রাঙামাটি শহরের জেলা সদর উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ের পাশে অবস্থিত বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভেঙে দিয়েছে ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতা। পাঁচ দিনের চেষ্টার পর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ভাস্কর্যটি সম্পূর্ণ রূপে ভেঙে ফেলা হয়েছে। 

বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভেঙে ফেলার বিষয়টি নিশ্চিত করে ফ্যাসিবাবিরোধী ছাত্র-জনতার সমন্বয়ক ইমাম হোসেন ইমু জানান, চার থেকে পাঁচ দিন ধরে চেষ্টা চালানোর পর ভাস্কর্যটি সম্পূর্ণভাবে ভেঙে ফেলা সম্ভব হয়েছে। 

গত ১৩ মে ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার ব্যানারে রাঙামাটিতে এক বিক্ষোভ মিছিল থেকে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য অপসারণের জন্য ৪৮ ঘণ্টার সময় বেঁধে দেওয়া হয় রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদকে। তা না হলে শুক্রবার থেকে ছাত্র-জনতা নিজেরাই বঙ্গবন্ধুর ভার্স্কয ভাঙবে বলে আলটিমেটাম দেওয়া হয়। 

গত শুক্রবার বিকেল থেকে ১০-১৫ জনের শ্রমিক দিয়ে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যটি ভেঙে ফেলার কাজ শুরু হয়। প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি না থাকায় ভাস্কর্যটি ভেঙে ফেলতে অসুবিধায় পড়েন স্থানীয় শ্রমিকরা। পরে চট্টগ্রাম থেকে হ্যামার এক্সক্যাভেটর নিয়ে আসার পর ভাস্কর্যটি পুরোপুরি ভাঙার কাজ শুরু হয়। মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে ৩১ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১২ ফুট প্রস্থের দাঁড়ানো ভাস্কর্যটি বিকট শব্দে নিচে পড়ে যায়। ভাস্কর্যটি ভেঙে ফেলার দৃশ্য দেখতে শত শত মানুষ সেখানে জড়ো হন। অনেকেই মোবাইল ফোনে ভাস্কর্য ভেঙে ফেলার দৃশ্য ভিডিও ধারণ করেন।
রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের অর্থায়নে ২০১০-১১ অর্থবছরে নির্বাচন কার্যালয় সামনে ও সদর উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ের পাশে প্রায় চার কোটি টাকা ব্যয়ে বঙ্গবন্ধুর এ ভাস্কর্যটি নির্মাণ করা হয়। 

এ প্রসঙ্গে বক্তব্য জানতে চাওয়া হলে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের মুখ্য নির্বাহী খন্দকার মোহাম্মদ রিজাউল করিম বলেন, ভাস্কর্যটি ভেঙে ফেলা হয়েছে কিনা তিনি জানেন না। আজকে (মঙ্গলবার) ওই এলাকায় (ভাস্কর্যস্থল) তিনি যাননি। 

একই ভাষ্য রাঙামাটি কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাঈদ উদ্দীনের। তিনি জানান, ভাস্কর্যটি অপসারণ করা হয়েছে কিনা এ বিষয়ে তাঁর জানা নেই। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ছ ত র জনত

এছাড়াও পড়ুন:

সেমিনারে বক্তারা

জিও টেক্সটাইল প্রযুক্তির মাধ্যমে দ্বীপ তৈরি করা সম্ভব। এ ক্ষেত্রে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা প্রয়োজন। এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে সেন্ট মার্টিনের প্রবালের কোনো ধরনের ক্ষতি না করে দ্বীপটির আয়তন বৃদ্ধি করা সম্ভব। এছাড়া টেকনাফসহ দেশের অন্যান্য এলাকায়ও এই প্রযুক্তি ব্যবহার করা যাবে।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাজধানীর রমনায় অবস্থিত ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশের (আইইবি) শহীদ প্রকৌশলী ভবনের কাউন্সিল হলে ‘অ্যাপ্লিকেশন অব জিও টেক্সটাইলস ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক আয়োজিত এক সেমিনারে এই তথ্য উঠে আসে। আইইবির টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ এ আয়োজন করে।

আইইবির টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মহিউদ্দিন আহমেদ সেলিমের সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ শামীম আখতার। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- আইইবির সহসভাপতি (হিউম্যান রিসোর্সেস ডেভেলপমেন্ট) প্রকৌশলী শেখ আল আমিন, সম্মানী সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. সাব্বির মোস্তফা খান, টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সম্পাদক প্রকৌশলী মো. মোস্তফা–ই–জামান প্রমুখ। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মাহবুবুল হক। স্বাগত বক্তব্য রাখেন আইইবির টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ভাইস চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. সায়েদুর রহমান।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে শামীম আখতার বলেন, জিও টেক্সটাইলের ব্যবহার ব্যাপক। নদী রক্ষায় এই প্রযুক্তি অনেক কার্যকর। এছাড়া সেতুর গোড়ায় মাটির ক্ষয় রোধে জিও টেক্সটাইল ব্যবহার হচ্ছে। পুরকৌশলে জিও টেক্সটাইল নতুন এক মাত্রা যোগ করেছে। মেরিন ইঞ্জিনিয়ার ও সিভিল ইঞ্জিনিয়াররাও এই প্রযুক্তি ব্যবহার করছে। 

তিনি বলেন, বাংলাদেশের পানি উন্নয়ন বোর্ডে জিও টেক্সটাইলের ব্যাপক ব্যবহার হয়। এটি প্রকৌশল ক্ষেত্রে আশীর্বাদস্বরূপ। তাই এই প্রযুক্তির উন্নয়ন প্রয়োজন। কিন্তু জিও টেক্সটাইলের উন্নতি নিয়ে তেমন কোনো গবেষণা নেই। জিও টেক্সটাইল নিয়ে প্রচুর গবেষণা করা প্রয়োজন। 

মূল প্রবন্ধে মাহবুবুল সড়ক নির্মাণ, ড্রেনেজ সিস্টেম, উপকূলীয় মাটি ক্ষয় রোধ, কৃষি, ড্রেজিং, নদীর পাড় রক্ষাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে জিও টেক্সটাইলের ব্যবহার ও কার্যকারিতা সম্পর্কে আলোকপাত করেন। তিনি বলেন, জিও টেক্সটাইল একদিকে যেমন টেকসই ও পরিবেশবান্ধব, অন্যদিকে এর খরচও তুলনামূলকভাবে কম। এছাড়া সুয়েজ ব্যবস্থাপনা, নদীর পাড় রক্ষা এবং পাহাড় ধস রোধেও এই প্রযুক্তি কার্যকর। পাহাড়ের ঢালে পাটের কার্পেট দিয়ে ঢেকে দিলে সেখানে বৃষ্টির কারণে মাটি ক্ষয় হবে না। এছাড়া সেখানে কার্পেটের সঙ্গে সঙ্গে গাছও লাগানো হয়। এতে করে পাহাড় ধস রোধ করা সম্ভব। 

মাহবুবুল বলেন, নদীর পাড়ে ভূমির উপরিভাগের আকার অনুযায়ী জিও ব্যাগ ব্যবহার করলে নদীর পাড় রক্ষায় তা কার্যকরী ভূমিকা রাখবে। এ সময় তিনি জিও টেক্সটাইল নিয়ে গবেষণার ওপর জোর দেন। বিশেষ করে নারকেলের খোসা নিয়ে আলাদা একটি গবেষণা ইনস্টিটিউট স্থাপনেরও সুপারিশ করেন। 
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ