নুরের বিরুদ্ধে ডিএনসিসির অপপ্রচার মিথ্যা, দাবি গণ অধিকার পরিষদের
Published: 21st, May 2025 GMT
ডাকসুর সাবেক ভিপি ও গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরের বিরুদ্ধে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি) মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচার করেছে দাবি করে এর তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।
বুধবার (২১ মে) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ প্রতিবাদ জানিয়েছে গণ অধিকার পরিষদ।
এর আগে, বুধবার (২১ মে) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ডিএনসিসির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, পছন্দের ঠিকাদার কাজ না পাওয়ায় ডিএনসিসি নগর ভবনের সামনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছেন নুরুল হক নুর।
আরো পড়ুন:
ঢাকার সবুজায়নে ১ জুন থেকে বৃক্ষরোপণ শুরু
অনলাইনে দেওয়া যাবে ডিএনসিসি’র হোল্ডিং ট্যাক্স
তবে দাবিকে পুরোপুরি মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও বানোয়াট বলে দাবি করেছে গণ অধিকার পরিষদ। সংগঠনটির দাবি, ডিএনসিসির প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজের বিরুদ্ধে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন হিজবুত তাহরীরের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার সুনির্দিষ্ট তথ্য-প্রমাণ রয়েছে। ২০১৫ সালে এই অভিযোগেই এজাজ গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। সম্প্রতি এই তথ্য আল জাজিরার অনুসন্ধানী সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়েরের একটি ফেসবুক পোস্টে উঠে আসে।
এই অভিযোগের ভিত্তিতে ঢাকা মহানগর উত্তর গণ অধিকার পরিষদ, ডিএনসিসি ভবনের সামনে একটি বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে এবং ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়ে মোহাম্মদ এজাজকে অপসারণ ও গ্রেপ্তারের দাবি জানায়। এই কর্মসূচিতে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেন ও একাত্মতা প্রকাশ করেন।
সংগঠনের পক্ষ থেকে আরো অভিযোগ করা হয়, প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ নিজের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ আড়াল করতে ও জনদৃষ্টি অন্যদিকে ফেরাতে নুরুল হক নুরের বিরুদ্ধে বিভ্রান্তিকর প্রচার চালাচ্ছেন। এমনকি গতকাল মঙ্গলবার বিক্ষোভ কর্মসূচি স্থগিত করার জন্য নিজের মামাসহ কয়েকজন ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিকে পাঠিয়ে আর্থিক প্রস্তাব দিয়ে সমঝোতা করতে চেয়েছেন। এছাড়া বারবার ফোন করে কর্মসূচি বন্ধের অনুরোধও জানান তিনি। তবে সংগঠনটি কোনো প্রকার আপস না করে কর্মসূচি পালন করে।
আরো পড়ুন: পছন্দের ঠিকাদার কাজ না পাওয়ায় বিশৃঙ্খলা করেছেন নূর: ডিএনসিসি
গণ অধিকার পরিষদের দাবি, ডিএনসিসির অভিযোগ মিথ্যা, প্রকৃত ঘটনা তার বিপরীত। মোহাম্মদ এজাজ ডিএনসিসিতে কমিশন ও নিজের পছন্দের লোক ছাড়া কাউকে কোনো কাজ দেন না। অতীতে গাবতলী পশুর হাটসহ নানাবিষয়ে এমন অভিযোগ গণমাধ্যমে উঠে এসেছে। গণ অধিকার পরিষদের এক সদস্য সরকারি টেন্ডারে সর্বোচ্চ দরদাতা হলেও কোনো কমিশন না দেওয়ায় তাকে কাজ থেকে বঞ্চিত করা হয়।
বিষয়টি প্রশাসককে অবহিত করলে তিনি নিজেই নুরুল হক নুরকে পরামর্শ দেন, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলীকে বিষয়টি জানাতে। অতঃপর বিষয়টি আলোচনার পর্যায়ে এলে তাতে কোনো প্রতিকার না মেলায় সংগঠনটি বিক্ষোভের পথ বেছে নেয়।
গণ অধিকার পরিষদ স্পষ্টভাবে জানিয়েছে, অনতিবিলম্বে মোহাম্মদ এজাজকে ডিএনসিসির প্রশাসকের পদ থেকে অপসারণ ও তাকে দ্রুত গ্রেপ্তার করতে হবে। একইসঙ্গে ভবিষ্যতেও দুর্নীতি ও জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার বিরুদ্ধে তাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
ঢাকা/এএএম/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ড এনস স ন র ল হক ন র ড এনস স র
এছাড়াও পড়ুন:
একযুগ পর প্রকাশ্যে চবি শিবিরের বিক্ষোভ-সমাবেশ
দীর্ঘ একযুগ পর প্রকাশ্যে ব্যানার নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শাখা ছাত্রশিবির। এ সময় শতভাগ আবাসন, চাকসু নির্বাচন, ও ফ্যাসিবাদের দোসরদের বিচারসহ সাত দফা দাবি জানায় সংগঠনটি।
সোমবার (১৯ মে) বেলা সাড়ে ১২টায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (চাকসু) থেকে এ বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। মিছিলটি প্রশাসনিক ভবন হয়ে শহীদ মিনার অতিক্রম করে জিরো পয়েন্টে গিয়ে সমাবেশে মিলিত হয়।
দীর্ঘদিন পর আয়োজিত এ মিছিলে ২ হাজারের বেশি নেতাকর্মীর উপস্থিত ছিল বলে জানিয়েছেন শাখা শিবিরের অফিস সম্পাদক হাবিুল্লাহ খালেদ।
আরো পড়ুন:
গোলাপ শাহ মাজার মোড় অবরোধ করে ইশরাক সমর্থকদের বিক্ষোভ
সাম্য হত্যায় জড়িতদের গ্রেপ্তার দাবিতে রাবিতে মশাল মিছিল
বিক্ষোভ মিছিলে সংগঠনটির নেতাকর্মীরা ‘শিবিরের অপর নাম, আদর্শের সংগ্রাম’, ‘এই ক্যাম্পাসের একক বীর, ইসলামী ছাত্রশিবির’, ‘আমার তোমার অধিকার, চাকসু চাকসু’, ‘জনে জনে খবর দে, সেশন জটের কবর দে’, ‘জুলাইয়ের প্রশাসন, দাও শতভাগ আবাসন’, ‘চবি শিবিরের কয় দফা, সাত দফা সাত দফা’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
বিক্ষোভ মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে শাখা ছাত্রশিবিরের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী বলেন, “ড. ইউনুস বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে এসেছিলেন, কিন্তু সুশীল-এনজিও মার্কা প্রশাসন তার কাছ থেকে কোনো কিছুই আদায় করতে পারেনি। অতিদ্রুত প্রধান উপদেষ্টাকে বুঝিয়ে আমাদের শতভাগ আবাসন নিশ্চিত করতে হবে। সেশনজটের তীব্র করাল গ্রাসে অনেক সম্ভাবনাময়ী শিক্ষার্থী ঝরে পড়ছে। এভাবে তাদের ক্যারিয়ার আজ ধ্ব্যসের মুখে।”
তিনি বলেন, “ফ্যাসিবাদের সহযোগীরা এখনো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনে রয়েছে। তারা আমার ভাই মুজাহিদ-মাসুদকে কুপিয়ে হত্যা করেছে। মামুনকে জবাই করে এবং জোবায়েরকে গুলি করে হত্যা করেছে। তারা এখনো বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছে। অতিদ্রুত ফ্যাসিবাদের দোসরদের ক্যাম্পাস থেকে বের করতে হবে।”
শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি ও কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদের সদস্য মুহাম্মদ ইব্রাহিম বলেন, “চবি শিবিরের সাত দফা শুধু আমাদের নয়, এগুলো প্রতিটি চবিয়ানদের প্রাণের দাবি। আমরা ভেবেছিলাম, জুলাইয়ের উপর আসা প্রশাসন শিক্ষার্থীদের অধিকারগুলো পূরণ করবে। কিন্তু তারা কিছু কাজ করলেও বেশিরভাগই পূরণ করেননি। এসব দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা রাজপথ ছাড়ব না।”
সমাবেশে আরো বক্তব্য দেন, চট্টগ্রাম মহানগরী দক্ষিণের সভাপতি ও কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদের সদস্য মুহাম্মদ ইব্রাহিম রনি এবং শাখা শিবিরের সাংগঠনিক সম্পাদক খলীল আনোয়ার।
চবি শাখা ছাত্রশিবিরের সাত দফা দাবির মধ্যে রয়েছে- শতভাগ আবাসন নিশ্চিত করতে হবে এবং আবাসন নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত অনাবাসিক সব শিক্ষার্থীকে আবাসন ভাতা প্রদান করতে হবে; সব বিভাগ ও ইনস্টিটিউটে অনতিবিলম্বে সেশনজট নিরসন এবং শিক্ষার আধুনিকায়ন নিশ্চিত করতে হবে; পর্যাপ্ত ও নিরাপদ যাতায়াত সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে; অনতিবিলম্বে চাকসু নির্বাচন দিতে হবে; দ্রুত সময়ের মধ্যে টিএসসি স্থাপন, সেন্ট্রাল অডিটোরিয়াম নির্মাণ, কেন্দ্রীয় মসজিদ পুনর্নির্মাণ এবং আবাসিক হল ও অন্যান্য স্থাপনাসমূহ সংস্কার করতে হবে।
অন্য দাবিগুলো হলো- জুলাই বিপ্লব ও ফ্যাসিবাদী শাসনামলে শিক্ষার্থীদের নির্যাতনে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত শিক্ষার্থীদের স্থায়ী বহিষ্কার এবং জড়িত শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের চাকরিচ্যুত করতে হবে; বিগত ফ্যাসিবাদী শাসনামলে অবৈধ নিয়োগের সঙ্গে জড়িত সবার বিচার এবং নিয়োগপ্রাপ্তদের চাকরিচ্যুত করতে হবে।
ঢাকা/মিজান/মেহেদী