দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলায় ধারালো ছুরির আঘাতে শাশুড়িকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে মেয়ে জামাইয়ের বিরুদ্ধে। তাঁকে বাঁচাতে এগিয়ে এলে স্ত্রী ও শ্যালককেও আঘাত করে আহত করেছেন তিনি। এ ঘটনায় মেয়েজামাই সামিয়েল মার্ডিকে (৩৮) আটক করেছে পুলিশ।
শুক্রবার রাতে উপজেলার ভোগনগর ইউনিয়নের চাউলিয়া রামপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। হত্যাকাণ্ডের শিকার বাহা বেসরা (৫৫) একই গ্রামের মৃত বুদরা হাসদার স্ত্রী।
আহত দুজন হলেন– সামিয়েল মার্ডির স্ত্রী মিনি হাসদা (৩৬) এবং একই এলাকার সুখন কিস্কুর ছেলে বিকাশ কিস্কু (৩৫)। তারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আটক সামিয়েল মার্ডি একই এলাকার দক্ষিণ চাউলিয়া গ্রামের শনিরাম মার্ডির ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, দীর্ঘদিন ধরে সামিয়েল মার্ডির সঙ্গে স্ত্রী মিনি হাসদার পারিবারিক কলহ চলে আসছিল। এর জেরে ১৫ দিন আগে মিনি হাসদা স্বামীর বাড়ি থেকে বাবার বাড়ি চাউলিয়া রামপাড়া গ্রামে চলে আসেন।
শুক্রবার গভীর রাতে সামিয়েল মার্ডি শ্বশুরবাড়ি গেলে ফের কলহ দেখা দেয়। এক পর্যায়ে শাশুড়ি বাহা বেসরাকে ধারালো ছুরি দিয়ে আঘাত করেন। এ সময় স্ত্রী মিনি হাসদা এবং শ্যালক বিকাশ কিস্কু এগিয়ে এলে তাদেরও আঘাত করা হয়।
স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এলে ঘটনাস্থলে বাহা বেসরাকে মৃত অবস্থায় পান। আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন তারা।
বীরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল গফুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ঘটনার পর পুলিশ রাতেই অভিযান চালিয়ে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত রক্তমাখা ছুরিসহ সামিয়েল মার্ডিকে আটক করেছে। নিহত নারীর মরদেহ উদ্ধার করে সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
ক্যারিবীয় জাহাজে আবারো যুক্তরাষ্ট্রের হামলা, নিহত ৩
ক্যারিবীয় সাগরে একটি জাহাজে আবারো হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী। এতে জাহাজটিতে থাকা অন্তত তিনজন নিহত হয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ।
রবিবার (২ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আল জাজিরা।
আরো পড়ুন:
নাইজেরিয়ায় হামলার হুমকি ট্রাম্পের
কানাডার সঙ্গে আলোচনায় না বসার ঘোষণা ট্রাম্পের
শনিবার গভীর রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে হেগসেথ বলেন, “মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে এই অভিযান পরিচালিত হয়েছে। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ওই জাহাজটিকে অবৈধ মাদক চোরাচালানে জড়িত হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছিল।”
তিনি বলেন, “আন্তর্জাতিক জলসীমায় পরিচালিত এই হামলার সময় জাহাজটিতে ‘তিনজন পুরুষ মাদক-সন্ত্রাসী’ ছিলেন। তিনজনই নিহত হয়েছেন।”
শনিবারের এই হামলার আগে গত বুধবার ক্যারিবীয় সাগরে আরো একটি জাহাজে মার্কিন বাহিনীর হামলায় চারজন নিহত হন। গত সোমবার মার্কিন হামলায় নিহত হন ১৪ জন।
মাদক পাচারের অভিযোগ তুলে সেপ্টেম্বর মাস থেকে এই অঞ্চলে সামরিক অভিযান শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এই অভিযানে এখন পর্যন্ত ভেনেজুয়েলা ও কলম্বিয়ার নাগরিকসহ ৬২ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। এছাড়া ১৪টি নৌযান এবং একটি সাবমেরিন ধ্বংস হয়েছে।
তবে নৌযানগুলো মাদক পাচারের সঙ্গে জড়িত থাকার কোনো প্রমাণ যুক্তরাষ্ট্র এখনও দেয়নি। ফলে হামলার বৈধতা নিয়ে ইতিমধ্যে আন্তর্জাতিক মহলে প্রশ্ন উঠেছে। কিছু আইনজীবী যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছেন। কলম্বিয়া এবং ভেনেজুয়েলার মতো প্রতিবেশী দেশগুলো এই হামলার নিন্দা জানিয়েছে।
ভেনেজুয়েলা বলছে, যুক্তরাষ্ট্র দেশটির বিরুদ্ধে ‘অঘোষিত যুদ্ধ’ শুরু করেছে। ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, দেশটি মার্কিন সামরিক হস্তক্ষেপের যেকোনো প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে লড়াই করবে।
যুক্তরাষ্ট্র ইতিমধ্যে ক্যারিবীয় অঞ্চলে সাতটি যুদ্ধজাহাজ, একটি সাবমেরিন, ড্রোন এবং যুদ্ধবিমান মোতায়েন করেছে এবং মেক্সিকো উপসাগরে মোতায়েন করেছে আরেকটি যুদ্ধজাহাজ।
ট্রাম্প প্রশাসন মাদক চোরাচালানকারী নৌযানের ওপর তাদের হামলাকে ‘আত্মরক্ষামূলক পদক্ষেপ’ হিসেবে অভিহিত করেছে।
তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ধরনের নৌযান সাধারণত আটক করা হয় ও ক্রুদের গ্রেপ্তার করা হয়। কিন্তু সাম্প্রতিক মার্কিন অভিযানগুলোতে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পুরো নৌকা ধ্বংস করা হচ্ছে। জাতিসংঘ-নিযুক্ত মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরা এই অভিযানগুলোকে ‘বিচারবহির্ভূত মৃত্যুদণ্ড’ হিসাবে বর্ণনা করেছেন।
ঢাকা/ফিরোজ