Samakal:
2025-09-22@12:45:52 GMT

ধুলার ওপরই চলছে কার্পেটিং

Published: 8th, May 2025 GMT

ধুলার ওপরই চলছে কার্পেটিং

পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সৈকতসংলগ্ন সড়কের কাজ চলছে দায়সারা। সড়কের কাজে প্রাইম কোট দেওয়ার নিয়ম থাকলেও এখানে তা মানা হয়নি। ধুলাবালুর ওপর নামমাত্র কার্পেটিং করেই কাজ চলছে বলে স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ। তাদের ভাষ্য, নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের কারণে কয়েকবার তারা কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন। অদৃশ্য শক্তিবলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দিনরাত এই নির্মাণকাজ চালিয়ে যাচ্ছে। 
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, কুয়াকাটা জিরো পয়েন্ট থেকে পূর্বদিকে হোসেনপাড়া বাজার ধোলাই মার্কেট পর্যন্ত এই সড়কটির দৈর্ঘ্য পাঁচ কিলোমিটার। এলাকাবাসীর কাছে এটি পরিচিত মেরিন ড্রাইভ সড়ক হিসেবে। সম্প্রতি ‘বরিশাল বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রশস্তকরণ প্রকল্পে’র আওতায় ৯ কোটি ৬১ লাখ টাকায় এই সড়ক নির্মাণের উদ্যোগ নেয় এলজিইডি। কাজ পেয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বরেন্দ্র কনস্ট্রাকশন। কবে দরপত্র ও কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে, এসব বিষয়ে তথ্য জানতে উপজেলা এলজিইডির কর্মকর্তাদের সঙ্গে দফায় দফায় যোগাযোগ করেও বক্তব্য পাওয়া যায়নি। 

১৬ ফুট চওড়া সড়কটিতে ৪০ মিলিমিটার কার্পেটিং করার কথা রয়েছে। কিন্তু বেশির ভাগ জায়গায়ই তা মানা হয়নি। কোথাও কোথাও দেওয়া হয়নি প্রাইম কোট পর্যন্ত। পাঞ্জুপাড়া গ্রামের দর্জি মোহাম্মদ নাঈমের ভাষ্য,  ঠিকাদারের লোকজন যে প্রাইম কোট দিয়েছে, তা নামেমাত্র। তার ওপর যে কার্পেটিং করা হয়েছে, এর ফিনিশিংও ভালো হয়নি। তিনি মনে করেন, এই রাস্তা নির্মাণের নামে তাদের সঙ্গে প্রতারণা করা হচ্ছে। তাদের কোনোই উপকারে আসবে না সড়কটি। বছর পার হতে না হতেই সড়কটি নষ্ট হয়ে যাবে। 
স্থানীয় লোকজন জানায়, বঙ্গোপসাগরের তীরঘেঁষা এই সড়কটি কয়েক দশক ধরে উপকূলবাসীকে সিডর-আইলার মতো বেশ কয়েকটি ঘূর্ণিঝড়ের হাত থেকে রক্ষা করেছে। কুয়াকাটা ভ্রমণে আসা পর্যটকদের কাছে এটি মেরিন ড্র্রাইভ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। কিন্তু ব্যস্ততম এই সড়কটি সংস্কারের শুরু থেকেই অনিয়ম চলছে। নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের কারণে কয়েক দফায় তারা কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন। তাদের দাবি, অতি গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি যেন ভালোভাবে সংস্কার করা হয়। 

যেভাবে সংস্কার চলছে, এতে সড়কটি এক বছরও চলাচলযোগ্য থাকবে না। এমন মন্তব্য করেন হোসেনপাড়ার বাসিন্দা মো.

মনির হোসেন। পেশায় ভ্যানচালক এই ব্যক্তির ভাষ্য, ঠিকাদারের লোকজন শুরু থেকেই দিনে-রাতে মিলিয়ে রাস্তার কাজ করছে, সাধারণ মানুষ যাতে (অনিয়ম) দেখতে না পারে। খোয়ার ওপর অনেক বালু আছে। সেই বালুর ওপরে প্রাইম কোট দিয়েছে। অপরিচ্ছন্ন সড়কের ওপর প্রাইম কোট দেওয়ায় তা টিকবে না। তিনি বলেন, যে পরিমাণ প্রাইম কোট দেওয়ার কথা, তার অর্ধেকও দেওয়া হচ্ছে না। এত বছর পরে এমন রাস্তা চায় না এলাকাবাসী।
কুয়াকাটা হোটেল-মোটেল এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ইব্রাহিম ওয়াহিদ বলেন, কুয়াকাটার সর্বব্যস্ত সড়কটি পর্যটকদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এখানে কোনো মেরিন ড্রাইভ না থাকায় এই সড়কটিই মেরিন ড্রাইভ হিসেবে ব্যবহার করা হয়। সংস্কারকাজের শুরু থেকেই অনিয়ম নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সাধারণ মানুষ ব্যাপক ক্ষোভ প্রকাশ করে আসছিলেন। কিন্তু অদৃশ্য শক্তির বলে তারা (ঠিকাদার) দিন-রাতে অনিয়ম করে যাচ্ছেন, কেউ দেখছে না। কুয়াকাটাবাসীর স্বার্থে রাস্তাটির কাজ সুন্দরভাবে শেষ করার দাবি জানান তিনি। 
এ বিষয়ে বরেন্দ্র কনস্ট্রাকশনের স্বত্বাধিকারী বা তার প্রতিনিধিদের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। তাদের সহঠিকাদার (সাব-কন্ট্রাক্টর) ফোরকান হোসেনের দাবি, এলজিইডি কর্মকর্তাদের নির্দেশনা অনুসারে সড়ক পাকাকরণের কাজ হচ্ছে। কোনো অনিয়ম হচ্ছে না।

গতকাল বৃহস্পতিবার এসব বিষয়ে কথা হয় এলজিইডি কলাপাড়া উপজেলা প্রকৌশলী মোহাম্মদ সাদিকুর রহমানের সঙ্গে। তাঁর দাবি, ওই সড়কের পাকাকরণ কাজে অনিয়মের অভিযোগ ওঠার পরপরই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তখন কিছু সময়ের জন্য কাজ বন্ধের নির্দেশ দেন। কিছু জায়গার কার্পেটিং তিনি ৪০ মিলিমিটারের কম পেয়েছেন জানিয়ে বলেন, সেগুলো ঠিক করতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তাদের শিডিউল অনুযায়ী কাজ শেষ করতেও বলেছেন। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সড়ক ই সড়কট র ওপর ব যবহ সড়ক র ল কজন

এছাড়াও পড়ুন:

নিয়ম ভেঙে বিদেশ সফর, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের ৫ নির্দেশনা

সরকারি নিয়মের ব্যত্যয় ঘটিয়ে ব্যক্তিগতভাবে বিদেশ ভ্রমণে যাচ্ছেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং এর অধীনস্থ বিভিন্ন দপ্তর ও সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এর ফলে শুধু সরকারি বিধি লঙ্ঘিত হচ্ছে না, পাশাপাশি দাপ্তরিক কাজেও ব্যাঘাত ঘটছে। এই পরিস্থিতিতে বিদেশ সফর নিয়ন্ত্রণে ৫ দফা নির্দেশনা জারি করেছে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়।

নির্দেশনায় বলা হয়, সম্প্রতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও সংস্থার কর্মকর্তারা ব্যক্তিগত উদ্যোগে বিদেশি সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করে বিদেশ সফরে যাচ্ছেন, যা বিধি পরিপন্থি। আবার অনেক ক্ষেত্রে আমন্ত্রণপত্রও সরাসরি প্রেরণ করা হচ্ছে সংশ্লিষ্টদের কাছে, যা মন্ত্রণালয় বা দপ্তর প্রধানের মাধ্যমে হওয়া উচিত ছিল। একই সঙ্গে একাধিক কর্মকর্তা একই সময়ে বিদেশ সফরে যাওয়ার ঘটনাও দেখা গেছে। এসব অনিয়ম বন্ধে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় ৫টি নির্দেশনা জারি করেছে।

আরো পড়ুন:

রাষ্ট্রদূত হলেন দুই সেনা কর্মকর্তা

জাতীয় নির্বাচন শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

৫টি নির্দেশনা
১. বিদেশি সংস্থার সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ নয়: কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারী ব্যক্তিগতভাবে বিদেশি সংস্থার সঙ্গে সরাসরি পত্র যোগাযোগ করতে পারবেন না। যোগাযোগ করতে হবে মন্ত্রণালয়ের সচিব অথবা দপ্তর/সংস্থা প্রধানের মাধ্যমে।
২. আমন্ত্রণপত্র সংগ্রহে বিরত থাকার আহ্বান: ব্যক্তিগত উদ্যোগে কোনো বিদেশি সংস্থার কাছ থেকে আমন্ত্রণপত্র সংগ্রহ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
৩. বিদেশ ভ্রমণের পূর্বে অনুমতি: সব কর্মকর্তাকে বিদেশ ভ্রমণের আগে নিয়ন্ত্রণকারী মন্ত্রণালয়কে যথাযথভাবে অবহিত করতে হবে।
৪. পূর্বানুমতি গ্রহণ: বিদেশি সংস্থার সঙ্গে আমন্ত্রণ সংক্রান্ত কোনো যোগাযোগের পূর্বে সচিব (মন্ত্রণালয়) অথবা দপ্তর/সংস্থা প্রধানের অনুমতি নিতে হবে।
৫. জনস্বার্থ যাচাই: বিদেশি সংস্থার আমন্ত্রণে অংশগ্রহণকারী অনুষ্ঠান বা সেমিনার পেশাগত উন্নয়ন, প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম এবং জনস্বার্থের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত কি না, তা যাচাই করে অনুমতি দিতে হবে।

সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় এই নির্দেশনাগুলো যথাযথভাবে অনুসরণ করার আহ্বান জানিয়েছে, যাতে সরকারি নিয়মনীতি বজায় থাকে এবং দাপ্তরিক কার্যক্রম নির্বিঘ্নে চলতে পারে।

ঢাকা/আসাদ/সাইফ

সম্পর্কিত নিবন্ধ