জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের দুই মামলায় তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের সময় বাড়ল আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল
Published: 18th, May 2025 GMT
জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সময় সাভারে পুলিশের একটি সাঁজোয়া যান (এপিসি) থেকে টেনে নিচে ফেলে দেওয়া শহীদ শাইখ আশহাবুল ইয়ামিন হত্যার অভিযোগে করা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের সময় দুই মাস বাড়িয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
অন্যদিকে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সময় রাজধানীর মোহাম্মদপুরে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় করা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের সময় তিন মাস বাড়ানো হয়েছে।
প্রসিকিউশনের (রাষ্ট্রপক্ষ) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আজ রোববার এই সময় বাড়ান ট্রাইব্যুনাল। প্রসিকিউটর গাজী মনোয়ার হোসেন তামীম এই তথ্য জানান।
এই দুই মামলায় আজ ছয় আসামিকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। তাঁদের মধ্যে সাভারে ইয়ামিন হত্যা মামলার চার আসামি রয়েছেন। তাঁরা হলেন পুলিশের সাবেক সদস্য সোহেল মিয়া, বিরুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান ওরফে সুজন, কার্যক্রম নিষিদ্ধ হওয়া যুবলীগের ঢাকা জেলার সদস্য মো.
সাভারের এ ঘটনায় করা মামলায় প্রথমে ১০ জনকে আসামি করা হয়েছিল। তদন্তে সম্পৃক্ততা পাওয়ায় পরে আরও তিনজনকে আসামি করা হয়। আজ এই মামলায় আরও একজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন মঞ্জুর করেছেন ট্রাইব্যুনাল।
রাজধানীর মোহাম্মদপুরের ঘটনায় করা মামলায় আজ দুই আসামিকে হাজির করা হয়। তাঁরা হলেন আনসারের সাবেক সদস্য ওমর ফারুক ও নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের নেতা কে এম ফজলে রাব্বি।
আরও পড়ুন:
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বিচারকের সঙ্গে অসদাচরণ: বিএনপিপন্থি ৪ আইনজীবীকে শোকজ
হত্যাচেষ্টা মামলায় আসামিকে জামিন না দেওয়ায় বিচারকের সঙ্গে অসদাচরণ করায় বিএনপিপন্থি চার আইনজীবীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম।
তারা হলেন- ফোরামের ঢাকা বার ইউনিটের আহ্বায়ক খোরশেদ আলম, ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসাধারণ সম্পাদক আব্দুল খালেক মিলন, ফোরামের সদস্য মো. জাবেদ ও এস এম ইলিয়াস হাওলাদার।
রোববার ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির সহদপ্তর সম্পাদক মোহাম্মদ জিয়াউর রহমানের সই করা নোটিশে বলা হয়, ‘শনিবার ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের একজন ম্যাজিস্ট্রেটের সঙ্গে আপনারা অপেশাদার আচরণ করেছেন বলে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। এতে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে। এ কারণে কেন আপনাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, আগামী তিন দিনের মধ্যে কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও মহাসচিবের কাছে তা লিখিতভাবে জানাতে বলা হলো।
শনিবার ঢাকার জ্যেষ্ঠ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. জুনাইদের আদালতে হত্যাচেষ্টা মামলায় আসামির জামিন শুনানির সময় বিচারকের সঙ্গে অসদাচরণের ঘটনা ঘটে। জামিন না দেওয়ায় ‘আওয়ামী লীগের দালাল’ তকমা দিয়ে গালিগালাজ করেন বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা।
জানা যায়, কেরানীগঞ্জ মডেল থানার একটি হত্যাচেষ্টা মামলার আসামি হানিফ মেম্বার গত ১২ মে আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। বিচারক ওই আবেদন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। বৃহস্পতিবার তার জামিন চেয়ে আবেদন করেন আইনজীবী। শনিবার ওই আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারক নামঞ্জুরের পর গালিগালাজ ও অসদাচরণের ঘটনা ঘটে।
সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘কেরানীগঞ্জ মডেল থানার হত্যাচেষ্টা মামলায় হানিফ মেম্বার নামের এক আসামির জামিন শুনানির দিন ধার্য ছিল। খোরশেদ আলমসহ কয়েকজন আইনজীবী জামিন শুনানি করলে আদালত তা নামঞ্জুর করেন। পরে আইনজীবীরা স্যারের সঙ্গে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান। ফ্যাসিবাদের দোসর, দালাল বলেন। আদালতের কজলিস্ট ছুড়ে ফেলে দেন। তারা বিচারকের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন, হুমকি দেন।’
এ বিষয়ে ঢাকার জ্যেষ্ঠ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. জুনাইদের সঙ্গে আসামিপক্ষের আইনজীবীদের একটি কথোপকথনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খোরশেদ আলম বিচারককে বলছেন, ঘটনার তারিখ, সময়, ঘটনাস্থল সেইম। দুইটা মামলা, এটা হয় না কি? এরপর এজলাস ত্যাগ করেন বিচারক।
তবে এ ঘটনার সময় কয়েকজন আইনজীবী আদালত কক্ষে উপস্থিত ছিলেন। এ সময় আবদুল খালেক মিলন এবং অন্যরা বিচারকের সঙ্গে উচ্চস্বরে কথা বলেন। এক আইনজীবী ধমকের সুরে বলেন, ‘চুপ।’ তারা বিচারককে বলেন, ‘আপনি আওয়ামী লীগের দালাল।’ পরে বিচারককে গালাগাল করেন তারা।
এদিকে যে আসামির জন্য বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা জামিন চেয়েছিলেন, সেই আসামি হানিফ মেম্বার স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা বলে জানা গেছে। গত ৬ মে ফজলুল হক নামের এক ব্যক্তি হানিফ মেম্বারসহ ১০ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতপরিচয় ৭০-৮০ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেন।