নিত্যনতুন ইস্যু আনতে থাকলে ষড়যন্ত্রকারীরা সুযোগ পাবে: তারেক রহমান
Published: 2nd, July 2025 GMT
সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনী ব্যবস্থা বাংলাদেশের জন্য উপযুক্ত কি না, তা রাজনৈতিক দলগুলোকে বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। একই সঙ্গে জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন ব্যবস্থার দাবিসহ নিত্যনতুন ইস্যু পলাতক ফ্যাসিস্টের পুনর্বাসনের পথ সুগম করে দিচ্ছে কিনা, সে প্রশ্নও তুলেছেন তিনি।
গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূতি উপলক্ষে ‘গণ-অভ্যুত্থান ২০২৪ জাতীয় ঐক্য ও গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা’ শীর্ষক আলোচনা সভা এবং শহীদ, গুম-খুনের শিকার পরিবারের সম্মানে আয়োজিত বিশেষ অনুষ্ঠানে তারেক রহমান এই আহ্বান ও প্রশ্ন রেখেছেন।
তারেক রহমান বলেন, ‘কোনো কোনো দল সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনী ব্যবস্থার দাবি তুলেছেন। বিশ্বের কোনো কোনো দেশে সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনী বিধান রয়েছে। তবে বাংলাদেশের বিদ্যমান বাস্তবতায়, ভৌগোলিক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এই মুহূর্তে সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন ব্যবস্থা কতটুকু উপযোগী, বা উপযোগী কিনা ভেবে দেখার জন্য অনুরোধ রাখব।’ তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, নিত্যনতুন ইস্যু যদি আমরা সামনে নিয়ে আসতে থাকি, এর সুযোগে ষড়যন্ত্রকারীরা আবারও মাথাচাড়া দেওয়ার সুযোগ পাবে।’
তারেক রহমান জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূতি উপলক্ষে ৩৬ দিনের কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠানে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া প্রধান অতিথি ছিলেন। তিনি ভিডিও বক্তব্য দেন।
খালেদা জিয়া রক্তস্নাত জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে জাতির সামনে আসা সুযোগ কাজে লাগাতে ঐক্য বজায় রাখার ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, দীর্ঘ ১৬ বছর ফ্যাসিস্টদের নির্মম অত্যাচার, গ্রেপ্তার, হত্যা, খুনের মাধ্যমে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে একদলীয় শাসনব্যবস্থা চিরস্থায়ী করতে চেয়েছিল আওয়ামী শাসকগোষ্ঠী। ছাত্রজনতার সম্মিলিত অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ফ্যাসিবাদের পতন ঘটেছে। সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে নতুন বাংলাদেশে গড়বার। সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে নতুন করে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার। তা দ্রুত সম্পন্ন করতে হবে।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সব শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা এবং আহতদের প্রতি সমবেদনা জানান বিএনপির চেয়ারপারসন। তিনি বলেন, তাঁদের এই আত্মত্যাগ জাতি জাতি চিরকাল মনে রাখবে। গুম, খুন ও বিচারবহির্ভূত হত্যার যাঁরা শিকার হয়েছেন, তাদের তালিকা প্রস্তুত করতে হবে। দ্রুত বিচারের ব্যবস্থা ও রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি নিশ্চিত করতে হবে। প্রতিটি পরিবারের সম্মানজনক পুনর্বাসন এবং নিরাপদ ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে হবে। জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে হবে যে কোনো মূল্যে। ঐক্য বজায় রাখতে হবে।
অনুষ্ঠানে জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ (এনসিপি) বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবারের সদস্য এবং বিগত আওয়ামী লীগের সময় গুম-খুনের শিকার ব্যক্তিদের স্বজনেরা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় ভিডিও বার্তা দেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। আজ মঙ্গলবার রাজধানীর বাংলাদেশ–চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ত র ক রহম ন ব যবস থ ব এনপ র ত করত
এছাড়াও পড়ুন:
ব্যাংক টানা ৪ দিন বন্ধ থাকবে, প্রয়োজনে টাকা তুলবেন কীভাবে
দুর্গাপূজা ও সাপ্তাহিক ছুটি মিলিয়ে টানা চার দিনের ছুটি শুরু হচ্ছে আগামীকাল বুধবার। এই সময়ে দেশের সব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। লেনদেন হবে না দেশের দুই শেয়ারবাজারেও। ছুটি শেষে আগামী রোববার সব খুলবে।
দুর্গাপূজা উপলক্ষে ১ অক্টোবর নির্বাহী আদেশে ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। এ ছাড়া ২ অক্টোবর বিজয়া দশমী উপলক্ষে ছুটি থাকবে। এরপর ৩ অক্টোবর শুক্রবার ও ৪ অক্টোবর শনিবার সাপ্তাহিক বন্ধ। সব মিলিয়ে চার দিন দেশের আর্থিক খাতের কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। ছুটি শেষে ৫ অক্টোবর ব্যাংক ও পুঁজিবাজারের লেনদেন শুরু হবে।
ব্যাংকগুলোতে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত লেনদেন চলে। আর শেয়ারবাজারে সকাল ১০টা থেকে বেলা আড়াইটা পর্যন্ত একটানা লেনদেন চলে।
তবে এই সময়ে খোলা থাকবে সব ধরনের ডিজিটাল লেনদেন ব্যবস্থা। অর্থাৎ গ্রাহকেরা কার্ড দিয়ে এটিএম বুথ থেকে টাকা তুলতে ও লেনদেন করতে পারবেন। ইন্টারনেট ব্যাংকিং সেবা সার্বক্ষণিক চালু থাকবে। পাশাপাশি বিকাশ, নগদের মতো মোবাইলে আর্থিক সেবা সার্বক্ষণিক চালু থাকবে।
কীভাবে টাকা তুলবেনটানা চার দিন ছুটির সময়ে বন্ধ থাকবে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো। এই সময় নগদ টাকার প্রয়োজন হলে কী করবেন? দুশ্চিন্তার কিছু নেই। ব্যাংকের শাখায় না গিয়ে বিকল্প উপায়ে টাকা তুলতে হবে।
এই সময়ে খোলা থাকবে এটিএম বুথ, এমএফএসের ক্যাশআউটসহ সব বিকল্প ব্যাংকিং ব্যবস্থা বা লেনদেনের ব্যবস্থা।
কার্ড দিয়ে এটিএম বুথ থেকে টাকা তোলা যাবে, চাইলে পয়েন্ট অব সেলে (পিওএস) গিয়ে লেনদেন করা যাবে। এ সময়ে সব ধরনের ইন্টারনেটভিত্তিক লেনদেনের ব্যবস্থা চালু থাকবে। পাশাপাশি বিকাশ, রকেট ও নগদের মতো মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) চালু থাকবে। ফলে ব্যাংক বন্ধ থাকলেও আর্থিক লেনদেন চালু রাখতে সমস্যা হবে না।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হিসাবে, সারা দেশে ব্যাংকগুলোর এখন ১২ হাজার ৮১৪টি এটিএম বুথ ও ৭ হাজার ৬৪৩টি সিআরএম রয়েছে। পিওএস রয়েছে ১ লাখ ৩৪ হাজার ৩২৭টি। ব্যাংকগুলো এখন পর্যন্ত ৪ কোটি ৫২ লাখ ডেবিট কার্ড ইস্যু করেছে। অবশ্য একজন গ্রাহকের একাধিক ব্যাংকের কার্ড রয়েছে।
এর বাইরে এখন ব্যাংকের নিজস্ব অ্যাপসহ ইন্টারনেটভিত্তিক সেবা রয়েছে। এই সেবার মাধ্যমে এক ব্যাংকের গ্রাহক অন্য ব্যাংকের গ্রাহককে তাৎক্ষণিক টাকা পাঠাতে পারেন। ফলে এই ছুটিতে টাকা পাঠানোর কাজটি বন্ধ থাকবে না।
বিকাশ, নগদ ও রকেটের মতো এমএফএস সেবা বেশ জনপ্রিয়। এই সেবাগুলোর সবই খোলা আছে। এসব সেবায় ব্যাংক থেকে টাকা জমা করা যাচ্ছে।