ববি উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি: দক্ষিণবঙ্গকে বিচ্ছিন্ন করার হুঁশিয়ারি
Published: 12th, May 2025 GMT
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. শুচিতা শরমিনের পদত্যাগের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি ও বিক্ষোভ মিছিল করেছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। দাবি আদায় না হলে দক্ষিণবঙ্গকে বাংলাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন তারা।
সোমবার (১২ মে) বেলা ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের নিচতলায় অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। পরে দুপুর ২টায় ক্যাম্পাস থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ঢাকা-কুয়াকাটা মহাসড়ক প্রদক্ষিণ করেন। প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে মিছিলে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন।
একই দাবিকে কেন্দ্র করে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা রবিবার (১১ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ে কমপ্লিট শাটডাউন ঘোষণা করেন। ঘোষণা অনুযায়ী এতে চূড়ান্ত পরীক্ষা ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সব কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
আরো পড়ুন:
এবার ববি উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে যোগ দিলেন শিক্ষকরা
এবার ববি উপাচার্যের বাসভবনে তালা
আন্দোলন চলাকালে মৃত্তিকা ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী শুজয় শুভ বলেন, “এ দায় প্রধান উপদেষ্টার, শিক্ষা উপদেষ্টার নাকি অন্য কারো—তা তারা বুঝুক। যদি আগামীকাল মঙ্গলবার (১৩ মে) দুপুর ২টার মধ্যে এই ফ্যাসিস্ট উপাচার্য পদত্যাগ না করেন, তাহলে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা গোটা দক্ষিণবঙ্গকে বাংলাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দিতে পারে। আমরা ১টা ৫৯ পর্যন্ত অপেক্ষা করব। আমরা কারো ভোগান্তির কারণ হব না।”
ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী রাকিন খান বলেন, “আমরা দীর্ঘদিন ধরে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি। কর্তৃপক্ষ এখনো কোনো সন্তোষজনক বার্তা দেয়নি। তাই আমরা ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিচ্ছি। এর মধ্যে দাবি মেনে না নিলে সড়ক অবরোধসহ কঠোর কর্মসূচি পালনে বাধ্য হব। তবে আমরা জনভোগান্তির পক্ষপাতী নই।”
এসময় উপস্থিত ছিলেন ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক মহসিন উদ্দিন, কোস্টাল স্টাডিজ অ্যান্ড ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক হাফিজ আশরাফুল হক, লোকপ্রশাসন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সিরাজিস সাদিক, উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এটিএম রফিকুল ইসলাম, সমাজকর্ম বিভাগের প্রভাষক মোস্তাকিম মিয়া প্রমুখ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপাচার্য শুচিতা শরমিন বলেন, “বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় দক্ষিণাঞ্চলের বাতিঘর। এর সম্মান অক্ষুণ্ন রাখা সবার দায়িত্ব। আমি বারবার শিক্ষার্থীদের বলছি, ভুল থেকে ফিরে আসো। কিছু স্বার্থান্বেষী মহল শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিস্বার্থে ব্যবহার করছে। অধ্যাপক ইউনুসের জুলাইকে ঘিরে যে ভাবনা ছিল, তার পরিপ্রেক্ষিতেই আমাকে নারী উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আসার পর থেকেই আমি বিভিন্ন ষড়যন্ত্রের শিকার হচ্ছি।”
ঢাকা/সাইফুল/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর বর শ ল উপ চ র য র র পদত য গ
এছাড়াও পড়ুন:
ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য সফরের আগে এক জিম্মিকে মুক্তি দিল হামাস
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য সফরের আগেই দেশটির এক নাগরিককে জিম্মিদশা থেকে মুক্তি দিয়েছে হামাস। ওই জিম্মির নাম এডান আলেকজান্ডার। তিনি ইসরায়েলি বাহিনীর একজন সদস্য। সোমবার তাঁকে মুক্তি দেওয়া হয় বলে জানিয়েছে হামাস।
হামাসের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘এইমাত্র আল কাসেম ব্রিগেড (হামাসের সামরিক শাখা) জায়নবাদী সেনাসদস্য ও মার্কিন নাগরিক এডান আলেকজান্ডারকে মুক্তি দিয়েছে। একটি যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছানোর জন্য মধ্যস্থতাকারীরা যে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন, তার অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে হামাসের যোগাযোগের পর তাঁকে মুক্তি দেওয়া হলো।’
হামাসের সঙ্গে যোগাযোগ আছে এমন একটি সূত্র জানিয়েছে, গাজার দক্ষিণাঞ্চলের খান ইউনিসে রেডক্রসের হাতে এডান আলেকজান্ডারকে তুলে দেওয়া হয়। পরে তাঁর ইসরায়েলের ভূখণ্ডে পৌঁছানোর খবর নিশ্চিত করে দেশটির সরকার। যুদ্ধবিরতির জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে হামাস সরাসরি যোগাযোগ করছে—এমন তথ্য সামনে আসার পরই এডানকে মুক্তি দেওয়া হলো।
মঙ্গলবার মধ্যপ্রাচ্য সফরের অংশ হিসেবে সৌদি আরবে পৌঁছানোর কথা ছিল ট্রাম্পের। এডান আলেকজান্ডারকে মুক্তি দেওয়ার আগে মার্কিন প্রেসিডেন্টের বিশেষ দূত অ্যাডাম বোয়েলার বলেছিলেন, মুক্তি দেওয়ার খবরটি একটি ইতিবাচক অগ্রগতি। জিম্মি অপর চার মার্কিন নাগরিকের মরদেহ ফেরত দেওয়ার জন্য হামাসের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালায় হামাস। ইসরায়েলি হিসাবে ওই হামলায় প্রায় ১ হাজার ২০০ জন নিহত হন। এ ছাড়া ২৫১ জনকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁদের মধ্যে ৫৮ জন এখনো গাজায় বন্দী রয়েছেন। এই জিম্মিদের ৩৪ জনই মারা গেছেন বলে দাবি ইসরায়েলের।
হামাসের হামলার দিন থেকেই গাজায় নির্বিচার হামলা শুরু করে ইসরায়েল। উপত্যকাটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, তখন থেকে ইসরায়েলের হামলায় গাজায় প্রায় ৫৩ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার ফিলিস্তিনি। এদিকে ইসরায়েলি সব জিম্মি মুক্ত না হওয়ায় ক্রমেই প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে ইসরায়েলিদের ক্ষোভ বাড়ছে।