Samakal:
2025-12-02@12:39:52 GMT

ফুটবলার না হলে ক্রিকেটার হতাম

Published: 10th, July 2025 GMT

ফুটবলার না হলে ক্রিকেটার হতাম

শৈশবে কখনও ফুটবল আবার কখনওবা ক্রিকেটের ব্যাট-বল নিয়ে খেলার আনন্দে মেতে উঠতেন। স্কুল পর্যায়ে ভলিবল, হ্যান্ডবল এবং অ্যাথলেটিকসে পুরস্কার আছে তাঁর। তবে ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈলে বেড়ে ওঠা স্বপ্না রানী বেছে নিয়েছেন ফুটবলকে। তিনি এখন নারী দলের মধ্য মাঠের শিল্পী। এএফসি বাছাই পর্বে দলের পারফরম্যান্স, দলীয় সমন্বয় নিয়ে সমকালের সঙ্গে কথা বলেছেন স্বপ্না রানী। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সাখাওয়াত হোসেন জয়

সমকাল: স্বপ্ন পূরণের উচ্ছ্বাসে ভাসছেন সবাই। মিয়ানমারে যাওয়ার আগে কি ভেবেছিলেন এশিয়ান কাপে খেলতে পারবেন?
স্বপ্না রানী:
যাওয়ার আগে এমনটা ভাবিনি। তবে সবার মধ্যে চেষ্টা ছিল। যেহেতু এবার সুযোগ আসছে, সেটা কাজে লাগাতে হবে। আমাদের সবার টার্গেট ছিল যেভাবে হোক, এবার এশিয়ান কাপে কোয়ালিফাই করতে হবে। এখনও বিশ্বাস হচ্ছে না, আমরা এশিয়ান কাপে খেলব। এ এক অন্যরকম ভালো লাগা। যে অনূভূতি ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। দক্ষিণ এশিয়ার গণ্ডি পেরিয়ে আমরা এখন এশিয়ার সর্বোচ্চ পর্যায়ে– এটা ভাবতেই মনে রোমাঞ্চিত অনুভব করছি। 

সমকাল: এশিয়ান কাপে খেলবেন– এই বিশ্বাসটা কখন এসেছিল সবার মধ্যে?
স্বপ্না:
প্রথম ম্যাচে (বাহরাইনের বিপক্ষে) আমরা যখন জিতি, তখন সবার আত্মবিশ্বাসের লেভেলটা বেড়ে যায়। মিয়ানমারের বিপক্ষে মাঠে নামার আগে সবার মধ্যে বিশ্বাস ছিল, আমরা জিতব। যেভাবে হোক জিততেই হবে। দেশের জন্য আর নিজের জন্য। সেই ম্যাচে জেতার পরের গল্পটা তো সবারই জানা।

সমকাল: মিয়ানমার ম্যাচ নিয়ে আপনাদের মধ্যে কি আলোচনা হয়েছিল?
স্বপ্না:
মিয়ানমার ম্যাচে কোচ যেভাবে পরিকল্পনা সাজিয়েছিলেন, সেভাবে আমরা খেলেছিলাম। প্রথমে টার্গেট ছিল যে কোনোভাবেই হোক গোল হজম করা যাবে না, বরং আমরা গোল দেব। সবাই জানত, এই ম্যাচ জিতলে এশিয়ান কাপে খেলাটা আমাদের প্রায় নিশ্চিত হয়ে যাবে। টিম মিটিংয়েও এটা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তাই মিয়ানমার ম্যাচটা পাখির চোখ ছিল আমাদের মধ্যে। 

সমকাল: তুর্কমেনিস্তানের বিপক্ষে প্রথমার্ধে সাত গোল দিয়েছিলেন; কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে একটি গোলও দেননি। আপনারা কি ইচ্ছাকৃতভাবে আর গোল দেননি?
স্বপ্না:
বিষয়টি এমন না। খেলার মধ্যে আমরা কেউ কাউকে ছাড় দিই না। অনেক চেষ্টা করেছি, কিন্তু গোল হয়নি। দ্বিতীয়ার্ধে ওদের গোলরক্ষক ভালো খেলেছেন। যার জন্য গোল হয়নি। 

সমকাল: ফুটবলটা বেছে নেওয়ার কারণ কী?
স্বপ্না:
আমি খেলার প্রতি খুব আগ্রহী ছিলাম। আন্তঃস্কুল পর্যায়ে খেলেছি। ক্রিকেট, ফুটবল, ভলিবল, হ্যান্ডবল, অ্যাথলেটিকস– সব খেলাই খেলতাম আমি। সব খেলায়ই আমার পুরস্কার আছে। 

সমকাল: ফুটবলার না হলে কী হতেন?
স্বপ্না:
ফুটবলার না হলে অবশ্যই ক্রিকেটার হতাম। ক্রিকেটও আমি ভালো খেলতাম। আন্তঃস্কুল এবং বিভাগীয় পর্যায়ে পর্যন্ত খেলেছিলাম। ঠাকুরগাঁওয়ে রাঙ্গাটুঙ্গি স্কুলের হয়ে উইকেটরক্ষক-ব্যাটার হিসেবে খেলেছিলাম। 

সমকাল: মেয়েরা যারা ফুটবলে আসতে চাচ্ছেন, তাদের উদ্দেশে কী বলবেন?
স্বপ্না:
অনেকে মেয়েই ভাবে খেলাধুলায় এলে পড়াশোনা হয় না। আমি বলব, পড়াশোনা এবং খেলাধুলা দুটিই নিজের কাছে। কারণ, যে রাঁধে সে চুলও বাঁধে। তো মেয়েরা সবকিছুই পারে। যদি আপনি পড়াশোনা ঠিক রেখে খেলাধুলা চালিয়ে যেতে চান, সেটা অবশ্যই সম্ভব।

সমকাল: ফুটবলে শুরুর গল্পটা একটু বলুন?
স্বপ্না:
আমার ফুটবলের শুরুটা অনেক কষ্টের ছিল। বলতে পারেন, জার্নিটা অনেক কষ্টের ছিল। আমি গ্রাম থেকে উঠে আসা। ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈলে আমার বাড়ি। শুরুটা কঠিন ছিল। আপনারা জানেন, গ্রামের লোকের কথাবার্তা কেমন হয়। শুরুতে যখন খেলতাম, তখন অনেকে অনেক কথা বলত। তবে আমি সেসবে কান দিতাম না। আমার পরিবার সব সময় সাপোর্ট দিয়ে বলত, মানুষের কথায় কান দেওয়ার দরকার নেই। আমি ২০১৭ সালের শুরুর দিকে ফুটবল খেলা শুরু করি। শেষে ঠাকুরগাঁও জেলায় বিকেএসপির হয়ে ট্রায়াল দিই। সেখানে উত্তীর্ণ হই। এর পর বিকেএসপিতে ট্রেনিংয়ে সফল হই। সংস্থাটির হয়ে ভারতে সুব্রত কাপে খেলেছি। ২০১৯ কিংবা ২০২০ সালে সাফ অনূর্ধ্ব-১৫ দলে সুযোগ পাই। সেটা ছিল আমার প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ। এর পর বয়সভিত্তিক পর্যায়ে খেলার পর ২০২২ সালে নারী জাতীয় দলে আসা। ওই বছরই সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে দলের সদস্য ছিলাম। 

সমকাল: পরিবরাকে কতটা আর্থিক সাপোর্ট দিতে পারেন ?
স্বপ্না:
পরিবারের অন্য কেউ কিছু করতে পারে না। আমার ওপরই সবাই নির্ভরশীল। আমাদের বেতন, ম্যাচ ফি– এগুলো যদি আরও বাড়ানো হয়, তাহলে পরিবারকে আরও ভালো সাপোর্ট দিতে পারব। নিজের কাছে ভালো লাগবে। 

সমকাল: বিশ্বকাপের কথা সবাই বলছে। আপনি কতটা আশাবাদী?
স্বপ্না:
আমরা আশাবাদী। যেহেতু এবার এশিয়ান কাপে কোয়ালিফাই করেছি। বিশ্বকাপে খেলার ভালো সুযোগ এবার। একই সঙ্গে অলিম্পিকে খেলারও হাতছানি। সব মিলিয়ে এই সুযোগ আমরা নষ্ট করতে চাই না। এতদূর উঠে আসা যেমন এক দিনে হয়নি, তেমনি করে চেষ্টা করব আস্তে আস্তে ওপরে উঠতে।

সমকাল: ঘরোয়া লিগ নিয়মিত হয় না। এটা নিয়ে কিছু বলবেন?
স্বপ্না:
এই লিগটাই আমাদের ধারাবাহিকভাবে করা উচিত। কারণ, লিগ থেকে অনেক প্রতিভাবান খেলোয়াড় বের হয়। নিজেদের পারফরম্যান্সের উন্নতি করতে পারি। আর্থিকভাবে লাভবানও হওয়া যায়।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ন র ফ টবল ফ টবল র আম দ র ঠ ক রগ পর য য় প রথম সমক ল

এছাড়াও পড়ুন:

মাদকাসক্ত চিকিৎসায় নিরাময় কেন্দ্রের ভূমিকা শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত

মাদকাসক্ত চিকিৎসা ও পুনর্বাসন কার্যক্রমকে আরও কার্যকর করতে ‘মাদকাসক্ত চিকিৎসায় নিরাময় কেন্দ্রের ভূমিকা’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।

মঙ্গলবার বিকেল ৩টায় ঐক্য মাদকাসক্ত চিকিৎসা ও পুনর্বাসন কেন্দ্রের উদ্যোগে এ সেমিনার আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানে কেন্দ্রের পরিচালক মোঃ কবির হোসেনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ বাহাউদ্দিন। বিশেষ অতিথি ছিলেন সাইকোলজিস্ট কাজী রুম্পা এবং ঐক্য মাদকাসক্ত চিকিৎসা ও পুনর্বাসন কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক মোঃ আওলাদ হোসেন।

অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন কেন্দ্রের পরিচালক মোঃ তানভীর আরেফিন রনি। এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন পরিচালক গোলাম কিবরিয়া, মোঃ তানভীর, মোঃ জনি, ফ্রীডম লাইফ নিরাময় কেন্দ্রের জাফর ও সানী, জে.আর নিরাময় কেন্দ্রের রিয়াদ হোসেন সানী, কচিসহ বিভিন্ন নিরাময় কেন্দ্রের প্রতিনিধিরা এবং বিভিন্ন রিকোভারী ও অভিভাবকরা উপস্থিত ছিলেন।

সেমিনারে মাদকাসক্ত ব্যক্তিদের চিকিৎসা, পুনর্বাসন এবং সমাজে তাদের স্বাভাবিক বিষয়ে ফিরে আসার বিষয়ে বিভিন্ন দিক তুলে ধরা হয়। পরে সুস্থতার ১ম বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে ৫ জনকে বেইজ প্রদান এবং ১৫ জনকে সুস্থতার সনদ প্রদান করা হয়।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ