বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন বলেছেন, চীন বাংলাদেশের অন্যতম উন্নয়ন সহযোগী। দেশটির বিনিয়োগ আনতে চীনে বিডার একটি অফিস খোলার পরিকল্পনা রয়েছে। তবে বাংলাদেশে চায়না টাউন নেই। ঢাকায় একটি চায়না টাউন প্রতিষ্ঠা করা যেতে পারে। বাংলাদেশে প্রচুর মেধাবী তরুণ রয়েছে, যাদের চীনা কোম্পানিতে কর্মসংস্থানের সুযোগ রয়েছে। 

গতকাল বুধবার রাজধানীর গুলশানে হোটেল ওয়েস্টিনে আয়োজিত এক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন। ‘চীন-বাংলাদেশ শিল্প ও সাপ্লাই চেইন সহযোগিতা এবং শিল্প প্রতিবেদন প্রকাশ’ শীর্ষক এই সেমিনারের আয়োজন করে চায়নিজ এন্টারপ্রাইজেস অ্যাসোসিয়েশন ইন বাংলাদেশ (সিএইবি)।

বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ আগামী দিনে নতুন উচ্চতায় পৌঁছাবে বলে অনুষ্ঠানে আশা প্রকাশ করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন।  তিনি অর্থনৈতিক, সামাজিক ও শিল্প খাতে দুই দেশের মধ্যে যৌথ সহযোগিতা জোরদারের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। 

তিনি বলেন, বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ, তথ্য এবং সেবার মান উন্নত করাই হলো বৈদেশিক বিনিয়োগ আনার প্রধান চাবিকাঠি। শক্তিশালী সাপ্লাই চেইন ও অন্তর্ভুক্তিমূলক ব্যবস্থাও বিনিয়োগে সহায়ক। বাংলাদেশ বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরি করছে। চীন বিনিয়োগ সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে। 

ইয়াও ওয়েন বলেন, সম্প্রতি চীনের কুনমিংয়ে অনুষ্ঠিত ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে চীন, পাকিস্তান ও বাংলাদেশ একাধিক ক্ষেত্রে যৌথভাবে কাজ করতে সম্মত হয়েছে। এসব ক্ষেত্রে রয়েছে বাণিজ্য, শিল্প, পরিবেশ, পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনা এবং সাংস্কৃতিক সহযোগিতা। তবে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে কিছু চ্যালেঞ্জও রয়েছে। মার্কিন শুল্কনীতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশকেও সুরক্ষামূলক উদ্যোগ নিতে হবে।  

সম্প্রতি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী নেতাদের সঙ্গে চীনা কমিউনিস্ট পার্টির বৈঠক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে চীনা কমিউনিস্ট পার্টির সহযোগিতা বাড়ানোর আগ্রহ রয়েছে আমাদের।’

সেমিনারে সিএইবির সভাপতি হান কুন মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। এতে তিনি বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের আওতায় চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে যৌথ বিনিয়োগ ও সহযোগিতার সুযোগ, বাজার প্রবণতা ও চ্যালেঞ্জ তুলে ধরেন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সহয গ ত

এছাড়াও পড়ুন:

মাঠ আছে, খেলার পরিবেশ নেই

রাজধানীর মোহাম্মদপুর ও লালমাটিয়া এলাকায় বেশ কিছু খেলার মাঠ আছে। যেখানে গড়ে ওঠার কথা ছিল শিশু-কিশোরদের খেলার জায়গা, বয়স্ক ব্যক্তিদের হাঁটার পথ আর মানুষের বিনোদনের কেন্দ্র। সেসব আছে ঠিকই। কিন্তু তদারকির অভাবে অনেক মাঠে বসে মাদকসেবীদের আড্ডা ও অস্থায়ী চা-সিগারেটের দোকান।

সম্প্রতি মোহাম্মদপুরের ইকবাল রোড, টাউন হল মাঠ, সলিমুল্লাহ রোড, তাজমহল রোড, জাকির হোসেন রোড এবং লালমাটিয়ার মাঠগুলো ঘুরে এমন চিত্র পাওয়া গেছে। সবচেয়ে বেহাল চিত্র টাউন হলের শহীদ পার্ক খেলার মাঠের।

মাঠের প্রধান দুই প্রবেশপথ দখল করে নিয়েছে চা-সিগারেটের অস্থায়ী দোকান। অন্য আরেকটি প্রবেশপথ ঘিরে আসবাবের দোকান। সেদিকে সরু একটি রাস্তা দিয়ে মাঠে ঢোকা যায়। মাঠে নিয়মিত বসে মাদকসেবীদের আড্ডা। মাঠের এক কোণে করা হয়েছে মূত্রত্যাগের খোলা ব্যবস্থা। দুর্গন্ধে হাঁটার উপযোগী পরিবেশ নেই এখানে। তাই আশপাশের লোকজন খুব একটা আসতে চান না। ভেতরে গিয়ে দেখা যায়, ‘মোহাম্মদপুর শহীদ পার্ক ক্রীড়াচক্র’ নামের একটি সংগঠনের ব্যানারে চলছে মাঠের তদারকি। লোহার বেড়া দিয়ে ঘিরে রাখা মাঠের এক কোণে শিশুদের খেলার জন্য কিছু রাইডের ব্যবস্থা আছে।

খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, মাঠটির দখল মূলত স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তির হাতে। তাঁরাই বর্তমানে মাঠের দেখভাল করছেন। সোহরাব হোসেন নামের স্থানীয় এক বাসিন্দা জানালেন, ৫ আগস্টের আগে এই মাঠে উত্তর সিটি করপোরেশনের কিছুটা তদারকি ছিল। কিন্তু পটপরিবর্তনের পর স্থানীয় বিভিন্ন প্রভাবশালী মাঠের দখল নিয়েছেন। চা-সিগারেটের দোকানও তাঁদের তত্ত্বাবধানে চলে। ভাড়ায় চলানো হয় বিভিন্ন টুর্নামেন্ট। ফলে মাঠের অধিকার হারাচ্ছেন সাধারণ মানুষ।

পাশে সলিমুল্লাহ রোডের মাঠটিতে প্রতি রোববার অস্থায়ী বাজার বসে। সপ্তাহের বাকি ছয় দিন এই মাঠ উন্মুক্ত থাকে। তবে সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে তেমন কোনো উন্নয়নকাজ এই মাঠে দেখা যায়নি। নেই কোনো তত্ত্বাবধান। রোববারের অস্থায়ী বাজারে স্টল বসাতে প্রতি চার হাত জায়গার জন্য হকারদের চাঁদা গুনতে হয় ৫০০ টাকা করে। তবে এই টাকা কারা নেন, সে বিষয়ে ব্যবসায়ীরা কিছু বলতে চাননি।

তাজমহল রোডের মাঠটিতে গিয়ে দেখা যায়, স্থানীয় লোকজনের অনুরোধে সিটি করপোরেশন কর্তৃক কিছু উন্নয়নকাজ করা হচ্ছে। উন্নয়নকাজে নিযুক্ত সিটি করপোরেশনের প্রকৌশলী মিজানুর রহমান জানান, প্রায় ৬২ লাখ টাকার উন্নয়নকাজ চলছে। এসবের মধ্যে রয়েছে মাঠের অভ্যন্তরে বাউন্ডারি ফ্রেম ফেন্সিং নির্মাণ, বৃক্ষরোপণ, ওয়াশরুম এবং ফটক মেরামত। তবে এই মাঠেও তেমন কোনো তদারকি না থাকায় নিয়মিত মাদকাসক্তদের আনাগোনা থাকে।

মোহাম্মদপুর শহীদ পার্ক খেলার মাঠ

সম্পর্কিত নিবন্ধ