সোনারগাঁয়ে পশু হাসপাতালে কম্পউন্ডারই চিকিৎসক
Published: 14th, May 2025 GMT
সোনারগাঁ উপজেলা পশু হাসপাতালের কম্পউন্ডার রাজিব চন্দ্র দাস। যার দায়িত্ব হাসপাতালে ডিউটি করা এবং চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী অসুস্থ পশুকে ওষুধ প্রয়োগ করা। এ ছাড়া প্রাথমিক পরামর্শ দিতে পারবেন বলে জানা গেছে।
জানা গেছে, উপজেলা পশু হাসপাতালের কম্পাউন্ডার রাজিব চন্দ্র দাস তার যে দায়িত্ব তা সঠিক ভাবে পালন না করে টাকার বিনিময়ে পশুর চিকিৎসা দিয়ে থাকেন। হাসপাতালে অফিস চলাকালে কোন ধরণের টাকা নেয়ার নিয়ম না থাকলেও তিনি দীর্ঘদিন যাবত এ কাজ করে যাচ্ছেন।
যে কেউ পশু নিয়ে হাসপাতালে আসলেই তার কাছে ছুটে যান রাজিব চন্দ্র দাস। কন্টাক্ট করে শুরু করেন পশুর চিকিৎসা। অনেক ক্ষেত্রে ইনজেকশন না লাগলেও তিনি টাকা কামানোর ধান্ধায় পশুকে ইনজেকশন দিয়ে থাকেন। এক্ষেত্রে চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র বা চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া নিজেই সরকারী লগো সম্বলিত প্যাডে ব্যবস্থাপত্র দিচ্ছেন।
এ কাজ করতে গিয়ে পাশ্ববর্তী উপজেলা মেঘনা নলচরের নিজামের ২টি গরু ও চালিভাংগার এলাকার জিতুর ৩টি গরু তার অপচিকিৎসায় মারা যাওয়ার অভিযোগ রয়েছে ।
অভিযোগ রয়েছে, পৌরসভা এলাকার রোকেয়া নামের একজনের ছাগল তার অপচিকিৎসা মারা যায়। তার জন্য তিনি ক্ষতিপূরণও দেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, অফিসের বাহিরে গিয়ে চিকিৎসা দেওয়া তো দূরে থাক অফিসের বাহিরে যাওয়ারও তার নিয়ম নেই।
নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে তিনি যেখান থেকেই খবর পান সেখানেই চিকিৎসা দিতে ছুটে যান। বিনিময়ে হাতিয়ে নেন মোটা অংকের টাকা। এসবের পিছনে তার একমাত্র উদ্দেশ্য টাকা ইনকাম করা।
এ ধরণের অনিয়মের প্রমাণ পেয়ে জেলা পশু সম্পদ কর্মকর্তা কম্পাউন্ডার রাজিব চন্দ্রকে শোকজ করার নির্দেশ দেন। নির্দেশ পেয়ে তৎকালীন উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা: মোহাম্মদ ইউসুফ হাবিব শোকজ দেওয়ার পরও তিনি কাউকে তোয়াক্কা না করে এখনো বহালে।
অভিযোগে আরো রয়েছে, হাসপাতালে পশুর চিকিৎসা নিতে গিয়ে কম্পাউন্ডার রাজিব চন্দ্র দাসের অপচিকিৎসার শিকার হয়ে আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে উপজেলার জৈনপুর গ্রামের বাসিন্দা শাহেদ আলী। তার কাছ থেকে চিকিৎসা দিয়ে ৩৫ হাজার টাকার ওষুধ দেন। তার পরও তার পশুর রোগ ভাল হয়নি। পশু দেখা বাবদ সাহেদ আলীর কাছ থেকে ১৫০০ টাকা ভিজিট নেওয়া হয়।
অভিযোগ রয়েছে, চিকিৎসা দিয়ে লোক বুঝে কারো থেকে ৫শ, কারো থেকে ৩শ, কারো থেকে ১ হাজার, কারো থেকে দেড় হাজার, দুই হাজার পর্যন্ত টাকা ভিজিট নেন কম্পাউন্ডার রাজিব চন্দ্র দাস।
এ ছাড়া প্রতিদিন তার অফিসে ওষুধ কোম্পানীর প্রতিনিধির সঙ্গে কথা বলে হাতিয়ে নেন বিপুল অংকের টাকা। টাকা দিলেই যে কোনো কোম্পানীর ওষুধ লিখেন তিনি। এ ধরণের অনিয়ম দূর্নীতিবাজ কম্পাউন্ডার রাজিব চন্দ্র দাসের বিচার চেয়েছে অনেক ভুক্তভোগী।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত রাজিব চন্দ্র দাস বলেন, আমি প্যাড ব্যবহার করছি এ কথা সত্য তবে আমি কোথাও ডাক্তার উল্লেখ করিনি। ওষুধের টাকা নিয়েছি কোনো ভিজিট নেইনি।
সোনারগাঁ উপজেলা পশু সম্পদ কর্মকর্তা ডা.
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: স ন রগ ও ন র য়ণগঞ জ অপর ধ ব যবস থ চ ক ৎসক উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
ইশরাককে মেয়র পদে বসানোর দাবিতে নগর ভবন ঘেরাও
বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র পদে বসানোর দাবিতে গতকাল বুধবার নগর ভবনে বিক্ষোভ করেছেন নগরবাসী। পরে বিক্ষোভকারীরা লাগাতার অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা করেন। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে এ কর্মসূচি শুরু হবে।
গতকাল সকাল থেকে ‘ঢাকার সাধারণ ভোটারদের আয়োজনে নগর ভবন অবরোধ, আয়োজনে: নগরবাসী’র ব্যানারে বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে মিছিল নিয়ে গুলিস্তানে নগর ভবনের সামনে জড়ো হন তাঁর সমর্থকরা। তারা নগর ভবনে মূল ফটকের সামনের সড়কে অবস্থান নিয়ে মানববন্ধন করেন। এক পর্যায়ে সকাল ১০টার দিকে নগর ভবনের মূল ফটক খুলে দিলে তারা ভেতরে ঢুকে যান। বিক্ষোভকারীর একটি অংশ নগর ভবনের সিঁড়িতে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ দেখান। দুপুর ২টা পর্যন্ত তারা সেখানে অবস্থান করেন। বিএনপি ও এর অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীর অনেককেও এ কর্মসূচিতে অংশ নিতে দেখা গেছে।
বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেওয়া সাবেক জ্যেষ্ঠ সচিব মশিউর রহমান লাগাতার কর্মসূচি ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, ইশরাকের শপথ নিয়ে নানা টালবাহানা করা হচ্ছে। আদালতের রায় ও নির্বাচন কমিশনের গেজেট প্রকাশের পরও অন্তর্বর্তী সরকারের কয়েক ব্যক্তির কারণে জনতার মেয়র ইশরাককে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়া হচ্ছে না। শপথের মাধ্যমে তাঁকে দায়িত্ব বুঝিয়ে না দেওয়ায় বৃহস্পতিবার থেকে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হবে।
পুরান ঢাকার সূত্রাপুরের বাসিন্দা পাভেল আহমেদ বলেন, ‘আমাদের ঢাকাবাসীর দাবি, ইশরাক হোসেনকে মেয়র হিসেবে শপথ পড়ানো এবং মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়া। এ বিষয়টি আদালত থেকে রায় দেওয়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত সবকিছু হয়েছে আইন মেনে। তার পরও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় তাঁকে মেয়র হিসেবে দায়িত্ব দিতে সময়ক্ষেপণ করছে।’
বিক্ষোভকারীদের আরেকজন সাইফুল ইসলাম বলেন, নগরবাসী সিটি করপোরেশনকে নিয়মিত ট্যাক্স দিচ্ছে। কিন্তু নাগরিক সেবা পাচ্ছে না। মেয়র না থাকায় নাগরিক সেবা ব্যাহত হচ্ছে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের এক কর্মকর্তা বলেন, সকাল ৯টা থেকে হাজারো মানুষ নগর ভবনের সামনে এসে বিক্ষোভে অংশ নেন। তারা ইশরাক হোসেনকে মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে নানা স্লোগান দেন। তবে তারা সিটি করপোরেশনের কাজকর্মে বাধা দেননি।
২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা দক্ষিণ সিটির নির্বাচন হয়। বিএনপির ইশরাক হোসেনকে পৌনে দুই লাখ ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে মেয়র হন আওয়ামী লীগের প্রার্থী শেখ ফজলে নূর তাপস। গত ২৭ মার্চ তাপসকে বিজয়ী ঘোষণার ফল বাতিল করে ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করেন আদালত।
মেয়র পদে শপথ না পড়াতে রিট
বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করে দেওয়া রায় স্থগিতের পাশাপাশি তাঁকে মেয়র পদে শপথ না পড়ানোর নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করা হয়েছে। এ ছাড়া নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের বিরুদ্ধে রায় ঘোষণায় প্রতারণা ও জালিয়াতির অভিযোগ করে সংশ্লিষ্ট বিচারকের বিরুদ্ধেও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।
গতকাল মামুনুর রশিদ নামে এক ব্যক্তির পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী কাজী আকবর আলী হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিটটি করেন।