ছাত্রদলের পদধারী ও পদবঞ্চিতরা মুখোমুখি সংঘাতের আশঙ্কা
Published: 18th, May 2025 GMT
কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ও মহানগর ছাত্রদলের আংশিক কমিটি ঘোষণার জেরে দেখা দিয়েছে অস্থিরতা। কয়েক দিন ধরে কমিটির পক্ষে-বিপক্ষে মিছিল হয়েছে নগরীতে। জেলা ও মহানগর বিএনপির কার্যালয়ে ভাঙচুর করে আগুন দিয়েছেন পদবঞ্চিতরা। বর্তমানে মুখোমুখি অবস্থানে পদধারী ও পদবঞ্চিত পক্ষ দুটি। যে কোনো সময় বড় ধরনের সংঘাতের আশঙ্কা করছেন নেতাকর্মীরা।
সর্বশেষ ২০১৮ সালে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ও মহানগর ছাত্রদলের কমিটি করা হয়। গত ১৫ মে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছির কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ও মহানগর ছাত্রদলের ৬ ও ১৩ সদস্যের আংশিক কমিটির অনুমোদন দেন। কমিটিতে কাজী জোবায়ের আলম জিলানীকে সভাপতি ও এমদাদুল হক ধীমানকে সাধারণ সম্পাদক করে দক্ষিণ জেলা ছাত্রদল এবং নাহিদ রানাকে সভাপতি ও ফায়াজ রশিদ প্রিমুকে সাধারণ সম্পাদক করে মহানগর ছাত্রদলের আংশিক কমিটি দুটি গঠন করা হয়। এই খবর জানাজানি হলে ১৫ মে রাতে পদবঞ্চিতরা বিক্ষুব্ধ হয়ে নেমে পড়েন নগরীর সড়কে। তাদের মুখে মুখে প্রতিবাদী স্লোগান ছিল– ‘অবৈধ পকেট কমিটি মানি না, মানব না।’ এর পর নগরীর বিভিন্ন সড়কে বিক্ষোভ মিছিল করেন তারা। বিক্ষোভ শেষে নগরীর পূবালী চত্বরের সড়কে প্রায় দুই ঘণ্টা অবরোধ করে রাখেন। এদিকে নবগঠিত কমিটিকে অভিনন্দন জানিয়ে নগরীতে আনন্দ মিছিল বের করে জেলা ও মহানগর ছাত্রদল। দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচির কারণে নগরীতে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এরই মধ্যে গত শনিবার সন্ধ্যায় ছাত্রদলের পদবঞ্চিতরা ফের বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। পরে মহানগর এবং দক্ষিণ জেলা বিএনপির কার্যালয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন ক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা। এ সময় কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ এবং কেন্দ্রীয় ছাত্রদল নেতাদের কুশপুত্তলিকা দাহ করেন তারা।
মহানগর ছাত্রদলের একাধিক সূত্রের তথ্যমতে, নির্যাতিত ও ত্যাগী কর্মীদের কাঙ্ক্ষিত পদ দেওয়া হয়নি। তাদের দাবি, দলের ২৭টি ওয়ার্ড এবং কোনো কলেজ শাখা থেকে নেতাকর্মীকে সদস্য রাখা হয়নি। মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি প্রার্থী ছিলেন আজমীর হোসেন শরীফ। তাঁকে রাখা হয়েছে ৪ নম্বর যুগ্ম সম্পাদক পদে। আজমীর বলেন, যারা জেল-জুলুম, নির্যাতনের শিকার হয়েছেন তাদের এই কমিটিতে মূল্যায়ন করা হয়নি। দলে কোনো অবদান ও পরিচিতি নেই এমন কর্মীদের শীর্ষ পদ দেওয়া হয়েছে। বিতর্কিত এই কমিটি ভেঙে দিয়ে নতুন কমিটি গঠন করতে হবে। অন্যথায় আন্দোলন চলবে।
মহানগর ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক প্রার্থী ছিলেন মো.
এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন নবগঠিত মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি নাহিদ রানা। তাঁর ভাষ্য, যারা পদবঞ্চিত দাবি করে বিক্ষোভ মিছিল করছেন, তাদের কেউ কেউ কাঙ্ক্ষিত পদ না পেয়ে বিদ্রোহ করছেন। জেলা ও মহানগরে ডজনের অধিক ছাত্রনেতা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী ছিলেন। এর মধ্যে সবাই যোগ্য, সংগ্রামী ও ত্যাগী। কিন্তু সবাইকে তো আর ওই দুটি পদে রাখা সম্ভব নয়। দুঃসময়ের ত্যাগী ও পরিচ্ছন্ন কর্মীদের দিয়েই মহানগর এবং দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের নতুন কমিটি করা হয়েছে বলে তাঁর দাবি।
মহানগর ছাত্রদলের সদ্য সাবেক সভাপতি ফখরুল ইসলাম মিঠু বলেন, ‘কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সভাপতি এবং বিভাগীয় সাংগঠনিক কমিটির কাছে দাবি করেছিলাম নগরীর ২৭টি ওয়ার্ড এবং ১২টি কলেজের নেতাকর্মীর উপস্থিতিতে সম্মেলন করে মহানগরের কমিটি ঘোষণা করার। কিন্তু তা করা হয়নি। এতে বিগত সরকারের সময়ে জেল-জুলুম ও নির্যাতনের শিকার নেতাকর্মীরা দলে কাঙ্ক্ষিত পদ পেলেন না। আশা করি, কেন্দ্রীয় নেতারা বিষয়টি সমাধানের উদ্যোগ নেবেন।’
কুমিল্লা মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইউসুফ মোল্লা টিপুর ভাষ্য, বিএনপি কার্যালয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ ষড়যন্ত্রমূলক ঘটনা। এটি নিঃসন্দেহে বিএনপির ভেতরে অনুপ্রবেশকারী আওয়ামী ফ্যাসিস্ট চক্রের সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের অংশ। এ ঘটনা শুধু নিন্দনীয়ই নয়, বরং দলের অভ্যন্তরে অনুপ্রবেশকারী সুযোগসন্ধানী চক্রের আসল পরিচয় তুলে ধরেছে। তিনি বলেন, এই অপশক্তিকে দ্রুত চিহ্নিত করে আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে। জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ঐক্যবদ্ধভাবে এই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব এনপ ন ত কর ম র য় ছ ত রদল পদবঞ চ ত ব এনপ র কম ট ত কম ট র ক কম ট গঠন ক নগর র
এছাড়াও পড়ুন:
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের নতুন কমিটি গঠন
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের উপপরিচালক সুস্মিতা পাইককে সভাপতি আর উপপরিচালক মোহাম্মদ তৌহিদ খানকে মহাসচিব করে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার এ কমিটি গঠন করা হয়।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সাধারণ সভায় নতুন কমিটির সভাপতি হিসেবে কমিশনের উপপরিচালক সুস্মিতা পাইক আর মহাসচিব হিসেবে উপপরিচালক মোহাম্মদ তৌহিদ খানের নাম প্রস্তাব করা হলে সর্বসম্মতিক্রমে তা গৃহীত হয়।
এ ছাড়া সহসভাপতি পদে ফারজানা নাজনীন, যুগ্ম মহাসচিব পদে মো. মোজাফফর হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক পদে মোহাম্মদ নাঈম চৌধুরী, কোষাধ্যক্ষ পদে মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন, দপ্তর সম্পাদক পদে মো. তানবিরুল ইসলাম, প্রচার ও প্রকাশনাবিষয়ক সম্পাদক পদে ইশরাত জাহান, মানবাধিকারবিষয়ক সম্পাদক পদে জান্নাতুল ফেরদৌস এবং নির্বাহী সদস্য পদে মো. রবিউল ইসলাম ও মো. ইমরান হোসেনের নাম সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়। নবগঠিত কমিটি আগামী দুই বছর দায়িত্ব পালন করবে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নবগঠিত কমিটি জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধিতে মেধা ও প্রতিভাকে পূর্ণরূপে কাজে লাগানো, কাজের পরিবেশ সৃষ্টিতে ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস এবং প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা হিসেবে স্বার্থ সংরক্ষণ তথা সার্বিক কল্যাণ সাধনে নিয়মতান্ত্রিক উদ্যোগ গ্রহণে দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছে। ভবিষ্যতে অ্যাসোসিয়েশনের মাধ্যমে আরও কার্যকর ও অংশগ্রহণমূলক ভূমিকা পালনে কমিটির নেতারা আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।
২০২৩ সালের ১৮ জুন রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অবস্থিত জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের প্রধান কার্যালয়ে সব কর্মকর্তার উপস্থিতিতে এক সাধারণ সভার মধ্য দিয়ে এই অ্যাসোসিয়েশনের যাত্রা শুরু হয়েছিল। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী দুই বছর মেয়াদ পূর্ণ হওয়ায় গত ১৮ জুন প্রথম কার্যনির্বাহী কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়।