ফেনী ও পার্শ্ববর্তী জেলাগুলোতে ২৪-এর স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার এক বছর না পেরোতেই ফের বন্যা ও শহরে জলাবদ্ধতায় ক্ষোভ ও উদ্বেগ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে জেলার কয়েকটি নাগরিক ও সামাজিক সংগঠন।

যৌথ বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন- নাগরিক সংগঠন ফেনী কমিউনিটির মুখপাত্র বুরহান উদ্দিন ফয়সল, ইউনিভার্সিটি এক্স স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন অব ফেনী-উসাফের সভাপতি অধ্যাপক এবিএম নুরুল আবসার ও সেক্রেটারি ব্যারিস্টার নিজাম উদ্দিন রাসেল, চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এক্স স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন অব ফেনীর পক্ষে অধ্যাপক মোশাররফ হোসাইন, ফেনী সদর অ্যাসোসিয়েশন ঢাকার সভাপতি অধ্যাপক ড.

মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন, সেক্রেটারি নাসির উদ্দিন রুমেল, জগন্নাথ ইউনিভার্সিটি এক্স স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন অব ফেনীর সাধারণ সম্পাদক শরিফুর রহমান আদিল, ফেনী জেলা ছাত্রকল্যাণ পরিষদ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপদেষ্টা
এহসানুল মাহবুব জোবায়ের ও সভাপতি শরিফুল ইসলাম শ্রাবণ।

বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, “আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি যে, গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিপাতে আমাদের প্রিয় ফেনী জেলা শহর কার্যত পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এ ধরনের বৃষ্টি মৌসুমে স্বাভাবিক বিষয় হলেও, নগর ব্যবস্থাপনার অদক্ষতা ও ড্রেনেজ ব্যবস্থার চরম বেহাল দশা শহরবাসীকে চরম দুর্ভোগের মধ্যে ফেলেছে।”

আরো পড়ুন:

ফেনীতে প্রতিমা বিসর্জনে শেষ হলো দুর্গাপূজা 

ছোট ফেনী নদীর তীব্র ভাঙন, আতঙ্কে এলাকাবাসী 

তারা আরো উল্লেখ করেন, “পথঘাট, বাসাবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ডুবে যাওয়ার কারণে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। শিশু, বৃদ্ধ ও রোগীদের চলাফেরা করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। শতশত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল ও অফিস কার্যত অচল অবস্থায় রয়েছে। আমরা মনে করি, এই পরিস্থিতি কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ নয়, বরং বছরের পর বছর অপরিকল্পিত ড্রেনেজ, সঠিক ব্যবস্থাপনার অভাব এবং দায়িত্বশীল সংস্থাগুলোর অবহেলার ফল।”

নেতৃবৃন্দ অভিযোগ করেন, এক বছর আগে শতাব্দীর ভয়াবহ বন্যায় আশেপাশের অন্তত ১১ জেলার মানুষের হাজার কোটি টাকার সম্পদহানী হলেও পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় অজানা কারণে অবহেলিত এই অঞ্চলের কল্যাণে দৃশ্যমান কোন পদক্ষেপ নেয়নি। অজানা কারণে বিগত প্রায় দেড়যুগ ধরে বঞ্চনার শিকার ফেনীবাসীকে বন্যা থেকে স্থায়ী সুরক্ষা দিতে পানি সম্পদ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়কে বারবার বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের পক্ষ থেকে তাগাদা দেয়া হলেও তারা কর্নপাত করেনি। যার ফলে এবারো ভারত থেকে আসা পানিতে পরশুরাম ফুলগাজীর মানুষ চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।

নেতৃবৃন্দ মনে করেন, বিএসএফ কতৃক বল্লামুখা বাঁধ কেটে দেয়ার এক বছর পরও বাঁধটি পুননির্মাণ করতে পারেনি পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়। ফলে বর্ষার এই সময়ে ভারতীয় পানিতে ডুবেছে সীমান্তবর্তী বাংলাদেশিরা। পানি সম্পদ উপদেষ্টাও এর দায় এড়াতে পারেন না।

এই পরিস্থিতিতে সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে ফেনী জেলা প্রশাসন, পৌর কর্তৃপক্ষ এবং সংশ্লিষ্ট সকল দায়িত্বশীল প্রতিষ্ঠানের প্রতি সাত দফা দাবি জানানো হয়েছে:  

১. অবিলম্বে বল্লামুখা বাঁধ পুননির্মাণ করে স্থায়ী বন্যা প্রতিরোধ নিশ্চিত করতে হবে।

২. মুছাপুর ক্লোজার পুনর্নির্মাণে অবিলম্বে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।

৩. বাঁধ ও পানি নিষ্কাশন কার্যক্রমের দুর্নীতি তদন্ত করে কার্যকর ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।

৪. দ্রুততম সময়ের মধ্যে শহরের পানি নিষ্কাশনের কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

৫. ড্রেনেজ সিস্টেম সংস্কার ও মেইনটেন্যান্সকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।

৬. নগর উন্নয়নের নামে যত্রতত্র নির্মাণকাজ ও বর্জ্য ফেলা বন্ধ করতে হবে।

৭. জনসচেতনতা সৃষ্টির পাশাপাশি প্রশাসনিক তদারকি জোরদার করতে হবে।

নেতারা ফেনীর সকল নাগরিককে নিয়ম মেনে চলুন এবং পরিচ্ছন্নতার দায়িত্ব নেওয়ার পাশাপাশি এই সংকটময় সময়ে প্রতিবেশীদের সহযোগিতায় এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। একইসঙ্গে, তারা প্রশাসনকে সতর্ক করে বলেন, সময়ের কাজ সময়ে না করলে এমন জনদুর্ভোগের দায় কেউ এড়াতে পারে না। জনমতকে উপেক্ষা করে সমস্যার সমাধান হবে না।

বিবৃতিতে তারা ফেনীর মানুষের পাশে অতীতের মতো ভবিষ্যতেও সর্বশক্তি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।

ঢাকা/হাসান/ফিরোজ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র ব যবস থ

এছাড়াও পড়ুন:

১৮ বিচারককে অবসরে পাঠিয়েছে সরকার

আইন মন্ত্রণালয়ের সাবেক যুগ্ম সচিব বিকাশ কুমার সাহাসহ ১৮ বিচারককে অবসরে পাঠিয়েছে সরকার। বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে তাদের অবসরে পাঠিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিসের নিম্নবর্ণিত সদস্যদের চাকরির মেয়াদ ২৫ বৎসর পূর্ণ হওয়ায় বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে পরামর্শক্রমে জনস্বার্থে তাদের সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮ এর ৪৫ ধারার বিধান মতে চাকরি থেকে অবসর প্রদান করা হলো।’

অবসরে পাঠানো কর্মকর্তারা হলেন- জেলা ও দায়রা জজ বিকাশ কুমার সাহা, শেখ মফিজুর রহমান, মাহবুবার রহমান সরকার, শেখ গোলাম মাহবুব, মজিবুর রহমান, এহসানুল হক, জুয়েল রানা, মনির কামাল, সহিদুল ইসলাম, আল মাহমুদ ফায়জুল কবীর, মো. নাজিমুদ্দৌলা, এ কে এম মোজাম্মেল হক চৌধুরী, ফজলে এলাহী ভূইয়া, আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান, মো. রুস্তম আলী, নুরুল ইসলাম, এ কে এম এনামুল করিম, মোহাম্মদ হোসেন।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, উপরে বর্ণিত বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিসের সদস্যরা বিধি অনুযায়ী অবসরজনিত সুবিধাদি প্রাপ্য হবেন। জনস্বার্থে জারি করা এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ