন্টারি এভিডেন্স (প্রামাণ্য নথিপত্র) হয়তো তাঁকে তাঁরা (আসামিরা) দিতে পারতেন, সেসব নিয়ে তিনি লড়াই করতে পারতেন। সেসব তিনি পাচ্ছেন না। রাষ্ট্রপক্ষ এক জায়গায় কোনো একটা ঘটনার যেভাবে বর্ণনা দিয়েছে, সেই বর্ণনার বাইরেও হয়তো কোনো বর্ণনা থাকতে পারে। সেসব তিনি পাননি। এই জায়গায় তাঁর কিছু সীমাবদ্ধতা ছিল। সেই সীমাবদ্ধতা তাঁর মক্কেলরা অনুপস্থিত থাকার কারণে।
এ মামলার আসামি পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল–মামুন নিজে বাঁচার জন্য অ্যাপ্রুভার বা রাজসাক্ষী হয়েছেন বলে উল্লেখ করেন আমির হোসেন। তিনি বলেন, তাঁর মক্কেলদের (শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান) ওপর ভর করে সাবেক আইজিপি এটি করেছেন।