টাঙ্গাইলে বিএনপির একাংশের বিক্ষোভ, উত্তেজনা
Published: 13th, May 2025 GMT
টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলায় ইউনিয়ন বিএনপির কমিটি বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিলকে কেন্দ্র করে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। মঙ্গলবার (১৩ মে) দুপুরের দিকে উপজেলার কাশিল ইউনিয়ন বিএনপির ব্যানারে উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি কাজী শহীদুল ইসলামের নেতৃত্বে বাসাইল ছাতা মসজিদ এলাকায় প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে তারা মিছিল নিয়ে বাসাইল বাসস্ট্যান্ডে যাওয়ার পথে পুলিশের বাধার মুখে পড়ে। নেতাকর্মীরা বাধার মুখে সেখানে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করে। সেখানে নেতাকর্মীরা ক্ষুব্ধ হয়ে কেন্দ্রীয় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আহমেদ আযম খানের কুশপুত্তলিকা দাহ করেন।
এদিকে, উপজেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা স্থানীয় দলীয় কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেয়ায় উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। তবে যে কোনো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ তৎপর ছিল। ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনীর সদস্যদেরও দেখা গেছে।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি কাজী শহীদুল ইসলাম, জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য সৈয়দ নিজামুল ইসলাম রুপম, কাশিল ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি নুরুল ইসলাম, উপজেলা বিএনপির প্রচার সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, কাশিল ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক আয়নাল জমাদার, তরিকুল ইসলাম টিপু, বিএনপি নেতা মানিক মোহাম্মদ তোহা প্রমুখ।
আরো পড়ুন:
আ.
টাঙ্গাইলে জামায়াতের শোকরানা মিছিল
দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচারের পথ খুলল
এ সময় কাজী শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘‘আওয়ামী লীগের দোসরদের নিয়ে টাকার বিনিময়ে সম্প্রতি কাশিল ইউনিয়ন বিএনপির কমিটি দেয়া হয়েছে। এটা পকেট কমিটি। যাকে ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি করা হয়েছে, সেই রমজান মিয়া বিগত আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ভিপি জোয়াহেরের জন্য ভোট চেয়েছেন। অথচ ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের আমলে যে সকল নেতাকর্মী কারাভোগসহ বিভিন্ন নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, সেই সকল নেতাকর্মীদের বাদ দিয়ে এই কমিটি দেয়া হয়েছে।’’
তিনি আরো বলেন, ‘‘আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এ কমিটি বাতিল করতে হবে। কমিটি বাতিল করা না হলে এ কমিটির কাশিল ইউনিয়নে কার্যক্রম করতে দেয়া হবে না।’’
এ প্রতিবাদ সমাবেশে বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে সহস্রাধিক নেতাকর্মী এসেছিল। কিন্তু তাদের পৌর শহরের বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে পুলিশ প্রশাসনের মাধ্যমে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন এ নেতা।
এ বিষয়ে উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মামুন আল জাহাঙ্গীর বলেন, ‘‘একটি মহল শান্তি শৃঙ্খলা নষ্ট ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ অশান্ত করতে চেয়েছিল। আমরা তাদের প্রতিহত করতে দুর্বার প্রতিরোধ গড়ে তুলেছি। যে কোনো মূল্যে আগামী দিনে বাসাইল যারা অশান্ত করতে চায়, আমরা বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে তাদের প্রতিহত করব।’’
বাসাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জালাল উদ্দিন বলেন, ‘‘সভা-সমাবেশের অনুমতি না নিয়ে তারা অনুষ্ঠান করার জন্য আসছিল। পরে বিশৃঙ্খলা এড়াতে আমরা তাদের বাধা দিয়েছি।’’
গত ১১ মে রমজান মিয়াকে আহ্বায়ক ও রফিকুল ইসলামকে সদস্য সচিব করে উপজেলার কাশিল ইউনিয়ন বিএনপির ৩১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি অনুমোদন দেয় উপজেলা বিএনপি।
ঢাকা/কাওছার/বকুল
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ ব এনপ র স ব ক ন ত কর ম ল ইসল ম আওয় ম সদস য উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
সাবেক অধ্যক্ষসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে ১১ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ
নওগাঁর বদলগাছী মহিলা ডিগ্রি কলেজের সাবেক অ্যাডহক কমিটির সভাপতি, সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও সিনিয়র প্রভাষকের বিরুদ্ধে ১১ লাখ ৫৫ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগকারীদের দাবি, দুর্নীতি ঢাকতেই কলেজে ‘অধ্যক্ষের চেয়ার’ নিয়ে শুরু হয়েছে নাটকীয়তা।
অভিযোগে বলা হয়, সাবেক সভাপতি লুৎফর রহমান, সদ্যপ্রয়াত ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মমতাজ জাহান ও প্রভাষক এস এইচ এম মাহমুদুল হাসান গাজী কলেজ ফান্ড ও শিক্ষার্থীদের ফরম পূরণ বাবদ নেওয়া টাকার হিসাব দিতে পারেননি। ২০২৫ সালের এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে ৩ লাখ ৪০ হাজার ২০ টাকা ফি নেওয়া হলেও এর মধ্যে ১ লাখ ৬ হাজার ৩৬৬ টাকার কোনো ব্যয়ের প্রমাণ পাওয়া যায়নি। বিভিন্ন সময়ে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা এবং ব্যাংক থেকে উত্তোলিত ৮ লাখ ৮ হাজার ৫০০ টাকাসহ মোট ১১ লাখ ৫৫ হাজার ১২১ টাকার হিসাব নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। ব্যাংক থেকে উত্তোলনের স্টেটমেন্ট এরই মধ্যে গণমাধ্যম কর্মীদের হাতে এসেছে।
কলেজে গেলে দেখা যায়, অধ্যক্ষের অফিস কক্ষে মাহবুব আলম বসে রয়েছেন। অন্যদিকে, দোতলায় একটি ঘরের সামনে বসেছিলেন অন্য এক পক্ষের নিয়োগপ্রাপ্ত ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ইমামুল হোসেন।
এ বিষয়ে কথা বলতে গেলে সাবেক সভাপতি লুৎফর রহমান বলেন, হজে ছিলাম। তখন শুনলাম, আমি সভাপতি নেই। টাকা আত্মসাতের প্রশ্নই ওঠে না। আমি কেবল চেকে সই দিয়েছি। খরচের দায়িত্ব ছিল অধ্যক্ষের। তিনি আরও বলেন, মামলা পরিচালনার খরচও কিছু হয়েছিল। তবে শিক্ষার্থীদের অর্থ কোথায় খরচ হয়েছে, আমার জানা নেই।
অভিযুক্ত প্রভাষক মাহমুদুল হাসান গাজীর দাবি, টাকা ব্যাংকে আছে। সভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের সই ছাড়া টাকা তোলা সম্ভব নয়।
আরেক অভিযুক্ত ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘টাকা কখন তোলা হয়েছে, সেটা বলা সম্ভব নয় রেজিস্ট্রার ছাড়া।’
অন্যদিকে, বর্তমান অধ্যক্ষ মাহবুব আলম বলেন, তারা দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করে দুর্নীতি ঢাকতে চাইছেন। তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিষয়টি নিয়ে কলেজের বর্তমান অ্যাডহক কমিটির সভাপতি ফজলে হুদা বাবুল বলেন, কলেজে কোনো অনিয়ম বরদাস্ত করা হবে না। নিরপেক্ষ তৃতীয় পক্ষ দিয়ে অডিট করা হবে। সত্যতা মিললে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে কলেজের শিক্ষার্থীরা এই বিশৃঙ্খলা ও প্রশাসনিক দ্বন্দ্বে হতাশ। তারা দ্রুত একটি শিক্ষাবান্ধব পরিবেশ ফিরিয়ে আনার আহ্বান জানিয়েছে।