ঈদে অতিথি আপ্যায়নে থাকুক লিচুর পুডিং
Published: 3rd, June 2025 GMT
পাকা লিচু দিয়ে তৈরি করতে পারেন সুস্বাদু পুডিং। ঈদে অতিথি আপ্যায়নে এই পদ পরিবেশন করতে পারেন। জেনে নিন রেসিপি।
উপকরণ
লিচুর রস: ৪ কাপ
লিচুর টুকরা: ১ কাপ
চিনি: আধা কাপ
চায়না গ্রাস: ১০ গ্রাম
প্রথম ধাপ: প্রথমে চায়না গ্রাস ১ কাপ পানিতে ১০ মিনিটের জন্য ভিজিয়ে রাখুন।
আরো পড়ুন:
দিনাজপুরে আমের বাম্পার ফলন স্বপ্ন দেখাচ্ছে
১৫ মে থেকে নাটোরে আম-লিচু সংগ্রহ শুরু
দ্বিতীয় ধাপ: এবার একটি প্যানে লিচুর রস ও চিনি জ্বাল দিন। এই মিশ্রণে বুদ্বুদ্ উঠে আসতে শুরু করলে পানিসহ চায়না গ্রাস দিয়ে দিন। চায়না গ্রাস না গলা পর্যন্ত নাড়তে থাকুন।
তৃতীয় ধাপ: কিছু সময় ঢিমে আঁচে জ্বাল দেওয়ার পর চুলা বন্ধ করে দিন। এবার সিলিকন মোল্ডে মিশ্রণ ঢেলে লিচু কুচি ছড়িয়ে ১ থেকে ২ ঘণ্টার জন্য ফ্রিজে রেখে দিন।
অতিথি আপ্যায়নের জন্য লিচুর পুডিং পছন্দমতো কেটে সাজিয়ে পরিবেশন করুন।
ঢাকা/লিপি
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
নিঃস্ব ও দরিদ্রের হক প্রতিষ্ঠা পাক
মুসলমানদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা। ইসলামে যে পাঁচটি অবশ্যপালনীয় বিধান আছে, তার অন্যতম হজ। প্রত্যেক সামর্থ্যবান মুসলমানের জন্য হজ পালন করা ফরজ। এই হজের অনুষঙ্গ হিসেবেই কোরবানি দেওয়া হয়। প্রতিবছরের মতো এবারও লাখ লাখ ধর্মপ্রাণ মুসলমান সৌদি আরবের পবিত্র মক্কা নগরীর আরাফাত ময়দানে সমবেত হয়ে পবিত্র হজ পালন করবেন। বাংলাদেশ থেকে এবারও লক্ষাধিক মানুষ পবিত্র হজ পালন করতে সৌদি আরবে যাওয়ার অনুমতি পেয়েছেন।
ত্যাগের মধ্যেও যে আনন্দ আছে, সেটাই ঈদুল আজহার শিক্ষা। আল্লাহ তাআলা হজরত ইব্রাহিম (আ.)-কে তাঁর প্রিয় বস্তু কোরবানি করার নির্দেশ দেন। এরপর হজরত ইব্রাহিম তাঁর প্রিয় পুত্র ইসমাইল (আ.)-কে কোরবানি দেওয়ার জন্য নিয়ে যান। এর মাধ্যমে তিনি আল্লাহর প্রতি সর্বোচ্চ আনুগত্য প্রদর্শন করেন। এ সময় আল্লাহর নির্দেশে তিনি পুত্র ইসমাইলের বদলে সেখানে একটি দুম্বা কোরবানি দেন।
যাঁরা হজ পালন করছেন, শুধু তাঁরাই নন, এ ঘটনার অনুসরণে সারা বিশ্বের প্রত্যেক সামর্থ্যবান মুসলমান কোরবানি দিয়ে থাকেন। যাঁদের কোরবানি দেওয়ার সামর্থ্য নেই, কোরবানির মাংসের ওপর তাঁদেরও হক আছে। এ কারণে ধনী মুসলমানরা পশু কোরবানি করে এর নির্দিষ্ট অংশ গরিবদের মধ্যে বিতরণ করেন। এ মাংস বিতরণে কোনো দরিদ্র মানুষ যাতে বাদ না পড়ে, সেদিকে খেয়াল রাখা উচিত।
সৌদি আরবসহ অনেক দেশে সুরক্ষিত নির্দিষ্ট স্থানের বাইরে কোরবানি দেওয়া যায় না। আমাদের দেশে এখনো সেই রীতি চালু করা যায়নি। এরপরও কোরবানির পশুর রক্ত ও অন্যান্য বর্জ্যে যাতে পরিবেশ নষ্ট না হয়, সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সবাইকে সজাগ থাকতে হবে; এ বিষয়ে স্থানীয় সরকারের অধীন প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ করে থাকে; তাদের সহযোগিতা করা আমাদের সবার দায়িত্ব। ঈদের সময় যে পশু কোরবানি হয়, তার বর্জ্য দ্রুত ধুয়েমুছে ফেলতে হবে। চামড়াও বেশি সময় ফেলে রাখা যাবে না।
কোরবানির অর্থনৈতিক দিকটিও গুরুত্বপূর্ণ। কোরবানির মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিও চাঙা হয়। দিনটি সামনে রেখেই কৃষক ও খামারিরা সারা বছর পশু পালন করেন, যাতে ভালো দাম পেতে পারেন। কয়েক বছর ধরে দেশে গরু, ছাগল, ভেড়া ইত্যাদির উৎপাদন বেড়েছে। ফলে এখন আর কোরবানির চাহিদা মেটাতে বিদেশি পশুর ওপর নির্ভর করতে হয় না। কোরবানির পশুর চামড়া দেশের চামড়াশিল্পের বিকাশে বড় ভূমিকা রাখতে পারে। অতএব কোরবানির চামড়া সংরক্ষণের ওপরও আমাদের জোর দিতে হবে। অনেক ধর্মপ্রাণ মুসলমান কোরবানির পশুর চামড়া বিক্রির অর্থ মাদ্রাসা ও এতিমখানায় দান করেন। চামড়ার দাম বেশি হলে মাদ্রাসাছাত্র ও এতিমখানার বাসিন্দারা উপকৃত হয়।
এবার যখন পবিত্র হজ পালিত হতে যাচ্ছে, তখন গাজায় ইসরায়েলি বাহিনী বর্বরোচিত গণহত্যা চালাচ্ছে। এমনকি দুর্ভিক্ষপীড়িত গাজায় যঁারা ত্রাণসামগ্রীর জন্য অপেক্ষা করছিলেন, ইসরায়েলি বাহিনী তঁাদেরও গুলি করে হত্যা করেছে। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে সেখানে ৫৪ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন, যঁাদের বড় অংশ নারী ও শিশু। আমরা নিপীড়িত ও অসহায় ফিলিস্তিনি ভাইবোনদের প্রতি সহমর্মিতা ও সংহতি জানাই। এই যুদ্ধ অচিরেরই বন্ধ হোক, সেটিই আমরা কামনা করি।
ঈদুল আজহার মূল কথা হলো ত্যাগ। পশু কোরবানির মাধ্যমে মানুষের ভেতরে যে লোভ–লালসা আছে, তাকেও ত্যাগ করতে হবে। আদায় করতে হবে নিঃস্ব ও দরিদ্রদের হক।
আমাদের পাঠক, লেখক, গ্রাহক, হকার, বিজ্ঞাপনদাতা ও শুভানুধ্যায়ী—সবাইকে ঈদুল আজহার শুভেচ্ছা। ঈদ মোবারক।