লেবুর খোসার বাইরের হলুদ স্তর ফেলে না দিয়ে খাওয়া উচিত। কারণ এটিকে পুষ্টিকর সোনার খনি বিবেচনা করা হয়। লেবুর খোসায় থাকে তেল, ভিটামিন এবং লিমোনিন এবং ফ্ল্যাভোনয়েডের মতো শক্তিশালী উদ্ভিদ যৌগ। এটি শরীরকে ডিটক্সিফাইং করতে সহায়তা দেয়। লেবুর খোসায় হালকা টক স্বাদ রয়েছে। লেবুর খোসায় লেবুর রসের চেয়েও পুষ্টির ঘনত্ব বেশি রয়েছে।

লেবুর খোসা যেভাবে স্বাস্থ্য ভালো রাখে

শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সুরক্ষা: লেবুর খোসায় থাকা ফ্ল্যাভোনয়েড এবং ভিটামিন সি শরীরকে ভেতর থেকে শক্তিশালী করে। এসব উপাদান কোষের ক্ষতি করে এমন মুক্ত র‍্যাডিকেলের বিরুদ্ধে লড়াই করে। এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলো শরীরে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমায়, ক্যান্সার, হৃদরোগ এবং ডায়াবেটিসের মতো দীর্ঘস্থায়ী রোগেরও ঝুঁকি কমায়।

আরো পড়ুন:

‘কেউ আমাকে পছন্দ করে না’ এমন কেন মনে হয়

ঘুম থেকে উঠেই স্কোয়াট করছেন, এতে শরীরে যা ঘটছে

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করে: লেবুর খোসায় থাকা উচ্চমাত্রার ভিটামিন সি শ্বেত রক্তকণিকার উৎপাদন এবং কার্যকলাপকে বাড়িয়ে তোলে। ফলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। এটি কোলাজেন উৎপাদনও বাড়ায়, যা ত্বক ভালো রাখে। যেকোনো সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারে লেবুর খোসায় থাকা উপাদান। 

হৃদরোগের উন্নতি করে: লেবুর খোসায় হেস্পেরিডিন এবং ডায়োসমিনের মতো যৌগ থাকে। যা রক্তচাপ কমাতে এবং রক্তনালীর কার্যকারিতা উন্নত করতে পারে। লেবুর খোসা থাকা পটাশিয়াম উপাদান রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণেও সাহায্য করে। নিয়মিত লেবুর খোসা খেলে স্ট্রোক এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমে।

লিভারের ডিটক্সিফিকেশনে সহায়তা করে: লেবুর খোসায় থাকা তেল ‘লিমোনিন’ লিভারের এনজাইমগুলোকে উদ্দীপিত করে যা শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করে দিতে সাহায্য করে। এটি হজমে সহায়তা করে এবং লিভারের প্রাকৃতিক ডিটক্সিফিকেশন প্রক্রিয়াগুলোকে উন্নত করে।

ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখে: লেবুর খোসার ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট কোলাজেন সংশ্লেষণে সহায়তা করে, বলিরেখা কমায়, ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা উন্নত করে এবং অতিবেগুনী রশ্মি এবং দূষণ থেকে ত্বককে রক্ষা করে। লেবুর থোসা খেয়ে ত্বকের স্বাস্থ্য ভেতর থেকে উন্নত করে তুলতে পারেন।

সূত্র: এনডিটিভি

ঢাকা/লিপি

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর যত ন

এছাড়াও পড়ুন:

ফেনীতে বন্যা মোকাবিলায় ব্যর্থতায় বিভিন্ন সংগঠনের ক্ষোভ

ফেনী ও পার্শ্ববর্তী জেলাগুলোতে ২৪-এর স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার এক বছর না পেরোতেই ফের বন্যা ও শহরে জলাবদ্ধতায় ক্ষোভ ও উদ্বেগ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে জেলার কয়েকটি নাগরিক ও সামাজিক সংগঠন।

যৌথ বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন- নাগরিক সংগঠন ফেনী কমিউনিটির মুখপাত্র বুরহান উদ্দিন ফয়সল, ইউনিভার্সিটি এক্স স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন অব ফেনী-উসাফের সভাপতি অধ্যাপক এবিএম নুরুল আবসার ও সেক্রেটারি ব্যারিস্টার নিজাম উদ্দিন রাসেল, চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এক্স স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন অব ফেনীর পক্ষে অধ্যাপক মোশাররফ হোসাইন, ফেনী সদর অ্যাসোসিয়েশন ঢাকার সভাপতি অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন, সেক্রেটারি নাসির উদ্দিন রুমেল, জগন্নাথ ইউনিভার্সিটি এক্স স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন অব ফেনীর সাধারণ সম্পাদক শরিফুর রহমান আদিল, ফেনী জেলা ছাত্রকল্যাণ পরিষদ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপদেষ্টা
এহসানুল মাহবুব জোবায়ের ও সভাপতি শরিফুল ইসলাম শ্রাবণ।

বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, “আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি যে, গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিপাতে আমাদের প্রিয় ফেনী জেলা শহর কার্যত পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এ ধরনের বৃষ্টি মৌসুমে স্বাভাবিক বিষয় হলেও, নগর ব্যবস্থাপনার অদক্ষতা ও ড্রেনেজ ব্যবস্থার চরম বেহাল দশা শহরবাসীকে চরম দুর্ভোগের মধ্যে ফেলেছে।”

আরো পড়ুন:

ফেনীতে প্রতিমা বিসর্জনে শেষ হলো দুর্গাপূজা 

ছোট ফেনী নদীর তীব্র ভাঙন, আতঙ্কে এলাকাবাসী 

তারা আরো উল্লেখ করেন, “পথঘাট, বাসাবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ডুবে যাওয়ার কারণে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। শিশু, বৃদ্ধ ও রোগীদের চলাফেরা করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। শতশত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল ও অফিস কার্যত অচল অবস্থায় রয়েছে। আমরা মনে করি, এই পরিস্থিতি কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ নয়, বরং বছরের পর বছর অপরিকল্পিত ড্রেনেজ, সঠিক ব্যবস্থাপনার অভাব এবং দায়িত্বশীল সংস্থাগুলোর অবহেলার ফল।”

নেতৃবৃন্দ অভিযোগ করেন, এক বছর আগে শতাব্দীর ভয়াবহ বন্যায় আশেপাশের অন্তত ১১ জেলার মানুষের হাজার কোটি টাকার সম্পদহানী হলেও পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় অজানা কারণে অবহেলিত এই অঞ্চলের কল্যাণে দৃশ্যমান কোন পদক্ষেপ নেয়নি। অজানা কারণে বিগত প্রায় দেড়যুগ ধরে বঞ্চনার শিকার ফেনীবাসীকে বন্যা থেকে স্থায়ী সুরক্ষা দিতে পানি সম্পদ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়কে বারবার বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের পক্ষ থেকে তাগাদা দেয়া হলেও তারা কর্নপাত করেনি। যার ফলে এবারো ভারত থেকে আসা পানিতে পরশুরাম ফুলগাজীর মানুষ চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।

নেতৃবৃন্দ মনে করেন, বিএসএফ কতৃক বল্লামুখা বাঁধ কেটে দেয়ার এক বছর পরও বাঁধটি পুননির্মাণ করতে পারেনি পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়। ফলে বর্ষার এই সময়ে ভারতীয় পানিতে ডুবেছে সীমান্তবর্তী বাংলাদেশিরা। পানি সম্পদ উপদেষ্টাও এর দায় এড়াতে পারেন না।

এই পরিস্থিতিতে সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে ফেনী জেলা প্রশাসন, পৌর কর্তৃপক্ষ এবং সংশ্লিষ্ট সকল দায়িত্বশীল প্রতিষ্ঠানের প্রতি সাত দফা দাবি জানানো হয়েছে:  

১. অবিলম্বে বল্লামুখা বাঁধ পুননির্মাণ করে স্থায়ী বন্যা প্রতিরোধ নিশ্চিত করতে হবে।

২. মুছাপুর ক্লোজার পুনর্নির্মাণে অবিলম্বে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।

৩. বাঁধ ও পানি নিষ্কাশন কার্যক্রমের দুর্নীতি তদন্ত করে কার্যকর ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।

৪. দ্রুততম সময়ের মধ্যে শহরের পানি নিষ্কাশনের কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

৫. ড্রেনেজ সিস্টেম সংস্কার ও মেইনটেন্যান্সকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।

৬. নগর উন্নয়নের নামে যত্রতত্র নির্মাণকাজ ও বর্জ্য ফেলা বন্ধ করতে হবে।

৭. জনসচেতনতা সৃষ্টির পাশাপাশি প্রশাসনিক তদারকি জোরদার করতে হবে।

নেতারা ফেনীর সকল নাগরিককে নিয়ম মেনে চলুন এবং পরিচ্ছন্নতার দায়িত্ব নেওয়ার পাশাপাশি এই সংকটময় সময়ে প্রতিবেশীদের সহযোগিতায় এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। একইসঙ্গে, তারা প্রশাসনকে সতর্ক করে বলেন, সময়ের কাজ সময়ে না করলে এমন জনদুর্ভোগের দায় কেউ এড়াতে পারে না। জনমতকে উপেক্ষা করে সমস্যার সমাধান হবে না।

বিবৃতিতে তারা ফেনীর মানুষের পাশে অতীতের মতো ভবিষ্যতেও সর্বশক্তি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।

ঢাকা/হাসান/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ