পাবনা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কার্যালয়ে দুইপক্ষের কর্মসূচি
Published: 24th, May 2025 GMT
অভিন্ন চাকরিবিধি বাস্তবায়ন, মামলা প্রত্যাহারসহ সাত দফা এবং বাংলাদেশ আরইবি চেয়ারম্যানের পদত্যাগ দাবিতে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির চলমান আন্দোলনের সাথে সংহতি প্রকাশ করে পাবনা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ (চাটমোহর) এর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন।
এদিকে, মার্চ টু ঢাকা কর্মসূচির প্রতিবাদে আরইবির সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে সমিতির জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) এর নেতৃত্বে মানববন্ধন হয়েছে।
শনিবার (২৪ মে) পাবনা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর সদর দপ্তর চাটমোহরে পৃথক পৃথক এই কর্মসূচি পালন করা হয়।
এদিন সকাল দশটায় পল্লী বিদ্যুৎ কর্মচারীদের মার্চ টু ঢাকা কর্মসূচির প্রতি সংহতি প্রকাশ করে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন পাবনা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর দুই শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী।
এ সময় তারা অভিন্ন চাকরিবিধি বাস্তবায়ন, মামলা প্রত্যাহার, পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের শোষণ, বৈষম্য, নির্যাতন, নিপীড়নের প্রতিবাদ জানান। তারা নিরবিছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ ও উন্নত গ্রাহকসেবা নিশ্চিতসহ সাত দফা দাবি বাস্তবায়নের কথা বলেন। সেই সঙ্গে আন্দোলনকারীরা আরইবি চেয়ারম্যানের পদত্যাগ দাবি করেন।
কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অভিযোগ করেন, তাদের কর্মসূচি শুরুতেই সমিতির জিএম আব্দুল্লাহ আল আমিন চৌধুরী তাদের বাধা দেন এবং কর্মসূচি না করার জন্য নির্দেশ দেন। একইসাথে তিনি আরইবির কর্মসূচির সাথে যোগ দেওয়ার নির্দেশ দেন।
আন্দোলনকারীরা বলেন, “পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সংস্কার চাওয়ায় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। চরম বৈষম্যের শিকার তারা। মার্চ টু ঢাকার প্রতি সংহতি প্রকাশ করে চাটমোহরে কর্মসূচি করতে গেলে জিএম তাদের বাধা প্রদান করেন।”
অন্যদিকে আরইবির নির্দেশনা অনুযায়ী পাবনা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর জেনারেল ম্যানেজার আব্দুল্লাহ আল আমিন চৌধুরী কতিপয় কর্মকর্তা-কর্মচারীকে নিয়ে মার্চ টু ঢাকা কর্মসূচির বিরোধিতা করে সমিতির চাটমোহর’ সদর দপ্তরের সামনে মানববন্ধন করেন। তার সাথে সমিতির ১৫-২০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী উপস্থিত ছিলেন।
সাত দফা দাবি আদায়ের আন্দোলনরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কর্মসূচিতে বাধা প্রদান বিষয়ে পাবনা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর জিএম আব্দুল্লাহ আল আমিন চৌধুরী বলেন, “তাদের কোন কর্মসূচিতে বাধা দেওয়া হয়নি। তারা তো কর্মসূচি পালন নয়, ব্যানার টাঙ্গাতে এসেছিল। পরে আলোচনা করে শান্তিপূর্ণ সমাধান হয়েছে। আমাদের সমিতির কোন কর্মকর্তা-কর্মচারী ঢাকাতে যায়নি,” বলে দাবি করেন তিনি।
ঢাকা/শাহীন/সাইফ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
শিবচরে তরুণকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা, বিচারের দাবিতে মানববন্ধন
মাদারীপুরের শিবচরে জামিনে থাকা আসামি রাকিব মাদবরকে (২৫) প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে। এতে ২২ জনকে এজাহারভুক্ত ও অজ্ঞাত আরও ৭ জনকে আসামি করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকালে নিহত ব্যক্তির চাচি পারুল আক্তার বাদী হয়ে শিবচর থানায় মামলাটি করেন।
এর আগে গত রোববার রাত আটটার দিকে শিবচর পৌর বাজারের প্রধান সড়কে একটি ব্যাংকের সামনে রাকিব মাদবরকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। রাকিব শিবচর উপজেলার চরশ্যামাইল এলাকার নাসির মাদবরের ছেলে। তিনি সরকারি বরহামগঞ্জ কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের স্নাতক শেষ বর্ষের ছাত্র ছিলেন।
দুই দিন পার হয়ে গেলেও এই ঘটনায় কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। এর প্রতিবাদে আজ দুপুরে শিবচর পৌর বাজারের সদর রোডে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থী ও স্থানীয় লোকজন। এ সময় বক্তারা বলেন, প্রকাশ্যে শত শত মানুষের সামনে হত্যাকাণ্ড কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। একটা সভ্য স্বাধীন দেশে এমন নৃশংস হত্যাকাণ্ড হতে পারে না। হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচার না করা হলে ভবিষ্যতে কঠোর আন্দোলনের ডাক দেবেন তাঁরা।
মামলার বাদী নিহত ব্যক্তির চাচি পারুল আক্তার বলেন, ‘রাকিবরে এতগুলো মানুষের সামনে কুপাইয়া মাইরা ফালাইলো। কেউ বাঁচাতে এগিয়ে আসলো না। যারা খুন করছে, তারা রাকিবের পূর্বশত্রু। আবুল কালাম সরদারের নির্দেশে তার লোকজন এই খুন করেছে। পুলিশ এ ঘটনায় কোনো আসামি এখন অবধি গ্রেপ্তার করে নাই। আসামিগো গ্রেপ্তার চাই, ফাঁসি চাই।’
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শিবচর উপজেলার শিরুয়াইল ইউনিয়নের চরশ্যামাইল গ্রামের আবুল কালাম সরদারের লোকজনের সঙ্গে নিহত রাকিব মাদবরের লোকজনের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে গত ৬ মে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে প্রতিপক্ষের হামলায় আবুল কালাম সরদারের ছেলে ইবনে সামাদ নিহত হন। ইবনে সামাদ হত্যা মামলার আসামি রাকিব সম্প্রতি জামিন নিয়ে জেল থেকে বের হয়ে এলাকায় আসেন। রোববার রাত আটটার দিকে শিবচর পৌর বাজারের একটি সড়কে দাঁড়িয়ে ছিলেন রাকিব। এ সময় ৪ থেকে ৫ জনের একটি দল ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাঁর ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। হাসপাতালে নেওয়ার পথে রাকিবের মৃত্যু হয়।
শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রকিবুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, প্রকাশ্যে হত্যার ঘটনায় ২২ জনকে আসামি করে মামলা হয়েছে। নিহত ব্যক্তির স্বজন ও স্থানীয় লোকজন মানববন্ধন করে এ ঘটনার প্রতিবাদ ও বিচার দাবি করেছেন। আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য সব ধরনের চেষ্টা অব্যাহত আছে।
আরও পড়ুনশিবচরে হত্যা মামলায় জামিনে থাকা আসামিকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫