জাতীয় ঐক্যের আহ্বান অবসরপ্রাপ্ত বিসিএস অফিসার্স ফোরামের
Published: 23rd, May 2025 GMT
দেশের বিদ্যমান পরিস্থিতিতে জাতীয় ঐক্যের আহ্বান জানিয়েছে অবসরপ্রাপ্ত বিসিএস অফিসার্স ফোরাম।
শুক্রবার সংগঠনটির সভাপতি মোহাম্মদ আবদুল কাইয়ুম, সহসভাপতি ড. খন্দকার রাশেদুল হক এবং মহাসচিব ড. মো. শরিফুল আলমের সই করা সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ আহ্বান জানানো হয়।
এতে বলা হয়, ছাত্র-জনতার সম্মিলিত সংগ্রাম ও ত্যাগের মধ্য দিয়ে ২০২৪ সালের সফল ‘জুলাই বিপ্লব’ সংঘটিত হওয়ার পর থেকে দেশের বিবদমান রাজনৈতিক শক্তিগুলোর মধ্যে ঐক্য সংহত না হয়ে বরং নানা কারণে দুর্বল হয়েছে, যার ফলে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব আজ ঝুঁকির মুখে। আরব বসন্তের অভিজ্ঞতা আমাদের দেখিয়েছে, বিপ্লবোত্তর সময়ে জাতীয় ঐক্য বিনষ্ট হলে গণতন্ত্রের পরিবর্তে অগণতান্ত্রিক বা একনায়কতান্ত্রিক শাসন প্রতিষ্ঠা পেতে পারে।
বিজ্ঞপ্তিতে তারা সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে দেশের সব রাজনৈতিক শক্তি এবং সাধারণ জনগণের প্রতি ১০টি আহ্বান জানান। সেগুলো হলো-
১.
২. বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে যে কোনো আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক আধিপত্যবাদী আগ্রাসনের প্রতিরোধে ছাত্র-জনতাকে সুসংগঠিত ও দৃঢ় প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। বেসামরিক ও সামরিক প্রশাসনের সদস্যদের জাতীয় স্থিতিশীলতা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে হবে।
৩. দ্রুততম সময়ে জনতার ঐক্য সুসংহত করার ভিত্তি হিসেবে ‘জুলাই সনদ ২০২৪’ ঘোষণা করতে হবে। এ লক্ষ্যে সব রাজনৈতিক দলকে কার্যকর ও গঠনমূলক ভূমিকা পালন করতে হবে।
৪. বেসামরিক প্রশাসন ও সামরিক বাহিনীর সব সদস্যকে জাতীয় স্বার্থকে সর্বোচ্চ স্থান দিয়ে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। আধিপত্যবাদী বা স্বার্থান্বেষী মহলের উসকানিতে কোনোভাবেই প্রভাবিত হওয়া যাবে না। প্রশাসনিক রীতি ও শৃঙ্খলাকে সম্মানের সঙ্গে মেনে চলতে হবে।
৫. আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় বাংলাদেশ পুলিশ ও অন্যান্য বাহিনী এবং বেসামরিক প্রশাসনকে আরও দৃঢ়, নিরপেক্ষ ও পেশাদার ভূমিকা পালন করতে হবে।
৬. প্রশাসনে বিগত দুঃশাসন-সমর্থিত, পদলেহী ও হঠকারিতায় লিপ্ত কর্মকর্তাদের দ্রুত শৃঙ্খলাবদ্ধ করতে হবে এবং দেশপ্রেমিক ও সৎ কর্মকর্তাদের উচ্চ পদে নিয়োগ দিতে হবে।
৭. অন্তর্বর্তী সরকারকে মৌলিক সংস্কার দ্রুত সম্পন্ন করে একটি সর্বজনস্বীকৃত ও গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের উদ্যোগ নিতে হবে এবং এ লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানসমূহে অন্তত ন্যূনতম সংস্কার নিশ্চিত করতে হবে।
৮. আগামীদিনের রাজনৈতিক প্রক্রিয়াকে সংস্কারমুখী করতে দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে দ্রুত রাজনৈতিক সংলাপ শুরু করতে হবে।
৯. অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যদের রাজনৈতিক বিভাজন সৃষ্টি করে এমন কার্যক্রম থেকে সচেতনভাবে বিরত থাকতে হবে।
১০. আধিপত্যবাদী শক্তিগুলো কখনোই একটি গণতান্ত্রিক ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ চায় না। তাই জাতীয় ঐক্য ও সংহতি বজায় রেখে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সব ধরনের সংগ্রামে প্রস্তুত থাকতে হবে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত
ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের দেশ হাইতিতে গত সপ্তাহে একাধিক গ্যাং হামলায় ৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার প্রতিরক্ষা নেটওয়ার্কের (আরএনডিডিএইচ) তথ্যানুসারে, সংকটে জর্জরিত দেশটিতে সর্বশেষ ভয়াবহ গণহত্যার ঘটনা এটি।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্যারন’স।
গতকাল সোমবার এএফপিকে পাঠানো এক প্রতিবেদনে আরএনডিডিএইচ জানায়, গত ১১ ও ১২ সেপ্টেম্বর রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের উত্তর এলাকায় এই হামলাগুলো ঘটে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০২৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিহত হওয়া বহু মানুষের লাশ এখনও পাওয়া যায়নি। লাশগুলো এখনও ঝোপের মধ্যে পড়ে আছে এবং কুকুর লাশগুলো খেয়ে ফেলেছে।’
পশ্চিম গোলার্ধের সবচেয়ে দরিদ্র দেশ হাইতি। দেশটির একটি অংশ ও রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের বেশিরভাগ এলাকা সশস্ত্র গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণে থাকায় সহিংসতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
২০২৪ সালের শুরুর দিকে গ্যাংগুলোর একটি জোট লাগাতার হামলা শুরু করলে পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়। যার ফলে প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরি পদত্যাগ করেন এবং প্রেসিডেন্টের অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।
হাইতির পুলিশকে সমর্থন করার জন্য কেনিয়ার নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনী মোতায়েন করার পরও সহিংসতা দমন করা সম্ভব হয়নি।
আরএনডিডিএইচ জানিয়েছে, ভিভ আনসানম গ্যাং জোট, যারা ২০২৪ সালের মার্চ মাস থেকে ক্যাবারেট শহরের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তারা গত সপ্তাহে নিকটবর্তী ল্যাবোডেরি শহরে বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে অত্যন্ত নিষ্ঠুর গণহত্যা চালিয়েছে। শহরটি রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্স থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত।
সংস্থাটি আরো জানায়, ‘তারা ৫০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে এবং বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।’
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘বেঁচে থাকা কয়েকজন পার্শ্ববর্তী এলাকায় পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। অন্যান্যরা আক্রমণকারীদের হাত থেকে বাঁচতে নৌকায় করে সমুদ্রে পালিয়ে যায়।’
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গত মাসে সতর্ক করে বলেছেন, হাইতিতে ‘রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব ভেঙে পড়ছে।’
তিনি নিরাপত্তা পরিষদকে সতর্ক করে বলেন, হাইতির রাজধানীর বাইরেও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ছে। সেখানকার ৯০ শতাংশ অঞ্চলের ওপর গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।
রবিবার, তিনি ক্যাবারে কমিউনে হামলার নিন্দা জানিয়েছেন এবং দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় ‘সরবরাহ, কর্মী ও তহবিল দিয়ে বহুজাতিক নিরাপত্তা সহায়তা মিশনকে শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করার’ আহ্বান জানিয়েছেন।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের তথ্যানুসারে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে হাইতিতে কমপক্ষে ৩ হাজার ১৪১ জন নিহত হয়েছে।
ঢাকা/ফিরোজ