রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে করা আপিলের ওপর শুনানি শেষ হয়েছে। এ বিষয়ে রায় ঘোষণার জন্য আগামী ১ জুন দিন ধার্য করেছেন আপিল বিভাগ। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের চার সদস্যের বেঞ্চ গতকাল বুধবার এ দিন ধার্য করেন।

আদালতে আপিলকারীর পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এহসান এ সিদ্দিক, ইমরান এ সিদ্দিক ও মোহাম্মদ শিশির মনির। নির্বাচন কমিশনের (ইসি) পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী তৌহিদুল ইসলাম। আদালতে জামায়াত নেতাদের পক্ষে দলটির ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এ টি এম মাছুমসহ কেন্দ্রীয় নেতা ও সমর্থক আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে গতকাল জামায়াতের নিবন্ধন-সংক্রান্ত আপিলের পাশাপাশি দলটির প্রতীক দাঁড়িপাল্লা বরাদ্দ বিষয়ে নির্দেশনা চেয়ে করা একটি আবেদনও শুনানির জন্য আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় ওঠে। তবে প্রতীক বরাদ্দের বিষয়ে করা ওই আবেদন পরে প্রত্যাহার করার কথা জানিয়েছেন আপিলকারী পক্ষের সংশ্লিষ্ট আইনজীবীরা।

শুনানি শেষে জামায়াতের আইনজীবী শিশির মনির সাংবাদিকদের বলেন, আমরা আদালতকে বলেছি, জামায়াতের রেজিস্ট্রেশন বাতিলের মাধ্যমে এবং কেয়ারটেকার গভর্নমেন্ট বাতিল করার মাধ্যমে বিচার বিভাগ রাজনীতিকরণ করা হয়েছে। যারা এই মামলার শুনানি শেষে নিবন্ধন বাতিল করেছেন, তারা মূলত বাংলাদেশের উচ্চ আদালতকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করেছেন। এ কারণে জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল করা হয়েছে। 

জামায়াতকে দেওয়া নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা-সংক্রান্ত হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে করা আপিল ও লিভ টু আপিল ২০২৩ সালের ১৯ নভেম্বর খারিজ করেন আপিল বিভাগ। রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর গত আগস্টে ওই আপিল পুনরুজ্জীবত করার লক্ষ্যে ২৮৬ দিনের বিলম্ব মার্জনা চেয়ে জামায়াতের পক্ষে দুটি লিভ টু আপিল আবেদন করা হয়। একই বছরের ২২ অক্টোবর বিলম্ব মার্জনা মঞ্জুর করে জামায়াতের আপিল পুনরুজ্জীবিত করেন আপিল বিভাগ। ফলে নিবন্ধন ফিরে পেতে জামায়াতের আইনি লড়াই করার পথ উন্মুক্ত হয়। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ন আপ ল ব ভ গ র জন ত ক আইনজ ব

এছাড়াও পড়ুন:

ভাইকে বাঁচাতে বান্ধবীকে ফাঁসানোর অভিযোগ

পাবনার ভাঙ্গুড়ায় ঘুমন্ত অবস্থায় বান্ধবীর ছবি তুলেছিলেন ভাই। বিষয়টি নিয়ে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানালে ভাইকে বাঁচাতে উল্টো বান্ধবীর নামে মিথ্যা চুরির মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে তানিয়া হক নামের এক নারীর বিরুদ্ধে। 

এছাড়াও চুরির ঘটনার কোনো তদন্ত ছাড়াই মামলা নেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে থানা পুলিশের বিরুদ্ধে।

মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে পাবনা জেলা জজকোর্টের সামনে গণমাধ্যমকে এসব কথা বলেন ভুক্তভোগী নারী ইফফাত মোকাররমার আইনজীবী অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল মামুন রাসেল। 

পাবনা সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আখতারুজ্জামানের আদালত ভুক্তভোগী নারী ইফফাত মোকাররমা সানিমুনকে জামিন দিয়েছেন।

অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল মামুন রাসেল বলেন, “আমার মক্কেল ইফফাত মোকাররমা দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষকতায় পেশায় নিয়োজিত। তিনি একজন সম্মানিত লোক। মামলার বাদীর সঙ্গে তার দীর্ঘদিন বন্ধুত্বের সম্পর্ক। সেই সম্পর্কের কারণে তার বান্ধবীর বাসায় গিয়েছিলেন এবং একসঙ্গে ঘোরাঘুরির পর যখন রাত্রীযাপন করছিলেন সেই সময়ে বাদীর ভাই ইফফাত মোকাররমার ছবি তুলেছিলেন। বিষয়টি টের পেয়ে তিনি তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ জানান এবং ছবিগুলো দেখানোর জন্য অনুরোধ করেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। পরেরদিন সকালে আইনী পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলে ইফফাত মোকাররমা ঢাকায় চলে যান এবং সেখানে জিডি করেন। কিন্তু এই ঘটনা ধামাচাপা দিতে উল্টো ইফফাত মোকাররমার বিরুদ্ধে মিথ্যা চুরির মামলা দায়ের করেন তার বান্ধবী।”

তিনি আরো বলেন, “বাদী তানিয়া হক উল্লেখ করেছেন ২৬ লাখ টাকার স্বর্ণালঙ্কার চুরি হয়েছে যা তিনি তার শরীরে পড়ে তার বান্ধবীর সঙ্গে ঘুড়ে বেড়িয়েছিলেন। কিন্তু ওইদিনের ঘোরাঘুরির ছবিতে তার শরীরে কোনো স্বর্ণালঙ্কার ছিল না। এছাড়াও ঘটনার দুইদিনের মাথায় যেভাবে মামলা গ্রহণ করা হয়েছে তাতে বোঝা যায় কোনো তদন্ত ছাড়াই থানা কোনো পক্ষ থেকে প্রভাবিত হয়ে মামলা গ্রহণ করেছেন।”

ভুক্তভোগী নারী ইফফাত মোকাররমা বলেন, “এই মামলার নূন্যতম প্রমাণ নেই। আমি যে একজন শিক্ষক হিসেবে আমার ছাত্রদের সামনে দাঁড়াবো সেই অবস্থাও তারা আমাকে রাখেনি। আমার সন্তানসহ পুরো পরিবার সামাজিকভাবে হেয় পতিপন্ন হচ্ছে। আমি চাই ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হোক।”

এ বিষয়ে মামলার বাদীর তানিয়া হকের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করে ফোন রিসিভ না করায় মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

তবে ভাঙ্গুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, “উনি (আইনজীবী) উনার মক্কেলের জন্য এসব কথা বলতেই পারেন। উনার মক্কেলকে সুবিধা দেওয়ার জন্য এসব অভিযোগ করেছেন। কিন্তু ঘটনার তদন্ত করে এবং আইনানুগভাবেই মামলা দায়ের হয়েছে, যা এখনও তদন্ত চলছে।”

ঢাকা/শাহীন/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ঋণ আদায়ে লাগবে ৩৩৩ বছর
  • ভাইকে বাঁচাতে বান্ধবীকে ফাঁসানোর অভিযোগ