জবিতে প্রথম চলচ্চিত্র উৎসবের পোস্টার উন্মোচন
Published: 19th, May 2025 GMT
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) চলচ্চিত্র সংসদের আয়োজনে প্রথমবারের মতো তিন দিনব্যাপী চলচ্চিত্র উৎসব অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
সোমবার (১৯ মে) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাশ ভবনের চলচ্চিত্র সংসদ কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ উৎসবের ঘোষণা দেওয়া হয়। এ সময় উৎসবের পোস্টার উন্মোচন করা হয়। পোস্টারে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী ঘুড়ি উৎসবকে।
চলচ্চিত্র উৎসবের পোস্টার উন্মোচন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক শাহ মোহাম্মদ নিস্তার জাহান কবির।
আরো পড়ুন:
কাজিরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ে ২ দিনে ৪১ শিক্ষার্থী অসুস্থ
বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারদের বৈষম্য নিরসনে বেরোবিতে মানববন্ধন
এ সময় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যাল চলচ্চিত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক হাসিবুজ্জামান রিক লিখিত বক্তব্যে বলেন, “আগামী ২৩, ২৪ ও ২৫ জুন, তিন দিনব্যাপী জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও আরো দুইটি ভেন্যুতে এ উৎসব অনুষ্ঠিত হবে। মূলত স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রভিত্তিক এ চলচ্চিত্র উৎসবে এখন পর্যন্ত সারাদেশ থেকে শিক্ষার্থী ও চলচ্চিত্র নির্মাতাদের অংশগ্রহণে ৫০টির বেশি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র জমা পড়েছে এবং রেজিষ্ট্রেশন এখনো চলমান রয়েছে। এর মধ্য থেকে বিচারকদের যাচাই-বাছাই শেষে ৩৫টি চলচ্চিত্র প্রদর্শনী করা হবে।”
তিনি বলেন, “প্রতিযোগিতা বিভাগের দুইটি ক্যাটাগরিতে মোট চারটি পুরস্কার দেওয়া হবে। বিচারক হিসেবে থাকছেন দেশের জনপ্রিয় এবং খ্যাতিমান একঝাঁক চলচ্চিত্র নির্মাতা ও সমালোচকগণ। এছাড়াও উৎসবে থাকছে ‘বিজ্ঞাপন চলচ্চিত্র নির্মাণ’ এবং চলচ্চিত্রের সফল প্রযোজনা নিয়ে দুইটি কর্মশালা। দেশের স্বনামধন্য দুইজন নির্মাতা ও প্রযোজক এই কর্মশালা দুটি পরিচালনা করবেন।”
শীঘ্রই নির্মাতাদের আমন্ত্রণপত্র প্রেরণ, কর্মশালায় অংশগ্রহণসহ অন্যান্য প্রক্রিয়া সংক্রান্ত তথ্য বিস্তারিত প্রকাশ করা হবে বলে জানান তিনি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক শাহ মোহাম্মদ নিস্তার জাহান কবির বলেন, “আমাদের বিভাগে অনেক ক্রিয়েটিভ লোক আছে। আমার মনে হয় এসব উৎসবগুলো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় বাদেও অন্য সব জায়গায় হওয়া উচিত। আমি তাদের এই কাজ দেখে অনুপ্রাণিত। তাদের শুভকামনা জানাচ্ছি।”
এ সময় উপস্থিত ছিলেন চলচ্চিত্র সংসদের সভাপতি আদান মাহমুদ সৈকতসহ সংসদের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
ঢাকা/লিমন/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র উৎসব চলচ চ ত র উৎসব উৎসব র
এছাড়াও পড়ুন:
১৭ বছর পর অ্যাঞ্জেলিনা জোলি, নতুন পরিচয়ে এলেন ক্রিস্টেন স্টুয়ার্ট
স্থানীয় সময় বিকেল ৫টা। লালগালিচা এলাকা তীব্র অপেক্ষায়। চারদিকে শত শত ক্যামেরার চোখ। যে চোখ অপেক্ষায় তাঁর জন্য। নিরাপত্তাবলয়ের বাইরে দাঁড়িয়ে আছেন হাজার হাজার দর্শক। কারও হাতে মোবাইল, কারও হাতে অটোগ্রাফ নেওয়ার খাতা কিংবা প্রিয় তারকার ছবি। মৃদু শব্দে বেজে চলছে ফরাসি শিল্পীর কণ্ঠে গান। যে গানের সুর অন্যরকম আবেশ সৃষ্টি করছে। এমন সময় ঘোষণা এলো লালগালিচায় আসছেন হলিউড তারকা অ্যাঞ্জেলিনা জোলি। হই হই রব পড়ে গেল চারদিকে।
অপেক্ষায় থাকা তরুণ-তরুণী ও বয়োবৃদ্ধরাও চিৎকার করে উঠলেন। ঘোষণামাত্রই রাজকীয়ভাবে আগমন ঘটল জোলির। এ যেন স্বয়ং চাঁদের আলো নেমে এলো লালগালিচায়। এসেই শুভ্র হাসির সঙ্গে চুমু উড়িয়ে অভিবাদন জানালেন সবাইকে। নিজেও কুর্নিশ করে নিলেন উপস্থিতি সবার পক্ষ থেকে উড়ে আসা ভালোবাসা।
১৭ বছর পর লালগালিচায়
পরিচালক আরি অ্যাস্টারের নতুন চলচ্চিত্র ‘এডিংটন’-এর প্রিমিয়ার উপলক্ষে কান চলচ্চিত্র উৎসবের লালগালিচায় ১৭ বছর পর দেখা গেল অ্যাঞ্জেলিনা জোলিকে। এবার উৎসবের ৭৮তম এ আসরের মূল প্রতিযোগিতা বিভাগের ছবি ‘এডিংটন’-এ তিনি অভিনয় করছেন সম্মানজনক ভূমিকা শপার্ড ট্রফির মেরিন বা শুভেচ্ছাদূত হিসেবে। কান উৎসবে অ্যাঞ্জেলিনা জোলির এই প্রত্যাবর্তন শুধু গ্ল্যামারেই নয়, ইতিহাসেও অনন্য। কারণ, ২০০৮ সালে তিনি শেষবারের মতো এই লালগালিচায় হেঁটেছিলেন। তাও ছিলেন তাঁর যমজ সন্তান নক্স ও ভিভিয়েনকে গর্ভে ধারণ করে। তখন তাঁর পাশে ছিলেন ব্র্যাড পিট। পরেছিলেন ফরাসি ব্র্যান্ড জেরার দারে’র ডিজাইন করা একটি পিস্টাচিও-সবুজ গাউন। তাঁর এবারের উপস্থিতি যেন সেই স্মরণীয় মুহূর্তেরই এক গৌরবময় পুনরাবৃত্তি। এবার তিনি এলেন নিজের বলিষ্ঠ উপস্থিতি, নিজের ইতিহাস আর নিজস্ব সৌন্দর্য নিয়ে।
নতুন পরিচয়ে এলেন ক্রিস্টেন স্টুয়ার্ট
কান চলচ্চিত্র উৎসবে এ বছর আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন হলিউড অভিনেত্রী ক্রিস্টেন স্টুয়ার্ট। এবার তিনি এসেছেন ভিন্ন পরিচয়ে–নির্মাতা হিসেবে। তাঁর পরিচালিত প্রথম চলচ্চিত্র ‘দ্য ক্রনোলজি অব ওয়াটার’ প্রদর্শিত হয়েছে মর্যাদাপূর্ণ এ উৎসবে। লিডিয়া ইউকনাভিচের আত্মজীবনীমূলক উপন্যাস La Mécanique des Fluides (২০১১) অবলম্বনে নির্মিত এই চলচ্চিত্রে এক তরুণ সাঁতারুর জীবনকাহিনি তুলে ধরা হয়েছে, যে বেড়ে ওঠে সহিংসতা ও মদ্যপানে ক্ষতবিক্ষত এক পরিবারে। সেই অন্ধকার পরিবেশ থেকে বেরিয়ে এসে সাহিত্যে আশ্রয় খুঁজে পায় সে, বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে খুঁজে পায় নিজের নতুন পরিচয় ও মুক্তির পথ।
প্রযোজকদের ভাষ্য অনুযায়ী, এটি শুধু একজন নারীর জীবনের গল্প নয়, বরং তা সংগ্রাম, আত্ম-অন্বেষণ ও শিল্পের মাধ্যমে আত্মমুক্তির এক গভীর মানবিক চিত্র। ফটোকল ইভেন্টে ক্রিস্টেন স্টুয়ার্টের উপস্থিতি আলো ছড়িয়েছে, আর তাঁর সাহসী নির্মাণভঙ্গি কুড়িয়েছে প্রশংসা। এ ছবির মাধ্যমে অভিনয়ের গণ্ডি পেরিয়ে সৃজনশীলতার এক নতুন অধ্যায়ে পা রাখলেন ক্রিস্টেন স্টুয়ার্ট। চলচ্চিত্রবোদ্ধারা বলছেন, এটি হতে পারে তাঁর দীর্ঘ ও শক্তিশালী নির্মাতাযাত্রার শুরু।
লালগালিচায় দাঁড়িয়ে বিদ্রোহের ইঙ্গিত
লালগালিচায় নতুন পোশাকবিধির কড়াকড়ির মধ্যে এক সাহসী, সচেতন ফ্যাশনের বার্তা নিয়ে উপস্থিত হয়েছিলেন ক্রিস্টেন স্টুয়ার্ট। লালগালিচায় তিনি হাজির হলেন এক অভিনব পোশাকে। হালকা গোলাপি, স্বচ্ছ ম্যাক্সি স্কার্ট, যার নিচে ছিল একটি টুইড শর্ট স্যুট। মাথায় এলোমেলোভাবে বাঁধা খোলা চুল, যেন হাওয়ায় খেলা করছিল তা। সেই চুলের ডগায় হট পিংক ডিপ-ডাই রঙের সাবলীল এক প্রতিবাদের ইঙ্গিত। ওপরে পরেছিলেন ম্যাচিং টুইড ব্লেজার, যার বাটনে ছিল কালো-রুপালি ‘CC’ চিহ্ন। গলায় হীরার চকচকে চোকার, পায়ে হালকা গোলাপি পাম্প হিল– একদিকে পরিমার্জিত, অন্যদিকে অনমনীয়।
এবারের কান উৎসবের নতুন ড্রেস কোড অনুযায়ী, লালগালিচায় এবং উৎসবের যেকোনো অংশে নগ্নতা নিষিদ্ধ। বিষয়টি বিবেচনা করে নতুন স্টাইল বেছে নিয়েছিলেন এ তারকা। পোশাকে আংশিক স্বচ্ছতা থাকলেও, তিনি কৌশলে ঢেকে রেখেছেন শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অংশ– শুধু সামান্য উন্মোচিত হয়েছে কোমর ও উরুর নিচের কিছুটা। তিনি সরাসরি এই নতুন বিধিনিষেধের বিরুদ্ধে মুখ খোলেননি। এই উপস্থিতিতে যেন প্রতিধ্বনিত হলো তাঁর আগের প্রতিবাদ। মনে পড়ে ২০১৮ সালের সে ঘটনা, যখন উঁচু হিলের ওপর নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদে তিনি লালগালিচায় নিজের হাই হিল খুলে ফেলেছিলেন। সেই প্রতিবাদের পর বদলেছিল সেই নিয়ম। ক্রিস্টেন স্টুয়ার্ট শুধু ‘টোয়াইলাইট’-এর তারকা নন। তিনি এখন নিজেই এক প্রতিবাদী শিল্পভাষা। কানের মতো প্রতিষ্ঠানে দাঁড়িয়ে তিনি বোঝালেন, নিয়ম মানা যায়, তবে তাতে নিজের অবস্থান ও মতামত প্রকাশের পথও থাকে।
ড্রেসকোড নিয়ে আরও প্রতিবাদ
ক্রিস্টেন সীমার মধ্যে থেকে প্রতিবাদ জানালেও, অনেকেই সরাসরি নিয়ম অমান্য করলেন। যেমন হেইডি ক্লুম, যিনি এলি সাবের এক বিরাট ট্রেইনযুক্ত গাউনে হাজির হয়ে স্পষ্টত নতুন নিয়ম ভাঙলেন। কারণ, নতুন নিয়মে বলা হয়েছে, ‘অতিরিক্ত আয়তনের পোশাক, যা অতিথিদের চলাফেরায় সমস্যা সৃষ্টি করে, তা নিষিদ্ধ।’ অন্যদিকে, বিচারক হিসেবে নিযুক্ত হ্যালি বেরি শেষ মুহূর্তে বদলে ফেললেন নিজের পোশাক। প্রথমে তাঁর নির্বাচিত গৌরব গুপ্তার নকশা করা একটি ট্রেইনযুক্ত গাউন ছিল, কিন্তু নিয়মে সেটি নিষিদ্ধ হওয়ায় পরে তিনি পরেন একটি জাকেমাস স্ট্রাইপড পোশাক, যার পেছনে ছিল একটি বিনম্র গোলাপি রাফল।