বন্দরে ব্যবসায়ীর বাড়ি-ঘর ভাংচুর, লুটপাটের ঘটনায় বিক্ষোভ
Published: 23rd, May 2025 GMT
বন্দরে আওয়ামীলীগ আখ্যা দিয়ে ব্যবসায়ীর বাড়ি ঘর ভাংচুর ও লুটপাট করেছে শাহিদা ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী। ভুক্তভোগী রশিদ থানায় গিয়ে করতে পারেননি মামলা।
এ ঘটনায় ২৩মে শুক্রবার সকালে বন্দরের পূর্ব কল্যান্দী খালপাড় এলাকায় এলাকার শত শত নারী-পুরুষ জড়ো হয়ে হামলাকারী শাহিদা-শাহাদাৎ বাহিনীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রশাসনের প্রতি জোরদাবি জানিয়ে বিক্ষোভ করেছে।
এ সময় তারা শাহিদা-শাহাদাৎ বাহিনীর বিরুদ্ধে বিক্ষোভে ফেটে পরে। গণমাধ্যমকর্মীদের উপস্থিতিতে স্থানীয় বাসিন্দা মকবুল হোসেন বলেন, আব্দুর রশীদ একজন পাগল ফকির মানুষ। আমাদের জানা মতে সে একজন গ্লোব ব্যবসায়ী। এলাকায় কোনদিন তাকে কেউ কোন রাজনৈতিক মিটিং মিছিলে দেখেছে কি না আমার জানা নেই।
অপর বাসিন্দা মোঃ সেলিম মিয়া জানান, তার বাড়ি যারা ভাংচুর এবং লুটপাট করেছে তারাই আওয়ামীলীগের দোসর। আওয়ামীলীগ সরকারের শাসনামলে তারা স্বামী-স্ত্রী এলাকায় অনেক রাজত্ব করেছে এখন আবার ভোল পাল্টিয়ে তারা নিজেদেরকে বিএনপি সাজানোর চেষ্টা করে রশীদ মিয়ার পরিবারের উপর এইসব লুটতরাজ চালিয়েছে। জিয়াবর মিয়া বলেন,আব্দুর রশীদের কোন দল নেই।
ছোট থেকে তাকে কোন দলের পক্ষে কাজ করা দূরের কথা কোন মিটিং মিছিলেও যেতে দেখিনি কিংবা কোন পার্টির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে সখ্যতাও দেখিনি। এগুলো শাহিদা-শাহাদাৎ চক্রান্ত করে নিরীহ রশীদ মিয়াকে আওয়ামীলীগের সমর্থকের ট্যাগ দিয়ে তার বাড়ি-ঘরের মালামাল লুটপাট করেছে।
একই এলাকার বৃদ্ধা দেলোয়ারা বেগম বলেন,আব্দুর রশীদ মিয়াকে আমরা ৩০/৪০ বছর ধরে চিনি এবং জানি। তার বিরুদ্ধে কোনদিন কোন দলের অভিযোগ পাইনি। সে ব্যক্তিগতভাবে কোন দল করেন না। আমরা কোন দিন দেখিনি।
যারাই তার বিরুদ্ধে এসব কথা বলছে তারা রশীদ মিয়ার ক্ষতিসাধণের জন্য মিথ্যা ট্যাগ দিচ্ছে। বরং শাহিদা আর শাহাদাৎ তারা স্বামী স্ত্রীই বিতর্কিত। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া উচিত। জানা গেছে, শাহিদার সাথে রশিদের জমি জমা নিয়ে দীর্ঘদিন যাবত মামলা মোকাদ্দমা চলছিল।
৫ আগস্টের পরে রশিদ আওয়ামীলীগ করে বলে শাহিদা থানায় গিয়ে অপপ্রচার করেন এবং ফায়দা লুটতে থাকেন।
রশিদের দাবি তদন্ত না করে আমার মামলা নিচ্ছে না ওসি। এলাকাবাসী আরো জানান আমরা রশিদকে একজন ব্যবসায়ী হিসেবে চিনি কোথাও তার কোন ব্যানার ফেস্টুন সমাবেশ কোন কিছুই দেখিনি আট বছর মামলা চলমান থাকলেও আওয়ামীলীগের কোন ছিটেফোঁটাও ছিল না ব্যবসায়ী রশিদের গায়ে এলাকাবাসীর আবেদন অতি দ্রুত তদন্ত করে দোষীদের আইনের আওতায় এনে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ আওয় ম ল গ ব যবস য় ক ন দল ল টপ ট
এছাড়াও পড়ুন:
শিক্ষক নাদিরা ইয়াসমিনকে দেওয়া ‘হুমকি’র প্রতিকার চেয়ে বিজ্ঞপ্তি
নরসিংদী সরকারি কলেজের সহকারী অধ্যাপক নাদিরা ইয়াসমিনকে দেওয়া ‘হুমকি’র আইনগত প্রতিকার চেয়ে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছেন সাংবাদিক, রাজনৈতিক কর্মী, আইনজীবী ও বিভিন্ন অঙ্গনের ব্যক্তিরা।
শুক্রবার ১৪৭ জনের সই করা বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অধ্যাপক নাদিরা ইয়াসমিনকে উদ্দেশ্য করে বিভিন্ন মাধ্যমে আক্রমণ চালানো হচ্ছে। তাকে চাকরিচ্যুত করার দাবিতে বিবৃতি দিয়েছে তিনটি সংগঠন- তানযীমুল মাদারিসিল কাওমিয়া নরসিংদী এবং নরসিংদী জেলা খেলাফত মজলিস ও হেফাজতে ইসলাম। এ বিবৃতিগুলোতে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে নাদিরা ইয়াসমিনকে অপসারণের আল্টিমেটাম দিয়ে ‘দুঃখজনক পরিস্থিতির দায়’ কলেজ কর্তৃপক্ষকে নিতে হবে বলে হুমকি দেওয়া হয়েছে।
এতে আরও বলা হয়, বিভিন্ন ব্যক্তি ফেসবুকে নাদিরা ইয়াসমিনকে নিয়ে অপমানজনক, বিভ্রান্তিকর ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত পোস্ট দিচ্ছেন। মিথ্যা প্রচার এবং হুমকির মাধ্যমে তাকে মানসিক এবং সামাজিকভাবে হয়রানি করা হচ্ছে। যা একজন শিক্ষক ও নারী নাগরিকের জন্য শুধু অসম্মানজনকই নয়, সম্পূর্ণ বেআইনি।
তারা আরও বলেন, নাদিরা ইয়াসমিন দীর্ঘদিন ধরে নারী অধিকার, সমতা ও মানবিক মর্যাদার পক্ষে কাজ করে আসছেন। তার নেতৃত্বে গড়ে ওঠা ‘নারী অঙ্গন’ সংগঠনটি বহু নারী শিক্ষার্থীর আত্মপ্রত্যয় গঠনে ভূমিকা রেখেছে। যেখানে ধর্মীয়, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংবেদনশীলতা বিবেচনায় রেখে কার্যক্রম পরিচালিত হয়। নারীর উন্নয়ন এবং বিকাশকে ‘ইসলামবিরোধী’ হিসেবে উপস্থাপন করা প্রকৃতপক্ষে একটি অপপ্রচার, যা মুক্তচিন্তা, একাডেমিক স্বাধীনতা এবং সংবিধান স্বীকৃত নাগরিক অধিকারবিরোধী।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ধর্মীয় সংগঠনের নামে এ ধরনের চাপ সৃষ্টি, হুমকি এবং সামাজিক ঘৃণার উসকানি আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও শিক্ষাব্যবস্থার জন্য এক অশুভ দৃষ্টান্ত স্থাপন করছে। একজন শিক্ষকের জীবন ও কাজের পরিবেশ ধ্বংস করার এ প্রচেষ্টা শুধু একটি ব্যক্তিকে নয়, পুরো শিক্ষাব্যবস্থাকে দুর্বল করার উদ্দেশ্যে করা হয়েছে। আমরা শিক্ষকের একাডেমিক স্বাধীনতা ও রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে মত প্রকাশের স্বাধীনতা, সংগঠন করার অধিকারের ওপর এই আক্রমণের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।
এতে বলা হয়, বারবার নারীর প্রতি অপমান ও হয়রানির কারণ বর্তমান সরকারের নীরবতা। ধর্মের নামে যখন কোনো মহল এমন দমন ও নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে রাজনৈতিক এবং সামাজিক সুবিধা নিতে চায়, তখন পরিস্থিতির এ রকম অবনতি ঘটে। এমন পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রকে কঠোর ভূমিকা নেওয়া উচিত।
বিজ্ঞপ্তিতে কয়েকটি দাবি জানানো হয়েছে। সেগুলো হলো-
১. অধ্যাপক নাদিরা ইয়াসমিনের নিরাপত্তা ও মর্যাদা নিশ্চিত করতে অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।
২. যেসব ব্যক্তি ফেসবুক ও মেসেঞ্জারে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেছে ও হুমকি দিয়েছে, তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে হবে।
৩. প্রশাসনকে মিথ্যা প্রচার ও অনলাইন হয়রানি বন্ধে দৃঢ় অবস্থান নিতে হবে।
৪. কলেজ কর্তৃপক্ষকে তার একাডেমিক স্বাধীনতা ও মানবাধিকার রক্ষায় যথাযথ দায়িত্ব পালন করতে হবে।