গাজায় ইসরায়েলি হামলায় আরও ২৩ ফিলিস্তিনি নিহত
Published: 11th, May 2025 GMT
ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি হামলায় একদিনে কমপক্ষে আরও ২৩ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও শতাধিক। এতে করে অবরুদ্ধ এই উপত্যকাটিতে নিহতের মোট সংখ্যা ৫২ হাজার ৮০০ ছাড়িয়ে গেছে।
এছাড়া গত ১৮ মার্চ গাজায় নতুন করে ইসরায়েলি হামলা শুরু হওয়ার পর থেকে ২৭০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
শনিবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।
বার্তাসংস্থাটি বলছে, গাজা উপত্যকায় গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে আরও ২৩ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। যার ফলে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের গণহত্যামূলক আগ্রাসনে ভূখণ্ডটিতে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫২ হাজার ৮১০ জনে পৌঁছেছে বলে শনিবার গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি আক্রমণে আরও ১২৪ জন আহত হয়েছেন। এর ফলে সংঘাতের শুরু থেকে আহতের সংখ্যা বেড়ে ১ লাখ ১৯ হাজার ৪৭৩ জনে পৌঁছেছে। অনেক মানুষ এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তায় পড়ে থাকলেও উদ্ধারকারীরা তাদের কাছে পৌঁছাতে পারেননি।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, গত ১৮ মার্চ থেকে গাজায় নতুন করে শুরু হওয়া ইসরায়েলি বিমান হামলায় এখন পর্যন্ত ২ হাজার ৭০১ ফিলিস্তিনি নিহত এবং আরও ৭ হাজার ৪৩২ জন আহত হয়েছেন। ইসরায়েলের বর্বর এই হামলা চলতি বছরের জানুয়ারিতে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভেঙে দিয়েছে।
জাতিসংঘের মতে, ইসরায়েলের বর্বর আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছিলেন। এছাড়া অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের অধিকাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।
এর আগে গত বছরের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত গাজায় যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এবং তার সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।
অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে আগ্রাসনের জন্য আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার মামলার মুখোমুখিও হয়েছে ইসরায়েল।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ন হত ইসর য় ল মন ত র ইসর য য় ইসর
এছাড়াও পড়ুন:
সরকারি চাকরিজীবী, যৌথ বাহিনী ও বিচার বিভাগের কে কী হারে বিশেষ ভাতা পাবেন
সরকারি চাকরিজীবীদের বিশেষ সুবিধা বাড়িয়ে নতুন প্রজ্ঞাপন জারি হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, বিশেষ সুবিধা বাবদ চাকরিরত কর্মচারী-কর্মকর্তারা মাসে এক হাজার টাকার বদলে কমপক্ষে ১ হাজার ৫০০ টাকা এবং পেনশনভোগীরা ৫০০ টাকার বদলে কমপক্ষে ৭৫০ টাকা পাবেন।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ ৩ জুন এ–সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে। আজ সোমবার তা সংশোধন করে নতুন প্রজ্ঞাপনটি জারি হয়েছে, যা আগামী ১ জুলাই থেকে কার্যকর। সরকারি বেসামরিক, স্বশাসিত এবং রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক, বিমা, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও পুলিশ বাহিনীতে নিয়োজিত কর্মচারী ও পেনশনভোগী কর্মচারীদের জন্য এ প্রজ্ঞাপন প্রযোজ্য।
প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়েছে, যেসব পেনশনভোগী মাসে ১৭ হাজার ৩৮৯ টাকা ও তার বেশি পেয়ে থাকেন, তাঁরা ১০ শতাংশ হারে এবং যাঁরা ১৭ হাজার ৩৮৮ টাকা ও তার নিচে পেয়ে থাকেন, তাঁরা ১৫ শতাংশ হারে বিশেষ সুবিধা পাবেন।
উপদেষ্টা পরিষদে গতকাল রোববার ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট অনুমোদনের পর অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ এ বিষয়ে সংশোধনী আনার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছিলেন। সিদ্ধান্তের এক দিনের মাথায় প্রজ্ঞাপন জারি হলো।
এ প্রজ্ঞাপনের পাশাপাশি অর্থ বিভাগ আজ চার সচিবের কাছে আলাদা তিনটি চিঠিও পাঠিয়েছে। অর্থ বিভাগ একটি চিঠি প্রতিরক্ষাসচিবকে এবং আরেকটি চিঠি আইন ও বিচার বিভাগের সচিবকে দিয়েছে। অন্যটি পাঠানো হয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব এবং কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিবের কাছে।
প্রতিরক্ষা সচিবের উদ্দেশে পাঠানো চিঠিতে যৌথ বাহিনী নির্দেশনাবলির (জেএসআই) আওতায় বেতন-ভাতা গ্রহণকারী ও পেনশনভোগীদের বিশেষ সুবিধা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। চিঠিতে বলা হয়, ওয়ারেন্ট অফিসার বা সমতুল্য পদবি থেকে তদূর্ধ্ব পর্যায়ের সব সদস্য ও ধর্মীয় পরামর্শদানকারী কর্মকর্তারা মূল বেতনের ১০ শতাংশ হারে বিশেষ সুবিধা পাবেন। সার্জেন্ট ও সমতুল্য পদবির এবং তাঁদের নিচের পর্যায়ের কর্মচারীরা পাবেন মূল বেতনের ১৫ শতাংশ বিশেষ সুবিধা। জেএসআইয়ের আওতায় পেনশনভোগীরা বিশেষ সুবিধা পাবেন সরকারি বেসামরিক কর্মচারীদের মতোই।
আইন ও বিচার বিভাগের সচিবের উদ্দেশে পাঠানো চিঠিতে বিশেষ সুবিধা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস (বেতন ও ভাতা) আদেশ, ২০১৬ অনুযায়ী। এ চিঠিতে ১০ শতাংশ ও ১৫ শতাংশের কথা আলাদা করে বলা নেই। চিঠিতে মূল বেতনের ১০ শতাংশ হারে বিশেষ সুবিধা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
আইন ও বিচার বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস (বেতন ও ভাতা) আদেশ অনুযায়ী যাঁরা বেতন-ভাতা পান, তাঁরা চাকরি শুরুই করেন উচ্চতর গ্রেডে। তাঁরা এখন ১০ শতাংশ হারে বিশেষ ভাতা পাবেন। এর বাইরে যাঁরা কাজ করছেন, তাঁরা মন্ত্রণালয়ের কর্মচারী, যাঁরা ১৫ শতাংশ বিশেষ ভাতাই পাবেন।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব এবং কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিবের কাছে পাঠানো চিঠিতে অর্থ বিভাগ এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বিশেষ সুবিধা দেওয়ার কথা বলেছে। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বেসরকারি মাদ্রাসা ও বেসরকারি কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত জাতীয় বেতনকাঠামোর সঙ্গে তুলনীয় গ্রেড ৯ থেকে তার ওপরের গ্রেডের শিক্ষক-কর্মচারীরা পাবেন ১০ শতাংশ হারে। আর গ্রেড ১০ থেকে তার নিচের গ্রেডের শিক্ষক-কর্মচারীরা পাবেন ১৫ শতাংশ হারে। তবে কেউই ১ হাজার ৫০০ টাকার নিচে পাবেন না।
বিচার বিভাগ, যৌথ বাহিনী এবং এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের জন্য ২০২৩ সালের ১৮ জুলাই জারি করা অর্থ বিভাগের আদেশগুলো আজ বাতিল করা হয়েছে বলে তিন চিঠিতে বলা হয়েছে।