ভূগর্ভস্থ পানির ব্যবহার কমানো এবং নিরাপদ পানির সংকট এড়াতে ব্যক্তি পর্যায় থেকে পানির অপব্যবহার বন্ধের চর্চা শুরু করার আহ্বান জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলেন, যেসব ফসল উৎপাদনে পানি কম প্রয়োজন, সেসব শস্যের বিষয়ে কৃষকদের উৎসাহিত করতে হবে। এজন্য দরকার সুশাসন।

এএলআরডি, বেলা ও পানি অধিকার ফোরামের উদ্যোগে গতকাল রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘ভূগর্ভস্থ পানির সংকট: কৃষি ও পরিবেশের ওপর প্রভাব মোকাবিলায় করণীয়’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে এ আহ্বান জানানো হয়। 

মূল প্রবন্ধে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড.

চৌধুরী মো. সারোয়ার জাহান বলেন, দেশের ৯৭ শতাংশ মানুষ পানীয় জল এবং ৮০ শতাংশ মানুষ কৃষির সেচের জন্য ভূগর্ভস্থ পানির ওপর নির্ভর করে। উপকূলীয় অঞ্চলের ৫৩% এলাকায় লবণাক্ততা বেড়ে গেছে, যা কৃষিজমি ও ফসল উৎপাদনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। 

রিভারাইন পিপল-এর মহাসচিব শেখ রোকন বলেন, ঢাকা ওয়াসা ৭১ শতাংশ পানি ভূগর্ভস্থ থেকে উত্তোলন করলেও মেঘনা নদী থেকে পানি আনতে হচ্ছে। অতিরিক্ত উত্তোলনের ফলে পানির স্তর দ্রুত নিচে নেমে যাচ্ছে। 

পানির সুশাসনে নারীর ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করে এএলআরডির উপনির্বাহী পরিচালক রওশন জাহান মনি বলেন, গ্রামীণ নারীদের ৭২% কৃষিতে যুক্ত এবং তারা মূলত ভূপৃষ্ঠের পানি ব্যবহার করে টেকসই চাষে অবদান রাখছেন। ইনসিডিন বাংলাদেশের এ কে এম মাসুদ আলী বলেন, পানি সুশাসনে কৃষক, নারী, আদিবাসী, প্রান্তিক মানুষ ও পরিবেশকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। 

বুয়েটের অধ্যাপক ড. শাহাজাহান মণ্ডল বলেন, সমন্বিত পানি ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে বরেন্দ্র এলাকায় বোরো ধানের আবাদ বন্ধ ও খাল পুনঃখননের মতো উদ্যোগ গ্রহণ করা যেতে পারে। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মীর আব্দুস সাহিদ বলেন, দেশে বছরে ৩২ বিলিয়ন ঘনমিটার ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন হয়। ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. কামরুজ্জামান মনে করেন, দেশের পানি সংকট মূলত ব্যবস্থাপনার অভাবে সৃষ্টি হয়েছে। পানি সম্পদ পরিকল্পনা সংস্থার পরিচালক শাহ্ মোজাহিদ উদ্দিন জানান, পানি আইন ও বিধিমালা হালনাগাদের পাশাপাশি পানির বাণিজ্যিক ও গৃহস্থালি ব্যবহারের যৌক্তিক মূল্য নির্ধারণে সরকার কাজ করছে।

বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক মো. তরিকুল আলম জানান, উত্থাপিত সুপারিশগুলো বোর্ড সভায় উপস্থাপন করে বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হবে। সভাপতির বক্তব্যে এলআরডির নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা বলেন, পানির সুশাসন নিশ্চিত করতে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের মধ্যে কার্যকর সমন্বয় প্রয়োজন। বেলার প্রধান নির্বাহী তাসলিমা ইসলাম বলেন, আমরা চাই নদীগুলো ফিরে আসুক, পরিবেশ সুস্থ হোক। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব যবহ র

এছাড়াও পড়ুন:

ভূগর্ভস্থ পানির ব্যবহার কমাতে দরকার সুশাসন

ভূগর্ভস্থ পানির ব্যবহার কমানো এবং নিরাপদ পানির সংকট এড়াতে ব্যক্তি পর্যায় থেকে পানির অপব্যবহার বন্ধের চর্চা শুরু করার আহ্বান জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলেন, যেসব ফসল উৎপাদনে পানি কম প্রয়োজন, সেসব শস্যের বিষয়ে কৃষকদের উৎসাহিত করতে হবে। এজন্য দরকার সুশাসন।

এএলআরডি, বেলা ও পানি অধিকার ফোরামের উদ্যোগে গতকাল রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘ভূগর্ভস্থ পানির সংকট: কৃষি ও পরিবেশের ওপর প্রভাব মোকাবিলায় করণীয়’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে এ আহ্বান জানানো হয়। 

মূল প্রবন্ধে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. চৌধুরী মো. সারোয়ার জাহান বলেন, দেশের ৯৭ শতাংশ মানুষ পানীয় জল এবং ৮০ শতাংশ মানুষ কৃষির সেচের জন্য ভূগর্ভস্থ পানির ওপর নির্ভর করে। উপকূলীয় অঞ্চলের ৫৩% এলাকায় লবণাক্ততা বেড়ে গেছে, যা কৃষিজমি ও ফসল উৎপাদনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। 

রিভারাইন পিপল-এর মহাসচিব শেখ রোকন বলেন, ঢাকা ওয়াসা ৭১ শতাংশ পানি ভূগর্ভস্থ থেকে উত্তোলন করলেও মেঘনা নদী থেকে পানি আনতে হচ্ছে। অতিরিক্ত উত্তোলনের ফলে পানির স্তর দ্রুত নিচে নেমে যাচ্ছে। 

পানির সুশাসনে নারীর ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করে এএলআরডির উপনির্বাহী পরিচালক রওশন জাহান মনি বলেন, গ্রামীণ নারীদের ৭২% কৃষিতে যুক্ত এবং তারা মূলত ভূপৃষ্ঠের পানি ব্যবহার করে টেকসই চাষে অবদান রাখছেন। ইনসিডিন বাংলাদেশের এ কে এম মাসুদ আলী বলেন, পানি সুশাসনে কৃষক, নারী, আদিবাসী, প্রান্তিক মানুষ ও পরিবেশকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। 

বুয়েটের অধ্যাপক ড. শাহাজাহান মণ্ডল বলেন, সমন্বিত পানি ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে বরেন্দ্র এলাকায় বোরো ধানের আবাদ বন্ধ ও খাল পুনঃখননের মতো উদ্যোগ গ্রহণ করা যেতে পারে। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মীর আব্দুস সাহিদ বলেন, দেশে বছরে ৩২ বিলিয়ন ঘনমিটার ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন হয়। ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. কামরুজ্জামান মনে করেন, দেশের পানি সংকট মূলত ব্যবস্থাপনার অভাবে সৃষ্টি হয়েছে। পানি সম্পদ পরিকল্পনা সংস্থার পরিচালক শাহ্ মোজাহিদ উদ্দিন জানান, পানি আইন ও বিধিমালা হালনাগাদের পাশাপাশি পানির বাণিজ্যিক ও গৃহস্থালি ব্যবহারের যৌক্তিক মূল্য নির্ধারণে সরকার কাজ করছে।

বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক মো. তরিকুল আলম জানান, উত্থাপিত সুপারিশগুলো বোর্ড সভায় উপস্থাপন করে বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হবে। সভাপতির বক্তব্যে এলআরডির নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা বলেন, পানির সুশাসন নিশ্চিত করতে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের মধ্যে কার্যকর সমন্বয় প্রয়োজন। বেলার প্রধান নির্বাহী তাসলিমা ইসলাম বলেন, আমরা চাই নদীগুলো ফিরে আসুক, পরিবেশ সুস্থ হোক। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ