গাজা উপত্যকা ১০ সপ্তাহ অবরোধ করে রাখার পর সেখানে সীমিত পরিমাণে খাদ্য প্রবেশের অনুমতি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ইসরায়েল। গাজায় ‘যাতে দুর্ভিক্ষ দেখা না দেয়’ তা নিশ্চিত করতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে দেশটির প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর কার্যালয় থেকে দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) সুপারিশক্রমে এবং হামাসের বিরুদ্ধে তাদের নতুন সামরিক অভিযানে সহায়তার জন্য এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী নতুন করে গাজাজুড়ে বিস্তৃত স্থল অভিযান শুরু করার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ত্রাণ প্রবেশের অনুমতি দেওয়ার এ ঘোষণা এল।

গাজা থেকে অবরোধ তুলে নিতে ইসরায়েলের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ছিল। অবরোধ চলাকালে গাজায় কোনো খাদ্য, জ্বালানি বা ওষুধ ঢুকতে দেয়নি ইসরায়েল।
ইসরায়েলি অবরোধের পর বিভিন্ন ত্রাণ সংস্থা থেকে গাজার ২১ লাখ মানুষ দুর্ভিক্ষের ঝুঁকিতে রয়েছে বলে সতর্ক করা হয়েছে, বিশেষ করে অপুষ্টিতে ভোগা অস্থিচর্মসার শিশুদের ছবি ও বিবরণ প্রকাশ্যে আসা শুরু হলে।

ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জ্যঁ-নোয়েল বাহো ইসরায়েলকে গাজায় ‘তাৎক্ষণিক, ব্যাপক ও বাধাহীনভাবে’ ত্রাণ প্রবেশের অনুমতি দিতে বলেছেন।

বিভিন্ন ত্রাণ সংস্থা থেকে গাজার ২১ লাখ মানুষ দুর্ভিক্ষের ঝুঁকিতে রয়েছে বলে সতর্ক করা হয়েছে, বিশেষ করে অপুষ্টিতে ভোগা অস্থিচর্মসার শিশুদের ছবি ও বিবরণ প্রকাশ্যে আসা শুরু হলে।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় থেকে দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়, ইসরায়েল গাজার জনগণের জন্য সীমিত পরিমাণ খাদ্য প্রবেশের অনুমতি দেবে, যাতে দুর্ভিক্ষের মতো কোনো সংকট সৃষ্টি না হয়।

এমন একটি (দুর্ভিক্ষের) পরিস্থিতি তাদের নতুন অভিযান ‘অপারেশন গিডেয়ন চ্যারিয়ট’কে ঝুঁকির মুখে ফেলবে বলেও ওই বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।

হামাস যেন গাজায় মানবিক সহায়তা বিতরণ নিয়ন্ত্রণ করতে না পারে, সে লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলেও বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।

কয়েক দিন ধরে গাজায় হামলা জোরদার করেছে ইসরায়েল। গতকাল রোববার ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী গাজার উত্তরাঞ্চলে একটি হাসপাতালসহ কয়েকটি স্থানে হামলা চালায়। ইসরায়েল দাবি করেছে, গাজায় জিম্মিদের মুক্ত করা এবং হামাসকে পরাজিত করাই তাদের লক্ষ্য।

হামাস পরিচালিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলের হামলায় গাজায় অন্তত ৬৭ জন নিহত এবং ৩৬১ জন আহত হয়েছেন।

আরও পড়ুনগাজায় ইসরায়েলের হামলায় এক রাতেই নিহত ৫১১৪ মে ২০২৫আরও পড়ুনগাজায় নিহত ৫৩ হাজার ছাড়াল ১৬ মে ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইসর য় ল র অবর ধ

এছাড়াও পড়ুন:

ম্যাচ রেফারি পাইক্রফ্ট ক্ষমা চাওয়ার পরই খেলতে রাজি হয়েছিল পাকিস্তান

সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে বাঁচা-মরার ম্যাচে টসের আগ পর্যন্ত দারুণ নাটকীয়তায় ঘেরা ছিল পাকিস্তানের ড্রেসিং রুম। ম্যাচ রেফারি অ্যান্ডি পাইক্রফ্টকে দায়িত্ব থেকে সরানোর দাবি তোলে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)। তবে আইসিসি সে দাবি আমলে নেয়নি। শেষ পর্যন্ত নিজের ভুল স্বীকার করে পাকিস্তান অধিনায়ক সালমান আলী আগা ও দলের ম্যানেজারের কাছে ক্ষমা চান পাইক্রফ্ট। এরপরই মাঠে নামতে রাজি হয় পাকিস্তান দল।

ঘটনার সূত্রপাত ১৪ সেপ্টেম্বরের ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ থেকে। টসের সময় দুই অধিনায়কের করমর্দন হয়নি। আরও বড় বিতর্ক তৈরি হয় ম্যাচ শেষে। জয়ী ভারতের ক্রিকেটাররা করমর্দন এড়িয়ে দ্রুত ড্রেসিং রুমে ফিরে যান। সালমান আলী আগার নেতৃত্বে পাকিস্তানের খেলোয়াড়রা দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করলেও সূর্যকুমার যাদব, শিভাম দুবেসহ পুরো ভারতীয় দল সেই শিষ্টাচার মানেনি।

আরো পড়ুন:

আজ মুখোমুখি শ্রীলঙ্কা-আফগানিস্তান, যে ম্যাচে ঝুলছে বাংলাদেশের ভাগ্য

আমিরাতকে হারিয়ে সুপার ফোরে পাকিস্তান

এমন ঘটনার প্রতিবাদে পাকিস্তান অধিনায়ক পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান বর্জন করেন। পরে আইসিসির কাছে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ জানায় পিসিবি। তাদের দাবি ছিল, ম্যাচ রেফারি পাইক্রফ্ট ইচ্ছাকৃতভাবেই দুই অধিনায়কের হাত মেলানো আটকান, যা আইসিসির আচরণবিধি ও ক্রিকেটের স্পিরিটের পরিপন্থী।

যদিও আইসিসির ব্যাখ্যা ছিল ভিন্ন। তারা জানায়, এসিসির কর্মকর্তাদের নির্দেশেই কাজ করেছেন পাইক্রফ্ট। কিন্তু পাকিস্তান নড়েচড়ে বসে। এমনকি জানিয়ে দেয়, পাইক্রফ্ট দায়িত্বে থাকলে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে মাঠে নামবে না তারা। এই হুমকির কারণে ম্যাচের শুরুর সময় এক ঘণ্টা পিছিয়ে দিতে বাধ্য হয় আয়োজকরা।

লাহোরে রমিজ রাজা, নাজাম শেঠিসহ শীর্ষ কর্মকর্তাদের নিয়ে জরুরি বৈঠক করেন পিসিবি চেয়ারম্যান মহসিন নাকভি। পরে সমঝোতার পথ খোঁজা হয়। অবশেষে পাইক্রফ্ট স্বীকার করেন, ভুল বোঝাবুঝির কারণেই পরিস্থিতি এতদূর গড়ায়, এবং তিনি পাকিস্তান অধিনায়ক ও ম্যানেজারের কাছে ক্ষমা চান। তাতেই সন্তুষ্ট হয়ে মাঠে নামার সিদ্ধান্ত নেয় পাকিস্তান দল।

বুধবার রাতে ‘এ’ গ্রুপে নিজেদের সেই শেষ ম্যাচে আরব আমিরাতকে ৪১ রানের ব্যবধানে হারিয়ে সুপার ফোরে ভারতের সঙ্গী হয় সালমান-শাহীনরা। দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে পাকিস্তান সংগ্রহ করে ৯ উইকেটে ১৪৯ রান। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ১৭.৪ ওভারে ১০৫ রানেই গুটিয়ে যায় আরব আমিরাত।

ঢাকা/আমিনুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ