পাঁচ উপাচার্যের তিনজনেরই অনাকাঙ্ক্ষিত বিদায়
Published: 15th, May 2025 GMT
বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য (ভিসি) নিয়োগ হয় চার বছর মেয়াদের জন্য। সে হিসাবে ১৪ বছর বয়সী বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি) এ পর্যন্ত চারজন ভিসির দায়িত্ব পালনের কথা। কিন্তু ববিতে মঙ্গলবার রাতে ষষ্ঠ ভিসি নিযুক্ত হয়েছেন। আগের পাঁচজনের তিনজনকে মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে বিদায় নিতে হয়েছে। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে সবার অগোচরে ক্যাম্পাস ছাড়তে হয় তাদের।
বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, তিন ভিসির অনাকাঙ্ক্ষিত বিদায়ের মূল কারণ শিক্ষক-কর্মকর্তাদের নিয়ে নিজস্ব বলয় তৈরি ও তাদের বিশেষ সুযোগ প্রদান। এ ক্ষেত্রে বঞ্চিতরা সুযোগ খুঁজতে থাকেন। তুচ্ছ ঘটনায় শিক্ষার্থীদের আন্দোলন উস্কে দেন তারা।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে মেয়াদ শেষ করতে না পারা ভিসিরা হলেন– আট মাস দায়িত্ব পালনকারী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড.
জানা গেছে, আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সমঝোতা করতে ইমামুল হক দুঃখ প্রকাশ এবং বদরুজ্জামান ভূঁইয়া ক্ষমা প্রার্থনা করলেও শেষরক্ষা হয়নি। সর্বশেষ গত মঙ্গলবার রাতে অব্যাহতি পাওয়া ভিসি শুচিতা শারমিন বিদায়ের আগের দিন আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। ইমামুল হকের বিরুদ্ধে আন্দোলনে বরিশালের রাজনীতিতে প্রভাবশালী বঙ্গবন্ধুর ভাগনে পরিবারের ইন্ধন ছিল বলে গুঞ্জন রয়েছে। বদরুজ্জামান ভূঁইয়া ৫ আগস্টের পট পরিবর্তনের পর ফ্যাসিবাদের দোসর হিসেবে চিহ্নিত হন। ড. শুচিতার সঙ্গে প্রো-ভিসি ড. গোলাম রব্বানী ও কোষাধ্যক্ষ মামুন অর রশিদের বিরোধ আন্দোলনের সূত্রপাতের অন্যতম কারণ বলে জানা গেছে। ভিসির সঙ্গে তাদেরও অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
চার বছরের পূর্ণ মেয়াদে দায়িত্ব পালন করা দু’জন হলেন– প্রথম ভিসি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. হারুনর রশীদ এবং চতুর্থ ভিসি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. ছাদেকুল আরেফিন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের একমাত্র অধ্যাপক ড. মুহসিন উদ্দীন বলেন, যখন ভিসি স্বৈরাচারী হয়ে ওঠেন, সবাইকে দিয়ে নয়, কোনো একটা গোষ্ঠীকে নিয়ে চলতে থাকেন– তখনই সমস্যা হয়।
এদিকে নবনিযুক্ত উপাচার্য রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত রসায়ন ও কেমিকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তৌফিক আলম আজ যোগদান করবেন। তিনি সমকালকে বলেন, আমাকে যে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তা সুষ্ঠুভাবে পালনে সচেষ্ট থাকব। আমার পক্ষ থেকে সর্বোচ্চটা দেওয়ার চেষ্টা করব।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
নওগাঁয় শ্বশুরবাড়িকে গুদাম বানিয়ে ৫০০ বস্তা চাল মজুত ব্যবসায়ীর
নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার নিমতলী গ্রামে শ্বশুরবাড়িকে আতপ চালের গোপন গুদামে পরিণত করেছিলেন এক ব্যবসায়ী। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে পরিচালিত এক ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে ৫০০ বস্তা আতপ চাল জব্দ করা হয়। বৈধ কোনো কাগজপত্র না থাকায় চাল মজুতকে অবৈধ ঘোষণা করেছে প্রশাসন। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে।
অভিযান পরিচালনা করেন বদলগাছী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আতিয়া খাতুন। তিনি বলেন, ‘চাল মজুতের বৈধতা নিশ্চিত করতে অভিযানে যাই। কিন্তু কোনো কাগজপত্র দেখাতে না পারায় এগুলো জব্দ করা হয়। প্রাথমিকভাবে চালগুলো বদলগাছী থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।’
স্থানীয় সূত্র জানায়, শিবলু নামের এক ব্যবসায়ী তার শ্বশুর জাহিদুল ইসলামের বাড়িকে মজুতঘরে রূপান্তর করে দীর্ঘদিন ধরে আতপ চাল মজুত করে আসছিলেন। বাইরের দৃষ্টিতে এটি একটি সাধারণ বসতবাড়ি হলেও ভেতরে তৈরি করা হয়েছিল একটি গোপন গুদামঘর।
জানা গেছে, শিবলুর মূল ব্যবসা কীটনাশক বিক্রি হলেও তিনি দীর্ঘদিন ধরে চাল ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েন। এলাকাবাসীর অভিযোগ, বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে অধিক লাভের আশায় তিনি এই মজুত কার্যক্রম চালিয়ে আসছিলেন। আতপ চালের প্রতিটি বস্তা ছিল উন্নত জাতের, যা স্থানীয় বাজারে উচ্চ দামে বিক্রি হতো।
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, ৫০০ বস্তা আতপ চাল সিলগালা করা হয়েছে। তদন্ত শেষে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অভিযানে উপজেলা প্রশাসনের পাশাপাশি জেলা খাদ্য বিভাগ, বদলগাছী থানা পুলিশ এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা অংশ নেন।
এ ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। অনেকেই প্রশাসনের এমন পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন। তাদের দাবি, বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতে এমন অভিযান আরও জোরদার করা দরকার।