হাইকোর্টে জামিন পেলেন জুবাইদা রহমান
Published: 14th, May 2025 GMT
জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় তিন বছরের কারাদণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী জুবাইদা রহমানের আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তাঁকে জামিন দেওয়া হয়েছে।
বিচারপতি মো. খসরুজ্জামানের একক হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ বুধবার এ আদেশ দেন। বিচারিক আদালতের ওই মামলায় জুবাইদা রহমানের দেওয়া অর্থদণ্ডাদেশ স্থগিত করা হয়েছে। পাশাপাশি বিচারিক আদালতের নথি তলব করেছেন হাইকোর্ট। আপিলের গ্রহণযোগ্যতা ও জামিন চেয়ে জুবাইদা রহমানের করা আবেদনের শুনানি নিয়ে এ আদেশ দেওয়া হয়।
ওই মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল দায়েরের জন্য ৫৮৭ দিন বিলম্ব মার্জনা চেয়ে আবেদন করেন জুবাইদা রহমান। শুনানি নিয়ে গতকাল মঙ্গলবার হাইকোর্টের একই বেঞ্চ বিলম্ব মার্জনার আবেদন মঞ্জুর করেন। পাশাপাশি আপিল তালিকাভুক্ত করতে সংশ্লিষ্ট কার্যালয়কে নির্দেশ দেওয়া হয়। এরপর আপিল করেন জুবাইদা রহমান। আজ আপিলটি আদালতের কার্যতালিকায় ওঠে। এর ধারাবাহিকতায় জুবাইদা রহমানের আপিলের গ্রহণযোগ্যতার ওপর এবং তাঁর জামিন আবেদনের ওপর শুনানি হয়।
আদালতে জুবাইদা রহমানের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহজাহান ও এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন এবং আইনজীবী কায়সার কামাল শুনানি করেন। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী জাকির হোসেন ভূইয়া, মাকসুদ উল্লাহ ও এস এম মাহিদুল ইসলাম। দুদকের পক্ষে আইনজীবী আসিফ হাসান শুনানিতে ছিলেন।
ওই মামলায় ২০২৩ সালের ২ আগস্ট রায় দেন ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো.
জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে করা এই মামলায় জুবাইদা রহমানের সাজা স্থগিত করে গত ৪ নভেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ প্রজ্ঞাপন জারি করে। প্রজ্ঞাপনের ভাষ্য, সাজা স্থগিত চেয়ে জুবাইদা রহমানের করা আবেদন এবং আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মতামতের আলোকে জুবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে করা মামলায় তাঁকে দেওয়া দণ্ডাদেশ এক বছরের জন্য স্থগিত করা হলো।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে ৬ মে যুক্তরাজ্যের লন্ডন থেকে দেশে ফেরেন জুবাইদা রহমান। তিনি তাঁর স্বামী তারেক রহমানের সঙ্গে ২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর লন্ডনের উদ্দেশে বাংলাদেশ ছেড়েছিলেন। এর মধ্যে ১৭ বছর কেটে গেলেও দেশে ফিরতে পারেননি জুবাইদা রহমান।
দেশে ফিরে আপিল করার জন্য ৫৮৭ দিন বিলম্ব মার্জনা চেয়ে হাইকোর্টে আবেদনটি করেন জুবাইদা রহমান। বিলম্ব মার্জনার আবেদন মঞ্জুরের পর তিনি আপিল করেন এবং জামিন চেয়ে আবেদন করেন।
সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০০৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর তারেক রহমান, জুবাইদা রহমানসহ তিনজনের বিরুদ্ধে রাজধানীর কাফরুল থানায় মামলাটি করেছিল দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। পরের বছর তাঁদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ত র ক রহম ন রহম ন র আইনজ ব র জন র র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
‘আমি আ.লীগ, যুব মহিলা লীগ না’, আদালতে সাবেক এমপি তুহিন
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের হত্যা মামলায় ঢাকা মহানগর উত্তর যুব মহিলা লীগের সাবেক সভাপতি ও সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সাবিনা আক্তার তুহিনের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
সোমবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট পার্থ ভদ্র মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার আবেদন মঞ্জুর করে তুহিনের দুই দিনের রিমান্ডের আদেশ করেন। শেরেবাংলা নগর থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে এ মামলা হয়।
এদিন আদালতে শুনানিতে সাবেক এমপি তুহিন বিচারককে বলেন, আমার ঔষধ শেষ হয়ে গেছে, ঔষধ প্রয়োজন।
শুনানির সময় তার আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোরশেদ আলম শাহীন সাবেক এমপি তুহিনের ঔষধ দেখিয়ে আদালতকে বলেন, উনার ঔষধ প্রয়োজন, এগুলো দিতে হবে। এসময় বিচারক বলেন, এখান থেকে ঔষধ দেওয়ার নিয়ম নেই। যথাযথ নিয়মে ঔষধ নেবেন। বাইরে থেকে দেওয়া যাবে না।
এর আগে শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী তুহিনকে যুব মহিলা লীগ উল্লেখ করলে আদালতে তুহিন বলেন, আমি আওয়ামী লীগ। যুব মহিলা লীগ না।
এদিন আদালতে শুনানির সময় হাসিমুখে গল্প করতে দেখা যায় সাবেক এই এমপিকে। শুনানিতে পুলিশ রিমান্ডের আবেদন করলে তিনি হাসি দিয়ে মাথা নাড়তে থাকেন। এরপর রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ওমর ফারুক ফারুকী যখন শুনানিতে কথা বলেন, তখন তিনি মুচকি হাসি দিয়ে তার কথা শুনতে থাকেন।
শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী তুহিনের উদ্দেশ্যে বলেন, তিনি ছাত্র আন্দোলনের বিরুদ্ধে কাজ করেছেন। বিভিন্ন মিটিং-মিছিলসহ হত্যাকাণ্ডে যুক্ত ছিলেন। তার বিরুদ্ধে কিছু প্রমাণও পাওয়া গেছে। আরো গুরুত্বপূর্ণ তথ্যের জন্য তার পরবর্তী রিমান্ড প্রয়োজন।
এসময় আসামিপক্ষের আইনজীবী মোরশেদ আলম শাহীন আদালতকে বলেন, একটা অনুমানের ওপর নির্ভর করে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সুনির্দিষ্ট কারণ ছাড়া রিমান্ড চাইতে পারে না রাষ্ট্রপক্ষ। তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কোনও প্রমাণ নেই। এটা আইনের লঙ্ঘন। তিনি বলেন, একজন পার্লামেন্ট সদস্যের কাছে রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি সুসমন্বিত থাকে। ভাবমূর্তি বিপন্ন হয় না। আমরা রিমান্ড বাতিলসহ জামিন চাই। কারণ তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কোনও অভিযোগ নেই। কোনও প্রমাণ নেই।
এর উত্তরে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ওমর ফারুক ফারুকী বলেন, বিনা ভোটের পার্লামেন্ট মেম্বার তিনি। তার পক্ষে এতো বলার কিছু নেই। সাবেক সিইসি হাবিবুল আওয়ালই যখন বলেছেন যে, এটা ডামি নির্বাচন- সেখানে বিনাভোটের পার্লামেন্ট মেম্বার ও ফ্যাসিস্ট হাসিনার সহচরকে এতো ভালো প্রমাণের যৌক্তিকতা নেই। তিনি আওয়ামী লীগের সব খারাপ কর্মকাণ্ডে যুক্ত ছিলেন।
এর আগে গত ২২ জুন গভীর রাতে ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার শোল্লা ইউনিয়নের আওনা গ্রামে বাবার বাড়ি থেকে তুহিনকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ।