জামালপুরে টাকা আত্মসাতের অভিযোগে জামায়াত নেতাসহ দুজনকে জুতার মালা পরানোর ভিডিও ফেসবুকে
Published: 18th, May 2025 GMT
জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলায় সমবায় সমিতির নামে গ্রাহকের টাকা আত্মসাতের অভিযোগে জামায়াতে ইসলামীর নেতাসহ দুজনকে আটক করে পুলিশে দিয়েছেন একদল গ্রাহক। এর আগে তাঁদের গলায় জুতার মালা পরানো হয়। আজ রোববার এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।
ওই দুই ব্যক্তি হলেন মোকাদ্দেস আলী (৩৪) ও মিজানুর রহমান। মোকাদ্দেস আলী জামালপুর পৌর শহর শাখা জামায়াতে ইসলামীর আমির। তিনি দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার নাজিরপুর গ্রামের মঈন উদ্দিনের ছেলে। দীর্ঘদিন ধরে জামালপুর শহরের শেখেরভিটা এলাকায় বসবাস করেন। তিনি মাদারগঞ্জের আল আকাবা সমবায় সমিতির ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান ‘ওয়ান এ ফ্যাশন’–এর ম্যানেজার। আর মিজানুর রহমান ওই প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী। তাঁর বাড়ি বগুড়া জেলার শাজাহানপুর উপজেলার বেজোড়া গ্রামে। তিনিও দীর্ঘদিন ধরে জামালপুর শহরের শেখেরভিটা এলাকায় বসবাস করেন।
আটক দুজনের বিরুদ্ধে ওই সমিতির গ্রাহক কামরুন্নাহার বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা করেছেন। মামলায় তাঁদের গ্রেপ্তার দেখিয়েছে পুলিশ।
২৯ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়, একটি ভবনের মধ্যে ওই দুজনকে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে। তাঁদের দুজনের গলায় জুতার মালা পরানো আছে। কেউ একজন তাঁদের ভিডিও করছিলেন। পাশ থেকে অনেকেই তাঁদের দুজনের কাছে টাকা চাচ্ছিলেন।
পুলিশ ও গ্রাহকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত শুক্রবার রাতে মাদারগঞ্জ উপজেলার বালিজুড়ি বাজারে থাকা আল আকাবা সমবায় সমিতির অফিসের নিচতলায় সমিতির পরিচালিত ওয়ান এ ফ্যাশন নামের একটি দোকানের মালামাল সরানো হচ্ছিল। খবর পেয়ে সমিতির গ্রাহকেরা এ দুজনকে হাতেনাতে আটক করেন। পরে দোকানেই তাঁদের বেঁধে রেখে জুতার মালা পরানো হয়। গতকাল শনিবার রাতে তাঁদের দুজনকে থানায় সোপর্দ করা হয়। তবে এ সময়ের মধ্যে তাঁদের সঙ্গে সেখানে কী ঘটেছিল, সে সম্পর্কে কোনো তথ্য এখনো পাওয়া যায়নি।
মাদারগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসান আল মামুন প্রথম আলোকে বলেন, ওই দুজনকে গতকাল রাতেই সমিতির গ্রাহকেরা থানায় সোপর্দ করেন। সমিতির এক গ্রাহক বাদী হয়ে ওই দুজনসহ আটজনের নাম ও তিন থেকে চারজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে একটি মামলা করেছেন। তাঁদের দুজনকে আজ আদালতে প্রেরণ করা হবে।
জামায়াতে ইসলামীর জামালপুর জেলা শাখার আমির আবদুস ছাত্তার প্রথম আলোকে বলেন, ‘মোকাদ্দেস আলী জামালপুর পৌর শহর শাখার আমির। তিনি ওই সমিতির কিছুই নন। ওই সমিতির পরিচালিত একটি দোকানের ম্যানেজার হিসেবে চাকরি করেন। তাঁকে অন্যায়ভাবে আটক করে তাঁর সম্মানহানি করা হয়েছে। এ বিষয়ে আমরা আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম দ রগঞ জ দ র দ জন প র শহর গ র হক উপজ ল দ জনক
এছাড়াও পড়ুন:
এন্নিও মোররিকোনে, শোনাতেন ছুটন্ত ঘোড়ার খুরের সুর
বাংলা সিনেমার এক টিপিক্যাল দৃশ্য দিয়ে শুরু করা যাক। ধরলাম, সিনেমার নায়ক জসিম। পাহাড়ের পাদতলে ঘোড়া ছুটিয়ে তিনি ছুটে যাচ্ছেন ভিলেন জাম্বুকে পাকড়াও করতে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক বাজছে। এক ভুতুড়ে-রহস্যময় সুর। ড্রামের মৃদু তালে তালে ঠোঁটের শিস। ট্রাম্পেটের ঢেউ। কখনো সেই সুর মিলিয়ে যাচ্ছে হ্রেষায়, কখনো খুরের টগবগে (সুরকে যদি ভাষায় প্রকাশ করা যেত!)। ক্ষণে ক্ষণে গা শিউরে উঠছে দৃশ্য ও সুরের পরম্পরায়, ঘটনার উত্তেজনায়। কিন্তু তখন কি জানতাম, বাংলা সিনেমায় এমন জাদুকরি সুর নেওয়া হয়েছে ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’ থেকে!
কিংবদন্তি ইতালিয়ান কম্পোজার প্রয়াত এন্নিও মোররিকোনের এই ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর বিশ্ব সিনেমার জগতে অনন্য হয়ে থাকবে সব সময়। তেমনি ‘স্পেগেত্তি ওয়েস্টার্নের’ স্রষ্টা সার্জিও লিওনের ‘ডলার্স ট্রিলজি’। ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’র শেষ দৃশ্যে কবরস্থানে যখন ত্রিমুখী হয়ে বন্দুক হাতে ‘ম্যান উইথ নো নেম’ (ক্লিন্ট ইস্টউড), ‘টুকো’ (এলি ওয়ালাচ) ও ‘অ্যাঞ্জেল আইস’ (লি ফন ক্লিফ) দাঁড়ায়, তখন ব্যাকগ্রাউন্ডে বাজতে থাকে সেই বিখ্যাত সাসপেন্স-থ্রিলারমাখা সুর। সেই সুরের কথাই বলেছি মূলত শুরুতে। মোররিকোনের মিউজিক কেবল ঢালিউডে নয়; বলিউডের বহু চলচ্চিত্রেও হুবহু ব্যবহার করা হয়েছে। ‘ডলার্স’ সিরিজসহ লিওনের আরও দুই মাস্টারপিস ছবি ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন ওয়েস্ট’ ও ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন আমেরিকা’র মিউজিকও কম্পোজ করেন মোররিকোনে।
চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না!চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না! এখন দর্শক কেবল পর্দার দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বসে থাকেন না; কানকেও কাজে লাগান সিনেমাবোধের জন্য। কাহিনিকে যদি আমার শরীর ধরি, তবে অভিনয় হচ্ছে সিনেমার প্রাণ। আর সংগীত যেন এই দুইয়ের সংযোগস্থল। কাহিনি ও অভিনয়কে আরও বেগবান করে তোলে সংগীত।
এন্নিও মোররিকোনে (১০ নভেম্বর ১৯২৮—৬ জুলাই ২০২০)