রাবির সেই শিক্ষক-ছাত্রী সাময়িক বহিষ্কার
Published: 23rd, May 2025 GMT
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন্যান্স বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ হেদায়েত উল্লাহ ও একই বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের এক ছাত্রীকে অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগে আটকের ঘটনায় একাডেমিক কার্যক্রম থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। ঘটনাটি খতিয়ে দেখতে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৩৯তম সিন্ডিকেট সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
শুক্রবার বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেন সিন্ডিকেট সদস্য ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান। তিনি বলেন, বিভাগের তদন্ত কমিটির সুপারিশের প্রেক্ষিতে অধিকতর তদন্তের প্রতিবেদন না আসা পর্যন্ত ওই শিক্ষক ও ছাত্রী বিভাগের কোনো একাডেমিক কার্যক্রমে অংশ নিতে পারবেন না বলে সিন্ডিকেট সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে। ঘটনাটি অধিকতর তদন্তে ফার্মেসি বিভাগের অধ্যাপক এম গোলাম সাদিককে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত ১১ মে ফাইন্যান্স বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক হেদায়েত উল্লাহ এবং একই বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের এক শিক্ষার্থীকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একাডেমিক ভবনের ৩০৭ নম্বর কক্ষে অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগে আটক করা হয়। এ ঘটনার একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে ওই শিক্ষক-ছাত্রী সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন, পরিস্থিতি তৈরির পর ভিডিও ধারণ করে বৈষম্যবিরোধীর সাবেক সমন্বয়ক, সাংবাদিকসহ চারজন শিক্ষার্থী তিন লাখ টাকা চাঁদাবাজি করেছেন।
এদিকে চাঁদাবাজির অভিযোগ তুলে ওই শিক্ষক বাদী হয়ে গত ২০ মে নগরের মতিহার থানায় ওই চার শিক্ষার্থীর নামে মামলা করেন। এদিকে তদন্তের স্বার্থে শিক্ষক হেদায়েত উল্লাহর কক্ষ সিলগালা করা হয়েছে। তবে পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করে দুই সাংবাদিক দাবি করেন, তারা চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত নন।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: তদন ত
এছাড়াও পড়ুন:
ইবিতে স্নাতক পাসের ১ বছর পরও মিলছে না নম্বরপত্র
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ২০১৮-১৯ বর্ষের অধিকাংশ বিভাগের শিক্ষার্থীরা বছরখানেক আগেই স্নাতক সম্পন্ন করেছেন। কিন্তু নম্বরপত্র না পেয়ে উচ্চশিক্ষার আবেদনসহ গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন তারা।
সফটওয়্যার সিস্টেমে সমস্যা থাকার কারণে নম্বরপত্র উত্তোলনে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। তবে কবে নাগাদ সমাধান হবে সে বিষয়েও নিশ্চিত বলতে পারেননি তারা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পূর্বে ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীদের সনদ ও নম্বরপত্র প্রদান করা হত। ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে অনলাইনের মাধ্যমে এসব ডকুমেন্টস প্রদানে প্রিন্ট সেবা মাধ্যম চালু হয়। স্নাতক ২০১৮-১৯ বর্ষ থেকে পরবর্তী বর্ষের শিক্ষার্থীরা এই সেবা পাবেন বলে জানানো হয়। তবে বাস্তবে কেবল সনদ ও ট্রান্সক্রিপ্ট প্রদান করা হলেও নম্বরপত্র পাচ্ছেন না শিক্ষার্থীরা।
আরো পড়ুন:
কুবি উপাচার্যের মেয়ের পোষ্য কোটায় ভর্তি নিয়ে বিতর্ক
গাজায় মানবিক সহায়তা পাঠালেন জবি শিক্ষার্থীরা
বিশ্ববিদ্যালয়ের হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থী সোহেল রানা বলেন, “২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে স্নাতক শেষ করি। তবে ১ বছর পরও নম্বরপত্র হাতে পাইনি। চলতি বছরের ফ্রেব্রুয়ারিতে মাস্টার্স শেষ করে ক্যাম্পাস ছেড়েছি। অন্য সব কাগজপত্র তুলতে পারলেও গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্টস নম্বরপত্র না নিয়েই ক্যাম্পাস ছাড়তে হয়েছে। কবে নাগাদ প্রদান করা হবে সেটাও আমাদের নিশ্চিত করা হয়নি।”
অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী ফুয়াদ হাসান বলেন, “আমাদের শিক্ষাবর্ষের অনেকেই ইতোমধ্যে অনার্স-মাস্টার্স সম্পন্ন করে বিশ্ববিদ্যালয় ত্যাগ করেছেন। তবে দুঃখজনকভাবে বলতে হয়, এখনো অনেকেই নম্বরপত্র পাননি। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এ ক্ষেত্রে চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে।”
তিনি বলেন, “সফটওয়্যার সিস্টেমের অজুহাতে কাগজপত্র উত্তোলনে বারবার ভুল ও বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে। নিয়মমাফিক প্রয়োজনীয় নথি জমা দেওয়ার পরও নম্বরপত্র দেওয়া হচ্ছে না। দ্রুত এসব সমস্যার সমাধান করা জরুরি।”
বৈষম্যবিরোধী ইবির সমন্বয়ক এসএম সুইট বলেন, “কাগজপত্র উত্তোলনের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা আগের মতোই হয়রানির শিকার হচ্ছেন। নতুন বাংলাদেশে এমন আচরণ লজ্জাজনক। শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি নিরসনে এবং দ্রুত নম্বরপত্র প্রাপ্তিতে প্রশাসন কার্যকর পদক্ষেপ নেবে বলে আশা রাখছি।”
পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তর পরিচালক ওয়ালিউর রহমান বলেন, “সফটওয়্যারের সিস্টেমের মেয়াদ শেষ হওয়ায় এমন সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্টদের জানানো হয়েছে মূলত পূর্বের কোম্পানির সঙ্গে কাজের চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। নতুনভাবে কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করতে হবে। তারপর তারা কাজ শুরু করবে। কিন্তু এখনো চুক্তিপত্র হয়নি কিংবা কোম্পানিও ঠিক হয়নি বলে জানি। কবে নাগাদ সমাধান হতে পারে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলতে পারছি না।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেলের পরিচালক ড. শাহজাহান আলী বলেন, “বিষয়টি অবগত আছি। শুধু নম্বরপত্র নিয়েই সমস্যা হচ্ছে, বাকিগুলো ঠিকমতো আসছে। যে কোম্পানি সফটওয়্যার তৈরি করেছে, তারা সমাধান না করলে এটা আমাদের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। তবে বিভিন্নভাবে বিষয়টির সমাধানের চেষ্টা চলছে।”
তিনি বলেন, “নতুনভাবে কোম্পানির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হতে হবে। নতুন করে সফটওয়্যার ডেভেলপ ও ডিজাইন করতে হবে। এটা সময় সাপেক্ষ এবং এর সঙ্গে আর্থিক বিষয়াদিও জড়িত। বিষয়টির সমাধানে অফিসিয়ালি কাজ চলছে। আশা করছি, দ্রুতই সমাধান আসবে।”
ঢাকা/মেহেদী