৭ মাস ধরে নারীকে বাসায় আটকে ধর্ষণ করছিলেন নোবেল, ৯৯৯ নম্বরে কল পেয়ে উদ্ধার: পুলিশ
Published: 20th, May 2025 GMT
কণ্ঠশিল্পী মাঈনুল আহসান নোবেলকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে পুলিশের ডেমরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুর রহমান বলেছেন, তিনি (নোবেল) এক নারীকে সাত মাস একটি বাসায় আটকে রেখে ধর্ষণ ও নির্যাতন করছিলেন। জাতীয় জরুরি সেবা ‘৯৯৯’ নম্বরে কলে পেয়ে বাসাটি থেকে নারীকে উদ্ধার করা হয়। পরে নোবেলকেও গ্রেপ্তার করা হয়।
আজ মঙ্গলবার ওসি মাহমুদুর রহমান প্রথম আলোকে এসব কথা বলেন। গতকাল সোমবার দিবাগত রাতে রাজধানীর ডেমরা থেকে নোবেলকে গ্রেপ্তার করার কথা জানায় পুলিশ।
আজ প্রথমে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগ থেকে পাঠানো খুদেবার্তায় এই তথ্য জানানো হয়। পরে ডেমরা থানা-পুলিশও এই তথ্য নিশ্চিত করে।
আরও পড়ুনঅপহরণ ও ধর্ষণ মামলায় গায়ক নোবেল গ্রেপ্তার১ ঘণ্টা আগেপুলিশ জানায়, এক নারীকে সাত মাস ডেমরার একটি বাসায় আটকে রেখে দিনের পর দিন ধর্ষণ ও নির্যাতন করছিলেন নোবেল। ওই নারীকে বিয়ের প্রলোভন দেখানো হলেও তিনি বিয়ে করেননি।
পুলিশের ডেমরা থানার ওসি মাহমুদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, প্রাথমিকভাবে তাঁরা জানতে পেরেছেন, গত নভেম্বরে ইডেন কলেজের এক ছাত্রীকে গুলশানে দেখা করার কথা বলে ডেকে নেন নোবেল। পরে সাত মাস ডেমরার একটি বাসায় তাঁকে আটকে রাখেন তিনি। এই সময়ে তিনি ছাত্রীকে নির্যাতন ও ধর্ষণ করেন। এসব ঘটনা নিজের মুঠোফোনে ধারণ করেন। এই ভিডিও দিয়ে ছাত্রীকে তিনি ‘ব্ল্যাকমেল’ করছিলেন।
সম্প্রতি নোবেল এক নারীকে সিড়ি দিয়ে টেনে নামাচ্ছেন—এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয় বলে উল্লেখ করেন ওসি মাহমুদুর রহমান। তিনি বলেন, ভিডিওতে থাকা নারীই এই ভুক্তভোগী ছাত্রী। ভিডিওটি দেখে ছাত্রীর বাবা-মা টাঙ্গাইল থেকে ঢাকায় এসে বিস্তারিত জানতে পারেন। পরে তাঁরা জাতীয় জরুরি সেবা ‘৯৯৯’ নম্বরে ফোন করে ঘটনা জানান। গতকাল সোমবার রাত ১০টার দিকে ডেমরার একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে ছাত্রীকে উদ্ধার করা হয়। তখন পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে নোবেল পালিয়ে যান।
আরও পড়ুনমাদক নিরাময় কেন্দ্র থেকে বেরিয়ে নতুন রূপে মঞ্চে নোবেল০৫ নভেম্বর ২০২৪পরে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় গতকাল দিবাগত রাত ২টার দিকে নোবেলকে ডেমরা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানান ওসি মাহমুদুর রহমান। তিনি বলেন, নোবেল সীমান্ত দিয়ে দেশের বাইরে পালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন। এ জন্য তিনি একটি মাইক্রোবাস ভাড়া করেছিলেন। তবে পালানোর আগেই তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
নোবেলের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের অভিযোগে মামলা হয়েছে বলে জানান ওসি মাহমুদুর রহমান। তিনি বলেন, এ ছাড়া ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করে ছাত্রীটিকে ব্ল্যাকমেল করার অভিযোগে নোবেলের বিরুদ্ধে পর্নোগ্রাফি আইনেও মামলা হয়েছে।
আরও পড়ুননিজের ওপর ঘৃণা হয়, অনেক কিছু হারিয়েছি: নোবেল২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গ র প ত র কর করছ ল ন ন ব লক
এছাড়াও পড়ুন:
কোটি টাকার সেতুর ওপর ২২ বছরেও চলতে পারেনি গাড়ি
তিন দিকে নেই বাড়িঘর। একদিকে নিচু কাঁচা রাস্তার শেষ মাথায় একটি খাল। খালের অন্য পাশে রাস্তার কোনো অস্তিত্ব নেই। কিন্তু সেই খালের ওপর কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছে পুতলাকান্দা সেতু। রাস্তা না থাকায় সেতুটি মানুষের কোনো কাজে আসছে না। সংযোগ সড়কবিহীন সেতুটির অবস্থান নান্দাইল উপজেলার দাতারাটিয়া গ্রামে।
নান্দাইল সদর ইউনিয়নের নান্দাইল-খালবলা পাকা সড়কে ডিমেরঘাট নামে একটি জায়গা রয়েছে। সেখান থেকে একটি সড়ক কাটলীপাড়া মহল্লার ভেতর দিয়ে বলদা বিলের কাছাকাছি দাতারাটিয়া (পুতলাকান্দা) গ্রামের নলা খালের পারে চলে গেছে। সড়কটির পৌরসভা অংশের এক কিলোমিটার পাকা হলেও বাকিটা কাঁচা। দেখলেই বোঝা যায় সেখানে লোক চলাচল কম। খালটি ঝালুয়া বাজারের পাশ দিয়ে লংগাড় পার হয়ে নরসুন্ধা নদীতে গিয়ে মিশেছে। বলদা বিলের পানি এই খাল দিয়েই নরসুন্ধা নদীতে যায়। খালের দক্ষিণ পাশে দাতারাটিয়া গ্রাম। সেখানে আঁকাবাঁকা আইলের মতো রেকর্ডের রাস্তা থাকলেও ছোটখাটো যানবাহন চলাচল দূরে থাক, হেঁটে যাতায়াতও কষ্টকর। অথচ এই পথেই আশপাশের বেশ কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দা নান্দাইল উপজেলা সদরসহ ঝালুয়া বাজারের সঙ্গে খুব সহজে যোগাযোগ করতে পারেন।
গুরুত্ব বিবেচনা করে ২০০১ সালে নান্দাইল উপজেলা স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) ওই খালের ওপর একটি সেতু নির্মাণকাজ শুরু করে। প্রায় ৩৭ মিটার দৈর্ঘ্য ও তিন মিটার প্রশস্থ সেতুটি নির্মাণে কত টাকা বরাদ্দ ছিল তা জানা না গেলেও প্রায় কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে বলে ধারণা স্থানীয়দের। কিন্তু কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতটিু রাস্তার অভাবে ২২ বছর ধরে অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে আছে।
ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেছে, সেতুটির দক্ষিণ পাশ ছাড়া অন্য পাশে কাছাকাছি কোনো বসতি নেই। উত্তর পাশে নিচু মাটির রাস্তা থেকে সেতুটির অবস্থান অনেক ওপরে। সেতুর দক্ষিণ পাশে রাস্তার কোনো অস্তিত্ব নেই।
কাটলীপাড়া গ্রামের সেকান্দর আলী জানান, রাস্তা না থাকায় এ পথে লোকজন না এসে ভিন্নপথে চলাচল
করেন। কখনও না জেনে সাইকেলে করে আইসক্রিম বিক্রেতারা এ পথে চলে এলে ছোট ছেলেমেয়েদের সহায়তা নিয়ে সেতুটি পার হতে হয়। এ কাজের জন্য আইসক্রিম ব্যয় করতে হয় তাদের।
দাতারাটিয়া গ্রামের সদুত মিয়া বলেন, সেতুর দক্ষিণ পাশে চলাচলের অনুপযোগী আঁকাবাঁকা আইলের মতো রেকর্ডের রাস্তা আছে। সেতু নির্মাণের সময় কথা ছিল সেগুলো সোজা করে প্রশস্থ রাস্তা তৈরি করা হবে। কিন্তু আশপাশের জমির মালিকরা জায়গা দিতে রাজি না হওয়ায় আর রাস্তা তৈরি করা যায়নি।
এ বিষয়ে নান্দাইল উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী আব্দুল মালেক বিশ্বাস জানান, অনেক আগে নির্মিত সেতুটির কাগজপত্র জেলা অফিসে আছে। তাই কাগজপত্র না দেখে কিছু বলতে পারছেন না। তবে দু-এক দিনের মধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে সড়ক নির্মাণের পদক্ষেপ নেওয়া হবে।