শাহরিয়ারকে নিয়ে নোংরা রাজনীতি ও চরিত্র হননের চেষ্টা হচ্ছে, অভিযোগ সংবাদ সম্মেলনে
Published: 20th, May 2025 GMT
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যার পর তাঁকে নিয়ে রাজনৈতিক ছাত্রসংগঠনগুলো বিভাজন ও নোংরা রাজনীতি করছে। কিছু সংগঠন তাঁকে নিয়ে অনলাইনে নানা ধরনের বাজে ও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করছে। তাঁর চরিত্র হননের চেষ্টা করা হচ্ছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সামনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করা হয়। ইনস্টিটিউটের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও শাহরিয়ারের বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধুরা এই সংবাদ সম্মেলন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী মশিউর আমিন শুভ এবং ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের শিক্ষার্থী এস এম নাহিয়ান ইসলাম।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, এই নির্মম হত্যাকাণ্ডকে ঘিরে রাজনৈতিক দলাদলি তাঁদের আশাহত করেছে। তাঁদের প্রত্যাশা, এই হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবিতে পুরো বিশ্ববিদ্যালয় ঐক্যবদ্ধ থাকবে। তা ছাড়া যে কুচক্রী মহল তাঁর চরিত্র হননের কাজ করছে, তাদের প্রতি নিন্দা জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।
শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের আরেক শিক্ষার্থী সোহেল রানা সাব্বির পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, ২২ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে শিক্ষার্থীরা অবস্থান কর্মসূচি পালন করবেন। তাঁরা আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত তদন্ত কার্যক্রমের অগ্রগতি দেখবেন। তাঁরা যদি তদন্ত কার্যক্রমে সন্তুষ্ট হতে না পারেন, যদি মূল খুনিদের বৃহস্পতিবারে মধ্যে ধরা না হয়, তাহলে তাঁরা পুরো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে সঙ্গে নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বরাবর লংমার্চ করবেন।
সংবাদ সম্মেলনে কয়েকটি দাবি তুলে ধরা হয়। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে—শাহরিয়ার হত্যায় জড়িত সবাইকে দ্রুত শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করে জনসম্মুখে নিয়ে আসা। হত্যাকাণ্ডের স্থানের আশপাশের এলাকার সব সিসিটিভি ফুটেজ গণমাধ্যমে প্রকাশ করা। আসামি ধরার ক্ষেত্রে গাফিলতির জবাবদিহি করা। শাহবাগ থানার পাশে গড়ে ওঠা অস্ত্র-মাদকের সিন্ডিকেটের সঙ্গে সম্পৃক্ত সবাইকে জবাবদিহির আওতায় আনা। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের গাফিলতি মেনে নেওয়া হবে না। প্রশাসনকে শিক্ষার্থীদের যেকোনো প্রয়োজনে আরও তৎপর হতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে তদন্ত-বিচারের নিয়মিত ফলোআপ নেওয়ার জন্য সর্বোচ্চ তৎপর থাকা। বিচার নিশ্চিতকরণে কমিটি করা। ক্যাম্পাসসহ পার্শ্ববর্তী এলাকায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র জন ত
এছাড়াও পড়ুন:
দলগুলো ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্ত দিতে ব্যর্থ হলে সরকার নিজের মতো সিদ্ধান্ত নেবে
জুলাই জাতীয় সনদ বা সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়নের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যে মতভেদ দেখা দিয়েছে, তাতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। এ বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে নিজ উদ্যোগে নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা করে সম্ভাব্য দ্রুততম সময়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে ঐক্যবদ্ধ দিক-নির্দেশনা দেওয়ার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলো যদি ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্ত দিতে না পারে, তাহলে সরকার তার মতো করে সিদ্ধান্ত নেবে।
আজ সোমবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের ‘জরুরি সভায়’ এই সিদ্ধান্ত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। পরে সেখানে এক সংবাদ সম্মেলনে সরকারের সিদ্ধান্ত জানান আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল। সংবাদ সম্মেলনে উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, আদিলুর রহমান খান ও প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম উপস্থিত ছিলেন।
গত মঙ্গলবার জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে সুপারিশ জমা দিয়েছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এতে বলা হয়েছে, সনদের সংবিধান-সম্পর্কিত সংস্কার প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়নে বিশেষ আদেশ জারি করে তার ভিত্তিতে গণভোট হবে। গণভোটে প্রস্তাব পাস হলে আগামী সংসদ সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে ২৭০ দিনের মধ্যে সংবিধান সংস্কার করবে।
তবে গণভোট কবে হবে, সে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার সরকারের ওপর ছেড়ে দিয়েছে ঐকমত্য কমিশন। সরকার সিদ্ধান্ত নেবে গণভোট কি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন একই সঙ্গে হবে, নাকি আগে হবে। এসব সুপারিশ জমা দেওয়ার পর রাজনৈতিক দলগুলো পরস্পরবিরোধী অবস্থান নিয়েছে। এ রকম পরিস্থিতিতে আজ জরুরি বৈঠকে বসে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ।
সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছেন আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল